Ajker Patrika

ভারতে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পৌনে ১৩ লাখ রুপি

অনলাইন ডেস্ক    
ভারতে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পৌনে ১৩ লাখ রুপি

ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার গতকাল শনিবার দেশটির ২০২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে। এই বাজেটে নরেন্দ্র মোদি সরকার মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য ব্যক্তিগত আয়করের সীমায় যথেষ্ট ছাড় দিয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুসারে, ভারতীয়দের করমুক্ত আয়সীমা এখন ১২ লাখ ৭৫ হাজার রুপি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে নতুন আয়কর বিল আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত সরকার। পাশাপাশি কাস্টমস শুল্কের নতুন কাঠামো প্রকাশ করেছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, দরিদ্র, যুবক, কৃষক ও নারীদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে কিন্তু তারপরও মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) রাজস্ব ঘাটতি ৪ দশমিক ৪ শতাংশ রয়ে গেছে।

গতকাল শনিবার ভারতীয় পার্লামেন্টে বাজেট উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছে, ‘নতুন কাঠামো মধ্যবিত্ত শ্রেণির করের বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে এবং তাদের হাতে বেশি অর্থ রেখে ভোগব্যয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়াবে।’ অর্থমন্ত্রীর এই ঘোষণায় করদাতারা আনন্দিত হয়েছেন। কারণ, এর আগে ভারতে করমুক্ত আয়সীমা ছিল ৭ লাখ রুপি। কিন্তু নতুন বাজেটে এটিকে প্রায় ৬ লাখ বাড়িয়ে ১২ লাখ ৭৫ হাজার রুপি করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নোটে বলা হয়েছে নতুন প্রস্তাবের ফলে, এর আগে ২০ হাজার থেকে ৮৯ হাজার রুপি কর দেওয়া ১ কোটি করদাতা এখন করের আওতার বাইরে চলে যাবেন। এই প্রত্যক্ষ কর ছাড় সরকারের জন্য ১ লাখ কোটি রুপির বাড়তি ব্যয় তৈরি করবে।

এই কর ছাড় নতুন কর ব্যবস্থায় যাওয়ার প্রবণতাকে উৎসাহিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ভারতের অর্থসচিব তুহিন পাণ্ডে বলেন, ‘ইতিমধ্যেই ৭৫ শতাংশের বেশি আয়কর প্রদানকারী নতুন কাঠামোর আওতায় চলে এসেছেন। আমরা আশা করছি, শেষ পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি করদাতা এই ব্যবস্থায় চলে আসবেন।’

বাজেট নথি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যাদের বার্ষিক আয় ৫ কোটি রুপির বেশি অর্থাৎ অতি ধনী শ্রেণি তাদের জন্যও সুসংবাদ রয়েছে। কারণ নতুন কর ব্যবস্থায় সারচার্জ ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া, করদাতাদের দুইটি স্ব-অধিকৃত সম্পত্তির ক্ষেত্রে কর নির্ধারণে শূন্য মূল্য দেখানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে কোনো শর্ত ছাড়াই। আগে এই সুবিধা মাত্র একটি সম্পত্তির জন্য প্রযোজ্য ছিল এবং নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণের ওপর নির্ভরশীল ছিল।

তবে এই কর ছাড় নিয়ে সবাই উচ্ছ্বসিত নন। কৌটিল্য স্কুল অব পাবলিক পলিসির বিশিষ্ট অধ্যাপক রথীন রায় বলেছেন, এই কর ছাড় শুধুমাত্র ধনীদের উপকৃত করবে, সাধারণ মানুষকে নয়। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ভারতে যারা আয়কর দেন, তারা দেশের ধনীতম জনগোষ্ঠীর অংশ এবং তাদের মধ্যবিত্ত হিসেবে চিহ্নিত করাটা বিভ্রান্তিকর।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের করের বোঝা কমানোর এই সিদ্ধান্ত কর ব্যবস্থাকে আরও পশ্চাদ্‌গামী (রিগ্রেসিভ) করেছে এবং এটি আগের চেয়ে আরও বেশি ধনীদের অনুকূলে গিয়েছে।’

আগে একজন ব্যক্তিকে জাতীয় মাথাপিছু আয়ের সাড়ে ৩ গুণ উপার্জন করতে হতো আয়কর দেওয়া শুরু করার জন্য। এখন সেই সীমা বেড়ে ছয় গুণ হয়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, দেশের শীর্ষ ৫-১০ শতাংশ জনগোষ্ঠীই এখন আয়কর দিতে বাধ্য, যা ধনী শ্রেণির করের বোঝা আরও কমিয়ে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে আবারও যা বললেন ভারতের সেনাপ্রধান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত