যুদ্ধে যোগ না দিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৯: ০৯
Thumbnail image

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা আক্রমণাত্মক পদক্ষেপে সাহায্য করবে না বলে জোর দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তা সত্ত্বেও, ইসরায়েলের জন্য স্থগিত করে রাখা একটি সহায়তা তহবিল নিয়ে আবারও ভাবতে শুরু করেছে বাইডেন প্রশাসন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল রোববার গভীর রাতে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে। সে সময় বাইডেন বলেছেন, ইরানের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় কোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র।

মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও সংঘাত কমাতে বিশ্বনেতাদের আহ্বানে বাইডেনও সুর মিলিয়েছেন। তবে ইসরায়েলের জন্য স্থগিত সহায়তা তহবিলটি যদি পাস করিয়েই ফেলে বাইডেন প্রশাসন, তবে সহিংসতা কমার আশা শিগগিরই আলোর মুখ দেখবে না। কারণ, সে ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুকে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার সহায়তা পেতে সাহায্য করবে ওয়াশিংটন।

জো বাইডেনের আবেদনের পর রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এবং হাউস স্পিকার মাইক জনসন গতকাল রোববার বলেছেন, তিনি মার্কিন মিত্রদের জন্য ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের যুদ্ধকালীন সহায়তা প্যাকেজ দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পাবে ইসরায়েল এবং ইউক্রেন পাবে ৬ হাজার কোটি ডলার।

ফক্স নিউজ চ্যানেলের সানডে মর্নিং ফিউচারকে জনসন বলেছেন, তিনি এবং রিপাবলিকানরা ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বোঝেন এবং ইসরায়েলকে তহবিল দেওয়ার উদ্যোগ এই সপ্তাহে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। জনসন বলেন, ‘এই প্যাকেজের বিশদ বিবরণ একত্রিত করা হচ্ছে। আমরা সব বিকল্প এবং সম্পূরক সমস্যাগুলোও দেখছি।’

গতকাল বাইডেন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে নিজেকে রক্ষার স্বাধীনতা ইসরায়েলের রয়েছে। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতির অংশ। তবে আমরা এমন একটি বিষয়ে নিজেদের জড়ানোর কথা ভাবছি না।’

১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা হয়। এতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আল-কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষ জেনারেলসহ সব মিলিয়ে ১১ জন নিহত হন। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইরান ইসরায়েলকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের দিকে ৩০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ছুড়েছে ইরান। ইসরায়েলের সামান্য ক্ষতিই হয়েছে ইরানের হামলায়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডানের সহায়তায় বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে ইসরায়েল।

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানকে দেখে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে দেশটি পাল্টা হামলা করতে মনস্থির করেছে। তবে কীভাবে এবং কখন এই পাল্টা হামলা হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ইসরায়েলি যুদ্ধ মন্ত্রিসভা।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে ফের সংঘাতে জড়াতে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে না জড়াতে এবং সতর্কতার সঙ্গে ভাবতে বলেছেন ইসরায়েলকে। এর আগেও বাইডেন জানিয়েছিলেন, ইসরায়েল যদি ইরানে হামলা চালায়, তবে সেখানে সঙ্গ দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউসের শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি গতকাল এনবিসি চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে ইরান-ইসরায়েল ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তিনি বলেন, নিজেকে রক্ষা করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে এবং এ ব্যাপারে ইসরায়েলকে সাহায্য করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

জন কারবি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (বাইডেন) যেমন অনেকবার বলেছেন, আমরা এই অঞ্চলে বড় কোনো যুদ্ধ চাই না। আমরা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চাই না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত