অনাগত সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে—জানিয়ে বিপদে ভারতীয় ইউটিউবার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৪, ১৮: ২৬
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১৮: ২৯

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ত্রীর গর্ভে থাকা সন্তানটি ছেলে নাকি মেয়ে, তা জন্মের আগেই জানিয়েছিলেন ভারতীয় ইউটিউবার ইরফান শারদ। তবে এই ঘোষণায় এবার বিপদে পড়েছেন তিনি। কারণ ভারতে জন্মের আগে সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানা নিষিদ্ধ। 

এই বিষয়ে আজ বুধবার এনডিটিভি টিভি জানিয়েছে, ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ায় সন্তানের লিঙ্গ জানার জন্য সম্প্রতি দুবাই গিয়েছিলেন ইরফান এবং তাঁর স্ত্রী। ইরফান মূলত খাবারের ভ্লগ তৈরি করেন। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলটি বিপুল জনপ্রিয়। বর্তমানে তাঁর চ্যানেলে ৪২ লাখ ৯০ হাজারের বেশি অনুসারী রয়েছে। 

সম্প্রতি একটি ভিডিওতে অনাগত সন্তানের লিঙ্গ কী, তা ফাঁস করেন ইরফান। এ সময় ভিডিওতে একটি ডাক্তারি পরীক্ষার ফুটেজও দেখান তিনি। ওই ভিডিওটি পরে প্রায় ২০ লাখ ভিউ হয়েছে। 

অনাগত সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় ফাঁস করা ভারতে শুধু নিষিদ্ধই নয়, এর জন্য সুনির্দিষ্ট শাস্তিরও বিধান রয়েছে। ভারত সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে, যেন লিঙ্গগত কারণে কোনো শিশু গর্ভপাতের শিকার না হয়। এক সময় দেশটিতে অসংখ্য বাবা-মা তাঁদের কন্যাশিশুটিকে গর্ভে থাকা অবস্থায় নষ্ট করে ফেলতেন। এর ফলে ভারতের জনসংখ্যায় লিঙ্গ ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। পরে ১৯৯৪ সালে জন্মের আগে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে একটি আইন চালু করা হয়। ওই আইনেরই আওতায় এবার ইউটিউবার ইরফান শারদকে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে তামিল নাড়ুর স্বাস্থ্য বিভাগ। 

ইরফানকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে—আইনি ব্যবস্থা হিসেবে প্রয়োগকারী কর্মকর্তা জনাব ইরফানকে একটি নোটিশ পাঠিয়েছেন। এই ধরনের পদক্ষেপ শুধুমাত্র তামিলনাড়ুতে নয়, সারা দেশেই কন্যা সন্তানের জন্ম হ্রাস করতে পারে। 

তামিল নাড়ুর স্বাস্থ্য বিভাগ ভিডিওটি ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম থেকে মুছে ফেলার জন্য সাইবার নিরাপত্তা উইং এবং পুলিশের কাছেও চিঠি দেয়। তবে ইউটিউবার ইরফান শারদ জানান, তিনি ইতিমধ্যেই ভিডিওগুলো সরিয়ে নিয়েছেন। আর স্বাস্থ্য বিভাগের নোটিশ হাতে পৌঁছালে, তিনি এটির জবাব দেবেন। 

এদিকে সরিয়ে নেওয়ার আগে ইরফানের ভিডিও দেখে অনেকেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবার বিষয়টিকে একটি বাজে অনুশীলন হিসেবে আখ্যা দেন। তারা বলেন—সন্তানের লিঙ্গ জানার জন্য দম্পতিদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা বাড়াতে পারে ভিডিওটি। 

জানা যায়, কন্যাসন্তানের ভ্রূণ নষ্ট করে দেওয়ার প্রবণতা ভারতে একসময় পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছিল। ২০০৫ সালের একটি জরিপে দেখা যায়—দেশটিতে ১ হাজার পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা ছিল ৮৭৬ জন। তবে সরকার কন্যাশিশুকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য দেশজুড়ে লিঙ্গ পরিচয় জানানো আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। ২০১৮ সালের জরিপে এই উন্নতি চোখে পড়েছিল। সেবার ভারতের সংসদে উপস্থাপন করা একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছিল, ১ হাজার জন পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা কিছুটা বেড়ে ৯০৭ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মধ্যে তামিল নাড়ুর উন্নতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এই রাজ্যে ২০১৯ সালে ১ হাজার পুরুষের বিপরীতে নারী ছিল ৯৪২ জন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত