পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে অবাক করা ঘটনাগুলোর ধারাবাহিকতায় এবার নিজ আসনে হেরে বসেছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নওয়াজ শরিফ। পাকিস্তানের গণমাধ্যম সামা টিভি এই অনানুষ্ঠানিক ফলাফল দিয়েছে।

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচনী এলাকা এনএ-১৫ মানসেহরা থেকে পাওয়া অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা গাস্তাসাপের বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানেই হেরেছেন নওয়াজ শরিফ। ৭৪,৭১৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শাহজাদা গাস্তাসাপ। অন্যদিকে, নওয়াজ শরিফ পেয়েছেন ৬৩,০৫৪ ভোট।

অপ্রত্যাশিত এই ফলকে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর নির্বাচনী দৃশ্যপটে একটি বড় বিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে আরও একটি আসনে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন নওয়াজ শরিফ। নির্বাচনী এলাকা এনএ-১৩০ লাহোরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াসমিন রশিদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন পাকিস্তানের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

সামা টিভি এক প্রতিবেদনে বলছে, ভোটের দিন সারা দেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট বন্ধ রাখা, ফল প্রকাশে অতিরিক্ত দেরি হওয়ার পর প্রাপ্ত কয়েকটি ফলাফলে দেখা গেছে, জেলবন্দী ইমরান খানের প্রার্থীরাই এখনো এগিয়ে আছেন।

পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) এখনো পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ১৯টি আসনের ফল প্রকাশ করেছে। প্রথম দিকে ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও এখন সাতটি আসন নিয়ে সবার ওপরে রয়েছে পিএমএল-এন। অন্যদিকে, পিটিআই ছয় এবং পিপিপি পেয়েছে পাঁচটি আসন।

• পাকিস্তানের নির্বাচনের ফল প্রকাশে দেরির যে কারণ জানাল সরকার

পাকিস্তানের গণমাধ্যম বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর গণনা শুরু হয়। এর ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় পর স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায় প্রথম আসনের ফল ঘোষণা করা হয়। আসনটিতে জয় পান ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী। এরপর আরও কয়েকটি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে।

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জিতবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। বিশ্লেষকদের মতে, ৭৪ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ওপর সামরিক বাহিনীর সমর্থন রয়েছে।

• রাতভর ভোট পাহারার বার্তা ইমরান খানের, গণনায় তাঁর প্রার্থীরাও এগিয়ে

অন্যদিকে, জেলবন্দী ইমরান খানের দল পিটিআই নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হয়েছিল। পিটিআইকে মার্কাও বরাদ্দ দেয়নি ইসিপি। এ ছাড়া, নির্বাচনের দিন মোবাইল পরিষেবা ও ইন্টারনেট বন্ধের ঘোষণায় সমালোচিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন। ব্যাপক ভোট কারচুপির আশঙ্কাও করছেন বিশ্লেষকেরা।