ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
পৃথিবীর প্রথম নির্মিত ঘর হলো মসজিদ, যা পবিত্র মক্কা নগরীতে স্থাপিত কাবাঘর হিসেবে পরিচিত। সেটিই মুসলমানদের কিবলা ও হজ-ওমরাহর মূল কেন্দ্র। হজ ও ওমরাহে রয়েছে ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারের অসংখ্য স্মৃতি। ইবরাহিম (আ.) স্ত্রী হাজেরা ও শিশু ইসমাইলকে আল্লাহর হুকুমে মক্কায় রেখে যান। ইসমাইল (আ.) পিতার কাজে সহযোগিতা করার মতো বয়সে পদার্পণ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি কাবাঘর পুনর্নির্মাণের নির্দেশ আসে। তিনি পুত্র ইসমাইল (আ.)কে নিয়ে কাবাঘর পুনর্নির্মাণ করেন।
ইবরাহিম (আ.)-এর কাবা নির্মাণকালীন পদচিহ্নবিশিষ্ট পাথর আজও সেখানে বিদ্যমান রয়েছে। সেটিকে মাকামে ইবরাহিম বলা হয়। বিবি হাজেরা দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে জনশূন্য এই প্রান্তরে অবস্থানকালে কঠিন পিপাসা তাঁকে পানির খোঁজে বের হতে বাধ্য করেছিল।
শিশুকে রেখে তিনি সাফা-মারওয়া পাহাড়ে ছোটাছুটি করেন। সাতবার ছোটাছুটি করেও পানির সন্ধান না পেয়ে শিশুর কাছে ফিরে আসেন। তখনই আল্লাহর রহমত নেমে আসে। জিবরাইল (আ.) এসে শুষ্ক মরুভূমিতে পানির একটি ঝরনাধারা বইয়ে দেন। বর্তমানে এই ধারাই জমজম কূপ নামে পরিচিত। সামর্থ্যবানদের জন্য জীবনে একবার হজ আদায় করা ফরজ এবং জীবনে একবার ওমরাহ পালন করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তুলনামূলকভাবে ওমরাহ একটি সহজ ইবাদত। ইহরাম বেঁধে কাবাঘর তাওয়াফ করা এবং সাফা– মারওয়ার মধ্যে সায়ি করার পর মাথা কামিয়ে নিলেই ওমরাহ সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তাই সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে ওমরাহ করা উচিত।
ওমরাহর গুরুত্ব ও ফজিলতওমরাহর যথেষ্ট গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এক ওমরাহ থেকে অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সব পাপের কাফফারা হয়ে যায় এটি। ওমরাহ দরিদ্রতা ও গুনাহ মুছে ফেলে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এক ওমরাহ অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সবকিছুর কাফফারা। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান জান্নাত। (বুখারি: ১৭৭৩; মুসলিম: ১৩৪৯) ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা বারবার হজ ও ওমরাহ আদায় করো। কেননা, এ দুটো দরিদ্রতা ও গুনাহ সেভাবে মুছে ফেলে, যেভাবে কর্মকারের হাঁপর লোহার ময়লা দূর করে থাকে।’ (নাসায়ি: ২৮৮৭)
রমজান ওমরাহর সেরা সময় রমজান মাসে সৎকর্মের প্রতিদান বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ইবাদত-বন্দেগিসহ সব ভালো কাজের প্রতিদান অনেক গুণ বেড়ে যায়। রমজানে ওমরাহ করলে একটি হজের সওয়াব পাওয়া যায়। রমজানের ওমরাহ আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে হজ আদায়ের মর্যাদা রাখে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এক আনসারি নারীকে বললেন, ‘আমাদের সঙ্গে হজ করতে তোমার বাধা কিসের?’ ইবনে আব্বাস (রা.) ওই নারীর নাম বলেছিলেন, কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি। ওই নারী বলল, ‘আমাদের একটি পানি বহনকারী উট ছিল। কিন্তু তাতে অমুকের বাবা ও তার ছেলে (অর্থাৎ ওই নারীর স্বামী ও ছেলে) আরোহণ করে চলে গেছেন।
আর আমাদের জন্য রেখে গেছেন পানি বহনকারী আরেকটি উট, যা দিয়ে আমরা পানি বহন করে থাকি।’ নবী (সা.) বললেন, ‘আচ্ছা, রমজান এলে তখন ওমরাহ করে নিয়ো। কেননা, রমজানের একটি ওমরাহ একটি হজ।’ মুসলিমের বর্ণনায় আছে, রমজানে ওমরাহ একটি হজের সমতুল্য।’ (বুখারি: ১৭৮২; মুসলিম: ১২৫৬) অন্য বর্ণনায় রমজান মাসের ওমরাহ পালনকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ পালনের সমতুল্য বলা হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) হজ থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন, তখন উম্মে সিনান নামক এক আনসারি নারীকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কে তোমাকে হজ করা থেকে নিষেধ করল?’ প্রতি উত্তরে ওই নারী বলল, ‘অমুকের বাবা (তথা তার স্বামী)। তার পানি সেচের দুটি উট রয়েছে। একটির ওপর সওয়ার হয়ে তিনি হজ করেছেন; আরেকটি দিয়ে জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়েছে।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘রমজান মাসে একটি ওমরাহ আদায় একটি হজ আদায়ের সমতুল্য অথবা আমার সঙ্গে হজ আদায়ের সমতুল্য।’ (বুখারি: ১৭৬৪; মুসলিম: ১২৫৬) আল্লাহ আমাদের কবুল ওমরাহ পালনের তৌফিক দান করুন।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পৃথিবীর প্রথম নির্মিত ঘর হলো মসজিদ, যা পবিত্র মক্কা নগরীতে স্থাপিত কাবাঘর হিসেবে পরিচিত। সেটিই মুসলমানদের কিবলা ও হজ-ওমরাহর মূল কেন্দ্র। হজ ও ওমরাহে রয়েছে ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারের অসংখ্য স্মৃতি। ইবরাহিম (আ.) স্ত্রী হাজেরা ও শিশু ইসমাইলকে আল্লাহর হুকুমে মক্কায় রেখে যান। ইসমাইল (আ.) পিতার কাজে সহযোগিতা করার মতো বয়সে পদার্পণ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি কাবাঘর পুনর্নির্মাণের নির্দেশ আসে। তিনি পুত্র ইসমাইল (আ.)কে নিয়ে কাবাঘর পুনর্নির্মাণ করেন।
ইবরাহিম (আ.)-এর কাবা নির্মাণকালীন পদচিহ্নবিশিষ্ট পাথর আজও সেখানে বিদ্যমান রয়েছে। সেটিকে মাকামে ইবরাহিম বলা হয়। বিবি হাজেরা দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে জনশূন্য এই প্রান্তরে অবস্থানকালে কঠিন পিপাসা তাঁকে পানির খোঁজে বের হতে বাধ্য করেছিল।
শিশুকে রেখে তিনি সাফা-মারওয়া পাহাড়ে ছোটাছুটি করেন। সাতবার ছোটাছুটি করেও পানির সন্ধান না পেয়ে শিশুর কাছে ফিরে আসেন। তখনই আল্লাহর রহমত নেমে আসে। জিবরাইল (আ.) এসে শুষ্ক মরুভূমিতে পানির একটি ঝরনাধারা বইয়ে দেন। বর্তমানে এই ধারাই জমজম কূপ নামে পরিচিত। সামর্থ্যবানদের জন্য জীবনে একবার হজ আদায় করা ফরজ এবং জীবনে একবার ওমরাহ পালন করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তুলনামূলকভাবে ওমরাহ একটি সহজ ইবাদত। ইহরাম বেঁধে কাবাঘর তাওয়াফ করা এবং সাফা– মারওয়ার মধ্যে সায়ি করার পর মাথা কামিয়ে নিলেই ওমরাহ সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তাই সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে ওমরাহ করা উচিত।
ওমরাহর গুরুত্ব ও ফজিলতওমরাহর যথেষ্ট গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এক ওমরাহ থেকে অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সব পাপের কাফফারা হয়ে যায় এটি। ওমরাহ দরিদ্রতা ও গুনাহ মুছে ফেলে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এক ওমরাহ অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সবকিছুর কাফফারা। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান জান্নাত। (বুখারি: ১৭৭৩; মুসলিম: ১৩৪৯) ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা বারবার হজ ও ওমরাহ আদায় করো। কেননা, এ দুটো দরিদ্রতা ও গুনাহ সেভাবে মুছে ফেলে, যেভাবে কর্মকারের হাঁপর লোহার ময়লা দূর করে থাকে।’ (নাসায়ি: ২৮৮৭)
রমজান ওমরাহর সেরা সময় রমজান মাসে সৎকর্মের প্রতিদান বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ইবাদত-বন্দেগিসহ সব ভালো কাজের প্রতিদান অনেক গুণ বেড়ে যায়। রমজানে ওমরাহ করলে একটি হজের সওয়াব পাওয়া যায়। রমজানের ওমরাহ আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে হজ আদায়ের মর্যাদা রাখে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এক আনসারি নারীকে বললেন, ‘আমাদের সঙ্গে হজ করতে তোমার বাধা কিসের?’ ইবনে আব্বাস (রা.) ওই নারীর নাম বলেছিলেন, কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি। ওই নারী বলল, ‘আমাদের একটি পানি বহনকারী উট ছিল। কিন্তু তাতে অমুকের বাবা ও তার ছেলে (অর্থাৎ ওই নারীর স্বামী ও ছেলে) আরোহণ করে চলে গেছেন।
আর আমাদের জন্য রেখে গেছেন পানি বহনকারী আরেকটি উট, যা দিয়ে আমরা পানি বহন করে থাকি।’ নবী (সা.) বললেন, ‘আচ্ছা, রমজান এলে তখন ওমরাহ করে নিয়ো। কেননা, রমজানের একটি ওমরাহ একটি হজ।’ মুসলিমের বর্ণনায় আছে, রমজানে ওমরাহ একটি হজের সমতুল্য।’ (বুখারি: ১৭৮২; মুসলিম: ১২৫৬) অন্য বর্ণনায় রমজান মাসের ওমরাহ পালনকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ পালনের সমতুল্য বলা হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) হজ থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন, তখন উম্মে সিনান নামক এক আনসারি নারীকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কে তোমাকে হজ করা থেকে নিষেধ করল?’ প্রতি উত্তরে ওই নারী বলল, ‘অমুকের বাবা (তথা তার স্বামী)। তার পানি সেচের দুটি উট রয়েছে। একটির ওপর সওয়ার হয়ে তিনি হজ করেছেন; আরেকটি দিয়ে জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়েছে।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘রমজান মাসে একটি ওমরাহ আদায় একটি হজ আদায়ের সমতুল্য অথবা আমার সঙ্গে হজ আদায়ের সমতুল্য।’ (বুখারি: ১৭৬৪; মুসলিম: ১২৫৬) আল্লাহ আমাদের কবুল ওমরাহ পালনের তৌফিক দান করুন।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
জুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
১৬ ঘণ্টা আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
১৬ ঘণ্টা আগেবিয়ে ইসলামি জীবনব্যবস্থার একটি মৌলিক অংশ। এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতি নিয়ে আসে। তবে বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিয়ে-পরবর্তী জীবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যক্তিকে সক্ষম করে।
১৬ ঘণ্টা আগে