বিভাস রায় চৌধুরী

ভারতের অন্যতম সম্মানীয় সেনাপতি জেনারেল বিপিন রাওয়াত, যিনি ৪৩ বছরের সেনাজীবনে দেশের প্রায় সব প্রান্তে কাজ করেছেন। সঙ্গে এক বছর কঙ্গোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সেনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর পাওয়া পদকের মধ্যে আছে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল, উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল, অতি বিশিষ্ট সেবা মেডেল, যুদ্ধ সেবা মেডেল, সেনা মেডেল, বিশিষ্ট সেনা মেডেল ইত্যাদি।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো ভারতে কখনোই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ছিল না। বরং তিন বাহিনীর তিন প্রধানের মধ্যে সিনিয়র ব্যক্তি চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু কার্গিলের পর থেকেই একজন সর্বাধিনায়কের প্রয়োজন ভারত অনুভব করছিল। বেশ কয়েক বছরের টালবাহানার পরে বর্তমান সরকার এই পদের মঞ্জুরি দেয়। তত দিনে তিন বাহিনীর আলাদা আলাদা কমান্ড ভাগ থেকে সরে এসে চীন বা আমেরিকার স্টাইলে থিয়েটার কমান্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে আর্মি, এয়ারফোর্স, নেভি সম্মিলিতভাবে একই কমান্ডের অধীনে মুখ্যত আর্মি কমান্ডারের আদেশানুযায়ী কাজ করবে বলে ঠিক হয়।
সেই অবস্থায় একজনকে দেশের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। আর সে ক্ষেত্রে সাবেক আর্মি চিফ জেনারেল রাওয়াত ছিলেন একমাত্র পছন্দের ব্যক্তি। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—সব মিলিয়ে তাঁর চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
উত্তর ভারতের গাড়োয়ালিরা এমনিতেই যোদ্ধা জাতি। তাতে জেনারেল রাওয়াত নিজে ছিলেন চতুর্থ প্রজন্মের ভারতীয় সেনা। উত্তর ভারতে সেনাবাহিনীতে ‘সেবা’ করা অত্যন্ত গর্বের বলে মনে করা হয়। জেনারেল রাওয়াতের বাবা ছিলেন গোর্খা রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁর পিতামহ ও প্রপিতামহ দুজনেই কাজ করেছেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। ওদিকে তাঁর মামাদাদু ছিলেন উত্তরকাশীর বিধায়ক। রাজনীতি আর যুদ্ধনীতি একসঙ্গে তাঁর ধমনিতে বইছিল। ফলে যথারীতি বিপিন রাওয়াত নিজেও ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (যা ভারতের প্রায় সমস্ত চিফের প্রথম ট্রেনিং অ্যাকাডেমি) থেকে পাস করে এবং পরে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ট্রেনিং নিয়ে তাঁর বাবা যে রেজিমেন্টের কমান্ডার ছিলেন, সেই ১১ গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন।
পরে জেনারেল বিপিন ৫/১১ গোর্খা রাইফেলস কমান্ড করেন। এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনাবাহিনী, নম্বর ৩ কোর, দক্ষিণ সেনা কমান্ড ইত্যাদিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ আর চিফ অব আর্মি স্টাফে উন্নীত হন তিনি।
বিপিন রাওয়াতের শিক্ষাগত যোগ্যতা যেকোনো শিক্ষাবিদকে লজ্জায় ফেলবে। জেনারেল রাওয়াত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছিলেন। তারপর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন, তিনি সেই কলেজেই বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া ডিফেন্স স্টাডিজে এমফিল করেছিলেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, ডক্টরেট করেন মিলিটারি-মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপরে চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয় মীরাট থেকে। আমেরিকান আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে হায়ার কমান্ড কোর্স করেন তিনি। নিজে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন অনেক দিন। ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ও জেনারেল সুহাগের পরে ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্ট থেকে উঠে আসা বিপিন রাওয়াত ছিলেন তৃতীয় সেনাপ্রধান।
১৯৮৭ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমা নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে সুমদরং ছু ভ্যালিতে। যেখানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ভারতীয় সেনাকে ম্যাকমোহন লাইন থেকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি। সেখানে তখন পাহাড়া দিচ্ছিল রাওয়াতের ব্যাটালিয়ন। কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনা বেশ কয়েকবার অসীম সাহস ও কুশলতা দেখিয়ে সেই দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচায়। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, তাঁর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নম্বর ৩ কোরের কোর কমান্ডার লে. জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
৮ ডিসেম্বর সকালে জেনারেল রাওয়াত দিল্লি থেকে ভিআইপি ফ্লাইটে দক্ষিণ ভারতের কোয়েমাবটুরে আসেন। এখানে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বানানো রানওয়ে ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৪৩ নম্বর উয়িং। এখান থেকে শুরু হয় নীলগিরি পাহাড়। তাঁর গন্তব্য ছিল সেই পাহাড়ের গায়ে ওয়েলিংটনে অবস্থিত ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ। সেখানে তাঁকে বর্তমান ট্রেনি অফিসারদের সম্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু নিয়তির ইচ্ছে ছিল ভিন্ন।
সুলুরের ১০৯ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার একটি মি-১৭ ভি-৫ হেলিকপ্টার নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতে টেক অফ করেন। ওয়েলিংটনে পৌঁছানোর আগেই পাহাড়ের গায়ে হেলিকপ্টার এক অজানা কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে। হেলিকপ্টারে আগুন ধরে যায় এবং ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে একজন বাদে সবাই মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে জেনারেল বিপিওন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা আছেন।
উটির উচ্চতা ২২৪০ মিটার। এই উচ্চতায় মেঘ ও কুয়াশার এক অসাধারণ প্রাকৃতিক খেলা দেখা যায়। দুর্ঘটনার কারণ এখনই বলা মুশকিল। তবে পাহাড়ের খাঁজে দুপুরের দিকে বাতাসের ঘনত্ব হঠাৎ পালটে যাওয়া বা মেঘ কুয়াশার ফলে দৃশ্যমানতার অভাব ঘটতে পারে। তার মধ্য দিয়ে হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়া পাহাড়ি খাদে অবশ্যই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি করে। অনেকেই অবশ্য সন্দেহ করছেন কোনো অন্তর্ঘাতমূলক কাজের। তবে সেই আশঙ্কা একবারে উড়িয়ে না দিলেও জেনারেল রাওয়াতের ওপরে এতটা হুমকি ছিল বলে মনে হয় না।
একজন সেনানায়কের যে ভূমিকা থাকা দরকার, তিনি ঠিক সেই ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে এই দুর্ঘটনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের সেনা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
লেখক: প্রাক্তন ভারতীয় বিমান সেনা। বর্তমানে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালের জ্যেষ্ঠ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।

ভারতের অন্যতম সম্মানীয় সেনাপতি জেনারেল বিপিন রাওয়াত, যিনি ৪৩ বছরের সেনাজীবনে দেশের প্রায় সব প্রান্তে কাজ করেছেন। সঙ্গে এক বছর কঙ্গোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সেনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর পাওয়া পদকের মধ্যে আছে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল, উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল, অতি বিশিষ্ট সেবা মেডেল, যুদ্ধ সেবা মেডেল, সেনা মেডেল, বিশিষ্ট সেনা মেডেল ইত্যাদি।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো ভারতে কখনোই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ছিল না। বরং তিন বাহিনীর তিন প্রধানের মধ্যে সিনিয়র ব্যক্তি চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু কার্গিলের পর থেকেই একজন সর্বাধিনায়কের প্রয়োজন ভারত অনুভব করছিল। বেশ কয়েক বছরের টালবাহানার পরে বর্তমান সরকার এই পদের মঞ্জুরি দেয়। তত দিনে তিন বাহিনীর আলাদা আলাদা কমান্ড ভাগ থেকে সরে এসে চীন বা আমেরিকার স্টাইলে থিয়েটার কমান্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে আর্মি, এয়ারফোর্স, নেভি সম্মিলিতভাবে একই কমান্ডের অধীনে মুখ্যত আর্মি কমান্ডারের আদেশানুযায়ী কাজ করবে বলে ঠিক হয়।
সেই অবস্থায় একজনকে দেশের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। আর সে ক্ষেত্রে সাবেক আর্মি চিফ জেনারেল রাওয়াত ছিলেন একমাত্র পছন্দের ব্যক্তি। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—সব মিলিয়ে তাঁর চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
উত্তর ভারতের গাড়োয়ালিরা এমনিতেই যোদ্ধা জাতি। তাতে জেনারেল রাওয়াত নিজে ছিলেন চতুর্থ প্রজন্মের ভারতীয় সেনা। উত্তর ভারতে সেনাবাহিনীতে ‘সেবা’ করা অত্যন্ত গর্বের বলে মনে করা হয়। জেনারেল রাওয়াতের বাবা ছিলেন গোর্খা রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁর পিতামহ ও প্রপিতামহ দুজনেই কাজ করেছেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। ওদিকে তাঁর মামাদাদু ছিলেন উত্তরকাশীর বিধায়ক। রাজনীতি আর যুদ্ধনীতি একসঙ্গে তাঁর ধমনিতে বইছিল। ফলে যথারীতি বিপিন রাওয়াত নিজেও ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (যা ভারতের প্রায় সমস্ত চিফের প্রথম ট্রেনিং অ্যাকাডেমি) থেকে পাস করে এবং পরে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ট্রেনিং নিয়ে তাঁর বাবা যে রেজিমেন্টের কমান্ডার ছিলেন, সেই ১১ গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন।
পরে জেনারেল বিপিন ৫/১১ গোর্খা রাইফেলস কমান্ড করেন। এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনাবাহিনী, নম্বর ৩ কোর, দক্ষিণ সেনা কমান্ড ইত্যাদিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ আর চিফ অব আর্মি স্টাফে উন্নীত হন তিনি।
বিপিন রাওয়াতের শিক্ষাগত যোগ্যতা যেকোনো শিক্ষাবিদকে লজ্জায় ফেলবে। জেনারেল রাওয়াত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছিলেন। তারপর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন, তিনি সেই কলেজেই বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া ডিফেন্স স্টাডিজে এমফিল করেছিলেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, ডক্টরেট করেন মিলিটারি-মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপরে চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয় মীরাট থেকে। আমেরিকান আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে হায়ার কমান্ড কোর্স করেন তিনি। নিজে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন অনেক দিন। ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ও জেনারেল সুহাগের পরে ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্ট থেকে উঠে আসা বিপিন রাওয়াত ছিলেন তৃতীয় সেনাপ্রধান।
১৯৮৭ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমা নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে সুমদরং ছু ভ্যালিতে। যেখানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ভারতীয় সেনাকে ম্যাকমোহন লাইন থেকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি। সেখানে তখন পাহাড়া দিচ্ছিল রাওয়াতের ব্যাটালিয়ন। কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনা বেশ কয়েকবার অসীম সাহস ও কুশলতা দেখিয়ে সেই দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচায়। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, তাঁর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নম্বর ৩ কোরের কোর কমান্ডার লে. জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
৮ ডিসেম্বর সকালে জেনারেল রাওয়াত দিল্লি থেকে ভিআইপি ফ্লাইটে দক্ষিণ ভারতের কোয়েমাবটুরে আসেন। এখানে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বানানো রানওয়ে ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৪৩ নম্বর উয়িং। এখান থেকে শুরু হয় নীলগিরি পাহাড়। তাঁর গন্তব্য ছিল সেই পাহাড়ের গায়ে ওয়েলিংটনে অবস্থিত ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ। সেখানে তাঁকে বর্তমান ট্রেনি অফিসারদের সম্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু নিয়তির ইচ্ছে ছিল ভিন্ন।
সুলুরের ১০৯ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার একটি মি-১৭ ভি-৫ হেলিকপ্টার নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতে টেক অফ করেন। ওয়েলিংটনে পৌঁছানোর আগেই পাহাড়ের গায়ে হেলিকপ্টার এক অজানা কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে। হেলিকপ্টারে আগুন ধরে যায় এবং ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে একজন বাদে সবাই মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে জেনারেল বিপিওন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা আছেন।
উটির উচ্চতা ২২৪০ মিটার। এই উচ্চতায় মেঘ ও কুয়াশার এক অসাধারণ প্রাকৃতিক খেলা দেখা যায়। দুর্ঘটনার কারণ এখনই বলা মুশকিল। তবে পাহাড়ের খাঁজে দুপুরের দিকে বাতাসের ঘনত্ব হঠাৎ পালটে যাওয়া বা মেঘ কুয়াশার ফলে দৃশ্যমানতার অভাব ঘটতে পারে। তার মধ্য দিয়ে হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়া পাহাড়ি খাদে অবশ্যই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি করে। অনেকেই অবশ্য সন্দেহ করছেন কোনো অন্তর্ঘাতমূলক কাজের। তবে সেই আশঙ্কা একবারে উড়িয়ে না দিলেও জেনারেল রাওয়াতের ওপরে এতটা হুমকি ছিল বলে মনে হয় না।
একজন সেনানায়কের যে ভূমিকা থাকা দরকার, তিনি ঠিক সেই ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে এই দুর্ঘটনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের সেনা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
লেখক: প্রাক্তন ভারতীয় বিমান সেনা। বর্তমানে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালের জ্যেষ্ঠ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।
বিভাস রায় চৌধুরী

ভারতের অন্যতম সম্মানীয় সেনাপতি জেনারেল বিপিন রাওয়াত, যিনি ৪৩ বছরের সেনাজীবনে দেশের প্রায় সব প্রান্তে কাজ করেছেন। সঙ্গে এক বছর কঙ্গোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সেনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর পাওয়া পদকের মধ্যে আছে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল, উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল, অতি বিশিষ্ট সেবা মেডেল, যুদ্ধ সেবা মেডেল, সেনা মেডেল, বিশিষ্ট সেনা মেডেল ইত্যাদি।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো ভারতে কখনোই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ছিল না। বরং তিন বাহিনীর তিন প্রধানের মধ্যে সিনিয়র ব্যক্তি চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু কার্গিলের পর থেকেই একজন সর্বাধিনায়কের প্রয়োজন ভারত অনুভব করছিল। বেশ কয়েক বছরের টালবাহানার পরে বর্তমান সরকার এই পদের মঞ্জুরি দেয়। তত দিনে তিন বাহিনীর আলাদা আলাদা কমান্ড ভাগ থেকে সরে এসে চীন বা আমেরিকার স্টাইলে থিয়েটার কমান্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে আর্মি, এয়ারফোর্স, নেভি সম্মিলিতভাবে একই কমান্ডের অধীনে মুখ্যত আর্মি কমান্ডারের আদেশানুযায়ী কাজ করবে বলে ঠিক হয়।
সেই অবস্থায় একজনকে দেশের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। আর সে ক্ষেত্রে সাবেক আর্মি চিফ জেনারেল রাওয়াত ছিলেন একমাত্র পছন্দের ব্যক্তি। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—সব মিলিয়ে তাঁর চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
উত্তর ভারতের গাড়োয়ালিরা এমনিতেই যোদ্ধা জাতি। তাতে জেনারেল রাওয়াত নিজে ছিলেন চতুর্থ প্রজন্মের ভারতীয় সেনা। উত্তর ভারতে সেনাবাহিনীতে ‘সেবা’ করা অত্যন্ত গর্বের বলে মনে করা হয়। জেনারেল রাওয়াতের বাবা ছিলেন গোর্খা রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁর পিতামহ ও প্রপিতামহ দুজনেই কাজ করেছেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। ওদিকে তাঁর মামাদাদু ছিলেন উত্তরকাশীর বিধায়ক। রাজনীতি আর যুদ্ধনীতি একসঙ্গে তাঁর ধমনিতে বইছিল। ফলে যথারীতি বিপিন রাওয়াত নিজেও ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (যা ভারতের প্রায় সমস্ত চিফের প্রথম ট্রেনিং অ্যাকাডেমি) থেকে পাস করে এবং পরে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ট্রেনিং নিয়ে তাঁর বাবা যে রেজিমেন্টের কমান্ডার ছিলেন, সেই ১১ গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন।
পরে জেনারেল বিপিন ৫/১১ গোর্খা রাইফেলস কমান্ড করেন। এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনাবাহিনী, নম্বর ৩ কোর, দক্ষিণ সেনা কমান্ড ইত্যাদিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ আর চিফ অব আর্মি স্টাফে উন্নীত হন তিনি।
বিপিন রাওয়াতের শিক্ষাগত যোগ্যতা যেকোনো শিক্ষাবিদকে লজ্জায় ফেলবে। জেনারেল রাওয়াত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছিলেন। তারপর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন, তিনি সেই কলেজেই বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া ডিফেন্স স্টাডিজে এমফিল করেছিলেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, ডক্টরেট করেন মিলিটারি-মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপরে চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয় মীরাট থেকে। আমেরিকান আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে হায়ার কমান্ড কোর্স করেন তিনি। নিজে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন অনেক দিন। ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ও জেনারেল সুহাগের পরে ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্ট থেকে উঠে আসা বিপিন রাওয়াত ছিলেন তৃতীয় সেনাপ্রধান।
১৯৮৭ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমা নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে সুমদরং ছু ভ্যালিতে। যেখানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ভারতীয় সেনাকে ম্যাকমোহন লাইন থেকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি। সেখানে তখন পাহাড়া দিচ্ছিল রাওয়াতের ব্যাটালিয়ন। কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনা বেশ কয়েকবার অসীম সাহস ও কুশলতা দেখিয়ে সেই দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচায়। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, তাঁর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নম্বর ৩ কোরের কোর কমান্ডার লে. জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
৮ ডিসেম্বর সকালে জেনারেল রাওয়াত দিল্লি থেকে ভিআইপি ফ্লাইটে দক্ষিণ ভারতের কোয়েমাবটুরে আসেন। এখানে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বানানো রানওয়ে ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৪৩ নম্বর উয়িং। এখান থেকে শুরু হয় নীলগিরি পাহাড়। তাঁর গন্তব্য ছিল সেই পাহাড়ের গায়ে ওয়েলিংটনে অবস্থিত ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ। সেখানে তাঁকে বর্তমান ট্রেনি অফিসারদের সম্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু নিয়তির ইচ্ছে ছিল ভিন্ন।
সুলুরের ১০৯ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার একটি মি-১৭ ভি-৫ হেলিকপ্টার নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতে টেক অফ করেন। ওয়েলিংটনে পৌঁছানোর আগেই পাহাড়ের গায়ে হেলিকপ্টার এক অজানা কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে। হেলিকপ্টারে আগুন ধরে যায় এবং ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে একজন বাদে সবাই মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে জেনারেল বিপিওন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা আছেন।
উটির উচ্চতা ২২৪০ মিটার। এই উচ্চতায় মেঘ ও কুয়াশার এক অসাধারণ প্রাকৃতিক খেলা দেখা যায়। দুর্ঘটনার কারণ এখনই বলা মুশকিল। তবে পাহাড়ের খাঁজে দুপুরের দিকে বাতাসের ঘনত্ব হঠাৎ পালটে যাওয়া বা মেঘ কুয়াশার ফলে দৃশ্যমানতার অভাব ঘটতে পারে। তার মধ্য দিয়ে হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়া পাহাড়ি খাদে অবশ্যই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি করে। অনেকেই অবশ্য সন্দেহ করছেন কোনো অন্তর্ঘাতমূলক কাজের। তবে সেই আশঙ্কা একবারে উড়িয়ে না দিলেও জেনারেল রাওয়াতের ওপরে এতটা হুমকি ছিল বলে মনে হয় না।
একজন সেনানায়কের যে ভূমিকা থাকা দরকার, তিনি ঠিক সেই ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে এই দুর্ঘটনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের সেনা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
লেখক: প্রাক্তন ভারতীয় বিমান সেনা। বর্তমানে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালের জ্যেষ্ঠ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।

ভারতের অন্যতম সম্মানীয় সেনাপতি জেনারেল বিপিন রাওয়াত, যিনি ৪৩ বছরের সেনাজীবনে দেশের প্রায় সব প্রান্তে কাজ করেছেন। সঙ্গে এক বছর কঙ্গোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সেনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর পাওয়া পদকের মধ্যে আছে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল, উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল, অতি বিশিষ্ট সেবা মেডেল, যুদ্ধ সেবা মেডেল, সেনা মেডেল, বিশিষ্ট সেনা মেডেল ইত্যাদি।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো ভারতে কখনোই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ছিল না। বরং তিন বাহিনীর তিন প্রধানের মধ্যে সিনিয়র ব্যক্তি চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু কার্গিলের পর থেকেই একজন সর্বাধিনায়কের প্রয়োজন ভারত অনুভব করছিল। বেশ কয়েক বছরের টালবাহানার পরে বর্তমান সরকার এই পদের মঞ্জুরি দেয়। তত দিনে তিন বাহিনীর আলাদা আলাদা কমান্ড ভাগ থেকে সরে এসে চীন বা আমেরিকার স্টাইলে থিয়েটার কমান্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে আর্মি, এয়ারফোর্স, নেভি সম্মিলিতভাবে একই কমান্ডের অধীনে মুখ্যত আর্মি কমান্ডারের আদেশানুযায়ী কাজ করবে বলে ঠিক হয়।
সেই অবস্থায় একজনকে দেশের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। আর সে ক্ষেত্রে সাবেক আর্মি চিফ জেনারেল রাওয়াত ছিলেন একমাত্র পছন্দের ব্যক্তি। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—সব মিলিয়ে তাঁর চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
উত্তর ভারতের গাড়োয়ালিরা এমনিতেই যোদ্ধা জাতি। তাতে জেনারেল রাওয়াত নিজে ছিলেন চতুর্থ প্রজন্মের ভারতীয় সেনা। উত্তর ভারতে সেনাবাহিনীতে ‘সেবা’ করা অত্যন্ত গর্বের বলে মনে করা হয়। জেনারেল রাওয়াতের বাবা ছিলেন গোর্খা রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁর পিতামহ ও প্রপিতামহ দুজনেই কাজ করেছেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। ওদিকে তাঁর মামাদাদু ছিলেন উত্তরকাশীর বিধায়ক। রাজনীতি আর যুদ্ধনীতি একসঙ্গে তাঁর ধমনিতে বইছিল। ফলে যথারীতি বিপিন রাওয়াত নিজেও ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (যা ভারতের প্রায় সমস্ত চিফের প্রথম ট্রেনিং অ্যাকাডেমি) থেকে পাস করে এবং পরে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ট্রেনিং নিয়ে তাঁর বাবা যে রেজিমেন্টের কমান্ডার ছিলেন, সেই ১১ গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন।
পরে জেনারেল বিপিন ৫/১১ গোর্খা রাইফেলস কমান্ড করেন। এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনাবাহিনী, নম্বর ৩ কোর, দক্ষিণ সেনা কমান্ড ইত্যাদিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ আর চিফ অব আর্মি স্টাফে উন্নীত হন তিনি।
বিপিন রাওয়াতের শিক্ষাগত যোগ্যতা যেকোনো শিক্ষাবিদকে লজ্জায় ফেলবে। জেনারেল রাওয়াত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছিলেন। তারপর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন, তিনি সেই কলেজেই বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া ডিফেন্স স্টাডিজে এমফিল করেছিলেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, ডক্টরেট করেন মিলিটারি-মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপরে চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয় মীরাট থেকে। আমেরিকান আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে হায়ার কমান্ড কোর্স করেন তিনি। নিজে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন অনেক দিন। ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ও জেনারেল সুহাগের পরে ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্ট থেকে উঠে আসা বিপিন রাওয়াত ছিলেন তৃতীয় সেনাপ্রধান।
১৯৮৭ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমা নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে সুমদরং ছু ভ্যালিতে। যেখানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ভারতীয় সেনাকে ম্যাকমোহন লাইন থেকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি। সেখানে তখন পাহাড়া দিচ্ছিল রাওয়াতের ব্যাটালিয়ন। কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনা বেশ কয়েকবার অসীম সাহস ও কুশলতা দেখিয়ে সেই দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচায়। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, তাঁর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নম্বর ৩ কোরের কোর কমান্ডার লে. জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
৮ ডিসেম্বর সকালে জেনারেল রাওয়াত দিল্লি থেকে ভিআইপি ফ্লাইটে দক্ষিণ ভারতের কোয়েমাবটুরে আসেন। এখানে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বানানো রানওয়ে ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৪৩ নম্বর উয়িং। এখান থেকে শুরু হয় নীলগিরি পাহাড়। তাঁর গন্তব্য ছিল সেই পাহাড়ের গায়ে ওয়েলিংটনে অবস্থিত ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ। সেখানে তাঁকে বর্তমান ট্রেনি অফিসারদের সম্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু নিয়তির ইচ্ছে ছিল ভিন্ন।
সুলুরের ১০৯ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার একটি মি-১৭ ভি-৫ হেলিকপ্টার নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতে টেক অফ করেন। ওয়েলিংটনে পৌঁছানোর আগেই পাহাড়ের গায়ে হেলিকপ্টার এক অজানা কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে। হেলিকপ্টারে আগুন ধরে যায় এবং ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে একজন বাদে সবাই মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে জেনারেল বিপিওন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা আছেন।
উটির উচ্চতা ২২৪০ মিটার। এই উচ্চতায় মেঘ ও কুয়াশার এক অসাধারণ প্রাকৃতিক খেলা দেখা যায়। দুর্ঘটনার কারণ এখনই বলা মুশকিল। তবে পাহাড়ের খাঁজে দুপুরের দিকে বাতাসের ঘনত্ব হঠাৎ পালটে যাওয়া বা মেঘ কুয়াশার ফলে দৃশ্যমানতার অভাব ঘটতে পারে। তার মধ্য দিয়ে হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়া পাহাড়ি খাদে অবশ্যই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি করে। অনেকেই অবশ্য সন্দেহ করছেন কোনো অন্তর্ঘাতমূলক কাজের। তবে সেই আশঙ্কা একবারে উড়িয়ে না দিলেও জেনারেল রাওয়াতের ওপরে এতটা হুমকি ছিল বলে মনে হয় না।
একজন সেনানায়কের যে ভূমিকা থাকা দরকার, তিনি ঠিক সেই ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে এই দুর্ঘটনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের সেনা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
লেখক: প্রাক্তন ভারতীয় বিমান সেনা। বর্তমানে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালের জ্যেষ্ঠ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।

ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৪ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৭ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে রাজধানী এক্সপ্রেসের শক্তিশালী ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা সত্ত্বেও ট্রেনের যাত্রীরা সবাই সুরক্ষিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং ডিভিশনের অন্তর্গত যমুনামুখ-কামপুর সেকশনে শুক্রবার রাত ২টো ১৭ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় ১১-১২টি হাতির একটি পাল রেললাইন পার হচ্ছিল। ঘন কুয়াশা ও রাতের অন্ধকারের মধ্যে দ্রুতগতিতে থাকা সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসটি হাতির পালের ওপর উঠে পড়ে। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে সাতটি হাতি এবং ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় হাতির যাতায়াত থাকলেও ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করার মতো পর্যাপ্ত সতর্কতা ছিল না।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা কপিঞ্জলকিশোর শর্মা জানিয়েছেন, যে স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে কোনো নির্ধারিত ‘এলিফ্যান্ট করিডর’ ছিল না। তিনি বলেন, ‘চালক লাইনের ওপর হাতির পাল দেখতে পেয়েই দ্রুত আপৎকালীন ব্রেক কষেছিলেন। কিন্তু ট্রেনের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি থাকায় এবং দূরত্ব কম হওয়ায় ধাক্কা এড়ানো সম্ভব হয়নি।’
রেল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর ট্রেনের কোনো যাত্রী আহত হননি এবং লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার করে লাইন সচল করার কাজ চলছে।
দুর্ঘটনাস্থলটি আসামের গুয়াহাটি থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে হোজাই জেলায় অবস্থিত। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রকৌশলী এবং বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেলের পক্ষ থেকে দ্রুত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জেরে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাকি দেশের রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রাপথ রিশিডিউল করা হয়েছে এবং অনেক ট্রেনকে বিকল্প পথে চালানো হচ্ছে।
বন দপ্তরের বিশেষ দল ইতিমধ্যে মৃত হাতিগুলোর ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত হাতিগুলোর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হাতির পাশাপাশি শাবকও থাকতে পারে। রেললাইনটি হাতির চলাচলের স্বাভাবিক পথ না হওয়া সত্ত্বেও কেন সেখানে হাতির পাল এল এবং চালকের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বন্য প্রাণীপ্রেমীরা এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং রেললাইনের ধারে সেন্সর বা আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে রাজধানী এক্সপ্রেসের শক্তিশালী ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা সত্ত্বেও ট্রেনের যাত্রীরা সবাই সুরক্ষিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং ডিভিশনের অন্তর্গত যমুনামুখ-কামপুর সেকশনে শুক্রবার রাত ২টো ১৭ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় ১১-১২টি হাতির একটি পাল রেললাইন পার হচ্ছিল। ঘন কুয়াশা ও রাতের অন্ধকারের মধ্যে দ্রুতগতিতে থাকা সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসটি হাতির পালের ওপর উঠে পড়ে। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে সাতটি হাতি এবং ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় হাতির যাতায়াত থাকলেও ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করার মতো পর্যাপ্ত সতর্কতা ছিল না।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা কপিঞ্জলকিশোর শর্মা জানিয়েছেন, যে স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে কোনো নির্ধারিত ‘এলিফ্যান্ট করিডর’ ছিল না। তিনি বলেন, ‘চালক লাইনের ওপর হাতির পাল দেখতে পেয়েই দ্রুত আপৎকালীন ব্রেক কষেছিলেন। কিন্তু ট্রেনের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি থাকায় এবং দূরত্ব কম হওয়ায় ধাক্কা এড়ানো সম্ভব হয়নি।’
রেল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর ট্রেনের কোনো যাত্রী আহত হননি এবং লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার করে লাইন সচল করার কাজ চলছে।
দুর্ঘটনাস্থলটি আসামের গুয়াহাটি থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে হোজাই জেলায় অবস্থিত। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রকৌশলী এবং বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেলের পক্ষ থেকে দ্রুত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জেরে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাকি দেশের রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রাপথ রিশিডিউল করা হয়েছে এবং অনেক ট্রেনকে বিকল্প পথে চালানো হচ্ছে।
বন দপ্তরের বিশেষ দল ইতিমধ্যে মৃত হাতিগুলোর ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত হাতিগুলোর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হাতির পাশাপাশি শাবকও থাকতে পারে। রেললাইনটি হাতির চলাচলের স্বাভাবিক পথ না হওয়া সত্ত্বেও কেন সেখানে হাতির পাল এল এবং চালকের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বন্য প্রাণীপ্রেমীরা এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং রেললাইনের ধারে সেন্সর বা আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—এই সব মিলিয়ে বিপিন রাওয়াতের চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেব নিযুক্ত করা হয়।
০৯ ডিসেম্বর ২০২১
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৭ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গের প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে আক্রমণ করার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ‘অর্থহীন’।
পুতিন দাবি করেন, রাশিয়ার প্রতি সম্মান দেখানো হলে এবং পূর্বদিকে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ‘প্রতারণা’ বন্ধ করলে নতুন কোনো বিশেষ সামরিক অভিযান হবে না। তিনি তাঁর পুরোনো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ১৯৯০ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে ন্যাটো সম্প্রসারণ না করার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, পশ্চিম তা মানেনি।
মস্কোর একটি হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পুতিনের পেছনে রাশিয়ার বিশাল মানচিত্র ঝুলছিল। এই মানচিত্রে ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল, এমনকি ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল। রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি, ওই অনুষ্ঠানটিতে পুতিনকে উদ্দেশ্য করে ৩০ লাখের বেশি প্রশ্ন জমা পড়েছিল।
ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত। তবে কোনো ধরনের আপসের ইঙ্গিত দেননি। তিনি আবারও দাবি করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে এবং রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা সরিয়ে নিতে হবে। আংশিকভাবে দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় রাশিয়া।
দেশের অর্থনীতির প্রশ্নে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয় স্বীকার করেন পুতিন। অনুষ্ঠানের মধ্যেই রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১৬ শতাংশে নামানোর ঘোষণা দেয়। বিদেশনীতি, অর্থনীতি ও যুদ্ধের পাশাপাশি অনুষ্ঠানজুড়ে উঠে আসে মাতৃভূমি, প্রবীণ সেনাদের সম্মান এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা।
পুতিন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের সঙ্গে ‘সমান মর্যাদা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে’ কাজ করতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাশিয়া ভবিষ্যতে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে—পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন আশঙ্কার কথা আবারও তা নাকচ করে দেন তিনি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গের প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে আক্রমণ করার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ‘অর্থহীন’।
পুতিন দাবি করেন, রাশিয়ার প্রতি সম্মান দেখানো হলে এবং পূর্বদিকে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ‘প্রতারণা’ বন্ধ করলে নতুন কোনো বিশেষ সামরিক অভিযান হবে না। তিনি তাঁর পুরোনো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ১৯৯০ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে ন্যাটো সম্প্রসারণ না করার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, পশ্চিম তা মানেনি।
মস্কোর একটি হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পুতিনের পেছনে রাশিয়ার বিশাল মানচিত্র ঝুলছিল। এই মানচিত্রে ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল, এমনকি ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল। রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি, ওই অনুষ্ঠানটিতে পুতিনকে উদ্দেশ্য করে ৩০ লাখের বেশি প্রশ্ন জমা পড়েছিল।
ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত। তবে কোনো ধরনের আপসের ইঙ্গিত দেননি। তিনি আবারও দাবি করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে এবং রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা সরিয়ে নিতে হবে। আংশিকভাবে দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় রাশিয়া।
দেশের অর্থনীতির প্রশ্নে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয় স্বীকার করেন পুতিন। অনুষ্ঠানের মধ্যেই রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১৬ শতাংশে নামানোর ঘোষণা দেয়। বিদেশনীতি, অর্থনীতি ও যুদ্ধের পাশাপাশি অনুষ্ঠানজুড়ে উঠে আসে মাতৃভূমি, প্রবীণ সেনাদের সম্মান এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা।
পুতিন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের সঙ্গে ‘সমান মর্যাদা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে’ কাজ করতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাশিয়া ভবিষ্যতে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে—পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন আশঙ্কার কথা আবারও তা নাকচ করে দেন তিনি।

রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—এই সব মিলিয়ে বিপিন রাওয়াতের চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেব নিযুক্ত করা হয়।
০৯ ডিসেম্বর ২০২১
ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৪ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৭ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই শুনানি আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এক দশকের বেশি সময় পর এটি হবে আইসিজেতে কোনো গণহত্যা মামলার মূল বিষয়ের ওপর শুনানি। একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুনানির প্রথম সপ্তাহে (১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি) মামলার বাদী দেশ গাম্বিয়া আদালতে তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করবে। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া ২০১৯ সালে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
এরপর ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পাবে। মিয়ানমার সরকার বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আইসিজে জানিয়েছে, এ মামলায় তিন দিন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এসব শুনানি জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের জন্য বন্ধ থাকবে।
জাতিসংঘের একটি তদন্ত মিশন ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ সংঘটিত হয়েছিল বলে প্রতিবেদন দেয়। ওই অভিযানে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমার অবশ্য জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করেছে। দেশটির বক্তব্য, সে সময়কার অভিযান ছিল রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, যারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল।
মামলাটি ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী দায়ের করা হয়েছে। নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিদের গণহত্যার পর এ সনদ প্রণয়ন করা হয়। এতে গণহত্যা বলতে কোনো জাতিগত, ধর্মীয় বা নৃগোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে বোঝানো হয়েছে।
গাম্বিয়া ও মিয়ানমার—দুই দেশই এ সনদের স্বাক্ষরকারী হওয়ায় আইসিজের এ মামলার বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে।
১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদের পর আইসিজে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার গণহত্যার ঘটনা নিশ্চিত করেছে। এটি ছিল ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসায় প্রায় ৮ হাজার মুসলিম পুরুষ ও কিশোর হত্যাকাণ্ড।
গাম্বিয়া ও মামলায় হস্তক্ষেপকারী অন্য দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এই পাঁচ দেশ আদালতে যুক্তি দিয়েছে, গণহত্যা শুধু ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের মতে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও গণহত্যার উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই শুনানি আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এক দশকের বেশি সময় পর এটি হবে আইসিজেতে কোনো গণহত্যা মামলার মূল বিষয়ের ওপর শুনানি। একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুনানির প্রথম সপ্তাহে (১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি) মামলার বাদী দেশ গাম্বিয়া আদালতে তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করবে। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া ২০১৯ সালে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
এরপর ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পাবে। মিয়ানমার সরকার বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আইসিজে জানিয়েছে, এ মামলায় তিন দিন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এসব শুনানি জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের জন্য বন্ধ থাকবে।
জাতিসংঘের একটি তদন্ত মিশন ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ সংঘটিত হয়েছিল বলে প্রতিবেদন দেয়। ওই অভিযানে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমার অবশ্য জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করেছে। দেশটির বক্তব্য, সে সময়কার অভিযান ছিল রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, যারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল।
মামলাটি ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী দায়ের করা হয়েছে। নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিদের গণহত্যার পর এ সনদ প্রণয়ন করা হয়। এতে গণহত্যা বলতে কোনো জাতিগত, ধর্মীয় বা নৃগোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে বোঝানো হয়েছে।
গাম্বিয়া ও মিয়ানমার—দুই দেশই এ সনদের স্বাক্ষরকারী হওয়ায় আইসিজের এ মামলার বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে।
১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদের পর আইসিজে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার গণহত্যার ঘটনা নিশ্চিত করেছে। এটি ছিল ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসায় প্রায় ৮ হাজার মুসলিম পুরুষ ও কিশোর হত্যাকাণ্ড।
গাম্বিয়া ও মামলায় হস্তক্ষেপকারী অন্য দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এই পাঁচ দেশ আদালতে যুক্তি দিয়েছে, গণহত্যা শুধু ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের মতে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও গণহত্যার উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—এই সব মিলিয়ে বিপিন রাওয়াতের চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেব নিযুক্ত করা হয়।
০৯ ডিসেম্বর ২০২১
ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৪ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।
১৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমের ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর।
শশী থারুর সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশে চলমান এই সহিংসতা সাধারণ বাংলাদেশিদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতাকে সংকুচিত করে দিচ্ছে। তিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা এবং ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে থারুর বলেছেন, ‘সহিংসতার কারণে আমাদের দুটি ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ, যেসব বাংলাদেশি ভারতে আসতে চান, তাঁরাই এখন অভিযোগ করছেন যে আগে যেভাবে সহজে ভিসা পাওয়া যেত, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না।’
থারুর উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি ভারত সরকারের পক্ষে সাধারণ বাংলাদেশিদের সাহায্য করা কঠিন করে তুলছে।
বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে থারুর বলেন, ‘আমি আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে বলব যেন তারা প্রতিবেশীর সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝে। বাজপেয়ি সাহেব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যেমনটি বলেছিলেন—আমরা আমাদের ভূগোল পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
শশী থারুর জানান, নয়াদিল্লি পুরো পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তারা সরাসরি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে অনুরোধ জানাবে।’

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমের ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর।
শশী থারুর সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশে চলমান এই সহিংসতা সাধারণ বাংলাদেশিদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতাকে সংকুচিত করে দিচ্ছে। তিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা এবং ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে থারুর বলেছেন, ‘সহিংসতার কারণে আমাদের দুটি ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ, যেসব বাংলাদেশি ভারতে আসতে চান, তাঁরাই এখন অভিযোগ করছেন যে আগে যেভাবে সহজে ভিসা পাওয়া যেত, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না।’
থারুর উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি ভারত সরকারের পক্ষে সাধারণ বাংলাদেশিদের সাহায্য করা কঠিন করে তুলছে।
বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে থারুর বলেন, ‘আমি আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে বলব যেন তারা প্রতিবেশীর সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝে। বাজপেয়ি সাহেব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যেমনটি বলেছিলেন—আমরা আমাদের ভূগোল পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’
শশী থারুর জানান, নয়াদিল্লি পুরো পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তারা সরাসরি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে অনুরোধ জানাবে।’

রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—এই সব মিলিয়ে বিপিন রাওয়াতের চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেব নিযুক্ত করা হয়।
০৯ ডিসেম্বর ২০২১
ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলায় এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল সাতটি বন্য হাতি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাইরাং-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে হাতির পালের এই ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় একটি হাতি গুরুতর জখম হয়েছে, যার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।
৪ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১৭ ঘণ্টা আগে