সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন
মার্চের শেষের দিকে। হ্যাঁ, আপনার সঙ্গে একমত, তখন মোটেও সাজেক ভ্রমণের উপযুক্ত সময় ছিল না। মানে, যে পেজা তুলোর মতো মেঘ দেখতে চান, সেটা হয়তো পাওয়া যায় না। তবু এই উপত্যকার সৌন্দর্য এতটুকু ম্লান হয় না বছরের ওই সময়টাতেও। সেই মৌসুমে এক ভিন্ন সাজে শোভিত হয় সাজেক। তাই অপেক্ষা না করে তল্পিতল্পা গুছিয়ে চলে গিয়েছিলাম সেখানে। তখনকার কথাই লিখছি এখন।
সাজেকের সাজ
খুব ভোরে, সূর্যোদয় দেখতে হলে চোখ থেকে বিদায় দিতে হবে ঘুমকে। গুগল মামার কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাবে সূয্যিমামার গাত্রোত্থানের খবর। এর কিছু আগে উঠে পড়া ভালো। আপনার কটেজ যদি পূর্ব দিকে অর্থাৎ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তমুখী হয়, তাহলে ব্যালকনি বা বারান্দায় গিয়ে বসবেন। অনুভব করতে পারবেন, বিশুদ্ধ বাতাসে নিশ্বাস নিতে পারছেন। সামনে তাকিয়ে দেখবেন মিজোরামের পাহাড় সারি সারি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, চেয়ে আছে আপনার দিকে। হালকা মেঘের সারি শরীরে আলস্য নিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে চারদিকে। কখনো ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে আপনাকে। এর মাঝেই সূয্যিমামা আড়মোড়া ভাঙতে থাকবে। ধীরে ধীরে জেগে উঠবে। মাঝে মাঝে মেঘ মুড়িয়ে তন্দ্রা যাবে। একটা সময় প্রচণ্ড দাপটেই জ্বলে উঠবে। দিনের সঙ্গে তাপ বাড়তে থাকলেও শীতল বাতাস আপনাকে ক্লান্ত হতে দেবে না।
বিকেলের দিকে রোদ কমতে শুরু করলে বাতাসের তেজ বাড়তে থাকবে। রাতে পরিবেশ এতটাই শীতল হয়ে যাবে যে আপনাকে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে। সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত দেখতে হলে চলে যেতে হবে বাইরে। সাজেকের হেলিপ্যাড থেকে তা দেখতে পারবেন। আর আপনার রিসোর্ট বা কটেজ যদি পশ্চিম দিকে হয়ে থাকে, তাহলে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য করতে হবে ঠিক উল্টো কাজ। তবে হেলিপ্যাড থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যাবে। রাতে চাইলে বারান্দায় সময় কাটিয়ে দেওয়া যাবে অনেকটা নিঃশব্দে। পূর্ণিমা হলে তো সোনায় সোহাগা! অথবা দেখতে পারবেন তারার রাত। হঠাৎ থেকে থেকে তক্ষকের ডাক শুনতে পাবেন। তবে তাদের দেখা পাওয়া বিরল।
আগামী বছর যদি ওই সময়টায় সাজেকে যেতে চান, তাহলে এমন দৃশ্যই পাবেন, সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
পাড়া বেড়ানো
সাজেকের রুইলুইপাড়া থেকে কংলাক পাহাড় পর্যন্ত একটা রাস্তাই উঠে গেছে। রাস্তার দুই পাশে সারি করে দাঁড়িয়ে আছে রিসোর্ট আর রেস্তোরাঁগুলো। পাড়া বেড়াতে বের হলে দিনের শুরুতেই সাজেকের শেষ মাথা কংলাক পাহাড়ে চলে যেতে পারেন। পাহাড়ের পাদদেশে আপনার জন্য অপেক্ষা করবে বাঁশওয়ালা। মাত্র ১০ টাকায় ভাড়া নিতে পারেন অথবা ২০ টাকায় একেবারে কিনে নিতে পারেন লাঠিসদৃশ একটি বাঁশ। পাহাড় বেয়ে উঠতে হলে অনভিজ্ঞ যাত্রীদের জন্য বাঁশ নেওয়াটা জরুরি। ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য বাঁশে ভর দিয়ে পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে আপনাকে। কংলাক পাহাড় সাজেক উপত্যকার সর্বোচ্চ চূড়া। এখান থেকে সাজেকের দৃশ্যটা অপূর্ব! কংলাক পাহাড়ের ওপরেই রয়েছে কংলাকপাড়া। ঘুরে দেখতে পারেন। সেখানে স্থানীয়দের ছোট ছোট দোকানও পাবেন। পাহাড়ে উঠে হাঁপিয়ে গেলে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পেয়ে যাবেন স্যামুয়েল দম্পতির পাহাড়ি ফলের রসের দোকান। পাহাড় থেকে নেমে ভাড়া করা বাঁশ ফিরিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন।
বিকেলে রোদ নরম হয়ে এলে ঐতিহ্যবাহী লুসাই গ্রামে ঘুরতে যেতে পারেন। ভালো লাগবে। ১০০ টাকায় লুসাইদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ভাড়া করে সাজতে পারেন লুসাইদের মতো। সঙ্গে লুসাইদের শিকার করার অস্ত্র কিংবা ফসল তোলার ঝুড়ি পাবেন প্রপস হিসেবে। লুসাই গ্রাম ঘুরে জানতে পারবেন লুসাইদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে। লুসাই গ্রাম থেকে বের হয়ে গোধূলির সময়টা কাটাতে পারেন হেলিপ্যাডে। এরপর দেখতে পারেন সূর্যাস্ত, যার কথা বলেছি আগেই।
আসা–যাওয়ার গল্প
ঢাকা থেকে এসি বা নন-এসি বাসে চেপে যেতে হবে খাগড়াছড়ি শহরে। সেখানে গিয়ে যাত্রীসংখ্যা অনুযায়ী ভাড়া করতে হবে ‘চান্দের গাড়ি’ অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সাজেক উপত্যকা রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি জেলা হয়ে যাওয়ার পথটা সহজ। নিজের গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন। তবে পাহাড়ি রাস্তায় জিপ গাড়িই নিরাপদ। ঢাকা থেকে রাত ১১-১২টার দিকে রওনা হলে খাগড়াছড়ি পৌঁছাতে পারবেন সকাল ৬-৭টার দিকে। সেখানে সকালের নাশতা খেয়ে ভাড়া করে ফেলবেন ‘চান্দের গাড়ি’ বা অটোরিকশা। শুধু সাজেকে যাওয়া বা যাওয়া-আসা কিংবা যত দিন থাকবেন তত দিনের প্যাকেজ—এসব বিবেচনায় ভাড়া দরদাম করে নিতে হবে। মাঝে সেনাবাহিনীর দুটি চেকপোস্ট থেকে অনুমতি মিলবে সাজেকে প্রবেশের। সেনাবাহিনীর গাড়িবহরের দুটি দল দুই চেকপোস্ট থেকে নির্দিষ্ট সময়ে পাহারা দিয়ে জড়ো হওয়া গাড়িগুলোকে একসঙ্গে নিয়ে যাবে সাজেকে। পথে দেখতে পাবেন মাচালং নদী। মাচালং মিশেছে কর্ণফুলীর সঙ্গে। এই নদীপথেই চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী কাগজকলের জন্য কাগজ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে বাঁশ নিয়ে যাওয়া হয়। ওই মৌসুমে ঝরনাগুলো শুকিয়ে থাকে বলে ফিরতি পথে সেগুলো দেখার সুযোগ নেই। যাওয়া-আসার পথে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে স্থানীয় শিশুরা আপনাকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানাবে, যা আপনার মনকে প্রফুল্ল করে তুলবে।
যাওয়া-আসার পথে যে পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন, তা টাকা দিয়েও কিনতে পারবেন না অন্য কোথাও। সাজানো জুমখেত যেমন চোখে পড়বে, তেমনি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা পাহাড়ি ফলফলাদির গাছও চোখ এড়াবে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেখা যাবে টুকরিতে করে পাহাড়ি কলা, পেঁপে, আনারস কিংবা বেতফল বিক্রি করতে।
পেটপূজা
সাধারণত আপনার ভাড়া নেওয়া রিসোর্টে খাবারের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। খানিকটা হেঁটে রাস্তার দুই ধারে দেখবেন অনেক রেস্তোরাঁ। মোটামুটি সব রেস্তোরাঁর খাবারই সুস্বাদু। বাঁশে রান্না করা মুরগির তরকারি বা বিরিয়ানি চেখে দেখতে পারেন। যেখানেই খেতে চান না কেন, এ বেলা আগে থেকে ফরমাশ দিতে হবে। টাটকা খাবার জুটবে তবে। রাতে অনেকেই বারবিকিউ মুরগি খেতে হয়তো পছন্দ করবেন। কাঠ কেটে আগুনে ঝলসানো এই কাবাবের স্বাদই যেন আলাদা! সন্ধ্যার পর থেকে ছিম্বাল রেস্টুরেন্টে ভিড় জমে যায়। কারণ সেখানে খেতে খেতে কিংবা আড্ডা দিতে দিতে চাকমা তরুণ স্পেনের গান উপভোগ করতে পারবেন। সেখানে পড়ার জন্য বইও পাবেন। চা-কফি খেতে হলে রেস্তোরাঁগুলোতে ঢোকার দরকার নেই। কয়েকটা টং দোকান পাবেন। তবে ছিম্বালের ঠিক উল্টো পাশেই থেই লুসাইয়ের হাতে বানানো বাঁশের ভেতরে তেঁতুল চা খেতে ভুলবেন না। সতেজ লাগবে। বিকেলের দিকে হেলিপ্যাডের নিচের রাস্তায় ভ্যানগাড়ি নিয়ে সারি করে বসে থাকে স্থানীয় লোকজন। ভ্যানে পাবেন ভাজাপোড়া খাবার, মমো, চা-কফি এসব টুকটাক নাশতা।
থাকাথাকি
সহজে কোনো রিসোর্ট ফাঁকা পেয়ে গেলে আপনার ভাগ্য সুপ্রসন্ন। ভালো হয় মাসখানেক আগে থেকে ফোন করে রিসোর্ট বুক করে নেওয়া। ফেসবুক বা গুগলে খুঁজলেই পছন্দমতো রিসোর্ট পেয়ে যাবেন। সেখানে পাবেন তাদের নম্বরও। মিজোরামের দিকে মুখ করা রিসোর্টগুলোর চাহিদা বেশি। বলা হয়, সাজেকের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় এদিকটায়।
মার্চের শেষের দিকে। হ্যাঁ, আপনার সঙ্গে একমত, তখন মোটেও সাজেক ভ্রমণের উপযুক্ত সময় ছিল না। মানে, যে পেজা তুলোর মতো মেঘ দেখতে চান, সেটা হয়তো পাওয়া যায় না। তবু এই উপত্যকার সৌন্দর্য এতটুকু ম্লান হয় না বছরের ওই সময়টাতেও। সেই মৌসুমে এক ভিন্ন সাজে শোভিত হয় সাজেক। তাই অপেক্ষা না করে তল্পিতল্পা গুছিয়ে চলে গিয়েছিলাম সেখানে। তখনকার কথাই লিখছি এখন।
সাজেকের সাজ
খুব ভোরে, সূর্যোদয় দেখতে হলে চোখ থেকে বিদায় দিতে হবে ঘুমকে। গুগল মামার কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাবে সূয্যিমামার গাত্রোত্থানের খবর। এর কিছু আগে উঠে পড়া ভালো। আপনার কটেজ যদি পূর্ব দিকে অর্থাৎ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তমুখী হয়, তাহলে ব্যালকনি বা বারান্দায় গিয়ে বসবেন। অনুভব করতে পারবেন, বিশুদ্ধ বাতাসে নিশ্বাস নিতে পারছেন। সামনে তাকিয়ে দেখবেন মিজোরামের পাহাড় সারি সারি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, চেয়ে আছে আপনার দিকে। হালকা মেঘের সারি শরীরে আলস্য নিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে চারদিকে। কখনো ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে আপনাকে। এর মাঝেই সূয্যিমামা আড়মোড়া ভাঙতে থাকবে। ধীরে ধীরে জেগে উঠবে। মাঝে মাঝে মেঘ মুড়িয়ে তন্দ্রা যাবে। একটা সময় প্রচণ্ড দাপটেই জ্বলে উঠবে। দিনের সঙ্গে তাপ বাড়তে থাকলেও শীতল বাতাস আপনাকে ক্লান্ত হতে দেবে না।
বিকেলের দিকে রোদ কমতে শুরু করলে বাতাসের তেজ বাড়তে থাকবে। রাতে পরিবেশ এতটাই শীতল হয়ে যাবে যে আপনাকে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে। সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত দেখতে হলে চলে যেতে হবে বাইরে। সাজেকের হেলিপ্যাড থেকে তা দেখতে পারবেন। আর আপনার রিসোর্ট বা কটেজ যদি পশ্চিম দিকে হয়ে থাকে, তাহলে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য করতে হবে ঠিক উল্টো কাজ। তবে হেলিপ্যাড থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যাবে। রাতে চাইলে বারান্দায় সময় কাটিয়ে দেওয়া যাবে অনেকটা নিঃশব্দে। পূর্ণিমা হলে তো সোনায় সোহাগা! অথবা দেখতে পারবেন তারার রাত। হঠাৎ থেকে থেকে তক্ষকের ডাক শুনতে পাবেন। তবে তাদের দেখা পাওয়া বিরল।
আগামী বছর যদি ওই সময়টায় সাজেকে যেতে চান, তাহলে এমন দৃশ্যই পাবেন, সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
পাড়া বেড়ানো
সাজেকের রুইলুইপাড়া থেকে কংলাক পাহাড় পর্যন্ত একটা রাস্তাই উঠে গেছে। রাস্তার দুই পাশে সারি করে দাঁড়িয়ে আছে রিসোর্ট আর রেস্তোরাঁগুলো। পাড়া বেড়াতে বের হলে দিনের শুরুতেই সাজেকের শেষ মাথা কংলাক পাহাড়ে চলে যেতে পারেন। পাহাড়ের পাদদেশে আপনার জন্য অপেক্ষা করবে বাঁশওয়ালা। মাত্র ১০ টাকায় ভাড়া নিতে পারেন অথবা ২০ টাকায় একেবারে কিনে নিতে পারেন লাঠিসদৃশ একটি বাঁশ। পাহাড় বেয়ে উঠতে হলে অনভিজ্ঞ যাত্রীদের জন্য বাঁশ নেওয়াটা জরুরি। ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য বাঁশে ভর দিয়ে পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে আপনাকে। কংলাক পাহাড় সাজেক উপত্যকার সর্বোচ্চ চূড়া। এখান থেকে সাজেকের দৃশ্যটা অপূর্ব! কংলাক পাহাড়ের ওপরেই রয়েছে কংলাকপাড়া। ঘুরে দেখতে পারেন। সেখানে স্থানীয়দের ছোট ছোট দোকানও পাবেন। পাহাড়ে উঠে হাঁপিয়ে গেলে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পেয়ে যাবেন স্যামুয়েল দম্পতির পাহাড়ি ফলের রসের দোকান। পাহাড় থেকে নেমে ভাড়া করা বাঁশ ফিরিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন।
বিকেলে রোদ নরম হয়ে এলে ঐতিহ্যবাহী লুসাই গ্রামে ঘুরতে যেতে পারেন। ভালো লাগবে। ১০০ টাকায় লুসাইদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ভাড়া করে সাজতে পারেন লুসাইদের মতো। সঙ্গে লুসাইদের শিকার করার অস্ত্র কিংবা ফসল তোলার ঝুড়ি পাবেন প্রপস হিসেবে। লুসাই গ্রাম ঘুরে জানতে পারবেন লুসাইদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে। লুসাই গ্রাম থেকে বের হয়ে গোধূলির সময়টা কাটাতে পারেন হেলিপ্যাডে। এরপর দেখতে পারেন সূর্যাস্ত, যার কথা বলেছি আগেই।
আসা–যাওয়ার গল্প
ঢাকা থেকে এসি বা নন-এসি বাসে চেপে যেতে হবে খাগড়াছড়ি শহরে। সেখানে গিয়ে যাত্রীসংখ্যা অনুযায়ী ভাড়া করতে হবে ‘চান্দের গাড়ি’ অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সাজেক উপত্যকা রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি জেলা হয়ে যাওয়ার পথটা সহজ। নিজের গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন। তবে পাহাড়ি রাস্তায় জিপ গাড়িই নিরাপদ। ঢাকা থেকে রাত ১১-১২টার দিকে রওনা হলে খাগড়াছড়ি পৌঁছাতে পারবেন সকাল ৬-৭টার দিকে। সেখানে সকালের নাশতা খেয়ে ভাড়া করে ফেলবেন ‘চান্দের গাড়ি’ বা অটোরিকশা। শুধু সাজেকে যাওয়া বা যাওয়া-আসা কিংবা যত দিন থাকবেন তত দিনের প্যাকেজ—এসব বিবেচনায় ভাড়া দরদাম করে নিতে হবে। মাঝে সেনাবাহিনীর দুটি চেকপোস্ট থেকে অনুমতি মিলবে সাজেকে প্রবেশের। সেনাবাহিনীর গাড়িবহরের দুটি দল দুই চেকপোস্ট থেকে নির্দিষ্ট সময়ে পাহারা দিয়ে জড়ো হওয়া গাড়িগুলোকে একসঙ্গে নিয়ে যাবে সাজেকে। পথে দেখতে পাবেন মাচালং নদী। মাচালং মিশেছে কর্ণফুলীর সঙ্গে। এই নদীপথেই চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী কাগজকলের জন্য কাগজ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে বাঁশ নিয়ে যাওয়া হয়। ওই মৌসুমে ঝরনাগুলো শুকিয়ে থাকে বলে ফিরতি পথে সেগুলো দেখার সুযোগ নেই। যাওয়া-আসার পথে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে স্থানীয় শিশুরা আপনাকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানাবে, যা আপনার মনকে প্রফুল্ল করে তুলবে।
যাওয়া-আসার পথে যে পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন, তা টাকা দিয়েও কিনতে পারবেন না অন্য কোথাও। সাজানো জুমখেত যেমন চোখে পড়বে, তেমনি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা পাহাড়ি ফলফলাদির গাছও চোখ এড়াবে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেখা যাবে টুকরিতে করে পাহাড়ি কলা, পেঁপে, আনারস কিংবা বেতফল বিক্রি করতে।
পেটপূজা
সাধারণত আপনার ভাড়া নেওয়া রিসোর্টে খাবারের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। খানিকটা হেঁটে রাস্তার দুই ধারে দেখবেন অনেক রেস্তোরাঁ। মোটামুটি সব রেস্তোরাঁর খাবারই সুস্বাদু। বাঁশে রান্না করা মুরগির তরকারি বা বিরিয়ানি চেখে দেখতে পারেন। যেখানেই খেতে চান না কেন, এ বেলা আগে থেকে ফরমাশ দিতে হবে। টাটকা খাবার জুটবে তবে। রাতে অনেকেই বারবিকিউ মুরগি খেতে হয়তো পছন্দ করবেন। কাঠ কেটে আগুনে ঝলসানো এই কাবাবের স্বাদই যেন আলাদা! সন্ধ্যার পর থেকে ছিম্বাল রেস্টুরেন্টে ভিড় জমে যায়। কারণ সেখানে খেতে খেতে কিংবা আড্ডা দিতে দিতে চাকমা তরুণ স্পেনের গান উপভোগ করতে পারবেন। সেখানে পড়ার জন্য বইও পাবেন। চা-কফি খেতে হলে রেস্তোরাঁগুলোতে ঢোকার দরকার নেই। কয়েকটা টং দোকান পাবেন। তবে ছিম্বালের ঠিক উল্টো পাশেই থেই লুসাইয়ের হাতে বানানো বাঁশের ভেতরে তেঁতুল চা খেতে ভুলবেন না। সতেজ লাগবে। বিকেলের দিকে হেলিপ্যাডের নিচের রাস্তায় ভ্যানগাড়ি নিয়ে সারি করে বসে থাকে স্থানীয় লোকজন। ভ্যানে পাবেন ভাজাপোড়া খাবার, মমো, চা-কফি এসব টুকটাক নাশতা।
থাকাথাকি
সহজে কোনো রিসোর্ট ফাঁকা পেয়ে গেলে আপনার ভাগ্য সুপ্রসন্ন। ভালো হয় মাসখানেক আগে থেকে ফোন করে রিসোর্ট বুক করে নেওয়া। ফেসবুক বা গুগলে খুঁজলেই পছন্দমতো রিসোর্ট পেয়ে যাবেন। সেখানে পাবেন তাদের নম্বরও। মিজোরামের দিকে মুখ করা রিসোর্টগুলোর চাহিদা বেশি। বলা হয়, সাজেকের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় এদিকটায়।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
১ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
১ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
১ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
১ দিন আগে