পড়াশোনার পাশাপাশি উপার্জনের ৫ পথ

নূরে আলম সিদ্দিকী শান্ত 
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৪, ০৮: ২৭
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৪, ১১: ২৮

শিক্ষাজীবনকে বলা হয় জীবন গঠনের শ্রেষ্ঠ সময়। এ সময় একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার মাধ্যমে পেশাগত জীবনে প্রবেশের লক্ষ্যে নিজেকে গড়ে তোলেন। অনেকে বলেন, অর্থ অনর্থের মূল। কিন্তু জীবনে চলার জন্য অর্থের প্রয়োজন অপরিহার্য। পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করতে পারলে বাড়ে আত্মবিশ্বাস এবং নিজের প্রতি সম্মান। 

টিউশনি 
শিক্ষার্থী অবস্থায় টিউশনি করানো বা ছাত্র পড়ানো উপার্জনের সবচেয়ে সুন্দর মাধ্যম। আপনি যে বিষয়টি ভালো বোঝেন, যে বিষয়ে আপনার দক্ষতা বেশি, সে বিষয়টি পড়াতে পারেন। পড়াশোনার ভেতরে থেকে পড়াশোনা করে অর্থ উপার্জন করা শ্রেয়। এতে নিজের পড়াশোনার চর্চা থাকে। এলাকার দেয়ালে লিফলেট টানিয়ে, বিভিন্ন টিউশন মিডিয়া, এমনকি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে খুঁজে পেতে পারেন টিউশনি। 

ডিজিটাল স্কিল 
যাঁরা ডিজিটাল স্কিল শেখার মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করবেন, ভবিষ্যতে তাঁরাই বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবেন। এ জন্য শিখতে পারেন ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং, সাউন্ড এডিটিং ও অ্যানিমেশন তৈরি। এ ছাড়া এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং, ফেসবুক মার্কেটিং, ওয়েবসাইট তৈরি, ওয়েবসাইট ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইনসহ নানা সেক্টর রয়েছে। ইউটিউবে বহু টিউটোরিয়াল রয়েছে, রয়েছে বিভিন্ন ডিজিটাল লার্নিং স্কুল। যেখান থেকে মৌলিক বিষয়গুলো সহজে শিখতে পারবেন। ছাত্র অবস্থাতেই দেশের বহু শিক্ষার্থী ডিজিটাল স্কিল শেখার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন ঘরে বসে। 

ফ্রিল্যান্স 
যেকোনো ডিজিটাল স্কিল রপ্ত করার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শুরু করতে পারবেন। শিক্ষার্থী অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আয়ের অন্যতম মাধ্যম। ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য আপনাকে ৯-৫টা অফিস করতে হবে না। ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, নিজের পড়া এসব সামলে নিজের মতো করে সুবিধা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। আপনাকে প্রথমে যেকোনো একটি ডিজিটাল স্কিলে দক্ষ হতে হবে। সেটি হতে পারে ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক ডিজাইনসহ যেকোনো কিছু। তারপর ফাইবার, আপওয়ার্কসহ আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলোতে কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে সম্ভাবনাময় একটি পেশা। 

উদ্যোগ বা ক্ষুদ্র ব্যবসা
ক্ষুদ্র ব্যবসা করেও উপার্জন করা যায়। এ ক্ষেত্রে ঘরে বসে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সেটি হতে পারে স্পোর্টসবিষয়ক অনলাইন স্টোর, হোমমেড ফুড বা প্রোডাক্ট, হস্তশিল্প বা দেশি পণ্য, গেজেট আইটেম ইত্যাদি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে ছোট্ট একটি খাবারের দোকান, বাসা বা অফিসে হোমমেড খাবার সরবরাহ বা যেকোনো আইডিয়া, যেটি আপনার মাথায় ঘুরছে, আপনি সেটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় শুরু করতে পারেন। এ কাজ আপনাকে স্বাবলম্বী করে তুলবে, অর্থের জোগান দেবে এবং ভবিষ্যৎকেও সুন্দর করবে। বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি এমন ব্যবসা করে সফল হচ্ছেন।  

শখের সঠিক ব্যবহার 
প্রতিটি মানুষের ভেতরে থাকে একটি শিল্পীসত্তা এবং সৃজনশীল মন। কারও ভালো লাগে আবৃত্তি, বিতর্ক, উপস্থাপনা, কারও লেখালেখি, কারও গান, ছবি আঁকা। আপনি যে বিষয়টি ভালোবাসেন, সেই বিষয়টি অবলম্বন করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। যেমন আপনি আবৃত্তি করতে ভালোবাসেন, একজন ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন। ফেসবুকে ভয়েস আর্টিস্টের বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে, যেখানে প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। লেখালেখি করতে ভালো লাগে, কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করুন। উপস্থাপনা করতে ভালো লাগলে আপনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। ঘুরতে ভালোবাসেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জন্য কনটেন্ট বানানো শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ আপনার শিল্পসত্তাকে অবলম্বন করে পড়াশোনার পাশাপাশি আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত