যত্নে থাকুক চুল

রিক্তা রিচি, ঢাকা
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২২, ১১: ২১
আপডেট : ২৪ মে ২০২২, ১১: ২৭

গান কিংবা কবিতায় যে ঘন কালো চুলের বর্ণনা দেওয়া হয়, সেই ঘন কালো ও লম্বা চুলের নারীর দেখা কি এই সময়ে পাওয়া যায়? আবহাওয়াগত কারণ, প্রোটিন ও বায়োটিনের অভাব, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, দুশ্চিন্তা ইত্যাদির প্রভাব পড়ে চুলে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ঘাম থেকে কিংবা ভেজা চুল বেঁধে রাখার জন্যও চুলের ক্ষতি হয়। এগুলোর ফলে:

  • চুলের গোড়া নরম হতে থাকে।
  • চুল পড়তে থাকে।
  • চুল উজ্জ্বলতা হারায়।
  • অকালে চুল পেকে যায়।
  • চুলের রং বদলে যেতে থাকে।

চুল ভালো রাখতে ঠিক কী করতে হবে তা শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবুও চিকিৎসকেরা সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চলার পরামর্শ দেন।

চুলে গরম তেলের ব্যবহার

নারকেল তেল

যুগ যুগ ধরে চুলে নারকেল তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। নারকেল তেল চুলে পুষ্টি জোগায় এবং চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি সব ধরনের চুলে মানিয়ে যায়। নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহার করলে মাথার ত্বক সঠিক পুষ্টি পায়। চুল সতেজ থাকে। সেই সঙ্গে খুশকি তাড়াতেও কাজ করে এই তেল। ভালো ফলের জন্য এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।

অরগানিক তেল
শুষ্ক ও ড্যামেজ চুলের জন্য অরগানিক তেল উপকারী। এখন দেশে-বিদেশে এই তেলের চাহিদা বেড়েছে। অরগানিক তেলে থাকা ভিটামিন ই চুলের সজীবতা বৃদ্ধি করে, চুল ঝরে যাওয়া প্রতিরোধ করে। 

ক্যাস্টর তেল
চুলের গোড়া মজবুত করতে ক্যাস্টর অয়েল কাজ করে। ক্যাস্টরের বীজ থেকে বানানো হয় বলে এই তেলে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান থাকে। এই তেল চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং চুল পড়া কমিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

ভৃঙ্গরাজ তেল
ভৃঙ্গরাজ একটি ঔষধি গাছ। এই গাছ থেকেই বানানো হয় ভৃঙ্গরাজ তেল। এই তেল চুল পড়া বন্ধ করে, চুল ঝরে যাওয়া প্রতিরোধ করে এবং চুল ঘন ও লম্বা করতে সাহায্য করে। 

বক্সব্যবহারবিধি
নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল কিংবা অন্য যেকোনো তেল চুলে ব্যবহার করার আগে কুসুম গরম করে নিয়ে চুলে ম্যাসাজ করে কয়েক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে সারা রাত চুলে তেল লাগিয়ে রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন।

চুলের যত্নে চালের পানি
চাল ধোয়ার পর যে পানি আমরা ফেলে দিই, সেই পানি চুলের জন্য উপকারী। চুলের যত্নে অনেক বছর আগে থেকে চীন ও জাপানের নারীরা এই চালের পানি ব্যবহার করে আসছেন। চীনের অধিবাসীরা লম্বা, ঘন চুলকে সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করেন। কোনো কোনো কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট মনে করেন, চাল ধোয়া পানিতে প্রচুর পরিমাণে এমন ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে, যা চুলের বিকাশসাধন ও সৌন্দর্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

চুলে ডিমের ব্যবহার
ডিম প্রোটিন ও বায়োটিনসমৃদ্ধ একটি খাবার। এই দুটি উপাদানই চুলের জন্য ভালো। ডিমের হেয়ার প্যাক কিংবা হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করলে চুল ভালো থাকবে। সিল্কি ও ঝলমলে চুল পেতে যেকোনো হেয়ার প্যাকের সঙ্গে একটি ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিতে পারেন। ডিমে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি, ভিটামিন বি১ (থায়ামিন), ভিটামিন বি২ (রাইবোফ্লোবিন) বি৫ (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড)। প্রতিটি উপাদান চুলের গোড়া মজবুত করে। ডিমে থাকা বায়োটিন, অর্থাৎ ভিটামিন বি৭ অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করে। 

ব্যবহারবিধি
কুসুমসহ দুটি ডিম ভেঙে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখুন। তারপর চুল শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুল হবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে।পেঁয়াজের ব্যবহার
অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি পেঁয়াজের রস চুল গজাতে কাজ করে। এতে থাকা সালফার, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান মাঝ থেকে চুল ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করে। পেঁয়াজের রসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অকালে চুল পাকা প্রতিরোধেও সাহায্য করে। যাঁদের প্রচুর চুল পড়ে, তাঁরা পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। পেঁয়াজের রসের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেলও মেশাতে পারেন। এ মিশ্রণটি লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।

সবুজ চায়ের ব্যবহার
গ্রিন টি তথা সবুজ চায়ে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি  চুল পাতলা হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। মাথার ত্বকে খুশকি ও সোরিয়াসিস প্রতিরোধেও কাজ 
করে এই চা। ভালো ফলের জন্য শ্যাম্পুর সঙ্গে গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারেন। অথবা গ্রিন টি ঠান্ডা করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এটি চুলে পুষ্টি জোগাবে এবং চুল সতেজ করবে। 

সূত্র: ফেমিনা

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত