গাজায় ত্রাণ ঢুকতে ইসরায়েলের বাধা, অস্বীকার করল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭: ৫৮
Thumbnail image
ইউএনআরডব্লিউয়ের ত্রাণের কার্টন বহন করছে যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজা দুই শিশু। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল বর্তমানে গাজায় ত্রাণ ও মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে না বলে জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে না। তবে ওয়াশিংটন স্বীকার করেছে, ফিলিস্তিন অঞ্চলে মানবিক পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ রয়ে গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে এমনটি জানায়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত ১৩ অক্টোবর এক চিঠিতে ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি সামলাতে ইসরায়েলকে ৩০ দিনের মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তায় প্রভাব পড়তে পারে।

চিঠিতে বর্ণিত পদক্ষেপ নেওয়ার শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। তবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বারবার এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘কিছু অগ্রগতি আমরা দেখেছি। আরও পরিবর্তন দেখতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ না হলে হয়তো এসব পরিবর্তন হতো না। ইসরায়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আইনের শর্ত মেনে চলার বিষয়ে নজরদারি চলবে।’

অক্সফাম ও সেভ দ্য চিলড্রেনের মতো আটটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা বলেছে, ইসরায়েল সময়সীমার মধ্যে দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে হামাস বাইডেন প্রশাসনের এই মূল্যায়নের সমালোচনা করে বলেছে, এতে ইসরায়েলের সহিংসতার প্রতি বাইডেনের সহযোগিতা প্রকাশ পেয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরের আক্রমণে হামাসের সশস্ত্র বাহিনী ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫০ জনের বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে। এরপর থেকেই বাইডেন ইসরায়েলকে শক্তভাবে সমর্থন দিয়ে আসছেন। ইসরায়েলের পাল্টা আগ্রাসনে গাজায় ৪৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন ও অঞ্চলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘ইসরায়েল কিছু ব্যবস্থা নিলেও গাজায় পরিস্থিতি এখনো সন্তোষজনক নয়।’

ব্লিংকেন গত সোমবার ইসরায়েলের কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় তিনি গাজার মানবিক পরিস্থিতি উন্নতির জন্য ইসরায়েলের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর পুনরায় জোর দিয়েছেন।

মঙ্গলবার প্যাটেল বলেন, ইসরায়েল কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন; এরেজ সীমান্ত খোলা, কিছু কাস্টমস শর্ত শিথিল করা ও গাজায় নতুন ত্রাণ সরবরাহ রুট চালু করা।

ফিলিস্তিনি বেসামরিক বিষয়াদি দেখাশোনা করে ইসরায়েলের সামরিক সংস্থা কোগাত। সংস্থাটি রোববার গত ছয় মাসে গাজায় ইসরায়েলের মানবিক সহায়তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলো তুলে ধরা হয়েছে শীতের সময়ে গাজায় সহায়তা অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে।

তবে ওয়াশিংটন কেন গাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ না করে ইসরায়েলের পদক্ষেপগুলোকে মূল্যায়নের ভিত্তি হিসেবে বেছে নিয়েছে—সে বিষয়ে প্যাটেল স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

ইসরায়েলের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন এই পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আমরা ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি ও গাজার মানবিক সহায়তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এটা চ্যালেঞ্জিং... কারণ অন্যপাশে হামাস আছে। আমরা চেকপয়েন্ট দিয়ে ট্রাক পার হতে দিলেও হামাস সেগুলো দখল করে নিতে পারে। আমরা শতভাগ চেষ্টা করলেও ত্রাণের ট্রাক লুট আটকাতে পারি না।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরপরই বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আছে, যেখানে ইসরায়েল হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে।

ইসরায়েলি বাহিনী প্রায় এক মাস ধরে উত্তর গাজার আরও গভীরে প্রবেশ করছে। হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ঘিরে রেখেছে। আইডিএফ হামাস যোদ্ধাদের পুনরায় সংগঠিত হওয়া ঠেকাতে নতুন করে মানুষকে স্থানচ্যুত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত