সিভি লেখার আগে যা জানতে হবে

নিয়াজ আহমেদ
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০১
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৩৩

সিভি হলো এমন একটি ডকুমেন্ট, যেখানে আপনার কাজ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার মূল অংশগুলো উল্লেখ করা থাকে। চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ভালো সিভি তৈরি করা। আপনার সিভি হওয়া উচিত এমন যা খুব সহজেই নিয়োগদাতাদের নজর কাড়বে। সিভি লেখা আমাদের কাছে বেশ সহজ একটা কাজ মনে হলেও, অধিকাংশ চাকরিপ্রার্থী একটি ভালো সিভি তৈরি করতে না পারায় বাদ পড়ে যান। তাই সিভি লেখার খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করেছেন ‘করপোরেট আস্ক’-এর প্রধান নির্বাহী পরিচালক ও প্রফেশনাল সিভি রাইটার নিয়াজ আহমেদ।

সিভিতে অবশ্যই থাকা উচিত
চাকরি করতে গেলেই নিয়োগকর্তারা ফ্রেশারদের যে সাধারণ প্রশ্নটি করেন, ‘আপনার কি কোনো অভিজ্ঞতা আছে?’ বেচারা চাকরিই তো কোনো দিন করেননি, তাহলে অভিজ্ঞতাটা আসবে কোথা থেকে? আসলে অভিজ্ঞতা আসতে পারে ইন্টার্নশিপ, খণ্ডকালীন কাজ, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, সিএসআর, পাঠ্যক্রমবহির্ভূত কার্যক্রম থেকে। সিভিতে কোনো রং, শেপ, শেড, কলাম, বক্স, টেবিল থাকা চলবে না। সিভিতে অত বেশি ব্যক্তিগত তথ্যের প্রয়োজন নেই। প্রফেশনাল সিভি ২ পেজে হওয়া ভালো। আর যাঁদের অভিজ্ঞতা আছে, তাঁদের অবশ্যই সিভিতে অ্যাচিভমেন্ট লিখতে হবে। সিভির স্টেটমেন্টগুলো স্মার্ট হওয়া জরুরি। নিজের দক্ষতাগুলো সিভিতে যথাযথভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। আর সেই সঙ্গে অভিজ্ঞদের জন্য সিভিতে তাঁদের ক্যারিয়ার গ্রোথ স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

যেসব কারণে আপনার সিভি বাদ পড়তে পারে

  • কভার লেটার না থাকা।
  • মেইলে পাঠানোর ক্ষেত্রে মেইলের সাবজেক্ট লাইন না থাকা।
  • ফোল্ডারের নাম ঠিকভাবে না থাকা।
  • একই সিভি দিয়ে সব জায়াগায় আবেদন করা।
  • সার্কুলার না পড়েই আবেদন করা।
  • সিভিতে বানান ও গ্রামার ভুল থাকা।
  • সিভিতে অ্যাচিভমেন্ট ও স্কিল না থাকা।
  • সিভি বিশাল বড় হয়ে যাওয়া।
  • দোকান থেকে মান্ধাতা আমলের সিভি বানিয়ে নেওয়া।
  • ডিজাইন করে অন্তঃসারশূন্য সিভি বানানো।

সিভির ফরম্যাট যেমন হওয়া চাই
আসলে সিভি তৈরির ক্ষেত্রে ফরম্যাট জরুরি বিষয় নয়। সিভি তৈরির জন্য জরুরি হচ্ছে কনটেন্ট। আপনার মাধ্যমে আগের কোম্পানিগুলোতে কী কী উন্নতি হয়েছে, কী কী পরিবর্তন এসেছে, গ্রোথ কী পরিমাণে হয়েছে, কোন কোন সমস্যার সমাধান করেছেন, সেগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারাটাই আসল। তবে সিভির কিছু শক্তিশালী শব্দ আছে, যেগুলো সিভিতে থাকা ভালো। আবার কিছু বাক্য আছে যেগুলো না থাকাই উত্তম। যেকোনো প্রতিষ্ঠানে আপনার আগে আপনার সিভি যাবে। কাজেই সিভি সুন্দর, সাবলীল ও আকর্ষণীয় হওয়া অত্যন্ত জরুরি। আর তাই কনটেন্টের গুরুত্ব প্রফেশনাল সিভি তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

রেফারেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যেসব ভুল করি
আপনার কাজই সবচেয়ে বড় রেফারেন্স। চার-পাঁচ বছর চাকরি করার পর সিভিতে আর রেফারেন্স দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে দুজন রেফারেন্স থাকতে পারেন। একজন ভার্সিটির কোনো শিক্ষক। আরেকজন ভার্সিটির কোনো সিনিয়র ভাই হতে পারেন। যাঁকেই রেফারেন্স হিসেবে রাখতে চান, প্রথমে তাঁর অনুমতি নিয়ে নিন। খুব বেশি হাই প্রোফাইলের কাউকে রেফারেন্স রাখবেন না, যাঁকে ফোন দিলে পাওয়াই যায় না। যাঁদের রেফারেন্স রাখবেন, তাঁদের নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম, পদবি, মেইল আইডি ও ফোন নম্বর—এই পাঁচটা তথ্য সিভিতে অবশ্যই রাখতে চেষ্টা করবেন।

সিভি লেখার সময় যেসব ব্যাপারে লক্ষ রাখতে হবে
আরেকজনের সিভি থেকে কপি-পেস্ট করে সিভি বানানো যাবে না। সিভিতে উদ্ভট কোনো ফরম্যাট ব্যবহার না করাই শ্রেয়। ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না। সিভিতে গ্রামার ও বানান এই দুটো জিনিস খেয়াল করতে হবে। প্রতিবার সিভি পাঠানোর সময় এর অবজেকটিভ, ইনটেনশন, স্কিল ও কি-ওয়ার্ড চেক করে নিতে হবে। প্রয়োজনে পেশাদার সিভি লেখকদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। তবে এমনভাবে আপনাকে সিভি পাঠাতে হবে, যেন সিভি আপনার কথাই বলে এবং আপনাকে যেন চাকরির জন্য ডাকা হয়।

অনুলিখন: মুসাররাত আবির

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

ব্যাংক খাতে নতুন নীতিমালা: আটকে গেল ২৫৮ কর্মকর্তার জিএম পদে পদোন্নতি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত