সম্প্রতি ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯ হাজার ৮৪১ জন। ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ভাইভা শুরু হবে। এতে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন ক্যাডারে সুযোগ পাবেন ১ হাজার ৮১৪ কর্মকর্তা। ভাইভা পরীক্ষার প্রস্তুতি এগিয়ে রাখতে দরকারি পরামর্শ নিয়ে কথা বলেছেন ৪১তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করা ৬ জন। লিখেছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম।
ভাইভা বোর্ডে ভীতি রাখবেন না
সাজ্জাদ হোসাইন হৃদয়
পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম, ৪১তম বিসিএস
প্রথমেই আপনার মধ্যে যদি ভাইভা নিয়ে কোনো ভীতি থাকে, তা দূর করতে হবে। যদি ভয় নিয়ে স্যারদের সামনে যান, তাহলে স্যাররা মুহূর্তের মধ্যেই তা ধরে ফেলবেন। তখন হিতে বিপরীত হতে পারে। আর এই ভয় দূর করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো একটি ভালো প্রস্তুতি।
আপনার পছন্দক্রমের শুরুর কয়েকটি ক্যাডার চয়েস নিয়ে মৌলিক ধারণা নিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে প্রথম পছন্দের খুঁটিনাটি দেখে যেতে হবে। পরিপাটি হয়ে যেতে হবে। আপনাকে এক পলক দেখেই যে কেউ যেন বলে দিতে পারে আপনি একজন সিরিয়াস প্রতিযোগী। শীত, গ্রীষ্ম—যে মৌসুমেই আপনার ভাইভা হোক না কেন, স্যুট পরে গেলে ভালো। সঙ্গে মানানসই টাই, জুতা পরতে হবে। দাড়ি যদি সুন্নত মেনে না রাখেন, তাহলে তা কেটে যাওয়াই উচিত। চুল ছোট করে গেলে আপনাকে পরিপাটি মনে হবে। মনে রাখবেন, সুন্দর পোশাক আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
ভাইভাভীতি থেকে আমাদের মধ্যে কিছু বদ অভ্যাস ফুটে ওঠে। যেমন চোখ পিটপিট করা, ঘেমে যাওয়া, কপালে হাত চলে যাওয়া, অতিরিক্ত আমতা-আমতা করা, চোখে চোখে না তাকিয়ে ওপরের দিকে তাকিয়ে উত্তর করা। এ বিষয়গুলো দূর করতে হলে নিয়মিত ভাইভা সেশন করতে হবে। আপনার পরিচিত কোনো ভাইভা ক্যান্ডিডেট থাকলে তাদের সঙ্গে মূল ভাইভার অনুরূপ বোর্ড বসিয়ে তা করতে পারেন। বেশি বেশি অনুশীলনের মাধ্যমে এই অভ্যাসগুলো দূর করা সম্ভব।
হাসিমুখে না-বোধক উত্তর করা শিখতে হবে। সবকিছু পারতে হয় না, সবকিছু যে পারবেন তা স্যাররা আশাও করেন না। তবে আপনি কীভাবে ‘সরি স্যার’ বলছেন, তা অবশ্যই তাঁরা লক্ষ করবেন। এ বিষয়টিও অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।
আপনার যে পছন্দক্রমই হোক না কেন, ইংরেজিতে ভাইভা হতেই পারে। অনেক বেশি কঠিন কঠিন ভোকাবুলারি ব্যবহার করতে হবে এমন কথা নেই। তবে সহজ সাবলীল ভাষায় আপনার উত্তর উপস্থাপন করতে জানতে হবে। উত্তর করার সময় বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে না বলার চেষ্টা করবেন। বাংলায় উত্তর জানতে চাইলে, তা যেন সম্পূর্ণরূপে বাংলাতেই হয়। ইংরেজিতে উত্তর করার বিষয়টাও অনুশীলনের মাধ্যমেই আয়ত্তে আনা যায়। সারকথা হলো, অনুশীলনই হবে আপনার ভাইভা জয়ের পাথেয়।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ সম্পর্কে জানুন
মো. নাঈমুর রহমান
প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম, ৪১তম বিসিএস
মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য, নিজের ক্যাডার পছন্দক্রমের প্রথম দুই-তিনটি ক্যাডার সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রচলিত ভালো মানের যেকোনো সহায়ক বই পড়া যেতে পারে। সংবিধান সম্পর্কে জানার জন্য সংবিধানের সব অনুচ্ছেদ ভালোভাবে পড়তে হবে। পাশাপাশি সংবিধানের প্রস্তাবনা, সংশোধনী ও তফসিলগুলো পড়তে হবে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভালো মানের যেকোনো সহায়ক বই পড়া যেতে পারে।
নিজের জেলায় মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি, নিজ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা, মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজ জেলা যে সেক্টরের অধীনে ছিল, সেই সেক্টর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত চলচ্চিত্র, উপন্যাস, গল্প, নাটক, কবিতা, আত্মকথা, গান প্রভৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত সম্প্রতি নিজের দেখা চলচ্চিত্র, সম্প্রতি পড়া উপন্যাস, গল্প, নাটক, কবিতা, আত্মকথা প্রভৃতি প্রসঙ্গ মৌখিক পরীক্ষায় জিজ্ঞেস করা হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন পড়তে হবে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত অন্যান্য মৌলিক সাহিত্যও পড়তে হবে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত নিজের দেখা চলচ্চিত্র, নিজের পড়া উপন্যাস, গল্প, কবিতার প্রসঙ্গও আসতে পারে। এ ছাড়া ভালো মানের যেকোনো সহায়ক বইও পড়া যেতে পারে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। নিয়মিত পত্রিকা পড়লে সাম্প্রতিক বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। এ ছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্চ করে গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকাশনা, রচনা, সংবাদ পড়া যেতে পারে। যেমন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বর্তমানে একটি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
স্মার্ট বাংলাদেশ লিখে সার্চ করলেই এ বিষয়ে অনেক লেখা পাওয়া যাবে। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়, স্মার্ট বাংলাদেশ ও ভিশন ২০৪১-এর মধ্যে সম্পর্ক প্রভৃতি পড়া যেতে পারে।
যেসব কাগজপত্র সঙ্গে নিতে হবে
ডা. মো. শাহাদাত হোসাইন সরকার
স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম, ৪১তম বিসিএস
সরকারি কর্ম কমিশন নির্দেশিত ডকুমেন্ট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে
শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারে প্রথম ৪১তম বিসিএস।
‘When you dress good, you feel good. When you feel good, you perform better.’ বিসিএস ভাইভায় মার্জিত, শালীন ও মানানসই পোশাক একজন প্রার্থীর শুধু আত্মবিশ্বাসই বাড়ায় না; বরং তাঁকে সর্বোচ্চ কর্মক্ষমতা ও যোগ্যতা প্রদর্শনেরও অনুপ্রেরণা দেয়।
ড্রেসআপ: পুরুষেরা ফরমাল হয়ে যাবেন অবশ্যই। হালকা রঙের (সাদা/ আকাশি/ এক কালার) ফুল হাতা শার্ট, কালো/ নেভি ব্লু প্যান্ট, টাই, ফরমাল জুতা, জুতার কালারের সঙ্গে মিলিয়ে বেল্ট। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্লেজার পরতে পারেন। আর শীতকাল হলে সেটা আবশ্যক বলে মনে করি।
গেটআপ: পুরুষদের ক্ষেত্রে দাড়ি নিয়ে কনফিউশনে পড়ে যান। মূলত দাড়ি যদি সুন্নতি দাড়ি হয় কোনো সমস্যা নেই, অন্যথায় ক্লিন শেভ বাঞ্ছনীয়। ড্রেস ভালোভাবে আয়রন করা থাকলে সুন্দর দেখায়। টাই পরলে বেল্টের হালকা ওপর পর্যন্ত রাখবেন। শার্ট ফুল হাতা থাকবে। স্যুট পরলে স্যুটের হাতার বাইরে শার্টের হাতা দেখা যাবে। পোশাকটি খুব বেশি আঁটসাঁট যেমন হবে না, তেমনি ঢিলেঢালাও হবে না। প্রার্থীকে তাঁর পরিধেয় পোশাকে অবশ্যই আরাম এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে হবে।
শুধু পোশাকেই নয়, প্রার্থীদের অঙ্গভঙ্গি এবং চলাফেরায়ও মার্জিত ও শালীনভাব ফুটিয়ে তোলা চাই। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাসী অফিসারসুলভ আচরণ একজন প্রার্থীর সফলতা লাভ সহজ করে দিতে পারে। চূড়ান্ত ভাইভা পরীক্ষার আগেই কমপক্ষে দুটো মক ভাইভায় অংশগ্রহণ করে এ ব্যাপারগুলো অনুশীলন করে নেওয়া ভালো। যাঁদের ইংরেজিতে কথা বলায় দুর্বলতা আছে, তাঁদের এই দুর্বলতা নিয়ে ভাইভা বোর্ডে যাওয়া উচিত হবে না।
ইংরেজিতে কথা বলায় অপারগ হলে তা আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। গুরুত্ব দিয়ে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করলে অল্প দিনেই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কিংবা হাঁটতে হাঁটতে নিজের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করা যেতে পারে।
ইংরেজিতে পারদর্শী একজন বন্ধু বা শিক্ষকের কাছ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা নিলে কাজটি আরও সহজ হবে।
নিজের সম্পর্কে যা জানতে হবে
রাশেদুল হাসান মুরাদ
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম (ইংরেজি), ৪১তম বিসিএস
ভাইভায় একজন প্রার্থীকে নিজের সম্পর্কে বেশ কিছু বিষয় জিজ্ঞাসা করা হয়।
নিজের সম্পর্কে: নিজের শৈশব, শিক্ষাজীবন, শখের বিষয় ও পরিবারের সদস্য সম্পর্কে নানা কিছু জিজ্ঞেস করা হয়। এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে হয়। একটি প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে পরবর্তী প্রশ্নের সংযোগ থাকতে পারে। প্রিয় শখ বাগান করা হলে বিভিন্ন ফুল ও সৌন্দর্যবর্ধক চারা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারে। পরিবারের যাঁরা যেসব পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন, তাঁদের পেশা (সামাজিক মর্যাদা যা-ই হোক) সে-সম্পর্কে ইতিবাচক ও শ্রদ্ধাশীল বিবরণ দেওয়া উচিত। নিজ জেলা: ভাইভায় নিজ জেলা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি—যাঁদের সাহিত্য, শিল্প-সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক অবদান রয়েছে, তাঁদের সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন।
নিজ বিশ্ববিদ্যালয়: নিজ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। নিজ বিভাগের সিনিয়র ফ্যাকাল্টি ও তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ সম্পর্কে খোঁজ রাখতে হবে। ক্যাম্পাসের উল্লেখযোগ্য স্থাপনা, প্রথিতযশা শিক্ষক ও একাডেমিক অর্জন সম্পর্কে জেনে যাওয়া ভালো।
পঠিত বিষয়: নিজ বিষয় সম্পর্কে প্রায়ই প্রশ্ন করা হয়; বিশেষ করে পছন্দ তালিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ক্যাডারদের সঙ্গে পঠিত বিষয়ের জ্ঞান কীভাবে সম্পর্কিত, সেটা জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়া একাডেমিক বিষয়ের মৌলিক জ্ঞান যাচাই করা হয়।
সম্প্রতি ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯ হাজার ৮৪১ জন। ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ভাইভা শুরু হবে। এতে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন ক্যাডারে সুযোগ পাবেন ১ হাজার ৮১৪ কর্মকর্তা। ভাইভা পরীক্ষার প্রস্তুতি এগিয়ে রাখতে দরকারি পরামর্শ নিয়ে কথা বলেছেন ৪১তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করা ৬ জন। লিখেছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম।
ভাইভা বোর্ডে ভীতি রাখবেন না
সাজ্জাদ হোসাইন হৃদয়
পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম, ৪১তম বিসিএস
প্রথমেই আপনার মধ্যে যদি ভাইভা নিয়ে কোনো ভীতি থাকে, তা দূর করতে হবে। যদি ভয় নিয়ে স্যারদের সামনে যান, তাহলে স্যাররা মুহূর্তের মধ্যেই তা ধরে ফেলবেন। তখন হিতে বিপরীত হতে পারে। আর এই ভয় দূর করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো একটি ভালো প্রস্তুতি।
আপনার পছন্দক্রমের শুরুর কয়েকটি ক্যাডার চয়েস নিয়ে মৌলিক ধারণা নিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে প্রথম পছন্দের খুঁটিনাটি দেখে যেতে হবে। পরিপাটি হয়ে যেতে হবে। আপনাকে এক পলক দেখেই যে কেউ যেন বলে দিতে পারে আপনি একজন সিরিয়াস প্রতিযোগী। শীত, গ্রীষ্ম—যে মৌসুমেই আপনার ভাইভা হোক না কেন, স্যুট পরে গেলে ভালো। সঙ্গে মানানসই টাই, জুতা পরতে হবে। দাড়ি যদি সুন্নত মেনে না রাখেন, তাহলে তা কেটে যাওয়াই উচিত। চুল ছোট করে গেলে আপনাকে পরিপাটি মনে হবে। মনে রাখবেন, সুন্দর পোশাক আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
ভাইভাভীতি থেকে আমাদের মধ্যে কিছু বদ অভ্যাস ফুটে ওঠে। যেমন চোখ পিটপিট করা, ঘেমে যাওয়া, কপালে হাত চলে যাওয়া, অতিরিক্ত আমতা-আমতা করা, চোখে চোখে না তাকিয়ে ওপরের দিকে তাকিয়ে উত্তর করা। এ বিষয়গুলো দূর করতে হলে নিয়মিত ভাইভা সেশন করতে হবে। আপনার পরিচিত কোনো ভাইভা ক্যান্ডিডেট থাকলে তাদের সঙ্গে মূল ভাইভার অনুরূপ বোর্ড বসিয়ে তা করতে পারেন। বেশি বেশি অনুশীলনের মাধ্যমে এই অভ্যাসগুলো দূর করা সম্ভব।
হাসিমুখে না-বোধক উত্তর করা শিখতে হবে। সবকিছু পারতে হয় না, সবকিছু যে পারবেন তা স্যাররা আশাও করেন না। তবে আপনি কীভাবে ‘সরি স্যার’ বলছেন, তা অবশ্যই তাঁরা লক্ষ করবেন। এ বিষয়টিও অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।
আপনার যে পছন্দক্রমই হোক না কেন, ইংরেজিতে ভাইভা হতেই পারে। অনেক বেশি কঠিন কঠিন ভোকাবুলারি ব্যবহার করতে হবে এমন কথা নেই। তবে সহজ সাবলীল ভাষায় আপনার উত্তর উপস্থাপন করতে জানতে হবে। উত্তর করার সময় বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে না বলার চেষ্টা করবেন। বাংলায় উত্তর জানতে চাইলে, তা যেন সম্পূর্ণরূপে বাংলাতেই হয়। ইংরেজিতে উত্তর করার বিষয়টাও অনুশীলনের মাধ্যমেই আয়ত্তে আনা যায়। সারকথা হলো, অনুশীলনই হবে আপনার ভাইভা জয়ের পাথেয়।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ সম্পর্কে জানুন
মো. নাঈমুর রহমান
প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম, ৪১তম বিসিএস
মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য, নিজের ক্যাডার পছন্দক্রমের প্রথম দুই-তিনটি ক্যাডার সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রচলিত ভালো মানের যেকোনো সহায়ক বই পড়া যেতে পারে। সংবিধান সম্পর্কে জানার জন্য সংবিধানের সব অনুচ্ছেদ ভালোভাবে পড়তে হবে। পাশাপাশি সংবিধানের প্রস্তাবনা, সংশোধনী ও তফসিলগুলো পড়তে হবে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভালো মানের যেকোনো সহায়ক বই পড়া যেতে পারে।
নিজের জেলায় মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি, নিজ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা, মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজ জেলা যে সেক্টরের অধীনে ছিল, সেই সেক্টর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত চলচ্চিত্র, উপন্যাস, গল্প, নাটক, কবিতা, আত্মকথা, গান প্রভৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত সম্প্রতি নিজের দেখা চলচ্চিত্র, সম্প্রতি পড়া উপন্যাস, গল্প, নাটক, কবিতা, আত্মকথা প্রভৃতি প্রসঙ্গ মৌখিক পরীক্ষায় জিজ্ঞেস করা হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন পড়তে হবে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত অন্যান্য মৌলিক সাহিত্যও পড়তে হবে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত নিজের দেখা চলচ্চিত্র, নিজের পড়া উপন্যাস, গল্প, কবিতার প্রসঙ্গও আসতে পারে। এ ছাড়া ভালো মানের যেকোনো সহায়ক বইও পড়া যেতে পারে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। নিয়মিত পত্রিকা পড়লে সাম্প্রতিক বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। এ ছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্চ করে গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকাশনা, রচনা, সংবাদ পড়া যেতে পারে। যেমন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বর্তমানে একটি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
স্মার্ট বাংলাদেশ লিখে সার্চ করলেই এ বিষয়ে অনেক লেখা পাওয়া যাবে। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়, স্মার্ট বাংলাদেশ ও ভিশন ২০৪১-এর মধ্যে সম্পর্ক প্রভৃতি পড়া যেতে পারে।
যেসব কাগজপত্র সঙ্গে নিতে হবে
ডা. মো. শাহাদাত হোসাইন সরকার
স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম, ৪১তম বিসিএস
সরকারি কর্ম কমিশন নির্দেশিত ডকুমেন্ট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে
শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারে প্রথম ৪১তম বিসিএস।
‘When you dress good, you feel good. When you feel good, you perform better.’ বিসিএস ভাইভায় মার্জিত, শালীন ও মানানসই পোশাক একজন প্রার্থীর শুধু আত্মবিশ্বাসই বাড়ায় না; বরং তাঁকে সর্বোচ্চ কর্মক্ষমতা ও যোগ্যতা প্রদর্শনেরও অনুপ্রেরণা দেয়।
ড্রেসআপ: পুরুষেরা ফরমাল হয়ে যাবেন অবশ্যই। হালকা রঙের (সাদা/ আকাশি/ এক কালার) ফুল হাতা শার্ট, কালো/ নেভি ব্লু প্যান্ট, টাই, ফরমাল জুতা, জুতার কালারের সঙ্গে মিলিয়ে বেল্ট। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্লেজার পরতে পারেন। আর শীতকাল হলে সেটা আবশ্যক বলে মনে করি।
গেটআপ: পুরুষদের ক্ষেত্রে দাড়ি নিয়ে কনফিউশনে পড়ে যান। মূলত দাড়ি যদি সুন্নতি দাড়ি হয় কোনো সমস্যা নেই, অন্যথায় ক্লিন শেভ বাঞ্ছনীয়। ড্রেস ভালোভাবে আয়রন করা থাকলে সুন্দর দেখায়। টাই পরলে বেল্টের হালকা ওপর পর্যন্ত রাখবেন। শার্ট ফুল হাতা থাকবে। স্যুট পরলে স্যুটের হাতার বাইরে শার্টের হাতা দেখা যাবে। পোশাকটি খুব বেশি আঁটসাঁট যেমন হবে না, তেমনি ঢিলেঢালাও হবে না। প্রার্থীকে তাঁর পরিধেয় পোশাকে অবশ্যই আরাম এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে হবে।
শুধু পোশাকেই নয়, প্রার্থীদের অঙ্গভঙ্গি এবং চলাফেরায়ও মার্জিত ও শালীনভাব ফুটিয়ে তোলা চাই। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাসী অফিসারসুলভ আচরণ একজন প্রার্থীর সফলতা লাভ সহজ করে দিতে পারে। চূড়ান্ত ভাইভা পরীক্ষার আগেই কমপক্ষে দুটো মক ভাইভায় অংশগ্রহণ করে এ ব্যাপারগুলো অনুশীলন করে নেওয়া ভালো। যাঁদের ইংরেজিতে কথা বলায় দুর্বলতা আছে, তাঁদের এই দুর্বলতা নিয়ে ভাইভা বোর্ডে যাওয়া উচিত হবে না।
ইংরেজিতে কথা বলায় অপারগ হলে তা আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। গুরুত্ব দিয়ে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করলে অল্প দিনেই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কিংবা হাঁটতে হাঁটতে নিজের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করা যেতে পারে।
ইংরেজিতে পারদর্শী একজন বন্ধু বা শিক্ষকের কাছ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা নিলে কাজটি আরও সহজ হবে।
নিজের সম্পর্কে যা জানতে হবে
রাশেদুল হাসান মুরাদ
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম (ইংরেজি), ৪১তম বিসিএস
ভাইভায় একজন প্রার্থীকে নিজের সম্পর্কে বেশ কিছু বিষয় জিজ্ঞাসা করা হয়।
নিজের সম্পর্কে: নিজের শৈশব, শিক্ষাজীবন, শখের বিষয় ও পরিবারের সদস্য সম্পর্কে নানা কিছু জিজ্ঞেস করা হয়। এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে হয়। একটি প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে পরবর্তী প্রশ্নের সংযোগ থাকতে পারে। প্রিয় শখ বাগান করা হলে বিভিন্ন ফুল ও সৌন্দর্যবর্ধক চারা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারে। পরিবারের যাঁরা যেসব পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন, তাঁদের পেশা (সামাজিক মর্যাদা যা-ই হোক) সে-সম্পর্কে ইতিবাচক ও শ্রদ্ধাশীল বিবরণ দেওয়া উচিত। নিজ জেলা: ভাইভায় নিজ জেলা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি—যাঁদের সাহিত্য, শিল্প-সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক অবদান রয়েছে, তাঁদের সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন।
নিজ বিশ্ববিদ্যালয়: নিজ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। নিজ বিভাগের সিনিয়র ফ্যাকাল্টি ও তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ সম্পর্কে খোঁজ রাখতে হবে। ক্যাম্পাসের উল্লেখযোগ্য স্থাপনা, প্রথিতযশা শিক্ষক ও একাডেমিক অর্জন সম্পর্কে জেনে যাওয়া ভালো।
পঠিত বিষয়: নিজ বিষয় সম্পর্কে প্রায়ই প্রশ্ন করা হয়; বিশেষ করে পছন্দ তালিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ক্যাডারদের সঙ্গে পঠিত বিষয়ের জ্ঞান কীভাবে সম্পর্কিত, সেটা জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়া একাডেমিক বিষয়ের মৌলিক জ্ঞান যাচাই করা হয়।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডে (ডেসকো) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শূন্য পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
১৬ ঘণ্টা আগেমৎস্য অধিদপ্তরের ৮টি পদে ৫৮০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে এ পরীক্ষা শুরু হবে। প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক (প্রশাসন) এস এম রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ১৫ ধরনের শূন্য পদে ৬০ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) থেকে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেমাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ৮৬টি পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। হিসাবরক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারীসহ বিভিন্ন পদে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ তারিখ: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪।
৩ দিন আগে