গাড়ি কারখানা করতে সুষ্ঠু নীতিমালা হোক

আবু সাইম
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০: ৩০
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১: ২০

গাড়ির ব্যবসা কেমন চলছে? 
মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম: দুই মাস ধরে আবারও গাড়ির ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এর কারণ তিনটি—ডলার সংকট, তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা। 

আগে ৫ থেকে ১০ শতাংশ মার্জিন বা টাকা দিয়ে গাড়ি আমদানি করতে পারতাম। এখন শতভাগ মার্জিন দিয়ে আমদানি করতে হয়। ১৫ লাখ টাকার গাড়ি হলে আমরা ১.৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে আনতে পারতাম। এখন ১৫ লাখ টাকার পুরোটাই দিতে হচ্ছে। এতে আগের চেয়ে বেশি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় বিক্রি বাড়ছে না।  

দেশে হাইব্রিড গাড়ির চাহিদা কেমন? 
মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম: হাইব্রিড গাড়ি একদিকে পরিবেশবান্ধব, অন্যদিকে জ্বালানি সাশ্রয়ী। সাধারণ তেলের গাড়ির চেয়ে হাইব্রিড গাড়িতে জ্বলানিতে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ সাশ্রয় হয়। তবে এর সুফল পুরো আমরা পাচ্ছি না। হাইব্রিডের পুরো সুফল পেতে হলে গাড়ির গতিবেগ ন্যূনতম ৪০ থেকে ৫০ মাইল হতে হবে। কিন্তু আমাদের ঢাকা শহর তো তার উপযোগী নয়।  

সারা পৃথিবী এখন হাইব্রিড গাড়িকে প্রণোদনা দিচ্ছে, কিন্তু আমাদের দেশে এই সুবিধা তেমন পাচ্ছি না। এ জন্য দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির বিক্রিও নেই। এটা বলতে গেলে আমদানিই হচ্ছে না।  

দেশে তো নতুন গাড়ি তৈরি হচ্ছে...? 
মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম: আমরাও চাই দেশে গাড়ি উৎপাদন হোক। তবে তার যেন একটি নির্দিষ্ট মান থাকে। আর গ্রাহকের যেন কেনার স্বাধীনতা থাকে। তারা ঠিক করবেন একটা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি কিনবেন, নাকি রিকন্ডিশন কিনবেন। এ দুই গাড়ির ক্ষেত্রে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা যেন থাকে। পুরোনো ও নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কায়নের পার্থক্য যেন থাকে। 

রিকন্ডিশন গাড়ির সিংহভাগ জাপানের। সেখান থেকে আমরা যে গাড়ি আনছি, জাপানি কোম্পানির একই মডেলের গাড়ি অন্য কোনো দেশ থেকে আনলে তার মান কিন্তু অনেক খারাপ হবে। কারণ জাপানের অভ্যন্তরে যে গাড়ি ব্যবহৃত হয় আর যে গাড়ি তারা অন্য দেশে উৎপাদন বা রপ্তানি করে, তার গুণগতমান কিন্তু সমান নয়। তাই আমরা চাই গাড়ি উৎপাদনের বিষয়ে সরকার যেন একটা সুষ্ঠু নীতিমালা দেয়।

দেশে গাড়ির ভবিষ্যৎ বাজার কেমন? 
মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম: গত দেড় দশক ধরে দেশে অর্থনৈতিক বড় পরিবর্তন হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক বেড়ে গেছে, বিনিয়োগ বেড়েছে। মানুষের হাতে টাকা আসছে। দেশের ১ কোটি লোক বিদেশে থাকে, তাদের অন্তত কয়েক লাখের গাড়ি কেনার সামর্থ্য আছে। এতে গাড়ির একটা বড় বাজার তৈরি হচ্ছে। তবে আমাদের শুল্ক কমাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আরো অনেক কিছু করতে হবে। এই যে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে, তার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? কখনো একটা গাড়ি সরকার বন্ধ করে দিয়েছে বলে তো শুনিনি। তা ছাড়া এত যে দুর্ঘটনা হচ্ছে, সেখানে কি আমাদের সঙ্গে কেউ কথা বলছে, কেউ কখনো পরামর্শ নিচ্ছে? আমি তো দেশের অন্যতম বড় গাড়ি আমদানিকারক। কখনো আমাকে ডাকেনি। আমাদের পরামর্শ তো নিতে পারে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত