নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

গুরুতর অসুস্থ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা, উত্তরাধিকার প্রশ্নে চলছে নীরব লড়াই

অনলাইন ডেস্ক    
Thumbnail image
বাবা আলী খামেনির পেছনে মুজতবা খামেনি। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের ৮৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মুজতবা খামেনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। খামেনির অসুস্থতার গুঞ্জন প্রকাশিত হওয়ার পর সম্প্রতি দেশটিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খামেনির গুরুতর শারীরিক অবস্থার কারণে ইরানের নেতৃত্ব নিয়ে ‘নীরব লড়াই’ শুরু হয়েছে। ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি) বা বিপ্লবী গার্ড বাহিনী উত্তরাধিকার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি গত মে মাসে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন। এরপর থেকেই খামেনির পরবর্তী উত্তরাধিকার নিয়ে আরও জোরালো আলোচনা শুরু হয়ে। আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ইরানের প্রথম আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুর পর এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির অসুস্থতার সংবাদ এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যার মাত্র একদিন আগে ইসরায়েল ইরানের হামলা চালিয়েছে। এর আগে, ইরান চলতি মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। সেই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের বেশ কিছু সামরিক স্থাপনায় আক্রমণ চালায় ইসরায়েল।

ইসরায়েলের আক্রমণ শুধু ইরানেই সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরাক ও সিরিয়াতেও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েল।

মুজতবা খামেনির জন্ম ১৯৬৯ সালে, মাশহাদে। ঠিক সেই সময়টাতে তাঁর বাবা আলী খামেনি ইরানে শাহ বিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠছিলেন। মুজতবার কৈশোরে শাহের গোপন পুলিশ আলী খামেনিকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করেছিল। একবার শাহের পুলিশ মুজতবার সামনেই তাঁর বাবাকে মারধর করে।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর খামেনির পরিবার তেহরানে চলে যায়। সেখানেই হাইস্কুল এবং অন্যান্য পর্যায়ের শিক্ষা শেষ করেন মুজতবা। এর মাঝে ১৯৮১ সালে আলী খামেনি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। মুজতবা খামেনি ১৯৮০–৮৮ সালের ইরাক–ইরান যুদ্ধে সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করেছেন। তিনি যে ব্যাটালিয়নে ছিলেন সেটির অনেকেই ইরানের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে আছেন। তাঁদেরই একজন হোসেইন তায়েব। যাকে ধরা হয় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ভবিষ্যৎ গোয়েন্দা প্রধান। এ ছাড়া, হোসেইন নেজাত নামে মুজতবার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে আছেন।

বিগত শতকের ৯০–এর দশকের শেষ দিক থেকে মুজতবা খামেনি আলোচনায় আসতে থাকেন। বিশেষ করে চলতি শতকের প্রথম দশকে ২০০৫ ও ২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাহমুদ আহমাদিনেজাদকে জেতাতে তিনি নির্বাচনে কারসাজি করেছেন বলে সংস্কারপন্থীদের অভিযোগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত