ইসরায়েল বেশি দিন টিকবে না: খামেনি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮: ৪১

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দখলদারদের (ইসরায়েল) জন্য ন্যূনতম শাস্তি। তাদের অস্তিত্ব কৃত্রিম, বেশি দিন টিকতে পারবে না। তারা পুরোপুরিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় কষ্ট করে অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। 

রাজধানী তেহরানে গতকাল শুক্রবার জুমার খুতবায় খামেনি এসব কথা বলেন। পাঁচ বছর পর তিনি জুমার নামাজে ইমামতি করলেন। এই খুতবায় তিনি গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গত মঙ্গলবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ‘আইনগত ও বৈধ’ বলে দাবি করেন। তিনি ইসরায়েলকে ফিলিস্তিন, লেবানন, মিসর, ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়ার জনগণের শত্রু বলে অভিহিত করেন। 

এর আগে খামেনি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে মার্কিন হামলায় নিহত হন। প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। এ ঘটনার পর খামেনি জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন। এবার লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ এবং ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের এক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। তারপর ফের জুমার নামাজে ইমামতি করলেন খামেনি। 

খুতবায় খামেনি বলেন, ‘আমাদের শত্রুদের গৃহীত নীতি হলো বিভাজন ও রাষ্ট্রদ্রোহের বীজ বপন করা। মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করা। ফিলিস্তিনি, লেবানিজ, মিসরীয় ও ইরাকিদের শত্রু একই। তারা ইয়েমেন ও সিরিয়ার জনগণেরও শত্রু। আমাদের সবার শত্রু একই।’ 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর ও গত মঙ্গলবার ইরানের হামলার বিষয়ে খামেনি বলেন, ‘এই হামলা ইরানের ন্যায্য অধিকার। প্রয়োজন হলে আবারও হামলা চালানো হবে। মুসলিম দেশগুলোকে তাদের সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আগ্রাসী শক্তির হাত থেকে আত্মরক্ষার অধিকার প্রতিটি দেশেরই রয়েছে।’ 

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ‘দায়িত্ব পালনে আমরা বিলম্ব করি না, আবার তাড়াহুড়োও করি না। সামরিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মতে যা সঠিক ও যৌক্তিক, তা আমরা সঠিক সময়ে করে থাকি। এরই মধ্যে সঠিক সময়ে দায়িত্ব পালন করা হয়েছে, প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, হিজবুল্লাহ, হামাস ও ইসলামি জিহাদের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামোর বড় কোনো ক্ষতি করতে সক্ষম নয় বলেই ইসরায়েল বেসামরিক মানুষ হত্যাকে নিজের বিজয়ের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করছে। কিন্তু বেসামরিক মানুষের ওপর বোমা হামলা ও হত্যাযজ্ঞের পরিণতিতে জনরোষ বাড়বে। আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে মানুষ আরও অনুপ্রাণিত হবে, জীবন উৎসর্গ করার মনোভাব বাড়বে এবং চূড়ান্তভাবে তাদের অস্তিত্ব নির্মূল হয়ে যাবে। 

খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা দখলদার ইসরায়েলকে এই অঞ্চলের সব সম্পদ দখলের হাতিয়ারে পরিণত করতে চায়। দখলদারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে তাদের অবস্থান ওই ধ্বংসাত্মক নীতিকে আড়ালে রাখতে কাজ করছে। তারা ইসরায়েলকে এই অঞ্চল থেকে পাশ্চাত্যে জ্বালানি রপ্তানি এবং পাশ্চাত্য থেকে এই অঞ্চলে পণ্য ও প্রযুক্তি আমদানির গেটওয়েতে রূপান্তর করতে চায়। এ নীতি দখলদারদের টিকে থাকা নিশ্চিত করবে এবং তাদের ওপর গোটা অঞ্চলের নির্ভরতা বৃদ্ধি করবে—এমনটি ভাবা অলীক কল্পনামাত্র।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত