শেখ নাইমুর রশিদ লিখন
প্রথমে সালাম দিয়ে বোর্ডে প্রবেশ করি। চেয়ারম্যান স্যার বসার অনুমতি দিলেন এবং মাস্ক খুলতে বললেন।
চেয়ারম্যান: আপনার নাম শেখ নাইমুর রশিদ লিখন। এত বড় নাম কেন?
আমি: স্যার, পরিবারের দেওয়া সবার নাম মিলিয়ে রাখতে গিয়ে একটু বড় হয়ে গেছে (মৃদু হেসে বললাম)।
সবাই হেসে উঠলেন। তাঁদের হাসি দেখে ভয় ও জড়তা কেটে গেল।
চেয়ারম্যান: কী করছেন এখন?
আমি: স্যার, স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে আপাতত সরকারি চাকরির চেষ্টা করছি।
চেয়ারম্যান: কী বিষয়ে করেছেন স্নাতকোত্তর?
আমি: হর্টিকালচার স্যার।
চেয়ারম্যান: খুব ভালো বিষয়। আপনার ফল তো দেখছি খুব ভালো স্নাতকোত্তরে। কী নিয়ে রিসার্চ করেছেন?
আমি: স্যার, আমি স্ট্রবেরির শেলফ লাইফ বাড়ানোর পোস্ট হার্ভেস্ট টেকনোলজি নিয়ে কাজ করেছি।
চেয়ারম্যান: স্ট্রবেরি কোথায় ভালো হচ্ছে এখন?
আমি: স্যার, এটি বর্তমানে উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও খুলনা বিভাগের যশোরেও ভালো চাষ হচ্ছে।
চেয়ারম্যান: আচ্ছা, তা আপনার রিসার্চের আউটপুট কী ছিল?
আমি: স্যার, আমি প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়ালের মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার ও ৩ শতাংশ ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করে দুই-তিন দিন পর্যন্ত শেলফ লাইভ বৃদ্ধি করতে পেরেছি।
চেয়ারম্যান: কী বলছেন? আমি তো ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড দেওয়া স্ট্রবেরি খাব না। আপনি রেডিয়েশন বা অন্য কোনো কিছু চেষ্টা করতে পারতেন।
আমি: স্যার, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ওরিয়েন্টেড রিসার্চ হওয়ায় আমি স্বল্প সময়ে এটুকুই করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে অন্যান্য পোস্ট হার্ভেস্ট ট্রিটমেন্ট নিয়েও কাজ করতে চাই। স্যার আর্টিকেল রিভিউ করে পেয়েছি যে পরিমিত ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড খাদ্য গুণাগুণ নষ্ট করে না ও শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।
উত্তরটি নিলেন না বলে মনে হলো। চেয়ারম্যান স্যার এবার এক্সটারনাল-১-এর দিকে ইঙ্গিত করলেন।
প্রথম এক্সটারনাল: আচ্ছা বলেন তো, বাংলাদেশে কৃষি গবেষণার কাঠামো কী, কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়?
আমি: স্যার, BARC (Bangladesh Agricultural Research Council) হলো NARS (National Agricultural Research System)-এর
অ্যাপেক্স বডি। NARS-এর আন্ডারে ৪টি মন্ত্রনালয়ের অনেকগুলো রিসার্চ প্রতিষ্ঠান ও তাদের আঞ্চলিক কেন্দ্রে গবেষণা পরিচালিত হয়।
প্রথম এক্সটারনাল: কয়েকটির নাম ও NARS-এর উদ্দেশ্য বলুন।
আমি: BARI, BRRI, BINA, BWMRI, BJRI. স্যার, NARS-এর উদ্দেশ্য হলো এর অন্তর্গত প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণার সমন্বয় সাধন করা ও একই কাজের রিপিটেশন যেন না হয়, সেটা লক্ষ রাখা ও অপচয় রোধ করা।
প্রথম এক্সটারনাল: খুবই ভালো বলেছেন। এটাই শুনতে চেয়েছিলাম।
চেয়ারম্যান: আজকের পত্রিকা পড়েছেন?
আমি: জি, স্যার। পড়েছি।
চেয়ারম্যান: দারিদ্র নিয়ে বিবিএসের প্রতিবেদনটা দেখেছেন?
আমি: জি, স্যার। দারিদ্র্য ১৮.৭ শতাংশ ও চরম দারিদ্র্য ৫.৬ শতাংশ।
চেয়ারম্যান: আরও একটি আছে।
আমি: ঠিক মনে করতে পারছিলাম না। উনি ধরিয়ে দিলেন।
চেয়ারম্যান: বৈষম্যের ব্যাপারটা। ধনী-দরিদ্র ব্যবধান বাড়ছে। এই ব্যবধান বাড়লে সমস্যাটা কী?
আমি: স্যার, সবাই সমানভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে না। শিক্ষা, কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে যাবে।
উত্তরটি নিলেন না তিনি।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আচ্ছা, গিনি সহগ কী বলুন তো?
আমি: ধনী-দরিদ্রবৈষম্য পরিমাপের সূচক।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাতে পারবেন? এর আদর্শ মান কী? কত থাকলে ভালো আর কত থাকলে খারাপ?
আমি: দুঃখিত স্যার, এ বিষয়ে আমার স্পষ্ট ধারণা নেই। এ সময় এক্সটারনাল বললেন, আপনার অর্থনীতি নিয়ে জ্ঞান আরও বাড়াতে হবে। বর্তমানে অর্থনীতিই সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।
আমি: জি স্যার, চেষ্টা করব বলে মাথা নাড়ালাম।
চেয়ারম্যান: আচ্ছা, আপনার প্রথম পছন্দ কী? কৃষি কত নম্বরে?
আমি: বিসিএস প্রশাসন স্যার। কৃষি ৯ নম্বর পছন্দ তালিকায়।
চেয়ারম্যান: ১-৯ পর্যন্ত বলুন?
আমি: অ্যাডমিন, কাস্টমস...।
চেয়ারম্যান: যাক ভালো। অনেকে তো নিজের দেওয়া পছন্দও ক্রমানুসারে বলতে পারে না।
চেয়ারম্যান স্যারের কথার সূত্রে এক্স-১ প্রশ্ন শুরু করলেন।
প্রথম এক্সটারনাল: অ্যাডমিন প্রথম পছন্দ, তাই তো? আচ্ছা আপনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেলেন। কীভাবে কৃষকদের ধান ও সবজি বাদে অন্য ফসলের উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহ দেবেন? আচ্ছা পাটের কথাই বলুন।
আমি: স্যার, আমি কৃষকদের বোঝাব পাটের পণ্যের বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে, কৃষিপণ্য হিসেবে বর্তমান রপ্তানির সুযোগের কথা।
প্রথম এক্সটারনাল: কৃষকেরা তো এত ভারী কথা বুঝবেন না। অন্য কিছু বলুন।
আমি: বর্তমানে জলবায়ুসহিষ্ণু জাতের কথা বলব যা তারা জলাবদ্ধতা, খরা বা লবণাক্ততা অবস্থায়ও চাষ করতে পারবেন।
প্রথম এক্সটারনাল: ঠিক আছে। কিন্তু আরও ভালো উত্তর আশা করেছিলাম। আপনি বলতে পারতেন পাটের ব্যাগের সর্বজনীন ব্যবহার সম্পর্কে, পাটশাকও খাওয়া যায়, জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে, পারটেক্সের ম্যাটেরিয়াল খড় থেকে হয়, খরচ কম এসব। আপনি প্রতিনিধি হিসেবে কৃষকদের বোঝাতে গেলে একটা পণ্যের অসংখ্য ভালো দিক সহজ ভাষায় তুলে ধরতে হবে। এক দুইটা বলে থামলে তো হবে না।
পুনরায় চেয়ারম্যান স্যার দৃষ্টি দিলেন নতুন প্রশ্নে।
চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ এলডিসিমুক্ত হচ্ছে জানেন তো। এতে আমাদের ভালো না খারাপ হবে ব্যাখ্যা করুন।
আমি: আমাদের জন্য ভালো হবে। বৈশ্বিক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে, নতুন পণ্য রপ্তানি বাজার ও শ্রমবাজার সৃষ্টি হবে।
চেয়ারম্যান: বিনিয়োগ কেন বাড়বে? বিদেশিরা LDC উত্তরণ দেখেই চলে আসবে নাকি?
আমি: স্যার, মানবসম্পদের উন্নয়নে দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি হবে, অবকাঠামোগত ও যোগাযোগ উন্নয়ন হবে, যা বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে।
উত্তরটি আংশিক নিলেন। এক্স-২কে জিজ্ঞাসা করলেন স্যার আর কিছু জানবেন কি না।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আপনার বাড়ি যেন কোথায়?
আমি: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায়।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আপনার এলাকা কী জন্য বিখ্যাত?
আমি: বর্তমানে খুলনার সব থেকে বেশি সবজি উৎপাদন হচ্ছে ডুমুরিয়ায়, যা ২০০ কোটির মতো বছরে। এ ছাড়া একাত্তরের চুকনগর গণহত্যা, একক বৃহত্তম গণহত্যা এখানে সংঘটিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আপনার এলাকা সম্পর্কে আমি শুনেছিলাম। তবে সেটা অনেক আগে। তখন বেশ পশ্চাৎপদ এলাকা ছিল।
আমি: স্যার, এখন বেশ উন্নতি হয়েছে সব দিক থেকে।
চেয়ারম্যান স্যার আবার যুক্ত হলেন।
চেয়ারম্যান: আপনার এলাকা যে উন্নত হয়েছে তার ইন্ডিকেটর কী?
আমি: স্যার, শিক্ষার হার বেড়েছে, কর্মসংস্থান বেড়েছে।
চেয়ারম্যান: শিক্ষার হার কত এখন?
আমি: ৬৫% (অনুমান করে বলেছি, ৫৫% হবে)
চেয়ারম্যান: আর বাংলাদেশের কত?
আমি: ৭৪.৬৬% স্যার।
চেয়ারম্যান: ঠিক আছে।
প্রথম এক্সটারনাল: আপনার এলাকায় লবণাক্ততা সমস্যা আছে না? কৃষকেরা সাধারণত কী করেন এর পরিপ্রেক্ষিতে?
আমি: স্যার, জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে!
প্রথম এক্সটারনাল: বইয়ের কথা বাদ দিন। কৃষকেরা সচরাচর কী করেন সেটা বলুন।
আমি: স্যার, সবজি বা ফসল লাগানোর আগে বারবার সেচ দেয়, দুই নালার মাঝে আইল তৈরি করে তাতে সবজি ফলায়।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আচ্ছা। আপনি আসুন। ধন্যবাদ।
শেখ নাইমুর রশিদ লিখন, কৃষি ক্যাডার, ৪১তম বিসিএস
অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ
প্রথমে সালাম দিয়ে বোর্ডে প্রবেশ করি। চেয়ারম্যান স্যার বসার অনুমতি দিলেন এবং মাস্ক খুলতে বললেন।
চেয়ারম্যান: আপনার নাম শেখ নাইমুর রশিদ লিখন। এত বড় নাম কেন?
আমি: স্যার, পরিবারের দেওয়া সবার নাম মিলিয়ে রাখতে গিয়ে একটু বড় হয়ে গেছে (মৃদু হেসে বললাম)।
সবাই হেসে উঠলেন। তাঁদের হাসি দেখে ভয় ও জড়তা কেটে গেল।
চেয়ারম্যান: কী করছেন এখন?
আমি: স্যার, স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে আপাতত সরকারি চাকরির চেষ্টা করছি।
চেয়ারম্যান: কী বিষয়ে করেছেন স্নাতকোত্তর?
আমি: হর্টিকালচার স্যার।
চেয়ারম্যান: খুব ভালো বিষয়। আপনার ফল তো দেখছি খুব ভালো স্নাতকোত্তরে। কী নিয়ে রিসার্চ করেছেন?
আমি: স্যার, আমি স্ট্রবেরির শেলফ লাইফ বাড়ানোর পোস্ট হার্ভেস্ট টেকনোলজি নিয়ে কাজ করেছি।
চেয়ারম্যান: স্ট্রবেরি কোথায় ভালো হচ্ছে এখন?
আমি: স্যার, এটি বর্তমানে উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও খুলনা বিভাগের যশোরেও ভালো চাষ হচ্ছে।
চেয়ারম্যান: আচ্ছা, তা আপনার রিসার্চের আউটপুট কী ছিল?
আমি: স্যার, আমি প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়ালের মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার ও ৩ শতাংশ ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করে দুই-তিন দিন পর্যন্ত শেলফ লাইভ বৃদ্ধি করতে পেরেছি।
চেয়ারম্যান: কী বলছেন? আমি তো ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড দেওয়া স্ট্রবেরি খাব না। আপনি রেডিয়েশন বা অন্য কোনো কিছু চেষ্টা করতে পারতেন।
আমি: স্যার, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ওরিয়েন্টেড রিসার্চ হওয়ায় আমি স্বল্প সময়ে এটুকুই করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে অন্যান্য পোস্ট হার্ভেস্ট ট্রিটমেন্ট নিয়েও কাজ করতে চাই। স্যার আর্টিকেল রিভিউ করে পেয়েছি যে পরিমিত ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড খাদ্য গুণাগুণ নষ্ট করে না ও শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।
উত্তরটি নিলেন না বলে মনে হলো। চেয়ারম্যান স্যার এবার এক্সটারনাল-১-এর দিকে ইঙ্গিত করলেন।
প্রথম এক্সটারনাল: আচ্ছা বলেন তো, বাংলাদেশে কৃষি গবেষণার কাঠামো কী, কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়?
আমি: স্যার, BARC (Bangladesh Agricultural Research Council) হলো NARS (National Agricultural Research System)-এর
অ্যাপেক্স বডি। NARS-এর আন্ডারে ৪টি মন্ত্রনালয়ের অনেকগুলো রিসার্চ প্রতিষ্ঠান ও তাদের আঞ্চলিক কেন্দ্রে গবেষণা পরিচালিত হয়।
প্রথম এক্সটারনাল: কয়েকটির নাম ও NARS-এর উদ্দেশ্য বলুন।
আমি: BARI, BRRI, BINA, BWMRI, BJRI. স্যার, NARS-এর উদ্দেশ্য হলো এর অন্তর্গত প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণার সমন্বয় সাধন করা ও একই কাজের রিপিটেশন যেন না হয়, সেটা লক্ষ রাখা ও অপচয় রোধ করা।
প্রথম এক্সটারনাল: খুবই ভালো বলেছেন। এটাই শুনতে চেয়েছিলাম।
চেয়ারম্যান: আজকের পত্রিকা পড়েছেন?
আমি: জি, স্যার। পড়েছি।
চেয়ারম্যান: দারিদ্র নিয়ে বিবিএসের প্রতিবেদনটা দেখেছেন?
আমি: জি, স্যার। দারিদ্র্য ১৮.৭ শতাংশ ও চরম দারিদ্র্য ৫.৬ শতাংশ।
চেয়ারম্যান: আরও একটি আছে।
আমি: ঠিক মনে করতে পারছিলাম না। উনি ধরিয়ে দিলেন।
চেয়ারম্যান: বৈষম্যের ব্যাপারটা। ধনী-দরিদ্র ব্যবধান বাড়ছে। এই ব্যবধান বাড়লে সমস্যাটা কী?
আমি: স্যার, সবাই সমানভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে না। শিক্ষা, কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে যাবে।
উত্তরটি নিলেন না তিনি।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আচ্ছা, গিনি সহগ কী বলুন তো?
আমি: ধনী-দরিদ্রবৈষম্য পরিমাপের সূচক।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাতে পারবেন? এর আদর্শ মান কী? কত থাকলে ভালো আর কত থাকলে খারাপ?
আমি: দুঃখিত স্যার, এ বিষয়ে আমার স্পষ্ট ধারণা নেই। এ সময় এক্সটারনাল বললেন, আপনার অর্থনীতি নিয়ে জ্ঞান আরও বাড়াতে হবে। বর্তমানে অর্থনীতিই সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।
আমি: জি স্যার, চেষ্টা করব বলে মাথা নাড়ালাম।
চেয়ারম্যান: আচ্ছা, আপনার প্রথম পছন্দ কী? কৃষি কত নম্বরে?
আমি: বিসিএস প্রশাসন স্যার। কৃষি ৯ নম্বর পছন্দ তালিকায়।
চেয়ারম্যান: ১-৯ পর্যন্ত বলুন?
আমি: অ্যাডমিন, কাস্টমস...।
চেয়ারম্যান: যাক ভালো। অনেকে তো নিজের দেওয়া পছন্দও ক্রমানুসারে বলতে পারে না।
চেয়ারম্যান স্যারের কথার সূত্রে এক্স-১ প্রশ্ন শুরু করলেন।
প্রথম এক্সটারনাল: অ্যাডমিন প্রথম পছন্দ, তাই তো? আচ্ছা আপনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেলেন। কীভাবে কৃষকদের ধান ও সবজি বাদে অন্য ফসলের উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহ দেবেন? আচ্ছা পাটের কথাই বলুন।
আমি: স্যার, আমি কৃষকদের বোঝাব পাটের পণ্যের বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে, কৃষিপণ্য হিসেবে বর্তমান রপ্তানির সুযোগের কথা।
প্রথম এক্সটারনাল: কৃষকেরা তো এত ভারী কথা বুঝবেন না। অন্য কিছু বলুন।
আমি: বর্তমানে জলবায়ুসহিষ্ণু জাতের কথা বলব যা তারা জলাবদ্ধতা, খরা বা লবণাক্ততা অবস্থায়ও চাষ করতে পারবেন।
প্রথম এক্সটারনাল: ঠিক আছে। কিন্তু আরও ভালো উত্তর আশা করেছিলাম। আপনি বলতে পারতেন পাটের ব্যাগের সর্বজনীন ব্যবহার সম্পর্কে, পাটশাকও খাওয়া যায়, জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে, পারটেক্সের ম্যাটেরিয়াল খড় থেকে হয়, খরচ কম এসব। আপনি প্রতিনিধি হিসেবে কৃষকদের বোঝাতে গেলে একটা পণ্যের অসংখ্য ভালো দিক সহজ ভাষায় তুলে ধরতে হবে। এক দুইটা বলে থামলে তো হবে না।
পুনরায় চেয়ারম্যান স্যার দৃষ্টি দিলেন নতুন প্রশ্নে।
চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ এলডিসিমুক্ত হচ্ছে জানেন তো। এতে আমাদের ভালো না খারাপ হবে ব্যাখ্যা করুন।
আমি: আমাদের জন্য ভালো হবে। বৈশ্বিক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে, নতুন পণ্য রপ্তানি বাজার ও শ্রমবাজার সৃষ্টি হবে।
চেয়ারম্যান: বিনিয়োগ কেন বাড়বে? বিদেশিরা LDC উত্তরণ দেখেই চলে আসবে নাকি?
আমি: স্যার, মানবসম্পদের উন্নয়নে দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি হবে, অবকাঠামোগত ও যোগাযোগ উন্নয়ন হবে, যা বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে।
উত্তরটি আংশিক নিলেন। এক্স-২কে জিজ্ঞাসা করলেন স্যার আর কিছু জানবেন কি না।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আপনার বাড়ি যেন কোথায়?
আমি: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায়।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আপনার এলাকা কী জন্য বিখ্যাত?
আমি: বর্তমানে খুলনার সব থেকে বেশি সবজি উৎপাদন হচ্ছে ডুমুরিয়ায়, যা ২০০ কোটির মতো বছরে। এ ছাড়া একাত্তরের চুকনগর গণহত্যা, একক বৃহত্তম গণহত্যা এখানে সংঘটিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আপনার এলাকা সম্পর্কে আমি শুনেছিলাম। তবে সেটা অনেক আগে। তখন বেশ পশ্চাৎপদ এলাকা ছিল।
আমি: স্যার, এখন বেশ উন্নতি হয়েছে সব দিক থেকে।
চেয়ারম্যান স্যার আবার যুক্ত হলেন।
চেয়ারম্যান: আপনার এলাকা যে উন্নত হয়েছে তার ইন্ডিকেটর কী?
আমি: স্যার, শিক্ষার হার বেড়েছে, কর্মসংস্থান বেড়েছে।
চেয়ারম্যান: শিক্ষার হার কত এখন?
আমি: ৬৫% (অনুমান করে বলেছি, ৫৫% হবে)
চেয়ারম্যান: আর বাংলাদেশের কত?
আমি: ৭৪.৬৬% স্যার।
চেয়ারম্যান: ঠিক আছে।
প্রথম এক্সটারনাল: আপনার এলাকায় লবণাক্ততা সমস্যা আছে না? কৃষকেরা সাধারণত কী করেন এর পরিপ্রেক্ষিতে?
আমি: স্যার, জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে!
প্রথম এক্সটারনাল: বইয়ের কথা বাদ দিন। কৃষকেরা সচরাচর কী করেন সেটা বলুন।
আমি: স্যার, সবজি বা ফসল লাগানোর আগে বারবার সেচ দেয়, দুই নালার মাঝে আইল তৈরি করে তাতে সবজি ফলায়।
দ্বিতীয় এক্সটারনাল: আচ্ছা। আপনি আসুন। ধন্যবাদ।
শেখ নাইমুর রশিদ লিখন, কৃষি ক্যাডার, ৪১তম বিসিএস
অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ম্যানেজারের শূন্য পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
৩৯ মিনিট আগেখুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শূন্য পদে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা ডাকযোগে অথবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আবেদনপত্র পাঠাতে পারবেন।
১ ঘণ্টা আগেজনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ১টি শূন্য পদে ২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। রোববার (২৪ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
১৮ ঘণ্টা আগেকানাডিয়ান হাইকমিশনে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির দুই ধরনের শূন্য পদে ২ জন কর্মকর্তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য নিয়মিত বেতনের বাইরেও নানা সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।
১ দিন আগে