বিসিএস ভাইভায় সংবিধানের কমন প্রশ্নোত্তর: পর্ব-২

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ০৮: ১৬

চলছে ৪৪তম বিসিএস ভাইভা। ভাইভাতে ভালো করার জন্য গুছিয়ে প্রস্তুতির বিকল্প নেই। এ জন্য বিগত সময়ে ক্যাডারে উত্তীর্ণদের ভাইভা অভিজ্ঞতা বেশি বেশি পড়তে হবে। শতাধিক বিসিএস ক্যাডারের ভাইভা অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে সংবিধান থেকে কমন কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়ে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

১। ভাইভা প্রশ্ন: বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লিখিত ১৮টি মৌলিক অধিকারের সবই কি সবাই ভোগ করতে পারবেন? বাংলাদেশি নাগরিক নয়, এমন ব্যক্তিরাও কি ভোগ করতে পারবেন?

উত্তর: বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লিখিত ১৮টি অধিকারের মধ্যে ৬টি অধিকার রাষ্ট্রের অন্তর্গত সব মানুষের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। দেশের নাগরিক কিংবা দেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক (এমনকি শত্রুও) সবাই জাতি, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে ৬টি অধিকার ভোগ করতে পারবেন। বাকি ১২টি কেবল বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। অন্য কারও জন্য নয়। 

২। ভাইভা প্রশ্ন: বিদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশের কোন কোন মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারবেন?

উত্তর: দেশের নাগরিক কিংবা দেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক (এমনকি শত্রুও) সবাই জাতি, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে ৬টি অধিকার ভোগ করতে পারবেন। অধিকার ৬টি হলো:
(১)    আইনানুযায়ী জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার (অনুচ্ছেদ-৩২)।
(২)    গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ পাওয়ার অধিকার (অনুচ্ছেদ-৩৩)।
(৩)    জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরণ তথা জবরদস্তি শ্রমের শিকার না হওয়ার অধিকার (অনুচ্ছেদ-৩৪)।
(৪)    বিচার ও শাস্তির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার (অনুচ্ছেদ-৩৫)।
(৫)    ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগের অধিকার (অনুচ্ছেদ-৪১)।
(৬)    সাংবিধানিক প্রতিকার লাভের অধিকার (অনুচ্ছেদ-৪৪)। 

৩। ভাইভা প্রশ্ন: বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি কী?
উত্তর: সংশোধনীটি সংসদে একটি বিল আকারে উপস্থাপন করতে হবে। বিলের টাইটেলে সুস্পষ্টভাবে লেখা থাকতে হবে সংবিধানের কোন বিধানটি সংশোধন করা হবে। ওই বিল সংসদের মোট সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। বিলটি সংসদের মোট সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য দ্বারা পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া হবে এবং রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিলে এটি সংশোধনী অ্যাক্ট হিসেবে পাস হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রদানের সময়সীমা ৭ দিন। ৭ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি সম্মতি প্রদান করুক বা না করুক, সংশোধনীটি আপনা-আপনিই অনুমোদিত হয়ে যাবে। 

৪। ভাইভা প্রশ্ন: ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা বলতে কী বোঝায়? সংবিধানের আলোকে বলো। 
উত্তর: ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে বোঝায় রাষ্ট্র কোনো ধর্মের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে না। তবে রাষ্ট্রের মানুষের ধর্ম থাকতে পারে, আর সেই ধর্ম পালন করতে সবাই সমমর্যাদা ও সমঅধিকার ভোগ করবে। রাষ্ট্র কোনো বাধা দেবে না। বরং সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২(ক)তে বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে। 

সংবিধানের ৪১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, (১) আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতাসাপেক্ষে (ক) প্রত্যেক নাগরিকের যেকোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রয়েছে। (খ) প্রতিটি ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপসম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রয়েছে। (গ) কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কোনো ব্যক্তি নিজস্ব ধর্মসংক্রান্ত না হলে তাকে কোনো ধর্মীয় শিক্ষাগ্রহণ, কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপাসনায় অংশগ্রহণ বা যোগদান করতে হবে না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত