Ajker Patrika

আটক বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে দেরি কেন, প্রশ্ন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের

অনলাইন ডেস্ক
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ ঘোষিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে দেরি হচ্ছে কেন জানতে চেয়েছেন ভারতের আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার, দেশটির কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ প্রশ্ন করেন সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেন, এটি দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এমন ধরনের শিথিলতা অন্য কোনো দেশে হয়তো সহ্য করা হতো না।

কেন্দ্রের পক্ষে উপস্থিত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটিকে বিচারপতি জে. বি. পার্দিওয়ালা প্রশ্ন করেন, ‘তাদের রাখতে দেশের মধ্যে কতগুলো সংশোধনাগার তৈরি করবেন? কত দিন এই মানুষগুলোকে সংশোধনাগারে রাখা হবে?

বিচারক বলেন, ‘যাঁরা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে কারাগারে আটক রয়েছে, তাদের আশ্রয় ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়। যদি তারা অন্য কোনো দেশে থাকতেন, হয়তো এত দিনে মারাও যেতেন।’

২০১৩ সালের একটি পিটিশনের রায়ে এ কথা বলেন বিচারপতি জে. বি. পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর. মহাদেবনের এই বেঞ্চ। বাংলাদেশি অভিবাসীদের দুর্দশা তুলে ধরে ওই পিটিশনে বলা হয়েছিল, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করায় সাজাপ্রাপ্ত এই অভিবাসীরা সাজা ভোগের পরও পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে বন্দী আছেন।

কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের প্রধান মাজা দারুওয়ালা ২০১১ সালে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতিকে এই অবৈধ অভিবাসীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি চিঠি লিখেছিলেন। দারওয়ালার আবেদন পরে সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তরিত হয়, কারণ সুপ্রিম কোর্টে তখন অন্যান্য রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে বিচার চলমান ছিল।

গত মঙ্গলবার শুনানির শেষ দিনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী বলেন, অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো বিলম্ব হওয়া অন্যতম কারণ বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকে অভিবাসীদের পরিচয়ের সঠিক যাচাই ও নিশ্চিতকরণের প্রয়োজন।

বিচারপতি পার্দিওয়ালা বলেন, ‘যখন একজন অভিবাসীকে আটক করে বিদেশি আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তারপর প্রতিবেশী দেশকে তাঁর জাতীয়তার ব্যাপারে তথ্য সরবরাহের কি প্রয়োজন?’

কেন্দ্রের পক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি বলেন, দুই দেশের সীমান্ত জটিলতার কারণে বিষয়গুলোতে বিলম্ব হচ্ছে। সরকার যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করার জন্য চেষ্টা করছে।

ভাটির এ বক্তব্যের পর বেঞ্চ মন্তব্য করেন: ‘এতে নিরাপত্তার বিষয়ও রয়েছে...’

এনজিওর পক্ষে আইনজীবী ভৃন্দা গ্রোভার যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে যাদের সাজা শেষ হয়েছে, তাদের দীর্ঘকালীন কারাবাস দিয়ে তাদের মৌলিক অধিকার, বিশেষত ২১ নম্বর ধারা (জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার) লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ঘোষিত অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয়গৃহগুলোতে রাখার জন্য আসাম সরকারের কাছে নির্দেশ দিয়েছিল।

পূর্ববর্তী শুনানিতে বেঞ্চ উল্লেখ করেছিল, ফরেনার্স অ্যাক্টের ধারা ২ (ভি) পড়লেই বোঝা যায়, ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা উচিত। কেন এই ধারা ২ (ভি) কঠোরভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮৫৮ জন বাংলাদেশি যাঁদের কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪৯৫ জন (৪২১ পুরুষ ও ৭৪ নারী) সাজা শেষ করে মুক্তি পেয়েছেন এবং বাংলাদেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসক প্রকাশ্যে জানালেন, ধূমপান করতে চাচ্ছেন তামিম

তামিমের ধূমপানের তথ্য প্রকাশ চিকিৎসকের ‘পেশাগত নৈতিকতা’ লঙ্ঘন

ভাষাশহীদ ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রাষ্ট্রীয় সালাম দিলেন না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি এহতেশামুল

৪টি জাহাজ কিনতে বাংলাদেশকে ঋণ দেবে চীন: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত