কোভিড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: এবার অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ভারতে মামলা 

কলকাতা সংবাদদাতা 
আপডেট : ০২ মে ২০২৪, ১১: ৪৮
Thumbnail image

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির সময় সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারতবাসীও প্রতিষেধক হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছিল। সম্প্রতি ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্বীকার করেছে, এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। আর সে কারণেই ব্রিটেনের পর জনস্বার্থে এবার ভারতের শীর্ষ আদালতেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কতখানি তা তদন্তের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন বিশাল তিওয়ারি নামের এক আইনজীবী। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতে তৈরির লাইসেন্স পেয়েছিল পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই)। ভারতের বেশির ভাগ মানুষই কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছিল।

শীর্ষ আদালতের কাছে বিশাল তিওয়ারির আবেদন, এই টিকা ঠিক কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা খতিয়ে দেখতে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস বা এইমসের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হোক। এ ছাড়া, এই টিকার কারণে ভারতে যারা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার স্বীকার হয়েছে, তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে ব্রিটিশ আদালতে প্রথম মামলা দায়ের করেন জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিশিল্ড নেওয়ার পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। ফলে তাঁর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে গেছে। একই অভিযোগে ব্রিটিশ হাইকোর্টে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রায় ১০ কোটি পাউন্ড দাবি করে ৫১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রথমে মানতে না চাইলেও আদালতে উপস্থাপিত নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করে যে, তাদের টিকার কারণে থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম বা টিটিএস নামের বিরল রোগের আশঙ্কা রয়েছে। তবে কেবল ব্রিটেন নয়, ভারতেও সেরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন এক সন্তানহারা দম্পতি। ২০২১ সালে এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর করুন্যা নামে ওই নারীর মৃত্যু হয়।

করুন্যার বাবা ভেনুগোপালন গোবিন্দা সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তরফে টিকায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করে নেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘এরা স্বীকার করল, তবে অত্যন্ত দেরিতে। তত দিনে বহু মানুষ অকালে প্রাণ হারিয়েছে।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ বা আইসিএমআরের বিজ্ঞানী ডা. রমন গঙ্গাখেদকর। তিনি বলেছেন, ‘ভয়ের কোনো কারণ নেই। ১০ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ৭-৮ জনের থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।’

রমন গঙ্গাখেদকর আরও বলেন, ‘প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর সেই ঝুঁকি কমতে থাকে। বুস্টার ডোজের পর এই ঝুঁকি একেবারেই থাকে না। যা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তা দুই তিন মাসের মধ্যেই হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত