বিয়ের প্রতিশ্রুতির পর সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক ধর্ষণ নয়: কলকাতা হাইকোর্ট

অনলাইন ডেস্ক    
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ৪৪
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭: ৪৯
কলকাতা হাইকোর্ট। ছবি সংগৃহীত

বিয়ের প্রতিশ্রুতি বা প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পর, কখনো সম্পর্ক ছিন্ন হলে সাধারণত ধর্ষণ মামলা করে থাকেন ভুক্তভোগী। মামলার অভিযোগে ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’ কথাটি লেখা থাকে। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই এমন আইন রয়েছে। তবে কলকাতা হাইকোর্ট মত দিয়েছেন, এমন ক্ষেত্রে প্রমাণ ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো পুরুষকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় না।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাঁকুড়ায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলায় নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় রায়ে বলেছেন, গ্রহণযোগ্য প্রমাণ ছাড়া সেই নারী এমন দাবি করতে পারেন না যে, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই পুরুষ তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন।

বিচারপতি অনন্যা মামলার নিষ্পত্তি করতে গিয়ে বলেন, ‘মামলাকারী নারীর একটি নির্দিষ্ট বক্তব্যের ওপর নিম্ন আদালত গুরুত্ব আরোপ করেছে। অভিযোগকারী নিজেই স্বীকার করেছেন, তিনি স্বেচ্ছায় এবং কোনো প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ ছাড়াই ওই পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। পরে আবার তিনিই সেই পুরুষ সঙ্গীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন।;

বিচারপতি অনন্যা আরও বলেন, বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা হলো একটা ‘ধারণা’। এভাবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী এই অজুহাত বা ধারণাকে কারও বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারেন না।

ওই মামলায় নিম্ন আদালতে সাজা পেয়েছেন অভিযুক্ত। তাঁর আইনজীবীরা জানান, বাঁকুড়ার ছাতনা থানায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগের একটি মামলায় ধর্ষণের অপরাধের ধারা রুজু করেছিল পুলিশ।

আইনজীবীদের দাবি, তাঁদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মামলায় ২০১১ সালের ১২ জুলাই বাঁকুড়া অতিরিক্ত দায়রা আদালত রায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি)–এর ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন। তাঁকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত। অবশ্য তিনি এতদিন জামিনে ছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার মামলার নিষ্পত্তি করে বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণ দেন যে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী যদি কারও সঙ্গে, সম্পূর্ণ পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত থাকেন, তাহলে পরবর্তীতে যথাযথ প্রমাণ ছাড়া সেই নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন— এমন কথা বলা যায় না। যিনি স্বেচ্ছায় এবং কোনো রকম প্রতিরোধ ছাড়াই তাঁর সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন, পরবর্তীতে তিনি এভাবে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনতে পারেন না, যদি না তাঁর কাছে এ বিষয়ে জোরালো প্রমাণ থাকে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত