জনসংযোগ পেশায় ক্যারিয়ার

Thumbnail image

জনসংযোগ বা পাবলিক রিলেশন পেশাটি এখন বিকাশমান একটি কর্মসংস্থান। এ পেশাটি প্রতিষ্ঠানের সুনাম এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শুধু করপোরেট জগতে নয়, সরকারি–বেসরকারি, এনজিও—এমনকি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ইনফো পাওয়ার লিমিটেডের করপোরেট কমিউনিকেশন কনসালট্যান্ট আকিদুল ইসলামের কাছ থেকে জনসংযোগ পেশায় ক্যারিয়ার নিয়ে শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

জনসংযোগ কী
জনসংযোগ বা পাবলিক রিলেশন বলতে বোঝায় প্রতিষ্ঠান এবং এর বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার (যেমন: গণমাধ্যম, গ্রাহক, সরকার, কর্মচারী ইত্যাদি) মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান এবং ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি করা। একই সঙ্গে সেটা বজায় রাখা। মূল কাজটি হলো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে জনসমক্ষে তুলে ধরা, প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি করা এবং যেকোনো নেতিবাচক পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা।

জনসংযোগের মূল কার্যক্রম
জনসংযোগের কাজ কেবল গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা নয়, এর অনেক বিস্তৃত কার্যক্রম রয়েছে। মিডিয়া রিলেশনস, ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল পিআর এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনা, করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি, স্টেকহোল্ডার ম্যানেজমেন্ট সর্বোপরি কৌশলগত যোগাযোগ স্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয় এ পেশায়।

জনসংযোগে কাজ করার দক্ষতা

  • দৃঢ় যোগাযোগ দক্ষতা: জনসংযোগ পেশাদারদের সবচেয়ে বড় গুণ হলো সঠিক ও স্পষ্টভাবে যোগাযোগ করার সক্ষমতা। যে প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করা হচ্ছে, সেটা মিডিয়ার সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য ভালো যোগাযোগ দক্ষতার প্রয়োজন পড়ে। যাতে প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্টের বার্তাটি সঠিকভাবে মিডিয়া ও জনসাধারণের কাছে পৌঁছায়।
  • সম্পর্ক তৈরি ও তা বজায় রাখা: একজন ভালো পিআর পেশাদারের জন্য গণমাধ্যম, সাংবাদিক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়। পিআর নিজের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে কাজ করেন। 
  • দ্রুত সংকট মোকাবিলার দক্ষতা: সংকটময় সময়ে দক্ষ পেশাদারদের কার্যকরী ভূমিকা নিতে হয়। সমস্যা দ্রুত বুঝে ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়া এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করার দক্ষতা থাকতে হবে।

জনসংযোগ পেশার সুবিধা

  • সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন: পাবলিক রিলেশন পেশা সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করে। পিআরকে প্রতিটি প্রচারণা বা ক্যাম্পেইনের জন্য নতুনভাবে পরিকল্পনা করতে হয়। নতুন নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ইতিবাচক ইমেজ তৈরি করা বা সংকট মোকাবিলা করার মাধ্যমে কর্মীর সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
  • যোগাযোগ দক্ষতা: পিআর পেশায় বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক, মিডিয়া এবং জনসাধারণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখতে হয়। যাঁরা মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এটি একটি পারফেক্ট পেশা। এখানে সাংবাদিক, মিডিয়াকর্মী, গ্রাহক এবং অন্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়, যা ব্যক্তিগত ও পেশাদারত্ব— উভয় ক্ষেত্রেই উন্নতির সুযোগ তৈরি করে।
  • চ্যালেঞ্জিং ও বহুমুখী কাজের সুযোগ: পিআর পেশার কাজ কখনো একঘেয়ে নয়। প্রতিদিনই নতুন চ্যালেঞ্জ ও প্রকল্প নিয়ে আসে। কখনো আপনাকে প্রেস রিলিজ তৈরি করতে হতে পারে, কখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংকট সামলাতে হতে পারে, আবার কখনো প্রতিষ্ঠানটির নতুন পণ্যের প্রচারণা কৌশল তৈরি করতে হতে পারে। তাই যাঁরা বৈচিত্র্যময় এবং চ্যালেঞ্জিং কাজ পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য পিআর পেশা আদর্শ।

চাকরির সুযোগ
জনসংযোগ পেশার কর্মীদের নিজের কাজের বাইরেও এ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং কোম্পানিগুলো পিআর পেশাজীবীদের নিয়োগ করে তাদের ব্র্যান্ড ইমেজ ধরে রাখতে কাজ করে। জনসংযোগ কর্মীরা এমন বিভিন্ন পিআর এজেন্সি বা মার্কেটিং কোম্পানিতে চাকরি করে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য পিআর স্ট্র্যাটেজি এবং ক্যাম্পেইন পরিচালনার সুযোগ পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত