Ajker Patrika

ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় খুন হন ৪ মার্কিন প্রেসিডেন্ট, অল্পের জন্য বেঁচে যান যাঁরা

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৯: ৫২
ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় খুন হন ৪ মার্কিন প্রেসিডেন্ট, অল্পের জন্য বেঁচে যান যাঁরা

পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় কানে গুলি খেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের সময় শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর ওপর হামলা বা গুলি চালানোর ঘটনা এটাই প্রথম নয়। 

এখন পর্যন্ত চার চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। চলুন তবে মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপির সূত্রে হত্যাকাণ্ড এবং হত্যাচেষ্টার শিকার কয়েকজন প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর পরিচয় জেনে নেওয়া যাক।

আব্রাহাম লিংকনআব্রাহাম লিংকন, ১৬তম প্রেসিডেন্ট
হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। ১৮৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল জন উইকস বুথ নামের এক ব্যক্তি গুলি করেন তাঁকে। একটি কমেডি নাটকের বিশেষ মঞ্চায়ন দেখতে তখন স্ত্রীসহ ওয়াশিংটনের ফোর্ড থিয়েটারে গিয়েছিলেন লিংকন। মাথার পেছনে গুলিবিদ্ধ আব্রাহাম লিংকন মারা যান পরদিন। কালোদের অধিকারের বিষয়ে তাঁর সমর্থন ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মূলে।

লিংকনের জায়গায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন। এদিকে ভার্জিনিয়ার একটি আস্তাবলে লুকিয়ে থাকা উইকস বুথকে গুলি করে মারা হয় ১৮৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল।জেমস গারফিল্ডজেমস গারফিল্ড, ২০তম প্রেসিডেন্ট
হত্যাকাণ্ডের শিকার দ্বিতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড। মাত্র ছয় মাস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করতে পারেন তিনি। ১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটনের একটি রেল স্টেশনে হাঁটছিলেন তিনি। নিউ ইংল্যান্ডের একটি ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁর। এ সময়ই চার্লস গুইতো নামের এক ব্যক্তি গুলি করেন তাঁকে।

টেলিফোনের উদ্ভাবক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল শুধু গারফিল্ডের জন্য নকশা করা একটি যন্ত্র ব্যবহার করে তাঁর বুকে ঢোকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। তবে সফল হননি। 

মারাত্মকভাবে আহত প্রেসিডেন্ট কয়েক সপ্তাহ হোয়াইট হাউসে মুমূর্ষু অবস্থায় শুয়ে ছিলেন। সেপ্টেম্বরে নিউজার্সিতে নিয়ে যাওয়ার পর মারা যান তিনি।

হোয়াইট হাউসে গারফিল্ডের জায়গা নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার আর্থার। চার্লস গুইতো বিচারে দোষী প্রমাণিত হন এবং ১৮৮২ সালের জুনে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

উইলিয়াম ম্যাককিনলেউইলিয়াম ম্যাককিনলে, ২৫তম প্রেসিডেন্ট
নিউইয়র্কের বাফেলোয় একটি বক্তৃতা দেওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হন ম্যাককিনলে। তারিখটা ছিল ১৯০১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। জনগণের সঙ্গে হাত মেলানোর সময় একেবারে কাছ থেকে তাঁর বুকে দুটি গুলি করেন এক ব্যক্তি। চিকিৎসকেরা আশা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে ক্ষতের চারপাশে পচন ধরে যায়। 

১৯০১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান ম্যাককিনলে। দ্বিতীয় মেয়াদের মাত্র ছয় মাস কাটাতে পেরেছিলেন তিনি। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন ভাইস প্রেসিডেন্ট থিয়োডর রুজভেল্ট।

লিয়ন অব চলগোস নামের ২৮ বছর বয়স্ক ডেট্রয়টের এক বাসিন্দা গুলি করার কথা শিকার করেন। বিচারে দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর ১৯০১ সালের ২৯ অক্টোবর বৈদ্যুতিক চেয়ারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় তাঁর।

জন এফ কেনেডিজন এফ কেনেডি, ৩৫তম প্রেসিডেন্ট
লুকিয়ে থাকা এক গুপ্তঘাতক শক্তিশালী রাইফেলের সাহায্যে গুলি করে জন এফ কেনেডিকে, ১৯৬৩ সালের নভেম্বরে। স্ত্রী জ্যাকুলিনসহ ডালাসে গিয়েছিলেন তখন কেনেডি। ডালাস শহরের কেন্দ্রস্থলে ডিলি প্লাজার ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় গুলি করা হয় গাড়িবহরে। কেনেডিকে দ্রুত পার্কল্যান্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অল্প সময় পরে সেখানে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন। 

গুপ্তহত্যার কয়েক ঘণ্টা পর হত্যাকারী লি হার্ভে অসওয়াল্ডকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুই দিন পর পুলিশ সদরদপ্তর থেকে কাউন্টি জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন ডালাসের একটি নাইট ক্লাবের মালিক জ্যাক রাবি গুলি করেন তাঁকে। এতেই মৃত্যু হয় অসওয়াল্ডের।

জেরাল্ড ফোর্ড। ছবি: সংগৃহীতজেরাল্ড ফোর্ড, ৩৮তম প্রেসিডেন্ট
১৯৭৫ সালে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার হত্যার চেষ্টা করা হয় ফোর্ডকে। তবে প্রতিবারই অক্ষত থেকে যান তিনি।

প্রথমবার সেকরামেন্তোতে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন ফোর্ড। এ সময় রাস্তার লোকজন ঠেলে এগিয়ে এসে লিনেট্টে ফ্রমি নামের একজন আধা স্বয়ংক্রিয় একটি পিস্তল তাক করেন ফোর্ডের দিকে। কিন্তু ট্রিগার চাপলেও গুলি বের হয়নি। ফ্রমি দীর্ঘ কারাভোগের পর ২০০৯ সালে মুক্তি পান।

১৭ দিন পর সান ফ্রান্সিসকোর এক হোটেলের বাইরে সারা জেন মুর নামের এক নারী ফোর্ডকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। কিন্তু লক্ষ্যচ্যুত হয় গুলি। দ্বিতীয় গুলি করার চেষ্টা করার সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি মুরের হাত ধরে ফেলেন।

দীর্ঘ কারাভোগের পর ২০০৭ সালে মুক্তি পান মুর।

রোনাল্ড রিগ্যান। ছবি: সংগৃহীতরোনাল্ড রিগ্যান, ৪০তম প্রেসিডেন্ট
রোনাল্ড রিগ্যান ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি বক্তৃতা দিয়ে গাড়িবহরের দিকে এগোচ্ছিলেন। এ সময় উপস্থিত জনতার মধ্যে থাকা জন হিঙ্কলে জুনিয়র তাঁকে গুলি করেন। 

রিগ্যান ১৯৮১ সালের মার্চের এই গুলির ঘটনায় সুস্থ হয়ে ওঠেন। তার প্রেস সচিব জেমস ব্র্যাডিসহ আরও তিনজন এ সময় গুলিবিদ্ধ হন। ব্র্যাডি এ ঘটনায় আংশিকভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

হিঙ্কলিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে রিগ্যানকে গুলি করার জন্য মানসিক অসুস্থতাকে জুরিরা কারণ হিসেবে বিবেচনা করলে একটি মানসিক হাসপাতালে বন্দী অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হতে থাকে। ২০২২ সালে ‘নিজের বা অন্যদের জন্য আর বিপজ্জনক নয়’ বলে একজন বিচারক রায় দিলে ছাড়া পান হিঙ্কলি।

জর্জ ডব্লিউ বুশ। ছবি: সংগৃহীতজর্জ ডব্লিউ বুশ, ৪৩তম প্রেসিডেন্ট
২০০৫ সালে জর্জিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিখাইল সাকাশভিলির সঙ্গে দেশটির রাজধানী তবিলিসিতে একটি শোভাযাত্রায় অংশ নেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। এ সময় তাঁর দিকে একটি হ্যান্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।

কাপড়ে মোড়ানো গ্রেনেডটি প্রায় ১০০ ফুট দূরে পড়ার সময় দুজনেই বুলেটপ্রুফ ব্যারিয়ারের পেছনে ছিলেন। গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়নি এবং কেউ আহত হয়নি।

এ ঘটনায় ভ্লাদিমির আরুতিউনিয়ান নামে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রবার্ট এফ কেনেডি। ছবি: সংগৃহীতরবার্ট এফ কেনেডি, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী
লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হোটেলে যখন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তখন রবার্ট এফ কেনেডি ডেমোক্রেটিক রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন চাইছিলেন। ১৯৬৮ সালের ক্যালিফোর্নিয়া প্রাইমারিতে তাঁর বিজয়ী বক্তৃতা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এ সময় আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন।

কেনেডি ছিলেন নিউ ইয়র্কের একজন সিনেটর এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাই। এ ঘটনার পাঁচ বছর আগে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি  হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

সিরহান সিরহান নামে এক ব্যক্তি হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তাঁর শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়। গত বছর মুক্তির জন্য তাঁর সর্বশেষ আবেদন প্রত্যাখ্যান করার পরে সিরহান কারাগারেই রয়ে গেছেন।

জর্জ সি ওয়ালেস। ছবি: সংগৃহীতজর্জ সি ওয়ালেস, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী
ওয়ালেস ১৯৭২ সালে মেরিল্যান্ডে প্রচারাভিযানের সময় গুলিবিদ্ধ হন। ওই সময় ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন চাইছিলেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে কোমর থেকে তাঁর শরীরের নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়।

আলাবামার গভর্নর ছিলেন ওয়ালেস।

আর্থার ব্রেমারকে গুলি করার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কারাভোগ শেষে ২০০৭ সালে মুক্তি পান তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর হামলা সম্পর্কিত আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পকে তরুণদের ‘রোল মডেল’ বললেন এক সময়ের ঘোর বিরোধী নিকি মিনাজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনের মঞ্চে নিকি মিনাজ। ছবি: সংগৃহীত
‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনের মঞ্চে নিকি মিনাজ। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র‍্যাপ তারকা নিকি মিনাজ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে তিনি তরুণ পুরুষদের জন্য ট্রাম্প ও ভ্যান্সকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। মিনাজের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ চমক সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ‘ফরচুন’ জানিয়েছে, এই সম্মেলনটি প্রয়াত রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের স্মরণে আয়োজন করা হয়। মঞ্চে নিকি মিনাজের সাক্ষাৎকার নেন চার্লি কার্কের স্ত্রী ও বর্তমানে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর নেতৃত্বে থাকা অ্যারিকা কার্ক। আলোচনায় ট্রাম্পের প্রতি নতুন সমর্থনের কথা জানান মিনাজ—যদিও অতীতে তিনি ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতারও নিন্দা জানান।

মিনাজ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে কটাক্ষ করে ট্রাম্পের দেওয়া ‘নিউ-স্কাম’ নামটি ব্যবহার করেন। বর্তমান প্রশাসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন—বর্তমান প্রশাসনে হৃদয় ও আত্মা আছে এবং ট্রাম্প ও ভ্যান্স দুজনই এমন নেতা, যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজে নিজেদের মিল খুঁজে পায়।

এদিকে মঞ্চে এক অস্বস্তিকর মুহূর্ত তৈরি হয়, যখন ভ্যান্সের রাজনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করতে গিয়ে মিনাজ তাঁকে ‘অ্যাসাসিন’ বলে ফেলেন। কথাটি বলার পরই তিনি থেমে যান এবং পরিস্থিতি কিছুটা বিব্রতকর হয়ে ওঠে। চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় শব্দটি উপস্থিত অনেকের মনে আঘাত দেয়।

সম্প্রতি মিনাজ ট্রাম্পের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান নির্যাতন সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন, যেখানে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়। এ নিয়ে তিনি জাতিসংঘে মার্কিন মিশনে আয়োজিত এক প্যানেল আলোচনাতেও অংশ নেন।

নিজের পরিবর্তিত অবস্থান নিয়ে মিনাজ বলেন, ‘মত বদলানো দোষের নয়—মনের কথা বলাই এখন সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে গেছে।’ বিনোদন জগৎ থেকে সমালোচনার প্রসঙ্গে জানান, তিনি এসব নিয়ে ভাবেন না। একসময় ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তীব্র বিরোধিতা করা এই শিল্পী এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, তাঁর মত বদলানো ঠিকই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

‘এই বিভীষিকা আমি কখনো ভুলতে পারব না’—বলছিলেন হাদিল আল ঘেরবাওয়ি। ২৬ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি নারী গাজা যুদ্ধে চরম ক্ষুধা, ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যেই দুটি গর্ভধারণ ও দুবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন। গাজা সিটির পূর্বাংশে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে বসবাস করায় যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনই তিনি গাজার পশ্চিম অংশে বসবাস করা বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। হাদিল ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু এরপর পরিবারটি অন্তত ১৩ বার বাস্তুচ্যুত হয় এবং স্বামীর বাড়িটিও একদিন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসেই গাজা সিটিতে একটি আবাসিক ভবনে বড় ধরনের হামলার কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন হাদিল। তাঁর কাছে এটিকে একটি ভূমিকম্প মনে হয়েছিল। পরে আশ্রয় নেন আল-শিফা হাসপাতালে। সেখানে অন্যান্য আশ্রয়প্রার্থীর ভিড় এত বেশি ছিল যে, বাথরুম ব্যবহার করাও প্রায় অসম্ভব ছিল। সেদিনের দৃশ্য আজও তাড়া করে ফেরে হাদিলকে। স্তূপ করে রাখা লাশ, ড্রামে রাখা খণ্ড-বিখণ্ড অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আর তীব্র গন্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি গর্ভবতী ছিলাম, সহ্য করতে পারিনি।’

অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে—নিরাপত্তার আশায় এবার তিনি ও তাঁর স্বামী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে আগেভাগেই সন্তান প্রসবের অনুরোধ করেন। হাদিল যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন হাসপাতালটির পাশের ভবনেই হামলা হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে সন্তান বদলে যাওয়ার আতঙ্কও গ্রাস করেছিল হাদিলকে। তবে আতঙ্কের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত তিনি ছেলে জাওয়াদের জন্ম দেন।

নবজাতক নিয়ে হাদিলকে ৩০ জনের সঙ্গে একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল। সেই সময়টিতে সেলাইয়ের তীব্র ব্যথার মধ্যেও তিনি কোনো ওষুধ পাননি; রাতের পর রাত চুপচাপ এই ব্যথা সহ্য করেছেন। তাঁর ধারণা, প্রসবের পর তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

কয়েক মাস পর তাঁরা একটি তাঁবুতে ওঠেন। বালু, পোকামাকড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় একের পর এক নবজাতকের মৃত্যুর খবরে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন হাদিল। রাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বারবার জেগে উঠতেন। জাওয়াদের বয়স ৯ মাস হলে আবারও গর্ভবতী হন তিনি। হাদিল বলেন, ‘তাঁবুতে থেকে আরেকটি সন্তান—ভীষণ ধাক্কা খেয়েছিলাম।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির খবর কিছুটা আশা জাগিয়েছিল তাঁদের। সেই আশা থেকেই ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পরই ভেঙে যায় যুদ্ধবিরতি। পেটে সন্তান নিয়ে আবারও পালাতে হয় হাদিলকে। পালানোর পর তাঁদের বাড়িটিও ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের মধ্যে দ্বিতীয় গর্ভধারণ হাদিলের জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিন। এই সন্তান পেটে রাখার ৯ মাসই তাঁর যুদ্ধের মধ্যে কেটেছে। এমনও দিন গেছে, সারা দিন শুধু একটি শসা খেয়ে কাটিয়েছেন। আর কোথাও এক মুঠো খাবার পেলে নিজের ভাগটুকু তিনি ছেলে জাওয়াদকে দিতেন।

দ্বিতীয়বার প্রসবের সময়ও তিনি বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কারণ ওই বাড়ি থেকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নবজাতক সুরক্ষার জন্য ইনকিউবেটর ছিল। এক রাতে প্রসবব্যথা শুরু হলে, লিফট না থাকায় পাঁচ তলা থেকে হেঁটেই নামতে হয় হাদিলকে। পরে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন এবং ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় ছেলে ফারেসের জন্ম দেন। জন্মের সময় ফারেসের ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি।

এবারে অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই সেলাই দেওয়া হয় হাদিলকে। আর অন্যকে সুযোগ করে দিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিছানা খালি করে তাঁকে চেয়ারে বসে থাকতে হয়। ফারেসের জন্মের পাঁচ ঘণ্টা পর, চরম ক্লান্তি ও ব্যথা নিয়ে তিনি আবার পাঁচ তলা সিঁড়ি বেয়ে বাবা-মায়ের ঘরে ফেরেন। এই যুদ্ধ, তাঁর শরীর ও মনে রেখে গেছে এমন ক্ষত—যা ভুলবার নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই সেই কারাগারগুলো আবার ভরে উঠছে। এবার নতুন সরকারের অধীনেই সিরিয়ায় আবারও ফিরে এসেছে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ।

রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত এক বছরে অন্তত ৮২৯ জন নিরাপত্তাজনিত কারণে আটক হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বড় অংশই কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা আদালতের আদেশ ছাড়াই বন্দী রয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় প্রথম দফার গ্রেপ্তার শুরু হয়েছিল বিদ্রোহীদের বিজয়ের পরপরই। সে সময় মূলত আসাদের আমলের সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে শীতের শেষ দিকে উপকূলীয় অঞ্চলে সহিংসতার জের ধরে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন। বসন্ত ও গ্রীষ্মে দ্রুজ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক ধরপাকড় চলে। একই সঙ্গে সুন্নি, খ্রিষ্টান ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বা আসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অস্পষ্ট অভিযোগে আটক হন।

রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ আমলের অন্তত ২৮টি কারাগার ও আটক কেন্দ্র আবার সক্রিয় হয়েছে। এগুলোর অনেকগুলোই অতীতে নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল। যদিও বর্তমান সরকার বলছে, অপরাধীদের বিচারের প্রয়োজনে এসব কেন্দ্র ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অনেক বন্দীকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তারা প্রকাশ করেনি।

সাক্ষাৎকারে সাবেক বন্দী ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আটক কেন্দ্রগুলোতে ভয়াবহ মানবেতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গাদাগাদি করে বন্দী রাখা, খাবার ও চিকিৎসার অভাব, ত্বকের রোগ এবং নিয়মিত মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অন্তত ১১ জন বন্দী কারা হেফাজতে মারা গেছেন বলে নথিভুক্ত করেছে রয়টার্স। এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পরিবার জানতই না—দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর তারা বিষয়টি জানতে পারে।

চাঁদাবাজিও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ১৪টি পরিবার জানিয়েছে, স্বজনকে মুক্তির বিনিময়ে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দাবি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ৯০ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। অর্থ পরিশোধের পরও অনেকেই মুক্তি পাননি।

এদিকে সরকার স্বীকার করেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের সময় কিছু ‘ফাঁকফোকর’ তৈরি হয়েছে এবং কিছু নিরাপত্তা সদস্য নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তাদের দাবি, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ১৫৯ জন নিরাপত্তা সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ব্যাপক আটক ও গুমের অভিযোগ নতুন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও আসাদের পতনের পর ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্বিচার আটক’-এর তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

আসাদের শাসনামলের মতো নির্মম নির্যাতন না হলেও, পুরোনো কারাগার ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন সিরিয়ার নতুন ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। মানবাধিকারকর্মীদের ভাষায়, ‘শাসক বদলেছে, কিন্তু কারাগারের ছায়া এখনো কাটেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মস্কোতে গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল সারভারভ নিহত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় দেশটির শীর্ষস্থানীয় এক জেনারেল নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে রুশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাতে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফানিল সারভারভ (৫৬)। তিনি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন।

তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত অবস্থায় সারভারভকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, একটি সাদা রঙের গাড়ি বিস্ফোরণে দুমড়েমুচড়ে গেছে এবং সেটির যন্ত্রাংশ উড়ে গিয়ে পাশে থাকা অন্য যানবাহনের ওপর পড়েছে।

রুশ ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে রুশ কর্মকর্তাদের ধারণা, এই হামলার নেপথ্যে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে। তবে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, জেনারেল সারভারভের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তা জানানো হয়েছে।

৫৬ বছর বয়সী ফানিল সারভারভ রুশ সামরিক বাহিনীর অত্যন্ত অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন। রুশ গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ফানিল সারভারভ নব্বইয়ের দশক এবং ২০০০ সালের শুরুতে তিনি ওসেটিয়ান-ইঙ্গুশ সংঘাত ও চেচেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৫-১৬ সালে সিরিয়ায় রুশ সামরিক অভিযানেও তিনি নেতৃত্ব দেন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে মস্কোতে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর বেশ কয়েকটি বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দুগিনের কন্যা দারিয়া দুগিনা গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন।

চলতি বছরের এপ্রিলে জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক ও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল ইগর কিরিলভও একই ধরনের হামলায় প্রাণ হারান।

নীতিগত কারণে ইউক্রেন সাধারণত এ ধরনের হামলার দায় স্বীকার করে না। তবে গত বছর জেনারেল কিরিলভ নিহতের ঘটনায় ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সংস্থার জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল বিবিসির একটি সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত