হারিয়ে যাওয়ার ২২ বছর পর সন্ন্যাসীর বেশে মায়ের কাছে ভিক্ষা চাইলেন ছেলে

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

প্রায় দুই দশক পর ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি গ্রামে রহস্যজনকভাবে ফিরে এসেছেন পিংকু নামে এক ব্যক্তি। ২২ বছর আগে মাত্র ১১ বছর বয়সে দিল্লি থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি সন্ন্যাসীর বেশে গ্রামে ফিরে তিনি তাঁর মায়ের কাছে ভিক্ষা দাবি করেন।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মা ও ছেলের আবেগঘন পুনর্মিলনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, ঐতিহ্যবাহী গেরুয়া পোশাকে ৩৩ বছর বয়সী পিংকু এখন পুরোদস্তুর সন্ন্যাসী। তিন-তারের একটি সারেঙ্গি বাজিয়ে বিষণ্ন সুরে গান গেয়ে মায়ের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করছেন তিনি।

সন্ন্যাসী পিংকু তাঁর মায়ের সামনে যে গানটি গাইছিলেন তা ভারতীয় লোককাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র রাজা ভার্থারিকে নিয়ে। লোককাহিনি অনুযায়ী, রাজা ভার্থারি একদা সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য একটি সমৃদ্ধ রাজ্য ত্যাগ করেছিলেন।

দীর্ঘ বছর পর হারানো ছেলে ফিরে এসে যখন গান গাইছিল, তাঁর মা তখন অঝোর ধারায় কাঁদছিলেন।

জানা যায়, ২০০২ সালে মার্বেল খেলা নিয়ে বাবার সঙ্গে মতবিরোধের জের ধরে দিল্লিতে থাকা নিজেদের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন রতিপাল সিংয়ের ছেলে পিংকু। মা ভানুমতিও পিংকুকে বকাঝকা করেছিলেন। রাগ করে তাই তিনি এমন একটি যাত্রা শুরু করেছিলেন, যা তাঁকে দুই দশক ধরে পরিবারের কাছ থেকে দূরে রেখেছে।

গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের আমেতি জেলার খরৌলি গ্রামে নিজেদের আদিপুরুষের বাড়িতে ফিরে আসেন পিংকু। তাঁর এমন হঠাৎ আগমনে হতবাক হয়ে যায় গ্রামবাসী। তারা পিংকুকে জানান, তাঁর বাবা-মা এখনো দিল্লিতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গ্রামবাসী দিল্লিতে থাকা পিংকুর বাবা-মাকে খবরটি জানায়।

বাবা-মা গ্রামে এসে শরীরের দাগ দেখে পিংকুকে চিনতে পারেন। তবে সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়ের পুনর্মিলনটি স্বল্পস্থায়ী ছিল। বাবা-মা এবং গ্রামবাসীর অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও পিংকু আবারও গ্রাম ছেড়ে চলে যান।

পিংকুর বাবা রতিপাল সিং জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে জড়িত। ছেলেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ওই সম্প্রদায় ১১ লাখ ভারতীয় মুদ্রা দাবি করছে।

রতিপাল বলেন, ‘আমার পকেটে ১১ টাকা নাই, আমি কীভাবে ১১ লাখ টাকা দেব।’

গ্রাম ত্যাগের আগে পিংকু জানিয়ে গেছেন, তিনি আর পারিবারিক বন্ধন দ্বারা চালিত নন। একটি ধর্মীয় আচার দ্বারা তিনি এখন পরিচালিত হচ্ছেন। ধর্মীয় ওই আচার অনুযায়ী, সন্ন্যাস জীবনের উচ্চতর স্থরে পৌঁছাতে অবশ্যই কোনো তপস্বীকে তাঁর মায়ের কাছ থেকে ভিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত