আলী ওসমান শেফায়েত
মুসলমানদের সোনালি যুগে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মুসলিম বিজ্ঞানীরা অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাঁদের গবেষণা ও আবিষ্কারগুলো পরে লাতিন, ইংরেজিসহ পশ্চিমা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়। তবে অবাক করা ব্যাপার হলো, পশ্চিমা অনুবাদকেরা মুসলিম মনীষীদের নাম হুবহু না রেখে নিজেদের মতো করে বিকৃত করে ফেলেছেন এবং দীর্ঘ নামকে এক শব্দে উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে তাঁদের মুসলিম পরিচয় মুছে ফেলতে তাঁরা অপচেষ্টা করেছেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। নাম বিকৃতি ও মধ্যযুগের মুসলিম বিজ্ঞানীদের এসব অবদানের কথা অধ্যাপক জি. সারটন ‘ইন্ট্রোডাকশন টু দ্য হিস্ট্রি অব সায়েন্স’ বইয়ে দারুণভাবে তুলে ধরেছেন। তেমনই কয়েকটি নাম এখানে তুলে ধরা হলো—
ইবনে সিনা
চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক ইবনে সিনার পুরো নাম আবু আলি আল-হুসাইন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সিনা। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘অ্যাভিসিনা’।
আল-খাওয়ারিজমি
বীজগণিতের জনক আল-খাওয়ারিজমির পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে মুসা আল-খাওয়ারিজমি। লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘গরিটাস’ বা ‘এলগোরিজম’।
ইবনে বাজ্জাহ
প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, পদার্থবিদ, মনোবিজ্ঞানী ইবনে বাজ্জাহর পুরো নাম আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে ইয়াহিয়া ইবনে আস-সাইগ আত-তুজিবি ইবনে বাজ্জাহ। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর বিকৃত নাম ‘অ্যাভামপেস’।
আল-ফরগানি
নবম শতকের খ্যাতনামা মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী আল-ফারগানির পুরো নাম আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে মোহাম্মাদ ইবনে কাসির আল-ফারগানি। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম ‘আলফ্রাগানাস’ রাখা হয়েছে। চাঁদের আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ আলফ্রাগানুসের নাম তাঁর নামেই রাখা হয়েছে।
আল-ইদ্রিসি
পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র অঙ্কনকারী ও মুসলিম ভূগোলবিদ আল-ইদ্রিসির পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে মোহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ইদ্রিস আল-শরিফ আল-ইদ্রিসি। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম হয়েছে ‘দ্রেসেস’।
জাবির ইবনে হাইয়ান
শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর ৫০০ গ্রন্থ রচয়িতা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রসায়নবিদ তথা রসায়নবিজ্ঞানের জনক জাবির ইবনে হাইয়ানের পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ জাবির ইবনে হাইয়ান। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে হয়েছে ‘জেবার’।
আল-কিন্দি
কোরআন, হাদিস, ফিকহ, ইতিহাস, দর্শন, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি, গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা প্রভৃতি বিষয়ের পণ্ডিত আল-কিন্দির পুরো নাম আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল কিন্দি। যিনি আল-কিন্দি নামেই পরিচিত। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম ‘আলকিন্ডাস’।
আল-বাত্তানি
সৌরবর্ষ নির্ণয়ে আল-বাত্তানি সর্বাধিক পরিচিত। তার পুরো নাম মুহাম্মদ ইবনে জাবির ইবনে সিনান আল রাক্কি আল হারানি আস সাবি আল-বাত্তানি। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর পরিচয় ‘আল-বাতেজনিয়াজ’, ‘আল বাতেজনি’, ‘আল-বাতেনিয়াজ’ করা হয়েছে।
আবু বকর আল রাজি আবু বকর মুহম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল রাজির নাম কে না জানে। তিনি একাধারে পদার্থবিদ, রসায়নবিদ, দার্শনিক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী। তিনি প্রায় ২০০ গ্রন্থ রচনা করেন। সালফিউরিক অ্যাসিডের আবিষ্কারক এই বিজ্ঞানীর নাম ইউরোপীয়রা লাতিন ভাষায় বিকৃত করেছে ‘রাজেস’ বা ‘রাজিজ’ নামে।
ইবনে রুশদ
পুরো নাম আবুল ওয়ালিদ মুহম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে রুশদ। তিনি ইবনে রুশদ নামে পরিচিত। আন্দালুসিয়ান মুসলিম বিজ্ঞানী। দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, যুক্তিবিদ্যা, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত ও পদার্থে তাঁর অবদান রয়েছে। তাঁর নাম পাশ্চাত্য গ্রন্থসমূহে বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘এভেরুশ’।
আল-ফারাবি
প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী, যুক্তিবিদ, মনোবিজ্ঞানী, দার্শনিক, সমাজবিদ, মহাকাশবিদ আবু নসর মুহম্মদ বিন মুহম্মদ আল ফারাবি। লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘আল ফারাবিয়াস’।
হাসান ইবনুল হায়সাম
আলোকবিজ্ঞানের জনক, পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিদ, প্রকৌশলী, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিদ, চক্ষুবিশেষজ্ঞ, দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী আবু আলি হাসান ইবনে হাসান ইবনে হায়সাম। লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রেখেছে ‘আল হ্যাজেন’।
বিজ্ঞানমনস্ক মুসলিম প্রজন্ম গড়ে তুলতে মুসলিম বিজ্ঞানীদের কীর্তিগাঁথার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং তাঁদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা একান্ত জরুরি।
লেখক: শিক্ষক ও গবেষক
মুসলমানদের সোনালি যুগে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মুসলিম বিজ্ঞানীরা অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাঁদের গবেষণা ও আবিষ্কারগুলো পরে লাতিন, ইংরেজিসহ পশ্চিমা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়। তবে অবাক করা ব্যাপার হলো, পশ্চিমা অনুবাদকেরা মুসলিম মনীষীদের নাম হুবহু না রেখে নিজেদের মতো করে বিকৃত করে ফেলেছেন এবং দীর্ঘ নামকে এক শব্দে উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে তাঁদের মুসলিম পরিচয় মুছে ফেলতে তাঁরা অপচেষ্টা করেছেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। নাম বিকৃতি ও মধ্যযুগের মুসলিম বিজ্ঞানীদের এসব অবদানের কথা অধ্যাপক জি. সারটন ‘ইন্ট্রোডাকশন টু দ্য হিস্ট্রি অব সায়েন্স’ বইয়ে দারুণভাবে তুলে ধরেছেন। তেমনই কয়েকটি নাম এখানে তুলে ধরা হলো—
ইবনে সিনা
চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক ইবনে সিনার পুরো নাম আবু আলি আল-হুসাইন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সিনা। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘অ্যাভিসিনা’।
আল-খাওয়ারিজমি
বীজগণিতের জনক আল-খাওয়ারিজমির পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে মুসা আল-খাওয়ারিজমি। লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘গরিটাস’ বা ‘এলগোরিজম’।
ইবনে বাজ্জাহ
প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, পদার্থবিদ, মনোবিজ্ঞানী ইবনে বাজ্জাহর পুরো নাম আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে ইয়াহিয়া ইবনে আস-সাইগ আত-তুজিবি ইবনে বাজ্জাহ। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর বিকৃত নাম ‘অ্যাভামপেস’।
আল-ফরগানি
নবম শতকের খ্যাতনামা মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী আল-ফারগানির পুরো নাম আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে মোহাম্মাদ ইবনে কাসির আল-ফারগানি। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম ‘আলফ্রাগানাস’ রাখা হয়েছে। চাঁদের আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ আলফ্রাগানুসের নাম তাঁর নামেই রাখা হয়েছে।
আল-ইদ্রিসি
পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র অঙ্কনকারী ও মুসলিম ভূগোলবিদ আল-ইদ্রিসির পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে মোহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ইদ্রিস আল-শরিফ আল-ইদ্রিসি। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম হয়েছে ‘দ্রেসেস’।
জাবির ইবনে হাইয়ান
শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর ৫০০ গ্রন্থ রচয়িতা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রসায়নবিদ তথা রসায়নবিজ্ঞানের জনক জাবির ইবনে হাইয়ানের পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ জাবির ইবনে হাইয়ান। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে হয়েছে ‘জেবার’।
আল-কিন্দি
কোরআন, হাদিস, ফিকহ, ইতিহাস, দর্শন, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি, গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা প্রভৃতি বিষয়ের পণ্ডিত আল-কিন্দির পুরো নাম আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল কিন্দি। যিনি আল-কিন্দি নামেই পরিচিত। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর নাম ‘আলকিন্ডাস’।
আল-বাত্তানি
সৌরবর্ষ নির্ণয়ে আল-বাত্তানি সর্বাধিক পরিচিত। তার পুরো নাম মুহাম্মদ ইবনে জাবির ইবনে সিনান আল রাক্কি আল হারানি আস সাবি আল-বাত্তানি। কিন্তু লাতিন ভাষায় তাঁর পরিচয় ‘আল-বাতেজনিয়াজ’, ‘আল বাতেজনি’, ‘আল-বাতেনিয়াজ’ করা হয়েছে।
আবু বকর আল রাজি আবু বকর মুহম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল রাজির নাম কে না জানে। তিনি একাধারে পদার্থবিদ, রসায়নবিদ, দার্শনিক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী। তিনি প্রায় ২০০ গ্রন্থ রচনা করেন। সালফিউরিক অ্যাসিডের আবিষ্কারক এই বিজ্ঞানীর নাম ইউরোপীয়রা লাতিন ভাষায় বিকৃত করেছে ‘রাজেস’ বা ‘রাজিজ’ নামে।
ইবনে রুশদ
পুরো নাম আবুল ওয়ালিদ মুহম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে রুশদ। তিনি ইবনে রুশদ নামে পরিচিত। আন্দালুসিয়ান মুসলিম বিজ্ঞানী। দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, যুক্তিবিদ্যা, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত ও পদার্থে তাঁর অবদান রয়েছে। তাঁর নাম পাশ্চাত্য গ্রন্থসমূহে বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘এভেরুশ’।
আল-ফারাবি
প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী, যুক্তিবিদ, মনোবিজ্ঞানী, দার্শনিক, সমাজবিদ, মহাকাশবিদ আবু নসর মুহম্মদ বিন মুহম্মদ আল ফারাবি। লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রাখা হয়েছে ‘আল ফারাবিয়াস’।
হাসান ইবনুল হায়সাম
আলোকবিজ্ঞানের জনক, পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিদ, প্রকৌশলী, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিদ, চক্ষুবিশেষজ্ঞ, দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী আবু আলি হাসান ইবনে হাসান ইবনে হায়সাম। লাতিন ভাষায় তাঁর নাম বিকৃত করে রেখেছে ‘আল হ্যাজেন’।
বিজ্ঞানমনস্ক মুসলিম প্রজন্ম গড়ে তুলতে মুসলিম বিজ্ঞানীদের কীর্তিগাঁথার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং তাঁদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা একান্ত জরুরি।
লেখক: শিক্ষক ও গবেষক
জুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
১০ ঘণ্টা আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
১০ ঘণ্টা আগেবিয়ে ইসলামি জীবনব্যবস্থার একটি মৌলিক অংশ। এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতি নিয়ে আসে। তবে বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিয়ে-পরবর্তী জীবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যক্তিকে সক্ষম করে।
১০ ঘণ্টা আগে