রাশেদ নিজাম
সিআইডিকে নিয়ে নতুন করে কী ভাবছেন?
মোহাম্মদ আলী মিয়া: মানুষের আস্থা-বিশ্বাসের জায়গা হচ্ছে সিআইডি। মানুষ মনে করে সিআইডিতে গেলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। সিআইডিতে থানায় দায়ের করা মামলা যত আসে, তার চেয়ে বেশি আসে আদালতে করা মামলা। থানা বা অন্য সংস্থা যেসব মামলার প্রতিবেদন দেয়, সেখানে তথ্য-উপাত্ত কম থাকে। সিম্বলিক বা ফরেনসিক অনেক কিছুই তারা উপস্থাপন করতে পারে না। সেদিক থেকে সিআইডি এগিয়ে। সিআইডির কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় আমরা আরও একটু উন্নতি করতে চাইছি। বিভাগীয় শহরে ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা এখন প্রধান কাজ।
আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পারলাম, একটি চক্র ডলারে ১৩০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে সিআইডি কাজ শুরু করেছে। ডলারের দাম কমে এসেছে। মানি এক্সচেঞ্জ নিয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসেছি। ২৩৫টি মানি এক্সচেঞ্জ বৈধ, বাকিগুলো অবৈধ। খোঁজ নিয়ে জানতে পারছি, তারা হাইকোর্টে একটা রিট করে অবৈধ সত্ত্বেও ব্যবসা করে যাচ্ছে।
সেই সিন্ডিকেটকে কি আপনারা শনাক্ত করতে পেরেছেন?
মোহাম্মদ আলী: এরা ব্যবসায়ী, শেয়ারবাজারে যখন অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের দাম যখন প্রত্যাশিত হয়নি, তখন একটি অসাধু চক্র ডলারের দামকে দায়ী করছে।
তবে এরা কি শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক লোকজন?
মোহাম্মদ আলী: হ্যাঁ, শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক লোকজন। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। তদন্ত চলছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, রমনা বটমূলে বোমা হামলা, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা সিআইডি একসময় তদন্ত করেছে। কিন্তু এখন সিআইডিতে তেমন মামলা আসে না। তবে কি সিআইডির আগের সেই অবস্থান এখন নেই?
মোহাম্মদ আলী: না, সিআইডি আগের জায়গাতেই রয়েছে। বরং অনেক উন্নত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম। এটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির উত্তর না এলে তো আমরা আগাতে পারছি না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বারবার পেছাচ্ছে। সিআইডি আসলে কিছু পেয়েছে তদন্তে? অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে কবে?
মোহাম্মদ আলী: আমরা চিঠি দিয়েছি। তাগিদ দিয়েছি। উত্তর এলে ভালো একটা অবস্থায় পৌঁছাব। কারা জড়িত, কী কী পাওয়া গেল—এসব সম্পর্কে এখন বলা যাবে না।
ইভ্যালি, ইঅরেঞ্জসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হওয়া বেশ কিছু মামলার মধ্যে ১১টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। সেগুলো তদন্তের অগ্রগতি কী? আর ইভ্যালি নতুন করে ব্যবসা শুরুর ঘোষণাও দিয়েছে।
মোহাম্মদ আলী: বাংলাদেশের ই-কমার্সের ব্যবসার ধরন, আর আমাজন, আলিবাবার মতো বড় প্রতিষ্ঠানের ধরন এক রকম না। বাংলাদেশের অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কৌশলই যেন সাধারণ ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা, ধোঁকাবাজি করা। তদন্ত সংস্থা হিসেবে আমাদের তো নজরদারি থাকবেই। তবে শুধু সিআইডি নয়, সব গোয়েন্দা সংস্থার উচিত মনিটরিং করা।
অনলাইন জুয়ার বড় বাজার বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে সিআইডির আভিযানিক সাফল্যও রয়েছে। কিন্তু বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন?
মোহাম্মদ আলী: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে পুঁজি করে অনেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। বিদেশি লোকজনের সহায়তায় দেশীয় কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ এ দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করার জন্য ভার্চুয়াল ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচা করছে, যাকে বলা হয় ভার্চুয়াল ডায়মন্ড। এই ডায়মন্ড ভাঙলে মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা আসে। একজন উঠতি বয়সী ছেলের হাতে যখন মাসে ২০ হাজার টাকা আসে, তখন সে উৎসাহবোধ করে। তবে সমস্যা হয়, বিটিআরসিকে অনুরোধ করে বন্ধ করা সাইট ভিপিএন ব্যবহারে চালানো হচ্ছে। ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগে আমরা তেমন করে সুরাহা পাইনি।
অনলাইন জুয়া বন্ধ করার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। প্রচলিত আইনেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না? তাহলে কীভাবে আইনি পদক্ষেপ নেবে সিআইডি?
মোহাম্মদ আলী: অনলাইন বেটিং বা জুয়াকে বন্ধ করার জন্য আমরা আইন করতে চাইছি। এটা তো মানি লন্ডারিং বটে। কারণ, জুয়ার আয়ের টাকা তো দেশে থাকছে না। বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমরা মানি লন্ডারিং ধারায় শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে চাইছি।
অনলাইন জুয়ার পেমেন্ট মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আপনাদের পর্যবেক্ষণ কী?
মোহাম্মদ আলী: মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটরিং করে। কোথায় কত টাকা লেনদেন হচ্ছে, তা তাদের ড্যাশবোর্ডে দেখা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের জানালে তখন অভিযান চালাই।
সম্প্রতি মানব পাচার বেড়েছে। এটা বন্ধে র্যাব, পুলিশসহ অনেক সংস্থা কাজ করছে। সিআইডিও কাজ করছে। মানব পাচার বন্ধে সিআইডির উদ্যোগ কী?
মোহাম্মদ আলী: আমরা প্রথমে শনাক্ত করছি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মধ্যে কারা বৈধ, কারা অবৈধ। এই কাজটা শেষ হয়ে গেলে আমরা বুঝতে পারব কারা অবৈধভাবে মানব পাচার করছে। দুই হাজারের মতো ট্রাভেলস ও রিক্রুট এজেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু রয়েছে সম্পূর্ণ অবৈধ।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, দেশের বাইরে নিয়ে কিডন্যাপ করে দেশে মুক্তিপণ দাবি করা। আমাদের দূতাবাস সহায়তা করছে। এটা নিয়েও আমরা কাজ করছি। তবে বিএমইটি, ইমিগ্রেশন বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সবাই যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করে, তাহলে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করলে মানবপাচার বন্ধ করা যাবে না।
হুন্ডির মাধ্যমে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন বেড়েছে। সামনে নির্বাচন। নির্বাচনকালীন জঙ্গি তৎপরতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে গোয়েন্দাদের। এ ক্ষেত্রে কী করছে সিআইডি?
মোহাম্মদ আলী: দেশের বিভিন্ন জেলায় অনেকেই নিখোঁজ হচ্ছে। তাদের অনেকে ফেরে না। তারা কোথায় যাচ্ছে, আমরা এসব খতিয়ে দেখছি।
সিআইডিতে মামলার জট লেগে থাকে। তদন্ত শেষ করতে সময়ও বেশি নিচ্ছে সিআইডি।
মোহাম্মদ আলী: আমি যোগদান করেই কর্মকর্তাদের বলেছি, পাঁচ বছর, তিন বছর, দুই বছর ধরে পেইন্ডিং (ঝুলে থাকা) মামলার তালিকা দাও। আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তা আসলেই কম। তার পরও মামলার জট কাটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সিআইডিকে মামলার হিমাগার বলা হতো একসময়। অনেকে ঢাকায় থাকার জন্য সিআইডিতে পোস্টিং নেন। কিন্তু কাজে তত মনোযোগী নয়। এটা কি ঠিক?
মোহাম্মদ আলী: বর্তমানে অনেক উন্নত হয়েছে সিআইডি। একটি মামলাও পাবেন না, যেটা ডিপ ফ্রিজে আছে। ১০-১২ বছরের পুরোনো কোনো মামলা নেই সিআইডিতে। এখন সর্বোচ্চ ১৪৭টি মামলা আছে পাঁচ বছরের, যা কোর্টের নির্দেশনার কারণে ঝুলে আছে। একসময় সিআইডি হয়তো ডাম্পিং পোস্টিং ছিল; কিন্তু এখন আর নেই। ইচ্ছেমতো তদন্তকাজ করলে করলাম, সেই সুযোগ সিআইডিতে আর নেই।
আপনাদের রাসায়নিক ল্যাবে অনেক চাপ। আলোচিত ঘটনা ছাড়া ভিসেরার প্রতিবেদন দ্রুত মেলে না।
মোহাম্মদ আলী: ফরেনসিকে এই চাপটা ছিল। আমি এসেই একটা পদ্ধতি চালু করেছি। কে কয়টা কাজ করেছে, সেটার আপডেট জানার জন্য অভ্যন্তরীণ গ্রুপ খুলেছি। সেখানে সবাই দিনের সবশেষ তথ্য দেবে। জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানতে পারছেন, তাঁর স্যাম্পলের পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্টের কপিও সেখানে পেয়ে যাচ্ছে। তদবিরে আর কিছু হচ্ছে না।
পুলিশের প্রত্যেকটি সংস্থা এখন কাজের পাশাপাশি প্রচারেও মনোযোগী। কিন্তু সিআইডি প্রচারে পিছিয়ে। কী কারণ?
মোহাম্মদ আলী: আমি প্রচারে না, কাজে বিশ্বাসী। আমাদের কাজের মূল্যায়ন প্রচারে নয়, তদন্তে হবে।
পুলিশের সব ইউনিটেই কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অবৈধ আর্থিক সংশ্লেষ, অপরাধে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে সিআইডিতে আপনার অবস্থান কী?
মোহাম্মদ আলী: আমি প্রথম দিনেই নির্দেশনা দিয়েছি। এখন আর সিআইডির কেউ প্রধানের নির্দেশনা ছাড়া মন চাইলেই অভিযান করতে পারে না। এই জায়গায় আমার স্পষ্ট ঘোষণা, জিরো টলারেন্স। কাউকে অন্যায় জুলুম, অন্যায় আটক করলে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ আলী: আজকের পত্রিকাকেও ধন্যবাদ।
সিআইডিকে নিয়ে নতুন করে কী ভাবছেন?
মোহাম্মদ আলী মিয়া: মানুষের আস্থা-বিশ্বাসের জায়গা হচ্ছে সিআইডি। মানুষ মনে করে সিআইডিতে গেলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। সিআইডিতে থানায় দায়ের করা মামলা যত আসে, তার চেয়ে বেশি আসে আদালতে করা মামলা। থানা বা অন্য সংস্থা যেসব মামলার প্রতিবেদন দেয়, সেখানে তথ্য-উপাত্ত কম থাকে। সিম্বলিক বা ফরেনসিক অনেক কিছুই তারা উপস্থাপন করতে পারে না। সেদিক থেকে সিআইডি এগিয়ে। সিআইডির কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় আমরা আরও একটু উন্নতি করতে চাইছি। বিভাগীয় শহরে ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা এখন প্রধান কাজ।
আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পারলাম, একটি চক্র ডলারে ১৩০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে সিআইডি কাজ শুরু করেছে। ডলারের দাম কমে এসেছে। মানি এক্সচেঞ্জ নিয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসেছি। ২৩৫টি মানি এক্সচেঞ্জ বৈধ, বাকিগুলো অবৈধ। খোঁজ নিয়ে জানতে পারছি, তারা হাইকোর্টে একটা রিট করে অবৈধ সত্ত্বেও ব্যবসা করে যাচ্ছে।
সেই সিন্ডিকেটকে কি আপনারা শনাক্ত করতে পেরেছেন?
মোহাম্মদ আলী: এরা ব্যবসায়ী, শেয়ারবাজারে যখন অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের দাম যখন প্রত্যাশিত হয়নি, তখন একটি অসাধু চক্র ডলারের দামকে দায়ী করছে।
তবে এরা কি শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক লোকজন?
মোহাম্মদ আলী: হ্যাঁ, শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক লোকজন। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। তদন্ত চলছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, রমনা বটমূলে বোমা হামলা, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা সিআইডি একসময় তদন্ত করেছে। কিন্তু এখন সিআইডিতে তেমন মামলা আসে না। তবে কি সিআইডির আগের সেই অবস্থান এখন নেই?
মোহাম্মদ আলী: না, সিআইডি আগের জায়গাতেই রয়েছে। বরং অনেক উন্নত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম। এটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির উত্তর না এলে তো আমরা আগাতে পারছি না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বারবার পেছাচ্ছে। সিআইডি আসলে কিছু পেয়েছে তদন্তে? অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে কবে?
মোহাম্মদ আলী: আমরা চিঠি দিয়েছি। তাগিদ দিয়েছি। উত্তর এলে ভালো একটা অবস্থায় পৌঁছাব। কারা জড়িত, কী কী পাওয়া গেল—এসব সম্পর্কে এখন বলা যাবে না।
ইভ্যালি, ইঅরেঞ্জসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হওয়া বেশ কিছু মামলার মধ্যে ১১টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। সেগুলো তদন্তের অগ্রগতি কী? আর ইভ্যালি নতুন করে ব্যবসা শুরুর ঘোষণাও দিয়েছে।
মোহাম্মদ আলী: বাংলাদেশের ই-কমার্সের ব্যবসার ধরন, আর আমাজন, আলিবাবার মতো বড় প্রতিষ্ঠানের ধরন এক রকম না। বাংলাদেশের অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কৌশলই যেন সাধারণ ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা, ধোঁকাবাজি করা। তদন্ত সংস্থা হিসেবে আমাদের তো নজরদারি থাকবেই। তবে শুধু সিআইডি নয়, সব গোয়েন্দা সংস্থার উচিত মনিটরিং করা।
অনলাইন জুয়ার বড় বাজার বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে সিআইডির আভিযানিক সাফল্যও রয়েছে। কিন্তু বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন?
মোহাম্মদ আলী: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে পুঁজি করে অনেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। বিদেশি লোকজনের সহায়তায় দেশীয় কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ এ দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করার জন্য ভার্চুয়াল ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচা করছে, যাকে বলা হয় ভার্চুয়াল ডায়মন্ড। এই ডায়মন্ড ভাঙলে মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা আসে। একজন উঠতি বয়সী ছেলের হাতে যখন মাসে ২০ হাজার টাকা আসে, তখন সে উৎসাহবোধ করে। তবে সমস্যা হয়, বিটিআরসিকে অনুরোধ করে বন্ধ করা সাইট ভিপিএন ব্যবহারে চালানো হচ্ছে। ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগে আমরা তেমন করে সুরাহা পাইনি।
অনলাইন জুয়া বন্ধ করার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। প্রচলিত আইনেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না? তাহলে কীভাবে আইনি পদক্ষেপ নেবে সিআইডি?
মোহাম্মদ আলী: অনলাইন বেটিং বা জুয়াকে বন্ধ করার জন্য আমরা আইন করতে চাইছি। এটা তো মানি লন্ডারিং বটে। কারণ, জুয়ার আয়ের টাকা তো দেশে থাকছে না। বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমরা মানি লন্ডারিং ধারায় শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে চাইছি।
অনলাইন জুয়ার পেমেন্ট মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আপনাদের পর্যবেক্ষণ কী?
মোহাম্মদ আলী: মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটরিং করে। কোথায় কত টাকা লেনদেন হচ্ছে, তা তাদের ড্যাশবোর্ডে দেখা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের জানালে তখন অভিযান চালাই।
সম্প্রতি মানব পাচার বেড়েছে। এটা বন্ধে র্যাব, পুলিশসহ অনেক সংস্থা কাজ করছে। সিআইডিও কাজ করছে। মানব পাচার বন্ধে সিআইডির উদ্যোগ কী?
মোহাম্মদ আলী: আমরা প্রথমে শনাক্ত করছি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মধ্যে কারা বৈধ, কারা অবৈধ। এই কাজটা শেষ হয়ে গেলে আমরা বুঝতে পারব কারা অবৈধভাবে মানব পাচার করছে। দুই হাজারের মতো ট্রাভেলস ও রিক্রুট এজেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু রয়েছে সম্পূর্ণ অবৈধ।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, দেশের বাইরে নিয়ে কিডন্যাপ করে দেশে মুক্তিপণ দাবি করা। আমাদের দূতাবাস সহায়তা করছে। এটা নিয়েও আমরা কাজ করছি। তবে বিএমইটি, ইমিগ্রেশন বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সবাই যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করে, তাহলে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করলে মানবপাচার বন্ধ করা যাবে না।
হুন্ডির মাধ্যমে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন বেড়েছে। সামনে নির্বাচন। নির্বাচনকালীন জঙ্গি তৎপরতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে গোয়েন্দাদের। এ ক্ষেত্রে কী করছে সিআইডি?
মোহাম্মদ আলী: দেশের বিভিন্ন জেলায় অনেকেই নিখোঁজ হচ্ছে। তাদের অনেকে ফেরে না। তারা কোথায় যাচ্ছে, আমরা এসব খতিয়ে দেখছি।
সিআইডিতে মামলার জট লেগে থাকে। তদন্ত শেষ করতে সময়ও বেশি নিচ্ছে সিআইডি।
মোহাম্মদ আলী: আমি যোগদান করেই কর্মকর্তাদের বলেছি, পাঁচ বছর, তিন বছর, দুই বছর ধরে পেইন্ডিং (ঝুলে থাকা) মামলার তালিকা দাও। আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তা আসলেই কম। তার পরও মামলার জট কাটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সিআইডিকে মামলার হিমাগার বলা হতো একসময়। অনেকে ঢাকায় থাকার জন্য সিআইডিতে পোস্টিং নেন। কিন্তু কাজে তত মনোযোগী নয়। এটা কি ঠিক?
মোহাম্মদ আলী: বর্তমানে অনেক উন্নত হয়েছে সিআইডি। একটি মামলাও পাবেন না, যেটা ডিপ ফ্রিজে আছে। ১০-১২ বছরের পুরোনো কোনো মামলা নেই সিআইডিতে। এখন সর্বোচ্চ ১৪৭টি মামলা আছে পাঁচ বছরের, যা কোর্টের নির্দেশনার কারণে ঝুলে আছে। একসময় সিআইডি হয়তো ডাম্পিং পোস্টিং ছিল; কিন্তু এখন আর নেই। ইচ্ছেমতো তদন্তকাজ করলে করলাম, সেই সুযোগ সিআইডিতে আর নেই।
আপনাদের রাসায়নিক ল্যাবে অনেক চাপ। আলোচিত ঘটনা ছাড়া ভিসেরার প্রতিবেদন দ্রুত মেলে না।
মোহাম্মদ আলী: ফরেনসিকে এই চাপটা ছিল। আমি এসেই একটা পদ্ধতি চালু করেছি। কে কয়টা কাজ করেছে, সেটার আপডেট জানার জন্য অভ্যন্তরীণ গ্রুপ খুলেছি। সেখানে সবাই দিনের সবশেষ তথ্য দেবে। জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানতে পারছেন, তাঁর স্যাম্পলের পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্টের কপিও সেখানে পেয়ে যাচ্ছে। তদবিরে আর কিছু হচ্ছে না।
পুলিশের প্রত্যেকটি সংস্থা এখন কাজের পাশাপাশি প্রচারেও মনোযোগী। কিন্তু সিআইডি প্রচারে পিছিয়ে। কী কারণ?
মোহাম্মদ আলী: আমি প্রচারে না, কাজে বিশ্বাসী। আমাদের কাজের মূল্যায়ন প্রচারে নয়, তদন্তে হবে।
পুলিশের সব ইউনিটেই কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অবৈধ আর্থিক সংশ্লেষ, অপরাধে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে সিআইডিতে আপনার অবস্থান কী?
মোহাম্মদ আলী: আমি প্রথম দিনেই নির্দেশনা দিয়েছি। এখন আর সিআইডির কেউ প্রধানের নির্দেশনা ছাড়া মন চাইলেই অভিযান করতে পারে না। এই জায়গায় আমার স্পষ্ট ঘোষণা, জিরো টলারেন্স। কাউকে অন্যায় জুলুম, অন্যায় আটক করলে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ আলী: আজকের পত্রিকাকেও ধন্যবাদ।
ইউনিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন। পর্যটনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম।
০৩ অক্টোবর ২০২৪বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, সুফি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোনো বিভাজনমূলক এজেন্ডায় রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ফাঁদে আটকা পড়তে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করি। কোনোভাবেই তা হতে দেওয়া যাবে না।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘আমি এটাকে ঠিক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বলব না। আমি এটাকে বলব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমাদের ঘরের ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারের বড়দের সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করতে পেরেছি। ছোট থেকে বড়, কারও কোনো কথা বা কাজ ভুল মনে হলে সেটাকে আমরা তার প্রতি স
৩১ আগস্ট ২০২৪একেক মানুষ বেছে নেন একেক পেশা। তাঁদের মধ্যে কারও কারও পেশা একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন—মো. মুনসুর আলী ওরফে মন্টু খলিফা। বাপ-দাদার পেশাকে ভালোবেসে শিশুদের খতনা করানো বা হাজামের কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। জীবনে পার করেছেন প্রায় ৮৫ বছর। জানিয়েছেন গত ৬০ বছরে ২ লাখের বেশি শিশুর মুসলমানি বা সুন্নতে খতনা দিয়
৩০ মার্চ ২০২৪