তিস্তার স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা বাঁধ, খুলে দেওয়া হয়েছে সব গেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৩: ২৩
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ৪০

ভারতের সিকিমের লোনাক হ্রদের পানি উপচে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে প্রবল বন্যার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যের চুংথাং বাঁধ। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বন্যার পানি প্রবল বেগে নেমে আসছে নিচের দিকে। সেই ধাক্কা লেগেছে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার জলপাইগুড়ি বাঁধে। পানির তোড়ে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁধটি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাতে না বাড়ে, সেই লক্ষ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে বাঁধের সব কটি স্লুইসগেট। 

সিকিমে আকস্মিক বন্যা ও তিস্তার ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাংলাদেশের উত্তরের পাঁচ জেলার তিস্তা-তীরবর্তী এলাকায় বন্যার আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। উজানের ঢলে গতকাল বুধবার থেকে অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে তিস্তার পানি। ইতিমধ্যে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় এই পয়েন্টে তিস্তার পানি ৯০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। মূলত তিস্তা নদীর ওপর অবস্থিত গজলডোবা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়ার কারণেই পানি বাড়ছে দ্রুত। 

পশ্চিমবঙ্গের কর্মকর্তা বলছেন, সিকিমের বন্যার ধাক্কা লেগেছে পশ্চিমবঙ্গেও। এরই মধ্যে জলপাইগুড়িতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পানি কমলেই গজলডোবা বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। 

এদিকে, বাংলাদেশে বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে পাউবো গতকাল বুধবার দুপুরে জানিয়েছে, ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ভারতের সিকিম অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় তিস্তা নদীতে বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাংলাদেশের নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় তিস্তাতীরবর্তী এলাকাসমূহ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে এমন সম্ভাবনা কম। তিস্তায় পানির পরিমাণ এতটাই বেশি যে, জলপাইগুড়ির সেবক ব্রিজের মূল কাঠামোর মাত্র চার ফুট নিচে উঠে এসেছে তিস্তার পানির স্তর। তাই এখানে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরের পাশে তিস্তা রেল ব্রিজের নিচেও পানির স্তর অনেকটা বেড়ে গেছে। 

জলপাইগুড়ির স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিস্তায় সমানে মৃতদেহ ভেসে আসছে। সেই সঙ্গে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার, বাসনপত্র, পোশাকসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ভেসে আসছে। রাজ্য সরকার এরই মধ্যে জলপাইগুড়িতে ২৮টি ত্রাণশিবির খুলেছে। জেলার তিস্তার দুই পার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে পাঁচ হাজার মানুষকে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত