রোবোটিকস বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। দৈনিক জীবনে এর গুরুত্ব এবং ব্যবহার অত্যন্ত বাড়ছে। স্বয়ংক্রিয় রোবোটিক সিস্টেম, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং হোম অটোমেশন ব্যবহারে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা নতুন নতুন সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে পারব। রোবোটিকস বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ারের নানা বিষয় নিয়ে আজকের আয়োজন।
রোবোটিকসের চাহিদা
রোবোটিকস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করানোর মাধ্যমে তাঁদের ক্যারিয়ার এবং প্রযুক্তি খাতে দেশের উন্নতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখা সম্ভব। রোবোটিকস সাধারণত মেকানিক্যাল, ইলেকট্রনিকস ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা—এই তিনটি শাখাকে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ তৈরি করে। রোবোটিকস উচ্চশিক্ষা আধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখার মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে, যার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য রোবোটিক ডিজাইন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট। একজন ছাত্রছাত্রী উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর ওপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে স্কিল ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে পৃথিবীর শীর্ষ টেকনোলজি কোম্পানিগুলোতে কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন। তাই এই সেক্টরের চাহিদা অনেক বেশি।
টেকনিক্যাল বিষয়ে ধারণা চাই
রোবোটিকসে সফল ক্যারিয়ার গঠন করতে শুধু ইউনিভার্সিটি এবং পরবর্তী সময়টি নয়, ইউনিভার্সিটি শুরুর পূর্ববর্তী সময় কাজে লাগানোর মনোভাব থাকতে হবে। বিষয়গুলো সম্পর্কে শুধু তত্ত্বীয় নয়; বরং ব্যবহারিক জ্ঞান আহরণের মাধ্যমেও ক্যারিয়ার গঠন করতে হবে। রোবোটিক ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে কিছু টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য মেকানিক্যাল ডিজাইন, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি, প্রোগ্রামিং ভাষা (যেমন: সি++, পাইথন, জাভা, ম্যাটল্যাব)
স্কুলে পড়াকালে হাতেখড়ি
বর্তমানে রোবোটিকস ডেভেলপমেন্ট নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বর্ষের শিক্ষার্থীদের আগ্রহের একটি বড় অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে অনেকেই কোথা থেকে শুরু করবে এবং কোথা থেকে এ বিষয় শিখতে পারবে—এ রকম হাজারো চিন্তাভাবনা নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকে।
নেকে হাল ছেড়ে দেয়। সপ্তম শ্রেণিতে থাকার সময় আমার নিজেরও রোবোটিকস নিয়ে কাজ করার ভূত মাথায় চেপে বসে। ফলে এ রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাকেও যেতে হয়েছে। আমি ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দিই, কীভাবে রোবোটিকস নিয়ে কাজ শুরু করতে পারব। আর ইন্টারনেট থেকেই রোবোটিকসের হাতেখড়ি। প্রথমে সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে শুরু করি। এরপর সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে ছোটখাটো কোডিং। এরপর এল রোবোটিকসের বেসিক সম্পর্কে জানা।
ইউটিউব থেকে কিছু ভিডিও দেখা, কিছু পিডিএফ পড়ার মাধ্যমে বুঝতে শেখা যে একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার কীভাবে কাজ করে, কীভাবে একটি মাইক্রোকন্ট্রোলারে প্রোগ্রাম আপলোড করতে হয়—এ রকম অনেক তথ্য আহরণ করতে শুরু করি। অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা শেষ করার পর মামা টেকশপ থেকে একটি আরডুইনো কিট কিনে দেন। আর মামার দেওয়া সাহস থেকেই রোবোটিকসের জগতে পা বাড়াতে শুরু করি। এরপর ছোট ছোট প্রজেক্ট থেকে শুরু করে বড় বড় প্রজেক্ট। আর এই বড় প্রজেক্টগুলো নিয়ে প্রথমে উপজেলা, জেলা, বিভাগ, জাতীয় এমনকি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করি। এসবের কারণে পরে তুরস্ক সরকারের বৃত্তি নিয়ে রোবোটিকস এবং মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পাই।
রোবোটিকসে উচ্চশিক্ষা
রোবোটিকস নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে রয়েছে। বাংলাদেশের দিকে তাকালে প্রথমেই চোখে পড়বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস ও মেকাট্রনিকস বিভাগ। এর বাইরেও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীন, জার্মানি, তুরস্ক, কানাডা, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের মতো প্রযুক্তি খাতে উন্নত দেশগুলো সাধারণভাবে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রযুক্তি এবং রোবোটিকস কোর্সে পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ দেয়। দেশগুলোতে রোবোটিকস উচ্চশিক্ষা ও উন্নত প্রযুক্তির বিভিন্ন শ্রেণিতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার তৈরিতে অনেক বড় সুযোগ দেয়। পৃথিবীখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবোটিকসের মতো প্রোগ্রামগুলো নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিতে পারবেন। এর বাইরেও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, জাপানের ইউনিভার্সিটি অব টোকিও, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ—এ রকম আরও পৃথিবীখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তি নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।
তুরস্কে রোবোটিকসে পড়াশোনা
তুরস্ক সরকার প্রতিবছর পৃথিবীর প্রায় ১৭৮টি দেশ থেকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শাখায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স ডিগ্রি অথবা পিএইচডি করার সুযোগ দিয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। রোবোটিকস নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য সুযোগ-সুবিধা দিন দিন বাড়ছে। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ড্রোন টেকনোলজি, রোবোটিকস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে দেশটি। তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।
ক্যারিয়ারে নানা অপশন
রোবোটিকসে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য অনেক অপশন রয়েছে। কারণ রোবোটিকস অনেক ভাগে বিভক্ত। রোবোটিকস নিয়ে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে পড়াশোনা করা গুরুত্বপূর্ণ এবং যে বিষয়গুলোর প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে, সেটি বেছে নিতে হবে। রোবোটিকসের শাখাগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো:
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং: রোবোটিকস প্রযুক্তি ও সিস্টেমগুলো ডিজাইন, রোবটের কাজের ওয়ার্ক ফ্লো কী রকম হবে, তা তৈরি করার জন্য কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং: রোবোটিকসে ব্যবহৃত সেন্সর, মোটর, মাইক্রো কন্ট্রোলার, ব্যাটারি ও ইলেকট্রনিক ডিজাইনের জ্ঞান অত্যন্ত জরুরি।
মেকানিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস: রোবোটিকস মেকানিকস ও মেকাট্রনিকস প্রিন্সিপল ব্যবহার করে রোবটের এবং রোবট ডিজাইন করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও মেশিন লার্নিং: রোবোটিকসে এআই ও মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে রোবটের অ্যালগরিদম সেট করা এবং সেন্সর ডেটা প্রসেসিং করা হয়।
কিনেম্যাটিকস অ্যান্ড ডাইনামিকস: রোবটের গতি নির্ধারণে কিনেম্যাটিকস ও ডাইনামিকসের জ্ঞান প্রয়োজন।
কম্পিউটার ভিশন ও ইমেজ প্রসেসিং: রোবোটিকস সিস্টেমে ইমেজ ও ভিডিও প্রসেসিং করা হয়, যাতে করে রোবট আশপাশের যেকোনো বস্তুকে নিজে থেকে ডিটেক্ট করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। তাই কম্পিউটার ভিশন এবং ইমেজ প্রসেসিংয়ের জ্ঞান প্রয়োজন।
প্রোগ্রামিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট: রোবোটিকস সিস্টেমে প্রোগ্রামিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রোগ্রামিং জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে তৈরি করা রোবটকে নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার মতো কাজ করা সম্ভব হবে।
আমার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের থেকে হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রনিকস এবং মেকানিকসের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকায় ইউনিভার্সিটিতে মেজর নেওয়ার সময় মেকাট্রনিকস নিয়েছিলাম। এভাবেই আপনার আগ্রহের দিকটি প্রথমে নির্ধারণ করে কোন দিক নিয়ে পড়াশোনা করবেন সেটির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ
রোবোটিকস বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। দৈনিক জীবনে এর গুরুত্ব এবং ব্যবহার অত্যন্ত বাড়ছে। স্বয়ংক্রিয় রোবোটিক সিস্টেম, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং হোম অটোমেশন ব্যবহারে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা নতুন নতুন সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে পারব। রোবোটিকস বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ারের নানা বিষয় নিয়ে আজকের আয়োজন।
রোবোটিকসের চাহিদা
রোবোটিকস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করানোর মাধ্যমে তাঁদের ক্যারিয়ার এবং প্রযুক্তি খাতে দেশের উন্নতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখা সম্ভব। রোবোটিকস সাধারণত মেকানিক্যাল, ইলেকট্রনিকস ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা—এই তিনটি শাখাকে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ তৈরি করে। রোবোটিকস উচ্চশিক্ষা আধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখার মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে, যার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য রোবোটিক ডিজাইন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট। একজন ছাত্রছাত্রী উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর ওপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে স্কিল ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে পৃথিবীর শীর্ষ টেকনোলজি কোম্পানিগুলোতে কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন। তাই এই সেক্টরের চাহিদা অনেক বেশি।
টেকনিক্যাল বিষয়ে ধারণা চাই
রোবোটিকসে সফল ক্যারিয়ার গঠন করতে শুধু ইউনিভার্সিটি এবং পরবর্তী সময়টি নয়, ইউনিভার্সিটি শুরুর পূর্ববর্তী সময় কাজে লাগানোর মনোভাব থাকতে হবে। বিষয়গুলো সম্পর্কে শুধু তত্ত্বীয় নয়; বরং ব্যবহারিক জ্ঞান আহরণের মাধ্যমেও ক্যারিয়ার গঠন করতে হবে। রোবোটিক ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে কিছু টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য মেকানিক্যাল ডিজাইন, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি, প্রোগ্রামিং ভাষা (যেমন: সি++, পাইথন, জাভা, ম্যাটল্যাব)
স্কুলে পড়াকালে হাতেখড়ি
বর্তমানে রোবোটিকস ডেভেলপমেন্ট নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বর্ষের শিক্ষার্থীদের আগ্রহের একটি বড় অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে অনেকেই কোথা থেকে শুরু করবে এবং কোথা থেকে এ বিষয় শিখতে পারবে—এ রকম হাজারো চিন্তাভাবনা নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকে।
নেকে হাল ছেড়ে দেয়। সপ্তম শ্রেণিতে থাকার সময় আমার নিজেরও রোবোটিকস নিয়ে কাজ করার ভূত মাথায় চেপে বসে। ফলে এ রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাকেও যেতে হয়েছে। আমি ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দিই, কীভাবে রোবোটিকস নিয়ে কাজ শুরু করতে পারব। আর ইন্টারনেট থেকেই রোবোটিকসের হাতেখড়ি। প্রথমে সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে শুরু করি। এরপর সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে ছোটখাটো কোডিং। এরপর এল রোবোটিকসের বেসিক সম্পর্কে জানা।
ইউটিউব থেকে কিছু ভিডিও দেখা, কিছু পিডিএফ পড়ার মাধ্যমে বুঝতে শেখা যে একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার কীভাবে কাজ করে, কীভাবে একটি মাইক্রোকন্ট্রোলারে প্রোগ্রাম আপলোড করতে হয়—এ রকম অনেক তথ্য আহরণ করতে শুরু করি। অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা শেষ করার পর মামা টেকশপ থেকে একটি আরডুইনো কিট কিনে দেন। আর মামার দেওয়া সাহস থেকেই রোবোটিকসের জগতে পা বাড়াতে শুরু করি। এরপর ছোট ছোট প্রজেক্ট থেকে শুরু করে বড় বড় প্রজেক্ট। আর এই বড় প্রজেক্টগুলো নিয়ে প্রথমে উপজেলা, জেলা, বিভাগ, জাতীয় এমনকি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করি। এসবের কারণে পরে তুরস্ক সরকারের বৃত্তি নিয়ে রোবোটিকস এবং মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পাই।
রোবোটিকসে উচ্চশিক্ষা
রোবোটিকস নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে রয়েছে। বাংলাদেশের দিকে তাকালে প্রথমেই চোখে পড়বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস ও মেকাট্রনিকস বিভাগ। এর বাইরেও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীন, জার্মানি, তুরস্ক, কানাডা, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের মতো প্রযুক্তি খাতে উন্নত দেশগুলো সাধারণভাবে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রযুক্তি এবং রোবোটিকস কোর্সে পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ দেয়। দেশগুলোতে রোবোটিকস উচ্চশিক্ষা ও উন্নত প্রযুক্তির বিভিন্ন শ্রেণিতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার তৈরিতে অনেক বড় সুযোগ দেয়। পৃথিবীখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবোটিকসের মতো প্রোগ্রামগুলো নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিতে পারবেন। এর বাইরেও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, জাপানের ইউনিভার্সিটি অব টোকিও, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ—এ রকম আরও পৃথিবীখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তি নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।
তুরস্কে রোবোটিকসে পড়াশোনা
তুরস্ক সরকার প্রতিবছর পৃথিবীর প্রায় ১৭৮টি দেশ থেকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শাখায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স ডিগ্রি অথবা পিএইচডি করার সুযোগ দিয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। রোবোটিকস নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য সুযোগ-সুবিধা দিন দিন বাড়ছে। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ড্রোন টেকনোলজি, রোবোটিকস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে দেশটি। তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।
ক্যারিয়ারে নানা অপশন
রোবোটিকসে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য অনেক অপশন রয়েছে। কারণ রোবোটিকস অনেক ভাগে বিভক্ত। রোবোটিকস নিয়ে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে পড়াশোনা করা গুরুত্বপূর্ণ এবং যে বিষয়গুলোর প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে, সেটি বেছে নিতে হবে। রোবোটিকসের শাখাগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো:
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং: রোবোটিকস প্রযুক্তি ও সিস্টেমগুলো ডিজাইন, রোবটের কাজের ওয়ার্ক ফ্লো কী রকম হবে, তা তৈরি করার জন্য কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং: রোবোটিকসে ব্যবহৃত সেন্সর, মোটর, মাইক্রো কন্ট্রোলার, ব্যাটারি ও ইলেকট্রনিক ডিজাইনের জ্ঞান অত্যন্ত জরুরি।
মেকানিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস: রোবোটিকস মেকানিকস ও মেকাট্রনিকস প্রিন্সিপল ব্যবহার করে রোবটের এবং রোবট ডিজাইন করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও মেশিন লার্নিং: রোবোটিকসে এআই ও মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে রোবটের অ্যালগরিদম সেট করা এবং সেন্সর ডেটা প্রসেসিং করা হয়।
কিনেম্যাটিকস অ্যান্ড ডাইনামিকস: রোবটের গতি নির্ধারণে কিনেম্যাটিকস ও ডাইনামিকসের জ্ঞান প্রয়োজন।
কম্পিউটার ভিশন ও ইমেজ প্রসেসিং: রোবোটিকস সিস্টেমে ইমেজ ও ভিডিও প্রসেসিং করা হয়, যাতে করে রোবট আশপাশের যেকোনো বস্তুকে নিজে থেকে ডিটেক্ট করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। তাই কম্পিউটার ভিশন এবং ইমেজ প্রসেসিংয়ের জ্ঞান প্রয়োজন।
প্রোগ্রামিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট: রোবোটিকস সিস্টেমে প্রোগ্রামিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রোগ্রামিং জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে তৈরি করা রোবটকে নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার মতো কাজ করা সম্ভব হবে।
আমার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের থেকে হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রনিকস এবং মেকানিকসের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকায় ইউনিভার্সিটিতে মেজর নেওয়ার সময় মেকাট্রনিকস নিয়েছিলাম। এভাবেই আপনার আগ্রহের দিকটি প্রথমে নির্ধারণ করে কোন দিক নিয়ে পড়াশোনা করবেন সেটির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডে (ডেসকো) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শূন্য পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
৮ ঘণ্টা আগেমৎস্য অধিদপ্তরের ৮টি পদে ৫৮০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে এ পরীক্ষা শুরু হবে। প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক (প্রশাসন) এস এম রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ১৫ ধরনের শূন্য পদে ৬০ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) থেকে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেমাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ৮৬টি পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। হিসাবরক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারীসহ বিভিন্ন পদে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ তারিখ: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪।
২ দিন আগে