জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা কী, মমতা সম্ভবত জানেন না: শশী থারুর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯: ৫৫
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ১০
বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনে মমতার প্রস্তাব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা স্পষ্টভাবে জানেন কি না, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের এমপি ও জ্যেষ্ঠ নেতা শশী থারুর। গতকাল মঙ্গলবার শশী থারুর এ বিষয়ে কথা বলেন। মূলত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানোর আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই সংশয় প্রকাশ করেন।

কেরালার তিরুবনন্তপুরমের এমপি শশী থারুর ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের খুব কম ক্ষেত্রেই কোনো দেশের অভ্যন্তরে পাঠানো হয়, তাও তখনই হয় যখন সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার তা অনুরোধ করে।

এর আগে, গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারকে আহ্বান জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘে আবেদন করে সেখানে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। মুখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দেশের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।

বিধানসভায় মমতা বলেন, ‘প্রয়োজনে সেখানে (অন্তর্বর্তী) সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানো হোক, যাতে তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাহায্য করতে পারে।’ এ ছাড়া বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ চেয়ে বিদেশের মাটিতে নিপীড়নের শিকার হওয়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে শশী থারুর বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই যে, তিনি (মমতা) শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত কি না। আমি নিজে বহু বছর জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করেছি। আমি বলতে পারি, খুব কম ক্ষেত্রেই কোনো দেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হয় এবং তা তখনই হয় যখন সংশ্লিষ্ট দেশ তা চায়।’

কংগ্রেসের এই নেতা আরও বলেন, ‘শুধু কোনো দেশ পুরোপুরি ভেঙে পড়লেই সেখানে শান্তিরক্ষী পাঠানো হয় এবং সেটাও তখনই হয়, যখন সেই দেশের সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের আহ্বান জানায়। তবে আমি একেবারে একমত যে, আমাদের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে হবে।’

এদিকে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি জানি না, বুঝতে পারছি না, কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন মন্তব্য করলেন। আমি তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, তাঁর বাড়িতেও বহুবার গিয়েছি।’

ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এটি মমতা ব্যানার্জির ‘চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের’ অংশ। এ ধরনের প্রস্তাবে কোনো ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মমতা ব্যানার্জির প্রস্তাব প্রসঙ্গে তৌহিদ বলেন, ‘এগুলো মমতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসূচক মন্তব্য। আমি এ ধরনের পরামর্শের কোনো ভিত্তি দেখি না।’ ব্রিফিংয়ের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার একটি অংশ, বিশেষ করে ভারতের গণমাধ্যম, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। আমরা কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করেছি যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সব সময় বজায় রয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত