টেক্সাসের ঘটনায় ফের আলোচনায় আফিয়া সিদ্দিকী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৪১
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫২

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ইহুদি উপাসনালয় সিনাগগে গত শনিবার কয়েকজনকে জিম্মি করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত হন অপহরণকারী ফয়সাল আকরাম (৪৪)। তবে যাদের জিম্মি করা হয়েছিল তারা অক্ষত আছেন। এদিকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যুক্তরাজ্যে দুই কিশোরকে আটক করা হয়েছে।

তবে এসব কিছু ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে আফিয়া সিদ্দিকীর নাম। কেননা আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তির দাবিতেই জিম্মি করার ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম।

আফিয়া সিদ্দিকী একজন পাকিস্তানি বিজ্ঞানী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ব্রান্ডিস ইউনিভার্সিটি এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করেছেন। আল কায়েদার অপারেটিভ হিসেবে অভিযুক্ত হয়ে তিনি সাজাপ্রাপ্ত হন। ম্যানহাটনের এক আদালত ২০১০ সালে তাকে অভিযুক্ত করে ৮৬ বছরের সাজা দেয়। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জেলে বন্দী রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা কর্মকর্তাদের গুলি করা হোক। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, আফিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা গুরুতর। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ অভিযোগ মারাত্মক। কিন্তু তার সমর্থকেরা তাকে নিরপরাধ বলে মনে করে। তারা মনে করে, টুইন টাওয়ার হামলার পর আফিয়া সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে বিচার ব্যবস্থা অতি উৎসাহী হয়ে কাজ করেছে। 

নিউইয়র্কে ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর আলোচিত টুইন টাওয়ার হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের নজরে পড়েন আফিয়া। ২০০৪ সালের মে মাসে এফবিআই এবং বিচার বিভাগ তাকে আল কায়েদার একজন অপারেটিভ এবং মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করে। অভিযোগে বলা হয়, সামনের মাসগুলোতে সন্ত্রাসী আল কায়েদা হামলার পরিকল্পনা করছে। ২০০৮ সালে আফিয়াকে আটক করে আফগানিস্তান কর্তৃপক্ষ। 

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, তারা আফিয়ার কাছ থেকে নিজের হাতে লেখা নোট পেয়েছে। তাতে ‘ডার্টি বোম’ বা ভয়াবহ ক্ষতিকর বোমা তৈরি নিয়ে আলোচনা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানের উল্লেখ ছিল ওই নোটে। আফগানিস্তানের পুলিশ কম্পাউন্ডের ভেতরে এক সাক্ষাৎকারে কর্তৃপক্ষ বলে, যুক্তরাষ্ট্রের একজন সেনা কর্মকর্তার এম-৪ রাইফেল কেড়ে নেন আফিয়া এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মার্কিন যে টিম দায়িত্বে ছিল তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। 

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে মার্কিন নাগরিকদের হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ২০১০ সালে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। শাস্তি ঘোষণার শুনানিতে বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার বাণী দেন আফিয়া এবং তিনি বিচারকদের ক্ষমা করার ঘোষণা দেন। তার আইনজীবীরা বিচারকের কাছে অনুরোধ জানান, তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। তাই তাকে লঘু শাস্তি দেওয়া হোক। তবে আফিয়া সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি মানসিক ভারসাম্যহীন নই। ওই বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই।’ 

আফিয়া সিদ্দিকীকে শাস্তি দেওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তানি কর্মকর্তারা। তার মুক্তির দাবিতে বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়। মিডিয়াগুলোতেও ব্যাপক সমালোচনা হয়। সেই সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইউসুফ রাজা গিলানি। তিনি আফিয়া সিদ্দিকীকে ‘ডটার অব দ্য নেশন’ বা জাতির কন্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং তাকে জেল থেকে মুক্ত করার প্রচারণা চালানোর ঘোষণা দেন। এরপর পাকিস্তানের নেতারা তাকে মুক্ত করার চেষ্টা চালালে তা পরবর্তীতে কোনো কাজে আসেনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত