মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
বিয়ে ইসলামি জীবনব্যবস্থার একটি মৌলিক অংশ। এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতি নিয়ে আসে। তবে বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিয়ে-পরবর্তী জীবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যক্তিকে সক্ষম করে। কোরআন, হাদিস ও ফিকহের কিতাবসমূহে এই বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে।
কোরআনের নির্দেশনা
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ের যোগ্য, তাদের বিয়ে করাও। তারা যদি গরিবও হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের ধনী করবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা আন-নূর: ৩২) এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিয়েছেন, বিয়ে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং বিয়ে করার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ পায়। যদিও দারিদ্র্য বিয়ের পথে বাধা হতে পারে না, তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করা ইসলামের দৃষ্টিতে প্রশংসনীয়। কারণ এটি পরিবার পরিচালনা সহজ করে এবং জীবনে প্রশান্তি আনে। এর পরের আয়াতে আর্থিকভাবে বিয়েতে অসমর্থ লোকজনকে আল্লাহর অনুগ্রহে সচ্ছল হওয়ার আগপর্যন্ত সচ্চরিত্র ধারণ করে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, তারা সংযম অবলম্বন করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করেন।’ (সুরা আন-নূর: ৩৩)
হাদিসে যা এসেছে
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য রয়েছে, সে যেন বিয়ে করে। কারণ এটি দৃষ্টি সংযত রাখে এবং পবিত্রতা রক্ষা করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে। কারণ এটিই তার জন্য যৌন প্রবৃত্তি দমনকারী।’ (বুখারি: ৫০৬৬; মুসলিম: ১৪০০) এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, বিয়ের জন্য আর্থিক সামর্থ্য থাকা জরুরি। এখানে সামর্থ্য বলতে শুধু অর্থ নয়, বরং দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব পালন করার মানসিক ও শারীরিক যোগ্যতাও অন্তর্ভুক্ত। যারা আর্থিকভাবে প্রস্তুত নয়, তাদের জন্য রাসুল (সা.) রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন, যা ধৈর্য ও সংযমের শিক্ষা দেয়।
ফিকহের দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামি ফিকহে বিয়ের জন্য আর্থিক সামর্থ্যকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়েছে। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেছেন, ‘বিয়ের জন্য আর্থিক সামর্থ্য বলতে দেনমোহর পরিশোধ এবং স্ত্রীর মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর সামর্থ্যকে বোঝায়।’ (ফাতহুল বারি: ৯ / ১২০)
ইমাম নববি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ মিনহাজ আল-তালিবিন-এ উল্লেখ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজে ও তার পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম, তার জন্য বিয়ে করা মুবাহ (অনুমোদনযোগ্য) হলেও এটি সুন্নত নয়।’
আর্থিক সচ্ছলতার গুরুত্ব
বিয়ের পরে স্বামীকে স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক, কারণ আল্লাহ তাদের একে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা আন-নিসা: ৩৪) পরিবার পরিচালনা ও স্ত্রীর অধিকার পূরণ করতে হলে স্বামীর আর্থিক সক্ষমতা থাকা অপরিহার্য। ইসলাম চায় না, দারিদ্র্যের কারণে কোনো দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যাক। বরং, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রচেষ্টা ও দোয়ার মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আধুনিক সমাজেও আর্থিক সচ্ছলতা বিয়ে এবং পরবর্তী জীবনের জন্য অপরিহার্য। অর্থনৈতিক সংকট দাম্পত্য জীবনে মানসিক চাপ ও সম্পর্কের অবনতির প্রধান কারণ। তাই একজন মুসলমানের উচিত, বিয়ের আগে কর্মসংস্থান বা আয়ের নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এতে দাম্পত্য জীবন সুখময় হয় এবং উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।
মোটকথা, বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম আমাদের উৎসাহিত করে, আমরা যেন দায়িত্বশীল হয়ে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ নিই। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে এবং যথাসাধ্য প্রচেষ্টায় আর্থিক প্রস্তুতি গ্রহণ করাই শান্তিপূর্ণ দাম্পত্য জীবনের পূর্বশর্ত।
বিয়ে ইসলামি জীবনব্যবস্থার একটি মৌলিক অংশ। এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতি নিয়ে আসে। তবে বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিয়ে-পরবর্তী জীবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যক্তিকে সক্ষম করে। কোরআন, হাদিস ও ফিকহের কিতাবসমূহে এই বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে।
কোরআনের নির্দেশনা
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ের যোগ্য, তাদের বিয়ে করাও। তারা যদি গরিবও হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের ধনী করবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা আন-নূর: ৩২) এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিয়েছেন, বিয়ে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং বিয়ে করার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ পায়। যদিও দারিদ্র্য বিয়ের পথে বাধা হতে পারে না, তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করা ইসলামের দৃষ্টিতে প্রশংসনীয়। কারণ এটি পরিবার পরিচালনা সহজ করে এবং জীবনে প্রশান্তি আনে। এর পরের আয়াতে আর্থিকভাবে বিয়েতে অসমর্থ লোকজনকে আল্লাহর অনুগ্রহে সচ্ছল হওয়ার আগপর্যন্ত সচ্চরিত্র ধারণ করে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, তারা সংযম অবলম্বন করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করেন।’ (সুরা আন-নূর: ৩৩)
হাদিসে যা এসেছে
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য রয়েছে, সে যেন বিয়ে করে। কারণ এটি দৃষ্টি সংযত রাখে এবং পবিত্রতা রক্ষা করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে। কারণ এটিই তার জন্য যৌন প্রবৃত্তি দমনকারী।’ (বুখারি: ৫০৬৬; মুসলিম: ১৪০০) এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, বিয়ের জন্য আর্থিক সামর্থ্য থাকা জরুরি। এখানে সামর্থ্য বলতে শুধু অর্থ নয়, বরং দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব পালন করার মানসিক ও শারীরিক যোগ্যতাও অন্তর্ভুক্ত। যারা আর্থিকভাবে প্রস্তুত নয়, তাদের জন্য রাসুল (সা.) রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন, যা ধৈর্য ও সংযমের শিক্ষা দেয়।
ফিকহের দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামি ফিকহে বিয়ের জন্য আর্থিক সামর্থ্যকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়েছে। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেছেন, ‘বিয়ের জন্য আর্থিক সামর্থ্য বলতে দেনমোহর পরিশোধ এবং স্ত্রীর মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর সামর্থ্যকে বোঝায়।’ (ফাতহুল বারি: ৯ / ১২০)
ইমাম নববি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ মিনহাজ আল-তালিবিন-এ উল্লেখ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজে ও তার পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম, তার জন্য বিয়ে করা মুবাহ (অনুমোদনযোগ্য) হলেও এটি সুন্নত নয়।’
আর্থিক সচ্ছলতার গুরুত্ব
বিয়ের পরে স্বামীকে স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক, কারণ আল্লাহ তাদের একে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা আন-নিসা: ৩৪) পরিবার পরিচালনা ও স্ত্রীর অধিকার পূরণ করতে হলে স্বামীর আর্থিক সক্ষমতা থাকা অপরিহার্য। ইসলাম চায় না, দারিদ্র্যের কারণে কোনো দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যাক। বরং, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রচেষ্টা ও দোয়ার মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আধুনিক সমাজেও আর্থিক সচ্ছলতা বিয়ে এবং পরবর্তী জীবনের জন্য অপরিহার্য। অর্থনৈতিক সংকট দাম্পত্য জীবনে মানসিক চাপ ও সম্পর্কের অবনতির প্রধান কারণ। তাই একজন মুসলমানের উচিত, বিয়ের আগে কর্মসংস্থান বা আয়ের নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এতে দাম্পত্য জীবন সুখময় হয় এবং উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।
মোটকথা, বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম আমাদের উৎসাহিত করে, আমরা যেন দায়িত্বশীল হয়ে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ নিই। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে এবং যথাসাধ্য প্রচেষ্টায় আর্থিক প্রস্তুতি গ্রহণ করাই শান্তিপূর্ণ দাম্পত্য জীবনের পূর্বশর্ত।
জুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
৭ ঘণ্টা আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
৭ ঘণ্টা আগে৭ ধরনের গুনাহকে বিধ্বংসী আখ্যা দিয়ে তা থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে উপদেশ দিয়েছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। (রিয়াদুস সালেহিন: ১৮০২) কাজগুলো হলো—
১ দিন আগে