মো. ইসমাইল হোসেন
প্রথম বিসিএসেই প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেন।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আমার বাড়ি হলেও বেড়ে উঠেছি ঢাকায়। ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখায় ভালো ছিলাম। ফলে ভালো ছাত্রের তকমা তখনই পেয়েছিলাম। ২০০৬ সালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসির গণ্ডি পার হই। তারপর ঢাকার সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ভর্তি হলে সেখান থেকেও ২০০৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরোই। এরপর স্বপ্ন দেখি বড় ডাক্তার হব। কিন্তু আমাদের পারিপার্শ্বিকতা এবং বিদ্যমান সমাজব্যবস্থা এর পেছনে অনুঘটক হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল করতে না পারায় প্রথমবারের মতো কল্পনার রাজ্য থেকে মাটিতে নেমে আসি। সেবার আমি এতই আশাহত হয়েছিলাম যে কোথাও ভর্তি হইনি। দ্বিতীয়বার আরও বেশি পরিশ্রম করেও যখন এমবিবিএসে পড়ার সুযোগ পেলাম না। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। আমি সব সময় ভাবতাম এমন কিছু করব, যা আমাকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যাবে। মনের মধ্যে আমার একটা জেদ সব সময় কাজ করত। রসায়ন পড়তে ভালো লাগত না। তবু বাধ্য হয়েই পড়তাম। প্রথম কয়েকটি সেমিস্টারে ভালো ফল করলেও পরবর্তী সময়ে তা আর ধরে রাখতে পারিনি।
বিসিএস যাত্রা: বিসিএস পরীক্ষা কী, কেন, কীভাবে দিতে হয়—এই ব্যাপারগুলো সম্বন্ধে ৪র্থ বর্ষের আগে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। ৪র্থ বর্ষে ওঠার পর দেখি সহপাঠীরা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। কেউ বিসিএস দেবে, কেউ ব্যাংকার হবে, কেউ-বা রসায়নভিত্তিক চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। আমি সবার ব্যাপারগুলো লক্ষ করতাম। কিন্তু নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। আমার বোন জান্নাত আরা (সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক) প্রথম আমাকে বিসিএস সম্বন্ধে বলেন। তারপর ধীরে ধীরে সব বুঝতে শুরু করি। বিসিএস দেব—এই সিদ্ধান্তটা নিই ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর। আমার জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির অশ্রুসিক্ত নয়নের দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম। সেই থেকে প্রস্তুতি শুরু।
প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আগে যাঁরা সফল হয়েছেন, তাঁদের গল্পগুলো পড়তাম। বিশেষ করে ৩০তম বিসিএসে সম্মিলিত মেধাতালিকায় প্রথম সুশান্ত পালের (বিসিএস কাস্টমস) গল্প, লেখাগুলো আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমার বাবা-মা আমাকে ওই সময়গুলোতে অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন। বাবা ব্যবসা করেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। তবুও কখনো বাবা-মা আমার ভালো কিছু হওয়ার আগে সংসারের হাল ধরার জন্য চাপ সৃষ্টি করেননি। আমি পরিবারের বড় ছেলে। দুই বোন, দুই ভাই। বোনদের বিয়ে হয়েছে। বড় বোন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আর ছোট বোন ৩৪তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক, ছোট ভাই এইচএসসির পর পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। আমি মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করি। কারণ, আমার মনের আশা তিনি পূরণ করেছেন। ইবাদত করার চেষ্টা করি সব সময়। আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা কাউকে নিরাশ করেন না। ৩৬তম বিএসএসের ফলাফল দেখার পর এই বিশ্বাস আরও গভীর হয়। এটা আমার জীবনের প্রথম কোনো চাকরির পরীক্ষা ছিল। সিভিল সার্ভিসে আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, আমি আমার শতভাগ দেওয়ার মাধ্যমে তা পালন করার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি, সিভিল সার্ভিসটা হচ্ছে সরকারি সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সে ক্ষেত্রে মানুষের সেবা করাটাই হচ্ছে সিভিল সার্ভেন্টদের কাজ। মানুষের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে থেকে তাদের যাবতীয় সমস্যা সমাধান করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা ও সদিচ্ছা থাকবে সব সময়। আমার প্রথম পছন্দ ছিল প্রশাসন ক্যাডার। একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হব—সে রকম স্বপ্নই দেখি।
আমি বিসিএস–এ কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তা সবার জন্য তুলে ধরতে চাই। আগামী দিনগুলোতে যাঁরা বিসিএস পরীক্ষা দেবেন, তাঁদের জন্য পরামর্শ হিসেবে কাজ করবে–
মো. ইসমাইল হোসেন
(৩৬তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম)
প্রথম বিসিএসেই প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেন।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আমার বাড়ি হলেও বেড়ে উঠেছি ঢাকায়। ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখায় ভালো ছিলাম। ফলে ভালো ছাত্রের তকমা তখনই পেয়েছিলাম। ২০০৬ সালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসির গণ্ডি পার হই। তারপর ঢাকার সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ভর্তি হলে সেখান থেকেও ২০০৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরোই। এরপর স্বপ্ন দেখি বড় ডাক্তার হব। কিন্তু আমাদের পারিপার্শ্বিকতা এবং বিদ্যমান সমাজব্যবস্থা এর পেছনে অনুঘটক হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল করতে না পারায় প্রথমবারের মতো কল্পনার রাজ্য থেকে মাটিতে নেমে আসি। সেবার আমি এতই আশাহত হয়েছিলাম যে কোথাও ভর্তি হইনি। দ্বিতীয়বার আরও বেশি পরিশ্রম করেও যখন এমবিবিএসে পড়ার সুযোগ পেলাম না। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। আমি সব সময় ভাবতাম এমন কিছু করব, যা আমাকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যাবে। মনের মধ্যে আমার একটা জেদ সব সময় কাজ করত। রসায়ন পড়তে ভালো লাগত না। তবু বাধ্য হয়েই পড়তাম। প্রথম কয়েকটি সেমিস্টারে ভালো ফল করলেও পরবর্তী সময়ে তা আর ধরে রাখতে পারিনি।
বিসিএস যাত্রা: বিসিএস পরীক্ষা কী, কেন, কীভাবে দিতে হয়—এই ব্যাপারগুলো সম্বন্ধে ৪র্থ বর্ষের আগে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। ৪র্থ বর্ষে ওঠার পর দেখি সহপাঠীরা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। কেউ বিসিএস দেবে, কেউ ব্যাংকার হবে, কেউ-বা রসায়নভিত্তিক চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। আমি সবার ব্যাপারগুলো লক্ষ করতাম। কিন্তু নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। আমার বোন জান্নাত আরা (সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক) প্রথম আমাকে বিসিএস সম্বন্ধে বলেন। তারপর ধীরে ধীরে সব বুঝতে শুরু করি। বিসিএস দেব—এই সিদ্ধান্তটা নিই ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর। আমার জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির অশ্রুসিক্ত নয়নের দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম। সেই থেকে প্রস্তুতি শুরু।
প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আগে যাঁরা সফল হয়েছেন, তাঁদের গল্পগুলো পড়তাম। বিশেষ করে ৩০তম বিসিএসে সম্মিলিত মেধাতালিকায় প্রথম সুশান্ত পালের (বিসিএস কাস্টমস) গল্প, লেখাগুলো আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমার বাবা-মা আমাকে ওই সময়গুলোতে অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন। বাবা ব্যবসা করেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। তবুও কখনো বাবা-মা আমার ভালো কিছু হওয়ার আগে সংসারের হাল ধরার জন্য চাপ সৃষ্টি করেননি। আমি পরিবারের বড় ছেলে। দুই বোন, দুই ভাই। বোনদের বিয়ে হয়েছে। বড় বোন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আর ছোট বোন ৩৪তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক, ছোট ভাই এইচএসসির পর পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। আমি মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করি। কারণ, আমার মনের আশা তিনি পূরণ করেছেন। ইবাদত করার চেষ্টা করি সব সময়। আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা কাউকে নিরাশ করেন না। ৩৬তম বিএসএসের ফলাফল দেখার পর এই বিশ্বাস আরও গভীর হয়। এটা আমার জীবনের প্রথম কোনো চাকরির পরীক্ষা ছিল। সিভিল সার্ভিসে আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, আমি আমার শতভাগ দেওয়ার মাধ্যমে তা পালন করার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি, সিভিল সার্ভিসটা হচ্ছে সরকারি সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সে ক্ষেত্রে মানুষের সেবা করাটাই হচ্ছে সিভিল সার্ভেন্টদের কাজ। মানুষের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে থেকে তাদের যাবতীয় সমস্যা সমাধান করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা ও সদিচ্ছা থাকবে সব সময়। আমার প্রথম পছন্দ ছিল প্রশাসন ক্যাডার। একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হব—সে রকম স্বপ্নই দেখি।
আমি বিসিএস–এ কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তা সবার জন্য তুলে ধরতে চাই। আগামী দিনগুলোতে যাঁরা বিসিএস পরীক্ষা দেবেন, তাঁদের জন্য পরামর্শ হিসেবে কাজ করবে–
মো. ইসমাইল হোসেন
(৩৬তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম)
ইউনাইটেড ন্যাশন্স ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামে (ডব্লিউএফপি) জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির একটি শূন্য ২ জনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রতিষ্ঠানটির কক্সবাজার অফিসে নিয়োগ পাবেন।
১ দিন আগেঅর্থ বিভাগের আওতাধীন জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিলের (এনএইচআরডিএফ) চার পদে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির জিএম (প্রশাসন ও ফাইন্যান্স) মোহাম্মদ জহিরুল কাইউম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১ দিন আগেজনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আদমজী ইপিজেড মেডিকেল সেন্টার। প্রতিষ্ঠানটিতে ছয় ধরনের পদে ছয়জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী ও প্রার্থীরা ডাকযোগে আবেদন করতে পারবেন।
১ দিন আগেঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডে (ডেসকো) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শূন্য পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
২ দিন আগে