শঙ্কায় সাধারণ মানুষ, বিজয় দেখছেন তালেবানরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৫: ৩৬

আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধ শেষ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।  গত বুধবার মার্কিনিদের ইতিহাসে দীর্ঘতম এ লড়াইয়ের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে তালেবানরা দেখছেন বিজয় হিসেবে। আর এটিকে শঙ্কা হিসেবে দেখছে আফগানিস্তানের সাধারণ জনগণ।

 মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, আগামী ১ মে থেকে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রক্রিয়া আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। 

আফগান রাজধানী কাবুলে একটি বিদেশি এনজিওতে কাজ করেন মোহাম্মদ ইদ্রিস। ৩১ বছর বয়সী এ যুবক মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন’কে বলেন, এই সেনা প্রত্যাহার আমাদের সুবিধার জন্য নয়। এতে সহিংসতা হবে, নিরাপত্তাহীনতা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাবে এবং আরও একবার আফগান জনগণ আফগানিস্তান ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় খুঁজতে শুরু করবে।

অনেক আফগান আশঙ্কা করছেন যে , মার্কিন সেনাদের অনুপস্থিতিতে তালেবানরা ক্ষমতার আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাবে।  সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান  যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত আফগান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং এরইমধ্যে দেশটির বিশাল একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা চলা সত্ত্বেও চলতি বছর আফগানিস্তানে সহিংসতা আরও বেড়েছে।

গত বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন  বলা হয়, ২০২০ সালের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আফগানিস্তানে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের সংখ্যা ২৯ শতাংশ বেড়েছে। এর পেছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারবিরোধী হামলা-সহিংসতাকে দায়ী করা হয়।

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেছেন,  যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে সম্মান করেন তিনি । তবে আফগান সংসদের স্পিকার মীর রহমান রহমানি  শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন,  মার্কিন সেনারা চলে গেলে দেশটিতে আবারও গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে। তার কথায়, আফগানরা মার্কিন সেনা প্রত্যাহার চায়, তবে সেটি এখনই নয়।

আফগান সরকারের পক্ষ থেকে তালেবানের সঙ্গে সমঝোতাকারী চার নারীর একজন ফাতিমা গাইলানিও  রহমানি  মতোই মনে করেন।  

ছবি: রয়টার্সউত্তর আফগানিস্তানের বালখ প্রদেশে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কাজ করছেন ফৌজিয়া আহমাদি। ৪২ বছর বয়সী এ নারী জানান, নব্বইয়ের দশকে তালেবান সরকারের আমলে তিনি এমন একটি চাকরি করার কথা কল্পনাও করতে পারতেন না।

ফৌজিয়া বলেন, তালেবান শাসনের বাজে স্মৃতি রয়েছে আমাদের। তখন নারীদের স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে দেয়া হতো না, এমনকি আমরা একা বাজারেও যেতে পারতাম না।

এদিকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে বিজয় হিসেবে দেখছে তালেবানরা।  এ নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বালখ্ প্রদেশের তালেবানের ছায়া মেয়র  হাজি হেখমাত বলেন, আমরা যুদ্ধে জিতেছি, হেরেছে আমেরিকানরা। 

 ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত জিহাদ চলবে জানিয়ে হাজি হেখমাত বলেন,   আমরা চাই ইসলামী সরকার যা শরিয়া আইন মোতাবেক দেশ শাসন করবে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা জিহাদ অব্যাহত রাখব।

সূত্র: সিএনএন, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত