ইসলাম ডেস্ক
সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য জীবনে একবারই হজ করা ফরজ। একবারের বেশি হজ করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার খুতবায় বললেন, ‘হে মানুষ, আল্লাহ তোমাদের জন্য হজ ফরজ করেছেন। তোমরা হজ কোরো।’ এক সাহাবি জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, প্রতি বছর?’ তিনি চুপ থাকলেন। লোকটি একই কথা তিনবার জিজ্ঞেস করলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘আমি যদি হ্যাঁ বলি তাহলে ফরজ হয়ে যাবে; কিন্তু তোমরা তা আদায়ে সক্ষম হবে না।’ এরপর নবীজি বললেন, ‘আমি যদি কোনো বিষয় এড়িয়ে যাই তোমরা সে বিষয়ে প্রশ্ন করো না। তোমাদের আগের জাতিগুলো বেশি প্রশ্নের কারণে এবং নবীদের সঙ্গে বিতর্ক করার কারণে ধ্বংস হয়েছে। আমি যখন তোমাদের কোনো নির্দেশ দেই, তখন যতদূর সম্ভব সেটা বাস্তবায়ন করো; আর যা কিছু থেকে তোমাদের বারণ করি, সেটা থেকে বিরত থেকো।’ (মুসলিম: ১৩৩৭
নফল হজের ফজিলত
একাধিকবার হজ করা তথা নফল হজ করা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। নফল হজের ফজিলত অনেক। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কোন আমল উত্তম।’ তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান। ফের জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এরপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহর পথে যুদ্ধ।’ আবার জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এরপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ‘হজে মাবরুর বা কবুল হজ।’ (বুখারি: ২৬; মুসলিম: ৮৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা একের পর এক হজ ও ওমরাহ করতে থাকো। কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহ দূর করে—যেভাবে কামারের হাপর লোহা ও স্বর্ণ রৌপ্যের খাদ দূর করে। হজে মাবরুরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়।’ (তিরমিজি: ৮১০; নাসায়ি: ২৬৩১)
নফল হজ উত্তম, নাকি দান-সদকা
আল্লাহ তাআলা যাঁকে অঢেল সম্পদ ও সামর্থ্য দিয়েছেন, তিনি নফল হজ ও নফল সদকা দুটোই সমন্বয় করে আদায় করতে পারেন। ফরজ হজ ও ফরজ দান তথা জাকাত আদায়ের পর নফল হজ, ওমরাহ ও নফল দান-সদকা করতে পারেন। নফল হজ না করে সেই টাকা দান করে দিতে হবে, বা দান-সদকা বন্ধ করে দিয়ে টাকা জমিয়ে বারবার হজে যেতে হবে—এমন কোনো বিধান ইসলামে নেই। তবে কখন কোনটি আদায় করবেন, তা অবস্থা ও সময়ের ওপর নির্ভর করে। যখন যেটি বেশি প্রয়োজন মনে হবে সেটি আদায় করা উচিত।
তবে একাধিক হাদিস থেকে বোঝা যায়, নফল হজ নফল দান-সদকার চেয়ে উত্তম কাজ। নফল হজের ফজিলত সম্পর্কে ওপরে দুটি হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া কোরআনের আয়াত থেকেও বিষয়টি বোঝা যায়। কারণ হজে অর্থের পাশাপাশি প্রচুর শারীরিক শক্তিও ব্যয় করতে হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং প্রতিটি শীর্ণকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে। যেগুলো আসবে বহু দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে। যেন তারা পরিদর্শন করে এমন সব বিষয় ও স্থান, যাতে রয়েছে তাদের প্রভূত কল্যাণ...।’ (সুরা হজ: ২৭-২৮)
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট তাবেয়ি তাউস (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘নফল হজ উত্তম, নাকি দান-সদকা?’ তিনি বললেন, ‘সফরের কষ্ট, নির্ঘুম রাতযাপনের কষ্ট, দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট, আল্লাহর ঘরের তাওয়াফ ও নামাজ, আরাফাত ও মুজদালিফায় অবস্থান ও কঙ্কর নিক্ষেপ।’ অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, হজই উত্তম। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৮২২)
বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে দান উত্তম
তবে বিশেষ প্রেক্ষাপটে নফল দান-সদকা নফল হজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। যেমন এক হাদিসে এসেছে, সুফইয়ান সাউরি (রহ.)-কে এক লোক জিজ্ঞেস করল, ‘নফল হজ উত্তম, নাকি দান-সদকা? তিনি বলেন, ‘ইবরাহিম নাখায়ি বলতেন, যদি একাধিক হজ করে থাকে, তাহলে সদকা। আর হাসান বলতেন, যদি একবার হজ করে থাকে (তাহলেও সদকাই উত্তম)। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৮২৩)
এই কথার ব্যাখ্যায় আলিমগণ বলেন, এটি সাধারণ দান-সদকার বেলায় নয়; বরং বিশেষ ক্ষেত্রে। যেমন কোনো দুস্থ অভাবী আত্মীয় আছে, যাকে দেখার কেউ নেই, অথবা দেশে কোনো দুর্যোগ বা বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, বা সমাজ ও রাষ্ট্রের বৃহত্তর কোনো চাহিদা সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে একার চেষ্টায় বা মুষ্টিমেয় লোকের অর্থায়ন যথেষ্ট নয়; বরং অনেক মানুষের অংশগ্রহণ জরুরি, তাহলে এসব ক্ষেত্রে জমা অর্থ দান করে দেওয়া নফল হজের চেয়ে উত্তম। তবে যে ব্যক্তি নফল হজে গিয়েও যথেষ্ট দান-সদকা করার সামর্থ্য রাখেন, তিনি উভয়টিই করবেন।
সূত্র: মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা ২ / ২৪২; রদ্দুল মুহতার ২ / ২৬১; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি পৃ.৪০৩; গুনয়াতুন নাসিক, পৃ.১৯৬; মাসিক আল-কাউসার, সেপ্টেম্বর ২০১৯ ও ইসলাম কিউএ ডট ইনফো।
সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য জীবনে একবারই হজ করা ফরজ। একবারের বেশি হজ করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার খুতবায় বললেন, ‘হে মানুষ, আল্লাহ তোমাদের জন্য হজ ফরজ করেছেন। তোমরা হজ কোরো।’ এক সাহাবি জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, প্রতি বছর?’ তিনি চুপ থাকলেন। লোকটি একই কথা তিনবার জিজ্ঞেস করলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘আমি যদি হ্যাঁ বলি তাহলে ফরজ হয়ে যাবে; কিন্তু তোমরা তা আদায়ে সক্ষম হবে না।’ এরপর নবীজি বললেন, ‘আমি যদি কোনো বিষয় এড়িয়ে যাই তোমরা সে বিষয়ে প্রশ্ন করো না। তোমাদের আগের জাতিগুলো বেশি প্রশ্নের কারণে এবং নবীদের সঙ্গে বিতর্ক করার কারণে ধ্বংস হয়েছে। আমি যখন তোমাদের কোনো নির্দেশ দেই, তখন যতদূর সম্ভব সেটা বাস্তবায়ন করো; আর যা কিছু থেকে তোমাদের বারণ করি, সেটা থেকে বিরত থেকো।’ (মুসলিম: ১৩৩৭
নফল হজের ফজিলত
একাধিকবার হজ করা তথা নফল হজ করা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। নফল হজের ফজিলত অনেক। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কোন আমল উত্তম।’ তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান। ফের জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এরপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহর পথে যুদ্ধ।’ আবার জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এরপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ‘হজে মাবরুর বা কবুল হজ।’ (বুখারি: ২৬; মুসলিম: ৮৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা একের পর এক হজ ও ওমরাহ করতে থাকো। কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহ দূর করে—যেভাবে কামারের হাপর লোহা ও স্বর্ণ রৌপ্যের খাদ দূর করে। হজে মাবরুরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়।’ (তিরমিজি: ৮১০; নাসায়ি: ২৬৩১)
নফল হজ উত্তম, নাকি দান-সদকা
আল্লাহ তাআলা যাঁকে অঢেল সম্পদ ও সামর্থ্য দিয়েছেন, তিনি নফল হজ ও নফল সদকা দুটোই সমন্বয় করে আদায় করতে পারেন। ফরজ হজ ও ফরজ দান তথা জাকাত আদায়ের পর নফল হজ, ওমরাহ ও নফল দান-সদকা করতে পারেন। নফল হজ না করে সেই টাকা দান করে দিতে হবে, বা দান-সদকা বন্ধ করে দিয়ে টাকা জমিয়ে বারবার হজে যেতে হবে—এমন কোনো বিধান ইসলামে নেই। তবে কখন কোনটি আদায় করবেন, তা অবস্থা ও সময়ের ওপর নির্ভর করে। যখন যেটি বেশি প্রয়োজন মনে হবে সেটি আদায় করা উচিত।
তবে একাধিক হাদিস থেকে বোঝা যায়, নফল হজ নফল দান-সদকার চেয়ে উত্তম কাজ। নফল হজের ফজিলত সম্পর্কে ওপরে দুটি হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া কোরআনের আয়াত থেকেও বিষয়টি বোঝা যায়। কারণ হজে অর্থের পাশাপাশি প্রচুর শারীরিক শক্তিও ব্যয় করতে হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং প্রতিটি শীর্ণকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে। যেগুলো আসবে বহু দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে। যেন তারা পরিদর্শন করে এমন সব বিষয় ও স্থান, যাতে রয়েছে তাদের প্রভূত কল্যাণ...।’ (সুরা হজ: ২৭-২৮)
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট তাবেয়ি তাউস (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘নফল হজ উত্তম, নাকি দান-সদকা?’ তিনি বললেন, ‘সফরের কষ্ট, নির্ঘুম রাতযাপনের কষ্ট, দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট, আল্লাহর ঘরের তাওয়াফ ও নামাজ, আরাফাত ও মুজদালিফায় অবস্থান ও কঙ্কর নিক্ষেপ।’ অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, হজই উত্তম। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৮২২)
বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে দান উত্তম
তবে বিশেষ প্রেক্ষাপটে নফল দান-সদকা নফল হজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। যেমন এক হাদিসে এসেছে, সুফইয়ান সাউরি (রহ.)-কে এক লোক জিজ্ঞেস করল, ‘নফল হজ উত্তম, নাকি দান-সদকা? তিনি বলেন, ‘ইবরাহিম নাখায়ি বলতেন, যদি একাধিক হজ করে থাকে, তাহলে সদকা। আর হাসান বলতেন, যদি একবার হজ করে থাকে (তাহলেও সদকাই উত্তম)। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৮২৩)
এই কথার ব্যাখ্যায় আলিমগণ বলেন, এটি সাধারণ দান-সদকার বেলায় নয়; বরং বিশেষ ক্ষেত্রে। যেমন কোনো দুস্থ অভাবী আত্মীয় আছে, যাকে দেখার কেউ নেই, অথবা দেশে কোনো দুর্যোগ বা বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, বা সমাজ ও রাষ্ট্রের বৃহত্তর কোনো চাহিদা সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে একার চেষ্টায় বা মুষ্টিমেয় লোকের অর্থায়ন যথেষ্ট নয়; বরং অনেক মানুষের অংশগ্রহণ জরুরি, তাহলে এসব ক্ষেত্রে জমা অর্থ দান করে দেওয়া নফল হজের চেয়ে উত্তম। তবে যে ব্যক্তি নফল হজে গিয়েও যথেষ্ট দান-সদকা করার সামর্থ্য রাখেন, তিনি উভয়টিই করবেন।
সূত্র: মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা ২ / ২৪২; রদ্দুল মুহতার ২ / ২৬১; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি পৃ.৪০৩; গুনয়াতুন নাসিক, পৃ.১৯৬; মাসিক আল-কাউসার, সেপ্টেম্বর ২০১৯ ও ইসলাম কিউএ ডট ইনফো।
ভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
৫ ঘণ্টা আগেজুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
১ দিন আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
১ দিন আগে