Ajker Patrika

গাজায় আটকে থাকা এক লেবানিজ নারী ও তাঁর শান্তির পাখিরা

অনলাইন ডেস্ক
গাজায় আটকে থাকা এক লেবানিজ নারী ও তাঁর শান্তির পাখিরা

সাধারণত সাদা রঙের ঘুঘু কিংবা কবুতরকে শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গাজার খান ইউনিসে আটকে থাকা লেবানিজ নারী ফখর তাজ শায়েরের পোষা পাখিগুলো ঘুঘু কিংবা কবুতর না হলেও যুদ্ধের মাঝে এগুলোর মাঝেই শান্তি খুঁজে পেয়েছেন তিনি। 

চলমান সংঘাতের মধ্যে গাজায় অবস্থান করা দ্য ন্যাশনালের সাংবাদিক নাঘাম মোহন্না অভিভূত হয়েছেন ৭০ বছর বয়সী ফখরের পাখি প্রেম দেখে। যুদ্ধের মাঝে সবাই যখন নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচাতে সংগ্রাম করছে ফখরের কাছে তখন তাঁর পাখিগুলোর জীবনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গাজার উত্তর অংশ থেকে দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে পালানোর সময় তাই পাখিগুলোকে পরিবারের অন্য সদস্যদের মতোই আগলে রেখেছিলেন তিনি। 

মাতৃভূমি লেবানন ছেড়ে ৪৪ বছর আগে গাজায় চলে এসেছিলেন ফখর। দক্ষিণ লেবাননে স্বামীর সঙ্গে বাস করতেন তিনি। তাঁর স্বামী ছিলেন ফিলিস্তিনি। ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালালে ফখরের স্বামী নিহত হন। পরে তল্পিতল্পা গুটিয়ে স্বামীর জন্মভূমিতে এসে বসবাস শুরু করেন তিনি। 

পোষা পাখিগুলো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফখর তাজ শায়ের বলেন, ‘আমি নিজের চেয়েও পশু-পাখিকে বেশি ভালোবাসি। ওরাই আমাকে শান্তি দিতে পারে।’ 

মেয়ে রানিম, নাতি আহমেদ এবং অবশ্যই পোষা পাখিগুলোকে নিয়েই ফখরের পরিবার। বর্তমানে গাজার দক্ষিণ অংশে নাসার হাসপাতালের বাইরে একটি তাঁবু টাঙিয়ে তাঁরা অবস্থান করছেন। 

পাখিগুলো নিয়ে ফখর বলেন, ‘তাঁদেরও বাঁচার অধিকার আছে। আমরা প্রতি সকালেই ওদের সঙ্গে বসে কফি পান করি, গল্প করি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজের জন্য ও আমার মেয়ের জন্য খাবার কেনার আগে এই পাখিগুলোর জন্য খাবার কিনি। তাঁদের আর কে বাঁচাবে? ওরাই আমাকে আনন্দ দেয়।’ 

ফখরের পাখিগুলোর আলাদা আলাদা নাম আছে। এই নামের ক্ষেত্রেও একটি দারুণ বিষয় লুকিয়ে আছে। পাখিগুলোর মধ্যে একটির নাম রানিম; যা তাঁর মেয়ের নামে, আরেকটির নাম আহমেদ; যা তার নাতির নামে। আর নিজের নামে একটি পাখির নাম রেখেছেন ফখর। 

যুদ্ধক্লান্ত এই নারী জানান, পাখিগুলো ছাড়াও বাড়িতে বড় একটি ট্যাংকিতে কিছু পোষা মাছও আছে তাঁর। কিন্তু উদ্বাস্তু জীবনে সেগুলো নিয়ে টানাহেঁচড়ার কোনো উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতে একের পর এক বোমা হামলার মাঝেই গাজার উত্তর অংশে থাকা নিজ বাড়িতে গিয়েছিলেন ফখর; শুধু মাছগুলোকে খাবার দেওয়ার জন্য। 

ফখর বলেন, ‘আমি বিমান হামলার ভয় করি না। আমাদের লক্ষ্য করে ওরা বোমা ফেলুক। তবু প্রাণীগুলোকে খাওয়ানোর হাত থেকে ওরা আমাকে বিরত রাখতে পারবে না।’ 

ফখরের মেয়ে রানিম গাজার মিসরীয় সীমান্ত রাফাহ এলাকায় বসবাস করতেন। কিন্তু সংঘাত শুরু হওয়ার পরই মায়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনিও এসে যোগ দিয়েছেন। 

বর্তমানে গাজায় বসবাস করা অসংখ্য ফিলিস্তিনির মতো ফখরও পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পোষা পাখিগুলোসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য খাবার সংগ্রহ করতে অন্তহীন এক সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

মুসলিম ছেলে বিয়ে করে পরিবারহারা, স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে ঢাকায় এসে ধর্ষণের শিকার

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

মাদারীপুরে ৩ খুন: ঘটনার পেছনে পা ভাঙার প্রতিশোধসহ ৩ কারণ

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত