Ajker Patrika

ইসরায়েলের নিরাপত্তাপ্রধানকে বরখাস্ত, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৫, ১২: ৪০
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বার। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বার। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরিকল্পনা আঁচ করতে না পারার ব্যর্থতার কারণে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার।

আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ইসরায়েলি মন্ত্রিপরিষদে এ-সংক্রান্ত ভোটাভুটি হয়। বৈঠক শেষে রোনেন বারকে বরখাস্তের ঘোষণা দেয় মন্ত্রিপরিষদ।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের তথ্যমতে, প্রথমবারের মতো দেশটির ইতিহাসে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে বরখাস্তের নজির তৈরি হলো। আগামী ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে তাঁকে। যদিও, প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এপ্রিলের ২০ তারিখ হবে শিন বেতে তাঁর শেষ দিন। পরে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সেই তারিখ এগিয়ে আনা হয়।

টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না রোনেন বার। তবে তিনি মন্ত্রীদের উদ্দেশে কড়া ভাষায় একটি চিঠি লিখেছেন। লিখেছেন, তিনি এই বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন না, কারণ যে প্রক্রিয়ায় তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে তা আইনসিদ্ধ মনে করেন না। পাশাপাশি তিনি বলেন, পদ থেকে তাঁকে অপসারণ একটি সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হওয়া উচিত, যেখানে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। কারণ তাঁর পদ প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের।

চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেছেন, হামাসের পরিকল্পনা জেনেও চুপ ছিলেন বলে তাঁকে যে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

শিন বেত প্রধানের চিঠিতে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি নিয়েও বিস্ফোরক তথ্য দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে রোনেন লিখেছেন, ‘বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আমাকে যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে আলোচনা করতে কায়রোতে পাঠাতে চেয়েছিলেন। শর্ত ছিল—আমি আলোচনা করব ঠিকই, কিন্তু কৌশলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি না করেই ফিরে আসতে হবে আমাকে। আলোচনা শুরুর এক মাস আগে আমাকে সরিয়ে দিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ এক সহযোগীকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়, যাতে নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে পারেন। নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারেন।’

নিরাপত্তাপ্রধানের এই বরখাস্তকে ঘিরে ইসরায়েলে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই পদক্ষেপের তুমুল সমালোচনা ও নিন্দা করছেন নেতানিয়াহুর বিরোধীরা। যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে তাঁর বক্তব্য উসকে দিয়েছে নেতানিয়াহুবিরোধী বিক্ষোভ। নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়েছে লাখ লাখ ইসরায়েলি।

এরই মধ্যে এক মতামত জরিপে উঠে এসেছে, ৫১ শতাংশ ইসরায়েলি শিন বেতের প্রধান রোনেনের বরখাস্তের বিরোধিতা করছেন। আর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর চেয়ে রোনেনকেই বেশি বিশ্বাস করেন ৪৬ শতাংশ। এরই মধ্যে এই বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।

২০২১ সালের অক্টোবরে শিন বেতের প্রধান হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদে বারকে নিযুক্ত করা হয়। নেতানিয়াহু গত রোববার এক ভিডিও বিবৃতিতে বারকে বরখাস্ত করার বিষয়ে তাঁর ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, বারকে আর বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত