মুফতি আবু দারদা
হিজরি সনের নবম মাস রমজান। আরবি রমজান বা রমাদান শব্দের অর্থ প্রচণ্ড গরম, সূর্যের খরতাপে পাথর উত্তপ্ত হওয়া, সূর্যতাপে উত্তপ্ত বালু বা মরুভূমি, মাটির তাপে পায়ে ফোসকা পড়ে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, ঝলসে যাওয়া ইত্যাদি। রমজানে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় রোজাদারের পেটে আগুন জ্বলে; পাপতাপ পুড়ে ছাই হয়ে রোজাদার নিষ্পাপ হয়ে যায় বলে এ মাসের নাম রমজান রাখা হয়েছে। (লিসানুল আরব)
এ মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বছরের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি। কারণ, বছরের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ মাস এটি। এ মাসের নফল ইবাদতেও ফরজের সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়। তাই রমজান ইবাদতের বসন্তকাল। মানবজাতির হেদায়তগ্রন্থ পবিত্র কোরআন এ মাসেই নাজিল হয়। তাই কোরআনের নির্দেশনা মান্য করে নিজেকে সৎ পথে পরিচালিত করা এবং রোজা আদায় করাই এ মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাস, এ মাসে মানুষের পথপ্রদর্শক এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী হিসেবে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
রমজান মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা। ফারসি শব্দ ‘রোজা’-এর আরবি প্রতিশব্দ সওম বা সিয়াম; অর্থ, বিরত থাকা। ইসলামের পরিভাষায় সওম, সিয়াম বা রোজা হলো, ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী-সঙ্গম ইত্যাদি যাবতীয় নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করা। (আশশারহুল মুমতি,৬ / ৩১০) এই সংজ্ঞায় অসার-অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকাও অন্তর্ভুক্ত। কারণ মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেবল পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই সিয়াম নয়; বরং অসারতা ও অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকার নামই হলো (আসল) সিয়াম। সুতরাং যদি তোমাকে কেউ গালাগালি করে, অথবা তোমার প্রতি মূর্খতা প্রদর্শন করে, তাহলে তুমি (তার প্রতিশোধ না নিয়ে) তাকে বলো যে, আমি রোজা রেখেছি, আমি রোজা রেখেছি।’ (সহিহুল জামিইস সাগির, হাদিস: ৫৩৭৬)
প্রাপ্তবয়স্ক, স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, রোজা পালনে সক্ষম সুস্থ সব নারী ও পুরুষের জন্য রমজান মাসে রোজা পালন করা ফরজ। ঋতুমতী নারী, সন্তান প্রসবকারী মা, অসুস্থ ব্যক্তিরা এই রোজা পরবর্তী সময়ে কাজা আদায় করবে। এমন অক্ষম ব্যক্তি, যাদের আবার সুস্থ হয়ে রোজা পালনের সামর্থ্য লাভের সম্ভাবনা বিদ্যমান নেই, তাঁরা রোজার জন্য ফিদিয়া প্রদান করবে। অর্থাৎ, প্রতিটি রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতরের সমান দান করবে। জাকাত গ্রহণের উপযুক্তদেরই এই ফিদিয়া প্রদান করা যাবে।
রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস। আর সিয়াম সাধনা বা রোজা পালন তাকওয়া অর্জনের অনন্য সোপান। রমজানে মাসব্যাপী রোজা পালন ফরজ করার তাৎপর্য এখানেই নিহিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হলো, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য ফরজ করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ কদরের রজনীর মাস এটি। তাই এ মাসে ইবাদতের গুরুত্বের শেষ নেই। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের নিয়তে রমজানে রোজা পালন করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ আরেক হাদিসে বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানে রাত জেগে ইবাদত করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে জেগে ইবাদত করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৭,৩৬ ও ৩৪)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
হিজরি সনের নবম মাস রমজান। আরবি রমজান বা রমাদান শব্দের অর্থ প্রচণ্ড গরম, সূর্যের খরতাপে পাথর উত্তপ্ত হওয়া, সূর্যতাপে উত্তপ্ত বালু বা মরুভূমি, মাটির তাপে পায়ে ফোসকা পড়ে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, ঝলসে যাওয়া ইত্যাদি। রমজানে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় রোজাদারের পেটে আগুন জ্বলে; পাপতাপ পুড়ে ছাই হয়ে রোজাদার নিষ্পাপ হয়ে যায় বলে এ মাসের নাম রমজান রাখা হয়েছে। (লিসানুল আরব)
এ মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বছরের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি। কারণ, বছরের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ মাস এটি। এ মাসের নফল ইবাদতেও ফরজের সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়। তাই রমজান ইবাদতের বসন্তকাল। মানবজাতির হেদায়তগ্রন্থ পবিত্র কোরআন এ মাসেই নাজিল হয়। তাই কোরআনের নির্দেশনা মান্য করে নিজেকে সৎ পথে পরিচালিত করা এবং রোজা আদায় করাই এ মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাস, এ মাসে মানুষের পথপ্রদর্শক এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী হিসেবে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
রমজান মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা। ফারসি শব্দ ‘রোজা’-এর আরবি প্রতিশব্দ সওম বা সিয়াম; অর্থ, বিরত থাকা। ইসলামের পরিভাষায় সওম, সিয়াম বা রোজা হলো, ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী-সঙ্গম ইত্যাদি যাবতীয় নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করা। (আশশারহুল মুমতি,৬ / ৩১০) এই সংজ্ঞায় অসার-অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকাও অন্তর্ভুক্ত। কারণ মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেবল পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই সিয়াম নয়; বরং অসারতা ও অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকার নামই হলো (আসল) সিয়াম। সুতরাং যদি তোমাকে কেউ গালাগালি করে, অথবা তোমার প্রতি মূর্খতা প্রদর্শন করে, তাহলে তুমি (তার প্রতিশোধ না নিয়ে) তাকে বলো যে, আমি রোজা রেখেছি, আমি রোজা রেখেছি।’ (সহিহুল জামিইস সাগির, হাদিস: ৫৩৭৬)
প্রাপ্তবয়স্ক, স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, রোজা পালনে সক্ষম সুস্থ সব নারী ও পুরুষের জন্য রমজান মাসে রোজা পালন করা ফরজ। ঋতুমতী নারী, সন্তান প্রসবকারী মা, অসুস্থ ব্যক্তিরা এই রোজা পরবর্তী সময়ে কাজা আদায় করবে। এমন অক্ষম ব্যক্তি, যাদের আবার সুস্থ হয়ে রোজা পালনের সামর্থ্য লাভের সম্ভাবনা বিদ্যমান নেই, তাঁরা রোজার জন্য ফিদিয়া প্রদান করবে। অর্থাৎ, প্রতিটি রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতরের সমান দান করবে। জাকাত গ্রহণের উপযুক্তদেরই এই ফিদিয়া প্রদান করা যাবে।
রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস। আর সিয়াম সাধনা বা রোজা পালন তাকওয়া অর্জনের অনন্য সোপান। রমজানে মাসব্যাপী রোজা পালন ফরজ করার তাৎপর্য এখানেই নিহিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হলো, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য ফরজ করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ কদরের রজনীর মাস এটি। তাই এ মাসে ইবাদতের গুরুত্বের শেষ নেই। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের নিয়তে রমজানে রোজা পালন করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ আরেক হাদিসে বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানে রাত জেগে ইবাদত করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে জেগে ইবাদত করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৭,৩৬ ও ৩৪)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
ভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
২ ঘণ্টা আগেজুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
১ দিন আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
১ দিন আগে