ইসলাম ডেস্ক
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত জাহান্নামের মর্মন্তুদ শাস্তির বিবরণে আল্লাহ তাআলা জাক্কুম বৃক্ষের প্রসঙ্গ এনেছেন। আরবি জাক্কুম শব্দটি এসেছে ‘তাজাক্কুম’ থেকে, যার অর্থ ক্ষুধার তাড়নায় গোগ্রাসে গিলে খাওয়া। কুফর, অবিশ্বাস ও পাপাচারের চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে ভয়ংকর রকমের তিক্ত-বিস্বাদ ও কুৎসিত জাক্কুম ফল জাহান্নামিদের খেতে দেওয়া হবে। প্রচণ্ড ক্ষুধার জ্বালায় তারা তা গোগ্রাসে গিলবে এবং শাস্তির ভয়াবহতায় ফেঁসে যাবে। জাক্কুমের আলোচনা মুমিনের জন্য গুনাহমুক্তির অনন্ত অনুপ্রেরণা এবং অবিশ্বাসীদের জন্য কঠিন সতর্কবাণী ও পরীক্ষাস্বরূপ।
কেমন হবে জাক্কুমের শাস্তিপর্ব
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপ্যায়নের জন্য কি এটিই উত্তম, না জাক্কুম বৃক্ষ? সীমা লঙ্ঘনকারীদের জন্য আমি এটি সৃষ্টি করেছি পরীক্ষাস্বরূপ; এই বৃক্ষ জাহান্নামের তলদেশ থেকে উদ্গত, এর গুচ্ছ শয়তানের মাথার মতো। সীমা লঙ্ঘনকারীরা তা ভক্ষণ করবে এবং তা দিয়ে উদর পূর্ণ করবে। তার ওপর অবশ্যই তাদের জন্য ফুটন্ত পানির মিশ্রণ থাকবে, তারপর অবশ্যই ওদের প্রত্যাবর্তন হবে জাহান্নামের দিকে।’ (সুরা সাফফাত: ৬২-৬৮)
জাক্কুমের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া
সেদিনের ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়ে সাঈদ ইবনে জুবাইর বলেন, ‘জাহান্নামিরা যখন ক্ষুধার কারণে খাদ্যের প্রার্থনা করবে, তখন তাদের জাক্কুম খাওয়ানো হবে। ফলে তাদের মুখের চামড়া সম্পূর্ণ খসে পড়বে। এমনকি কোনো পরিচিত ব্যক্তি সেই মুখের চামড়া দেখেই তাদের চিনে নেবে। তারপর পিপাসায় ছটফট করে যখন পানি চাইবে, তখন ফুটন্ত গরম তেল তাদের পান করতে দেওয়া হবে। ওই তেল হবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার। তা মুখের সামনে আসামাত্রই মুখমণ্ডলের মাংস ঝলসে যাবে। আর যে সামান্য অংশ তাদের পেটে গিয়ে পৌঁছাবে, তার ফলে নাড়িভুঁড়ি গলে যাবে। এমন অবস্থায় ওপর থেকে লোহার হাতুড়ি দিয়ে তাদের প্রহার করা হবে। ফলে দেহের একেকটি অংশ পৃথক হয়ে যাবে। তখন তারা চিৎকার করে মৃত্যু কামনা করতে থাকবে। এরপর তাদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং নতুন শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১৬ / ২২২)
রাসুল (সা.) জাক্কুমের ভয়াবহতা সম্পর্কে বলেন, ‘ওই জাক্কুমের সামান্য পরিমাণ যদি জাহান্নাম থেকে পৃথিবীতে আসে, তবে পৃথিবীর খাদ্য ও পানীয় তার বিষাক্ততায় বিনষ্ট হয়ে যাবে।’ (তিরমিজি: ২৫৮৫)
পৃথিবীতে জাক্কুমের অস্তিত্ব আছে কি
পৃথিবীতে জাক্কুম বৃক্ষের অস্তিত্ব আছে কি নেই, তা নিয়ে মুফাসসিরদের দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়। এক দল বলেন, কোরআনে বর্ণিত জাক্কুম আরবের একপ্রকার কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ, যা তিহামা অঞ্চলে রয়েছে। অন্যান্য অনুর্বর অঞ্চলেও তা উৎপন্ন হয়। আরেক দল বলেন, এটি জাহান্নামেরই বৃক্ষ, দুনিয়ার কোনো বৃক্ষের সঙ্গে এটিকে মেলানো ঠিক হবে না। এই বিতর্কের অবসানে মুফতি শফি (রহ.) বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন সাপ-বিচ্ছু রয়েছে, তেমনি জাহান্নামেও তা থাকবে। তবে জাহান্নামের সাপ-বিচ্ছু দুনিয়ার সাপ-বিচ্ছু অপেক্ষা বহুগুণে ভয়ংকর হবে। ঠিক তেমনিভাবে জাহান্নামের জাক্কুম প্রজাতি হিসেবে দুনিয়ার জাক্কুমের মতো হলেও তা দুনিয়ার জাক্কুম অপেক্ষা অনেক বেশি কদাকার ও তিক্ত-বিস্বাদ হবে।’ (মাআরিফুল কোরআন: ৭ / ৪২৯)
মুফতি শফি (রহ.) ভারত উপমহাদেশের ফণীমনসা বা ক্যাকটাসকেই জাক্কুম বলেছেন। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা তিন অঞ্চলের তিন ধরনের বৃক্ষকে জাক্কুম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলের ‘ইউফোরবিয়া আবিসিনিকা’, জর্দানের ‘ব্যালানাইটস অ্যাজিপটিকা’ এবং তুরস্কের ‘জিক্কিম’ প্রজাতির বৃক্ষকে জাক্কুম বলেছেন তাঁরা। (উইকিপিডিয়া)
জাক্কুম নিয়ে বিভ্রান্তি
মানবখুলি আকৃতির বাদামি রঙের এবং হালকা আঁশযুক্ত একধরনের ফল জাক্কুম হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে, যা ভুল প্রচলন বা একপ্রকার গুজবই বলা চলে। জাক্কুম ফল বাদামি রঙের হলেও মানবখুলিসদৃশ ফলের সঙ্গে এর দূরতম সম্পর্ক নেই। বরং সেটি স্ন্যাপড্রাগন ফুলের খুলি। ফুলটি পরিণত রূপে অনেকটা মানবখুলির আকার ধারণ করে। সম্ভবত পবিত্র কোরআনে জাক্কুমকে শয়তানের মাথার সঙ্গে উপমায়িত করার কারণে কঙ্কালসৃদশ এই ফুলকে মানুষ জাক্কুম বলে ভ্রম করে থাকে। মূলত কোরআনের উপমা প্রতীকী, তা দ্বারা কুৎসিত-কদাকারই বোঝানো হয়েছে। তা ছাড়া শয়তানের মাথার প্রকৃত আকৃতি মানুষের জ্ঞানের বাইরে। তাই মানবখুলিকে শয়তানের মাথা ধরে নেওয়ার কোনো কারণ নেই।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত জাহান্নামের মর্মন্তুদ শাস্তির বিবরণে আল্লাহ তাআলা জাক্কুম বৃক্ষের প্রসঙ্গ এনেছেন। আরবি জাক্কুম শব্দটি এসেছে ‘তাজাক্কুম’ থেকে, যার অর্থ ক্ষুধার তাড়নায় গোগ্রাসে গিলে খাওয়া। কুফর, অবিশ্বাস ও পাপাচারের চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে ভয়ংকর রকমের তিক্ত-বিস্বাদ ও কুৎসিত জাক্কুম ফল জাহান্নামিদের খেতে দেওয়া হবে। প্রচণ্ড ক্ষুধার জ্বালায় তারা তা গোগ্রাসে গিলবে এবং শাস্তির ভয়াবহতায় ফেঁসে যাবে। জাক্কুমের আলোচনা মুমিনের জন্য গুনাহমুক্তির অনন্ত অনুপ্রেরণা এবং অবিশ্বাসীদের জন্য কঠিন সতর্কবাণী ও পরীক্ষাস্বরূপ।
কেমন হবে জাক্কুমের শাস্তিপর্ব
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপ্যায়নের জন্য কি এটিই উত্তম, না জাক্কুম বৃক্ষ? সীমা লঙ্ঘনকারীদের জন্য আমি এটি সৃষ্টি করেছি পরীক্ষাস্বরূপ; এই বৃক্ষ জাহান্নামের তলদেশ থেকে উদ্গত, এর গুচ্ছ শয়তানের মাথার মতো। সীমা লঙ্ঘনকারীরা তা ভক্ষণ করবে এবং তা দিয়ে উদর পূর্ণ করবে। তার ওপর অবশ্যই তাদের জন্য ফুটন্ত পানির মিশ্রণ থাকবে, তারপর অবশ্যই ওদের প্রত্যাবর্তন হবে জাহান্নামের দিকে।’ (সুরা সাফফাত: ৬২-৬৮)
জাক্কুমের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া
সেদিনের ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়ে সাঈদ ইবনে জুবাইর বলেন, ‘জাহান্নামিরা যখন ক্ষুধার কারণে খাদ্যের প্রার্থনা করবে, তখন তাদের জাক্কুম খাওয়ানো হবে। ফলে তাদের মুখের চামড়া সম্পূর্ণ খসে পড়বে। এমনকি কোনো পরিচিত ব্যক্তি সেই মুখের চামড়া দেখেই তাদের চিনে নেবে। তারপর পিপাসায় ছটফট করে যখন পানি চাইবে, তখন ফুটন্ত গরম তেল তাদের পান করতে দেওয়া হবে। ওই তেল হবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার। তা মুখের সামনে আসামাত্রই মুখমণ্ডলের মাংস ঝলসে যাবে। আর যে সামান্য অংশ তাদের পেটে গিয়ে পৌঁছাবে, তার ফলে নাড়িভুঁড়ি গলে যাবে। এমন অবস্থায় ওপর থেকে লোহার হাতুড়ি দিয়ে তাদের প্রহার করা হবে। ফলে দেহের একেকটি অংশ পৃথক হয়ে যাবে। তখন তারা চিৎকার করে মৃত্যু কামনা করতে থাকবে। এরপর তাদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং নতুন শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১৬ / ২২২)
রাসুল (সা.) জাক্কুমের ভয়াবহতা সম্পর্কে বলেন, ‘ওই জাক্কুমের সামান্য পরিমাণ যদি জাহান্নাম থেকে পৃথিবীতে আসে, তবে পৃথিবীর খাদ্য ও পানীয় তার বিষাক্ততায় বিনষ্ট হয়ে যাবে।’ (তিরমিজি: ২৫৮৫)
পৃথিবীতে জাক্কুমের অস্তিত্ব আছে কি
পৃথিবীতে জাক্কুম বৃক্ষের অস্তিত্ব আছে কি নেই, তা নিয়ে মুফাসসিরদের দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়। এক দল বলেন, কোরআনে বর্ণিত জাক্কুম আরবের একপ্রকার কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ, যা তিহামা অঞ্চলে রয়েছে। অন্যান্য অনুর্বর অঞ্চলেও তা উৎপন্ন হয়। আরেক দল বলেন, এটি জাহান্নামেরই বৃক্ষ, দুনিয়ার কোনো বৃক্ষের সঙ্গে এটিকে মেলানো ঠিক হবে না। এই বিতর্কের অবসানে মুফতি শফি (রহ.) বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন সাপ-বিচ্ছু রয়েছে, তেমনি জাহান্নামেও তা থাকবে। তবে জাহান্নামের সাপ-বিচ্ছু দুনিয়ার সাপ-বিচ্ছু অপেক্ষা বহুগুণে ভয়ংকর হবে। ঠিক তেমনিভাবে জাহান্নামের জাক্কুম প্রজাতি হিসেবে দুনিয়ার জাক্কুমের মতো হলেও তা দুনিয়ার জাক্কুম অপেক্ষা অনেক বেশি কদাকার ও তিক্ত-বিস্বাদ হবে।’ (মাআরিফুল কোরআন: ৭ / ৪২৯)
মুফতি শফি (রহ.) ভারত উপমহাদেশের ফণীমনসা বা ক্যাকটাসকেই জাক্কুম বলেছেন। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা তিন অঞ্চলের তিন ধরনের বৃক্ষকে জাক্কুম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলের ‘ইউফোরবিয়া আবিসিনিকা’, জর্দানের ‘ব্যালানাইটস অ্যাজিপটিকা’ এবং তুরস্কের ‘জিক্কিম’ প্রজাতির বৃক্ষকে জাক্কুম বলেছেন তাঁরা। (উইকিপিডিয়া)
জাক্কুম নিয়ে বিভ্রান্তি
মানবখুলি আকৃতির বাদামি রঙের এবং হালকা আঁশযুক্ত একধরনের ফল জাক্কুম হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে, যা ভুল প্রচলন বা একপ্রকার গুজবই বলা চলে। জাক্কুম ফল বাদামি রঙের হলেও মানবখুলিসদৃশ ফলের সঙ্গে এর দূরতম সম্পর্ক নেই। বরং সেটি স্ন্যাপড্রাগন ফুলের খুলি। ফুলটি পরিণত রূপে অনেকটা মানবখুলির আকার ধারণ করে। সম্ভবত পবিত্র কোরআনে জাক্কুমকে শয়তানের মাথার সঙ্গে উপমায়িত করার কারণে কঙ্কালসৃদশ এই ফুলকে মানুষ জাক্কুম বলে ভ্রম করে থাকে। মূলত কোরআনের উপমা প্রতীকী, তা দ্বারা কুৎসিত-কদাকারই বোঝানো হয়েছে। তা ছাড়া শয়তানের মাথার প্রকৃত আকৃতি মানুষের জ্ঞানের বাইরে। তাই মানবখুলিকে শয়তানের মাথা ধরে নেওয়ার কোনো কারণ নেই।
৭ ধরনের গুনাহকে বিধ্বংসী আখ্যা দিয়ে তা থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে উপদেশ দিয়েছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। (রিয়াদুস সালেহিন: ১৮০২) কাজগুলো হলো—
১১ ঘণ্টা আগেসড়ককে মানুষের চলাচলের উপযোগী করা ইমানের পরিচায়ক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান শাখা হলো, এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো, সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (
১ দিন আগেশীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল, যা রোজা রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী সময়। অপর দিকে শীতের রাত অনেক দীর্ঘ হয়, ফলে রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমিয়ে নিয়ে শেষ প্রহরে আল্লাহর ইবাদত ও তাহাজ্জুদে মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে হাদিসে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তক
২ দিন আগেআল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
৩ দিন আগে