Ajker Patrika

রোজার মাসেও রক্ত ঝরছে ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪, ১০: ৫৩
রোজার মাসেও রক্ত ঝরছে ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর

যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় এবারও এসেছে পবিত্র রমজান। তবে অন্য সব বারের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন রূপে যেন। গত সোমবার রমজানের প্রথম দিন উদ্‌যাপন করেছে ফিলিস্তিনিরা। খাবার সংকটের পাশাপাশি তাদের নিত্যসঙ্গী রোগশোক। আর ইসরায়েলি বোমার বিস্ফোরণের শব্দ তো পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে তাদের মাথার ওপর ঝুলছে। 

নানা আয়োজনে সংযমের মাস রমজানকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মুসলমানরা। তবে গাজাবাসী সেই অবকাশ পায়নি। ইসরায়েলি বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বেঁচে যাওয়া মানুষ কিংবা লাশের সন্ধানে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাঁদের। 

এ মাসে যুদ্ধবিরতির কথা চললেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আলোচনা পিছিয়ে গেছে বারবার। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবিক সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করলেও সেখানে পর্যাপ্ত ত্রাণসহায়তা পৌঁছানো যাচ্ছে না। ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে স্থলপথে ত্রাণ প্রবেশ করতে পারছে না তবে অল্পসংখ্যক ত্রাণবাহী জাহাজ গাজার উপকূলে ভিড়তে দেওয়া হচ্ছে। 

সাইপ্রাস থেকে গাজা পর্যন্ত একটি সামুদ্রিক করিডর ব্যবহার করে প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ রওনা হয়েছে সেখানে। গতকাল মঙ্গলবার সাইপ্রাসের লারনাকা বন্দর ছেড়ে যায় জাহাজটি। অনেকে জাহাজটিকে আশার প্রতীক হিসেবে দেখছে। তবে একটি মাত্র ত্রাণবাহী জাহাজ গাজা অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষকে দুর্ভিক্ষের কবল থেকে রক্ষা করতে পারবে কি না, সেটিই বড় প্রশ্ন। 

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে গাজায় অন্তত ২৩ জন মারা গেছে। যাদের অধিকাংশই শিশু। এ বিষয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন গত সোমবার বলেন, ‘আমাদের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদি আমরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণের পরিমাণ দ্রুতগতিতে না বাড়াতে পারি, তবে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।’ 

জাতিসংঘের খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থা বলছে, এসব মানবিক সংস্থাকে ত্রাণবাহী গাড়ি নিয়ে উত্তর গাজায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। 

রোজার সময়ে গাজাজুড়ে আরও বেশি অভাব অনুভব করছেন বাসিন্দারা। জাকি আবু মনসুর (৬৩) নামের এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না, রোজা ভাঙার জন্য কী খাব। আমার কাছে কেবল একটি টমেটো ও শসা আছে। কিছু কেনার টাকাও নেই।’ 

গাজার দক্ষিণ সীমান্তে রাফাহ শহরে আশ্রয় নেওয়া মোহাম্মদ আল-মাসরি বলেন, ‘আমরা ইফতারে কোনো প্রস্তুতি নিতে পারিনি। বাস্তুচ্যুতদের কী আছে? আমরা রমজানের আনন্দ অনুভব করতে পারছি না। ঠান্ডায় তাঁবুতে জমে যাওয়া মানুষগুলোর দিকে একবার তাকাও।’ খান ইউনিস থেকে বাস্তুচ্যুত ওম মুহাম্মদ আবু মাতারও বলেন, চলতি বছর রমজানে রক্ত, দুঃখ, বিচ্ছেদ এবং নিপীড়নের স্বাদ পাচ্ছে গাজাবাসী। 

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ব্যাপকভাবে খাদ্যঘাটতি দেখা দেয়। বাজারঘাটও প্রায় শূন্য। তবে কিছু এলাকায় খাদ্যপণ্য বিক্রি হলেও এগুলোর দাম আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত