চীনা হ্যাকারকে না চিনেই কাজ করতেন গ্রেপ্তার মার্কিন পাইলট, আইনজীবীর দাবি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৪, ১৮: ৫৪

চীনা সামরিক পাইলটদের বিমানবাহী জাহাজে অবতরণ করার প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে অস্ট্রেলিয়ায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন মেরিন পাইলট ড্যানিয়েল ডুগান। মার্কিন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ এবং একজন চীনা হ্যাকারের সঙ্গে কাজ করার অভিযোগও আনা হয় তার বিরুদ্ধে। তবে ডুগানের আইনজীবী দাবি করেছেন যে, পরিচয় না জেনেই চীনা হ্যাকারের সঙ্গে কাজ করেছিলেন প্রাক্তন এই পাইলট। রিয়াদ-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

৫৫ বছর বয়সী ডুগান অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েছেন। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়ে বলছে যে, তার কাছে সংবেদনশীল তথ্য রয়েছে। ডুগানের আইনজীবী বার্নার্ড কোলারির দাবি, এ পরিস্থিতিতে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রাক্তন এই পাইলটের পরিবার। এই মাসে সিডনির একটি আদালতে মামলাটির শুনানি হবে।

ডুগানের সঙ্গে চীনা হ্যাকার সু বিনের যোগাযোগ রয়েছে বলে মামলার নথিতে কোলারি স্বীকার করেছেন বলে জানায় রয়টার্স। তবে চীনা হ্যাকারের পরিচয় ডুগান জানতেন না বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী। আর, মার্কিন আগ্নেয়াস্ত্র আইন ভঙ্গের অভিযোগও অস্বীকার করেছেন ডুগান।

বেইজিংয়ে ছয় বছর কাটিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ফিরে আসার পর ২০২২ সালে গ্রেপ্তার হন ড্যানিয়েল ডুগান। তারপর থেকেই অস্ট্রেলিয়ার কারাগারে বন্দী তিনি। 

অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল মার্ক ড্রেইফাসের কাছে পেশ করা গত মার্চের এক নথিতে কোলারি বলেছেন যে, সু বিনের কাছ থেকে জব্দ করা ইলেকট্রনিক যন্ত্রে এই চীনা হ্যাকারের সঙ্গে ডুগানের যুক্ততার প্রমাণ পায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সু বিনকে চীনের রাষ্ট্রীয় বিমান চলাচল কোম্পানি এভিআইসির একজন নিয়োগ দালাল হিসেবে ডুগান চিনতেন বলে দাবি করেছেন কোলারি।

সু বিনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো থেকে জানা গেছে যে, তিনি ২০১২ সালের মে মাসে ডুগানের অস্ট্রেলিয়া থেকে বেইজিং ভ্রমণের জন্য অর্থ দিয়েছিলেন। তবে ডুগানের আইনজীবী বার্নার্ড কোলারির দাবি, ব্যবসা সংক্রান্ত এই যোগাযোগের সঙ্গে হ্যাকিংয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেছেন, ‘হ্যাকিংয়ের সঙ্গে ডুগান সম্পূর্ণভাবে সম্পর্কহীন। চীনা এজেন্টদের সঙ্গে সু বিনের বেআইনি সংযোগ থাকতেও পারে। তবে সেটা আমাদের মক্কেলের অজানা ছিল।’

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমানের নকশা চুরির অভিযোগে ২০১৪ সালে কানাডায় গ্রেপ্তার হন সু বিন। এর দু বছর পর তিনি দোষ স্বীকার করেন। যুক্তরাষ্ট্রের করা প্রত্যর্পণের অনুরোধে ডুগানের সঙ্গে থাকা সাতজন সহ-ষড়যন্ত্রকারীর তালিকায় রয়েছেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার আদালতে পেশ করা নথিতে ডুগানের আইনজীবী বার্নার্ড কোলারি লিখেছেন যে, ডুগান অস্ট্রেলিয়ায় তার টপ গান টুরিস্ট ফ্লাইট ব্যবসার জন্য চীনা বিমানের যন্ত্রাংশ পাওয়ার ব্যাপারে সু বিনের সাহায্য চেয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স অর্গানাইজেশন (এএসআইও) এবং মার্কিন নৌবাহিনীর অপরাধ তদন্তকারীরা জানতেন যে, ডুগান এভিআইসির জন্য পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন এবং ২০১২ সালের ডিসেম্বর এবং ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া রাজ্যে তার সঙ্গে এই সংস্থার কর্মকর্তাদের দেখাও হয়েছিল। এএসআইও-এর একজন কর্মকর্তা তখন বলেছিলেন যে, চীনে নিজের বৈধ ব্যবসা করার মাধ্যমেও সংবেদনশীল তথ্য পেতে পারেন ডুগান।

২০১৬ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন ডুগান। বার্নার্ড কোলারি তার মক্কেলকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরোধিতা করে যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, যে চীনা পাইলটদের ডুগান প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন তারা সামরিক ছিল বলে কোনো প্রমাণ নেই। তা ছাড়া, অভিযুক্ত অপরাধের আগেই ডুগান ২০১২ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হয়েছিলেন।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যুক্তি হচ্ছে, ডুগান ২০১৬ সাল পর্যন্ত তার মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেননি। তাই তাকে মার্কিন আইনে সাজা পেতে হবে।

উল্লেখ্য, এভিআইসিকে গত বছর চীনা সামরিক সংশ্লিষ্ট কোম্পানি হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত