Ajker Patrika

ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত বেড়ে প্রায় ১২ হাজার

অনলাইন ডেস্ক
ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত বেড়ে প্রায় ১২ হাজার

নয়াদিল্লি: করোনা বিপর্যয়ের মধ্যেই নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ। ভারতে সরকারি হিসাবে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৭১৭ জন। সবচেয়ে বেশি, ২ হাজার ৮৫৯ জন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে গুজরাটে। আজ বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ২০ মে ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে মহামারি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার।

এ ছাড়া এখন পর্যন্ত মহারাষ্ট্র রাজ্যে ২ হাজার ৭৭০ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ৭৬৮ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রী ডিভি সদানন্দ গৌড়া জানিয়েছেন, উপদ্রুত রাজ্যগুলোতে প্রায় ৩০ হাজার অতিরিক্ত অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের ভায়াল দেওয়া হয়েছে। আজই সেগুলো সব রাজ্য এবং ইউনিয়ন টেরিটোরিতে বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, সেখানে ৬২০ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাবের চেয়ে এ পরিসংখ্যান প্রায় পাঁচ গুন বেশি।

মিউকোরমাইকোসিস এক ধরনের গুরুতর ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণ। দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) কোনো শারীরিক জটিলতা থেকে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়লে এই ছত্রাকের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ভারতের নীতি আয়োগ সংস্থার সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পাল বলেন, মিউকোরমাইসিট নামক ছত্রাক মিউকোরমাইকোসিস রোগের জন্য দায়ী। অন্য ছত্রাকের মতো এটিও আর্দ্র স্থানে জন্মে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) ওয়েবসাইটে এই রোগ সম্পর্কে বলা হয়েছে–মিউকোরমাইকোসিস (আগে বলা হতো জাইগোমাইকোসিস) রোগটি মারাত্মক ছত্রাকজনিত রোগ তবে বিরল। এই ছত্রাক সব পরিবেশেই থাকে। সাধারণত যাদের স্বাস্থ্য সমস্যা আছে বা এমন ওষুধ গ্রহণ করেন যা জীবাণু ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে শরীরের লড়াই করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয় তারাই এ ছত্রাকে আক্রান্ত হতে পারেন। বাতাস থেকে ছত্রাকের স্পোর (বীজাণু) শ্বাসের মধ্যমে সাইনাস বা ফুসফুসে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়। এটি কাটা, পোড়া বা অন্যান্য ধরনের আঘাত পাওয়া ত্বকেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মুখে আক্রমণ করতে পারে। নাক, চোখ ও মস্তিষ্কেও এর সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ ছত্রাকের সংক্রমণে মাথাব্যথা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কাশির সাথে রক্ত আসা, শ্বাসকষ্ট, মাথার এক পাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, দাঁতে ব্যথাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। সংক্রমণে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন। এটি ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের সাইনাসের সমস্যা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, দাঁতে ব্যথা ও দাঁত ফাঁকা হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড পজিটিভ রোগীদের মধ্যে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের এ রোগে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। করোনা রোগীর সেরে ওঠার পরে অনেকের দেহেই এই মিউকোরমাইকোসিস রোগ দেখা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত