অনলাইন ডেস্ক
প্রতিবছরই আজকের দিনটিকে (১৫ মে) ‘নাকবা দিবস’ হিসেবে পালন করে ফিলিস্তিনিরা। আরবি নাকবা শব্দটির অর্থ হলো ‘বিপর্যয়’। ৭৬ বছর আগে ১৯৪৮ সালের এই দিনটিতে সত্যিকারের এক বিপর্যয় নেমে এসেছিল ফিলিস্তিনিদের জীবনে। নিজ ভূমি এবং বাসস্থান থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করে ইসরায়েল রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটেছিল সেদিন।
এর পর থেকেই ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি ও সহমর্মিতা প্রকাশের তাদের ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে এমন নানা মোটিফ বা চিহ্ন আত্মপ্রকাশ করেছে। এসবের মধ্যে জলপাই, জলপাইয়ের পাতা ও ডাল, তরমুজ কিংবা ঘুঘু পাখির কথা না বললেই নয়। তবে এসব চিহ্নের কোনো কিছুই কেফিয়াহকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কেফিয়াহ নামের বিশেষায়িত সেই স্কার্ফ এখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
দ্য ন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ফিলিস্তিনি স্বাতন্ত্র্য এবং জাতীয়তাবাদকে চিহ্নিত করতে কেফিয়াহর ব্যবহার দেখা গেলেও এর রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। বিশেষ এই কাপড়টির ব্যবহার পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। দাবি করা হয়, প্রাগৈতিহাসিক সেই আমলে সুমেরীয় পুরুষেরা উচ্চ মর্যাদা এবং যাজকত্ব বোঝাতে এটি পরিধান করতেন।
তবে অনেক ইতিহাসবিদের মতে, এই স্কার্ফের ব্যবহারের চর্চা শুরু হয়েছিল খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতকে ইরাকের কুফা শহর। আর কুফা শহরের নাম থেকেই এটির নাম হয়ে যায় কেফিয়াহ। সেই সময় থেকেই সৌদি আরব, সিরিয়াসহ অনেক আরব সংস্কৃতিতে কেফিয়াহর ব্যবহার শুরু হয়েছিল। আরবের কিছু কিছু অঞ্চলে এটির স্থানীয় নামও রয়েছে, যেমন—ঘুত্র বা শেমাঘ।
ফিলিস্তিনে এটি ব্যবহার করতেন সাধারণত মাঠে-ঘাটে কাজ করা শ্রমিকেরা। মূলত সূর্যের কাছ থেকে মাথা ও মুখকে সুরক্ষা দিতেই তাঁরা এটি ব্যবহার করতেন। তবে পরবর্তী সময়ে শ্রমিকদের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ এমনকি নারীরাও এটি ব্যবহার করতে শুরু করেছিলেন একটি বিশেষ কারণে। এ বিষয়ে জানা যায়, ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত আরব বিদ্রোহের সময় ফিলিস্তিনিরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিল। সে সময় কেফিয়াহ মাথায় দেওয়া শ্রমিকেরাই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু একসময় ব্রিটিশরা কেফিয়াহর মাধ্যমে খুব সহজেই দাঙ্গাকারীদের শনাক্ত করার উপায় খুঁজে পায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে দাঙ্গাকারীদের গোপন করার জন্য এই স্কার্ফটি ফিলিস্তিনের সর্বস্তরের মানুষ ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। এভাবেই প্রয়োজনের বাইরে এটির ব্যবহার প্রথমবারের মতো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠে।
ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাত ১৯৬৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান এবং ১৯৯৪ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল অথরিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি প্রতিদিন মাথায় কেফিয়াহ পরিধান করতেন। ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি হিসেবে একসময় কেফিয়াহ মাথায় দেওয়া ইয়াসির আরাফাতকে সহজেই চিহ্নিত করতে পারত বাকি বিশ্বের মানুষ।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে বর্তমানে অনেকেই কেফিয়াহ কিনেন এবং ব্যবহার করেন। এর ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই এখন কালো-সাদা কিংবা লাল-সাদা চেকের এই কাপড়টি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এসব কেফিয়াহর একটি বিপুল অংশের সঙ্গে ফিলিস্তিনের কোনো সম্পর্ক নেই। ফিলিস্তিনি অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করে নিতে চীন ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে এই কাপড়টি লাখ লাখ সংখ্যায় তৈরি হচ্ছে। ফিলিস্তিনে তৈরি এবং তাদের ব্যবসাকে লাভবান করতে যদি কেউ কেফিয়াহ কিনতে চায়, তবে তাকে নিঃসন্দেহে অনেক যাচাই-বাছাই এবং খোঁজাখুঁজি করতে হবে।
আরেকটি বিষয় হলো—খোদ ফিলিস্তিনেই কেফিয়াহ তৈরির জন্য বর্তমানে শুধু একটি কারখানার অস্তিত্ব আছে। হেব্রনে অবস্থিত হিরবাউ নামের এই কারখানাটি ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে নকল কেফিয়াহ বাজার ছেয়ে গেলে কারখানাটির বিক্রি হ্রাস পেতে শুরু করে। এভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কারখানাটি কোনোক্রমে টিকে ছিল। কিন্তু গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে কেফিয়াহর চাহিদা বিপুল হারে বেড়ে গেছে। বর্তমানে হেব্রনের সেই কেফিয়াহ কারখানাটি চাহিদার সঙ্গে উৎপাদনে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। কারখানাটিতে এখন কেফিয়াহর এত বেশি অর্ডার যে অর্ডারের পর এটিকে হাতে পেতে গ্রাহকদের চার মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এদিকে প্রতিবেশী জর্ডানেও আল-বুলবুল নামে কেফিয়াহ তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। একটি ফিলিস্তিনি পরিবার এই কারখানা পরিচালনা করে। হিরবাউয়ের মতো এই কারখানাটিও এখন অর্ডার অনুযায়ী কেফিয়াহ তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে।
প্রতিবছরই আজকের দিনটিকে (১৫ মে) ‘নাকবা দিবস’ হিসেবে পালন করে ফিলিস্তিনিরা। আরবি নাকবা শব্দটির অর্থ হলো ‘বিপর্যয়’। ৭৬ বছর আগে ১৯৪৮ সালের এই দিনটিতে সত্যিকারের এক বিপর্যয় নেমে এসেছিল ফিলিস্তিনিদের জীবনে। নিজ ভূমি এবং বাসস্থান থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করে ইসরায়েল রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটেছিল সেদিন।
এর পর থেকেই ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি ও সহমর্মিতা প্রকাশের তাদের ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে এমন নানা মোটিফ বা চিহ্ন আত্মপ্রকাশ করেছে। এসবের মধ্যে জলপাই, জলপাইয়ের পাতা ও ডাল, তরমুজ কিংবা ঘুঘু পাখির কথা না বললেই নয়। তবে এসব চিহ্নের কোনো কিছুই কেফিয়াহকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কেফিয়াহ নামের বিশেষায়িত সেই স্কার্ফ এখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
দ্য ন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ফিলিস্তিনি স্বাতন্ত্র্য এবং জাতীয়তাবাদকে চিহ্নিত করতে কেফিয়াহর ব্যবহার দেখা গেলেও এর রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। বিশেষ এই কাপড়টির ব্যবহার পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। দাবি করা হয়, প্রাগৈতিহাসিক সেই আমলে সুমেরীয় পুরুষেরা উচ্চ মর্যাদা এবং যাজকত্ব বোঝাতে এটি পরিধান করতেন।
তবে অনেক ইতিহাসবিদের মতে, এই স্কার্ফের ব্যবহারের চর্চা শুরু হয়েছিল খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতকে ইরাকের কুফা শহর। আর কুফা শহরের নাম থেকেই এটির নাম হয়ে যায় কেফিয়াহ। সেই সময় থেকেই সৌদি আরব, সিরিয়াসহ অনেক আরব সংস্কৃতিতে কেফিয়াহর ব্যবহার শুরু হয়েছিল। আরবের কিছু কিছু অঞ্চলে এটির স্থানীয় নামও রয়েছে, যেমন—ঘুত্র বা শেমাঘ।
ফিলিস্তিনে এটি ব্যবহার করতেন সাধারণত মাঠে-ঘাটে কাজ করা শ্রমিকেরা। মূলত সূর্যের কাছ থেকে মাথা ও মুখকে সুরক্ষা দিতেই তাঁরা এটি ব্যবহার করতেন। তবে পরবর্তী সময়ে শ্রমিকদের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ এমনকি নারীরাও এটি ব্যবহার করতে শুরু করেছিলেন একটি বিশেষ কারণে। এ বিষয়ে জানা যায়, ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত আরব বিদ্রোহের সময় ফিলিস্তিনিরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিল। সে সময় কেফিয়াহ মাথায় দেওয়া শ্রমিকেরাই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু একসময় ব্রিটিশরা কেফিয়াহর মাধ্যমে খুব সহজেই দাঙ্গাকারীদের শনাক্ত করার উপায় খুঁজে পায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে দাঙ্গাকারীদের গোপন করার জন্য এই স্কার্ফটি ফিলিস্তিনের সর্বস্তরের মানুষ ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। এভাবেই প্রয়োজনের বাইরে এটির ব্যবহার প্রথমবারের মতো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠে।
ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাত ১৯৬৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান এবং ১৯৯৪ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল অথরিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি প্রতিদিন মাথায় কেফিয়াহ পরিধান করতেন। ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি হিসেবে একসময় কেফিয়াহ মাথায় দেওয়া ইয়াসির আরাফাতকে সহজেই চিহ্নিত করতে পারত বাকি বিশ্বের মানুষ।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে বর্তমানে অনেকেই কেফিয়াহ কিনেন এবং ব্যবহার করেন। এর ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই এখন কালো-সাদা কিংবা লাল-সাদা চেকের এই কাপড়টি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এসব কেফিয়াহর একটি বিপুল অংশের সঙ্গে ফিলিস্তিনের কোনো সম্পর্ক নেই। ফিলিস্তিনি অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করে নিতে চীন ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে এই কাপড়টি লাখ লাখ সংখ্যায় তৈরি হচ্ছে। ফিলিস্তিনে তৈরি এবং তাদের ব্যবসাকে লাভবান করতে যদি কেউ কেফিয়াহ কিনতে চায়, তবে তাকে নিঃসন্দেহে অনেক যাচাই-বাছাই এবং খোঁজাখুঁজি করতে হবে।
আরেকটি বিষয় হলো—খোদ ফিলিস্তিনেই কেফিয়াহ তৈরির জন্য বর্তমানে শুধু একটি কারখানার অস্তিত্ব আছে। হেব্রনে অবস্থিত হিরবাউ নামের এই কারখানাটি ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে নকল কেফিয়াহ বাজার ছেয়ে গেলে কারখানাটির বিক্রি হ্রাস পেতে শুরু করে। এভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কারখানাটি কোনোক্রমে টিকে ছিল। কিন্তু গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে কেফিয়াহর চাহিদা বিপুল হারে বেড়ে গেছে। বর্তমানে হেব্রনের সেই কেফিয়াহ কারখানাটি চাহিদার সঙ্গে উৎপাদনে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। কারখানাটিতে এখন কেফিয়াহর এত বেশি অর্ডার যে অর্ডারের পর এটিকে হাতে পেতে গ্রাহকদের চার মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এদিকে প্রতিবেশী জর্ডানেও আল-বুলবুল নামে কেফিয়াহ তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। একটি ফিলিস্তিনি পরিবার এই কারখানা পরিচালনা করে। হিরবাউয়ের মতো এই কারখানাটিও এখন অর্ডার অনুযায়ী কেফিয়াহ তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে।
রাশিয়া ইউক্রেনে এবার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) দিয়ে হামলা চালিয়েছে করেছে। আজ বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিমানবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে এই প্রথম এমন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল। ইউক্রেন রাশিয়ায় মার্কিন নির্মিত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার...
৪০ মিনিট আগেবিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে এই প্রথম কোনো উপমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
১ ঘণ্টা আগে‘গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলার পর শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন। একদিনে ১,২৩০ কোটি ডলার বাজারমূল্য হারিয়েছে আদানি গ্রুপ। কীভাবে এই ঘটনা ভারতের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে, জানুন বিশ্লেষণে।’
৪ ঘণ্টা আগেইউক্রেনের সঙ্গে বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়াকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বন্ধুরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া। তারই অংশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার প্রায় ১০ হাজার সেনা রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে লড়াই করছে।
৫ ঘণ্টা আগে