২৪ ঘণ্টায় গাজায় নিহত আরও ৪০, ত্রাণসংকট চরমে

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটির তথ্যমতে, ভোরের আলো ফোটার আগেই উপত্যকায় তাণ্ডব শুরু করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বাইত লাহিয়া, রাফাহ, খান ইউনিসসহ উপত্যকাজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী—আইডিএফ। এফ–১৬ যুদ্ধবিমান থেকে আবাসিক ভবন ও শরণার্থীশিবির লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার সকালে মধ্য গাজার অন্যতম ব্যস্ত একটি বাজারে বোমা হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। ওই হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। খান ইউনিসে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ছয়জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে প্রায় অর্ধশত, যাদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁদের স্থানীয় আল আহলি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আল–জাজিরা।

বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এমন হামলার নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। অবশ্য ইসরায়েলের সাফাই—‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হামাসকে নির্মূল করতে চালানো হচ্ছে এসব হামলা, বেসামরিকরা কখনোই তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু নয়।

নির্বিচার হামলা তো চলছেই, উপত্যকায় কোনো ত্রাণসহায়তাও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) বলছে, ১৮ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে গাজায় যত ত্রাণসহায়তা প্রবেশের চেষ্টা করেছে, তার ৮২ শতাংশই ফিরিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে উপত্যকাটিতে অপুষ্টি ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে বলে সতর্ক করেছে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।

এক বিবৃতিতে ডব্লিউএফপি বলেছে, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধি এবং ত্রাণ সরবরাহে বাধা ত্রাণকর্মীদের জীবনকে হুমকিতে ফেলছে।

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) আরও এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এর আগে ২০২৪ সালে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ডব্লিউসিকের ১১ কর্মী নিহত হন।

ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি জানান, তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় কোনো মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না, যেখানে আগে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক উপত্যকায় ঢুকত। গাজা পরিস্থিতি নিয়ে লাজ্জারিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, এটি ‘মানবতার সবচেয়ে অন্ধকার সময়’।