নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের সরকার গঠন নিয়ে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে আজ শনিবার প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, ১০১ আসনে জয় পেয়ে অন্য দলগুলোর তুলনায় পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে আছে ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অন্য দলগুলোর মধ্যে নওয়াজ শরীফের পিএমএল-এন ৭৩টি ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিপি ৫৪টি আসনে জয় পেয়েছে। পাশাপাশি মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) নামে চতুর্থ আরেকটি দল ১৭টি আসনে বিজয় নিশ্চিত করেছে। 

পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য কোনো দলকে ২৬৬ আসনের মধ্যে অন্তত ১৩৪টি আসনে জয় পেতে হবে। কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে এই একক দল হিসেবে কোনো দলই এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। ফলে একাধিক দল এক হয়ে জোট সরকার গঠন করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। 

উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে সরকার গঠনের জন্য নানা তৎপরতা শুরু করেছেন পিএমএল নেতা নওয়াজ শরীফ। তিনি বিলাওয়ালের পিপিপিসহ একাধিক দলের সঙ্গে জোট গঠনের সমঝোতায় আসতে চাইছেন। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই পিপিপি’র সঙ্গে নওয়াজের দলের বৈঠকও হয়েছে। তবে ওই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি দল দুটি। তাদের দর-কষাকষি এখনো চলমান রয়েছে। 

সর্বশেষ আজ শনিবার দুপুরে ১৭ আসন পাওয়া এমকিউএম-এর নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে মিলিত হয় নওয়াজ শরীফ সহ তাঁর দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। এই বৈঠকের পর নওয়াজের দল ঘোষণা করে করে, সরকার গঠনের জন্য এমকিউএম-এর সঙ্গে তাদের সমঝোতা হয়েছে। তবে ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এমকিউএম জানিয়ে দিয়েছে, সরকার গঠন নিয়ে পিএমএল-এন এর সঙ্গে তাদের কোনো সমঝোতা হয়নি। 

এ বিষয়ে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমকিউএম-এর প্রধান খালিদ মকবুল সিদ্দিকী সরকার গঠনে পিএমএল-এর সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। 

গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বক্তব্যে খালিদ মকবুল সিদ্দিকী বলেন—নির্বাচন পরবর্তী সময়ে একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরব দলকে তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করা উচিত। 

সিদ্দিকী বলেন, ‘অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতাকেই সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।’ 

এ সময় পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য এখনো কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান সিদ্দিকী। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সরকারে তাঁর দল গুরুত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকা পালন করবে কি-না তা এত তাড়াতাড়ি বলা যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরান খানের দলের সঙ্গে এক হয়ে সরকারে যোগ দিয়েছিল এমকিউএম। এই সরকারে তথ্যমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছেন খালিদ মকবুল সিদ্দিকী। যদিও পরবর্তীতে সামরিক নেতৃত্ব ও ইমরান খানকে অপসারণের জন্য ‘পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট’ (পিডিএম) নামে যে জোট গঠন হয়েছিল, সেটিতে যোগ দিয়েছিল এমকিউএম।