জাহীদ রেজা নূর
ত্রোৎস্কির কথা বলছিলাম আমরা। ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের নায়ক তিনি। এমনিতে আমাদের দেশে ট্রটস্কি নামে পরিচিত। লিয়েভ ত্রোৎস্কি বিয়ে করেছিলেন দুবার। তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্ত্রী নাতালিয়া সেদোভা তাঁর সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু জীবনের সন্ধ্যাবেলায় তিনি অন্য নারীর প্রতি আকর্ষিত হয়েছিলেন। এমন বাধভাঙা প্রেমে পড়েছিলেন যে, মনে হচ্ছিল তিনি প্রেমে দিওয়ানা হয়ে গেছেন।
এই প্রেম হয়েছিল ম্যাক্সিকান শিল্পী ফ্রিদা কাহলোর সঙ্গে, যা নিয়ে একটু আগেই আমরা কথা বলছিলাম। তবে ব্যাপারটাকে প্রেম, নাকি একপক্ষীয় ভালোবাসা বলা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কেন এ কথা বলছি, তা বুঝতে পারা যাবে আরেকটু পড়লে।
রুশ ইতিহাসের দিকে আমরা যদি একটু তাকাই, তাহলে দেখব ১৯২৯ সালের দিকে স্তালিন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বের লড়াইয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর এই দ্বন্দ্বে লিয়েভ ত্রোৎস্কিকে ছাড়তে হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন। ত্রোৎস্কি সোভিয়েত সরকারের সমালোচনা করছিলেন সামনাসামনি, একবারও ভাবেননি, বিপদ ঘনিয়ে আসছে। সোভিয়েত সরকার যে ধীরে ধীরে একনায়কতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে, বিরোধী মত যে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য হয়ে যাচ্ছে, সে কথা বুঝে ওঠার পর দেশ ছাড়া হওয়া ছাড়া আর কোনো পছন্দ তাঁর ছিল না। দ্বিতীয় পথ ছিল একটাই—সরকারি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া।
শুরুতে দেশ ছাড়ার পর তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন তুরস্কে, এর পর গেলেন ফ্রান্সে, তারপর নরওয়েতে; আর ১৯৩৬ সালে তিনি শিল্পী দিয়েগো রিভেরার কাছ থেকে মেক্সিকো যাওয়ার আমন্ত্রণ পেলেন। সস্ত্রীক। ভালো লাগল ত্রোৎস্কির। স্ত্রীকে নিয়ে চললেন মেক্সিকো।
দিয়েগো রিভেরা যে কমিউনিস্ট ছিলেন, আর ১৯১৭ সালের বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন, সেটা কারও অজানা নয়। ত্রোৎস্কির রাজনৈতিক মতবাদের সঙ্গেই ছিল তাঁর সখ্য। ত্রোৎস্কির সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ার পর ত্রোৎস্কি রিভেরার শিল্পকর্ম সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, ‘এটা সাদাসিধে ছবি নয়। এটি শুধু নিরেট নির্জীব নন্দনতাত্ত্বিক কাজ নয়, এটা জীবন্ত শ্রেণিসংগ্রাম!’
ফ্রিদা কাহলোকে লিয়েভ ত্রোৎস্কি প্রথম দেখেন ১৯৩৭ সালের জানুয়ারি মাসে। কিডনির অসুখে ফ্রিদার স্বামী দিয়েগো রিভেরা তখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেক্সিকোর বন্দরে তাঁকে গ্রহণ করেছিলেন ফ্রিদা। তাদের বাড়িতেই জায়গা হলো সস্ত্রীক ত্রোৎস্কির। আমরা সবাই জানি, ফ্রিদার শারীরিক গঠনে সমস্যা ছিল, কিন্তু ত্রোৎস্কির চোখে তা কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। নিজের আচরণ ও বিচরণে ফ্রিদা যেন গ্রাস করলেন বিপ্লবীকে।
যখনকার কথা বলছি, তখন ত্রোৎস্কির বয়স ৫৮। ফ্রিদার বয়স ২৯। বয়সের এই ব্যবধান যে কথোপকথনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না, সেটা বুঝতে পারছিলেন ত্রোৎস্কি। যেকোনো বিষয়েই ভাব বিনিময় করা যাচ্ছিল ফ্রিদার সঙ্গে। সব বিষয়েই কথা বলার মতো যোগ্যতা রাখেন ফ্রিদা। তাঁদের এই প্রেম শুরু হয়েছিল ছোটখাটো রসিকতার মধ্য দিয়ে। এর পর বইয়ের পাতায় আড়াল করে ছোট ছোট চিরকুট বিনিময় হতে লাগল। কিছুদিনের মধ্যেই ফ্রিদার প্রেমে দিওয়ানা হয়ে গেলেন ত্রোৎস্কি। এমনকি নিজের স্ত্রীর সামনেও এমন কিছু করতে লাগলেন, যা তাঁর স্ত্রী নাতালিয়ার চোখেও পড়ল। চিরকুটে তিনি ফ্রিদাকে উদ্দেশ করে লিখতেন, ‘ও আমার ভালোবাসা’। ত্রোৎস্কি নিজের গভীর অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতেন চিরকুটে।
আর ফ্রিদা? ফ্রিদার মন কিন্তু ত্রোৎস্কির জন্য উথাল–পাথাল হয়নি। এই প্রেমের আবেশ কাটাতে খুব বেশি সময় নেননি ফ্রিদা। একজন পুরুষকেই তিনি বিনা শর্তে হৃদয়ে ঠাঁই দিয়েছিলেন, তিনি হলেন স্বামী রিভেরা। বন্ধুদের কাছে ত্রোৎস্কি সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই বুড়োর ব্যবহারে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি!’
আসলে ফ্রিদা ত্রোৎস্কির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শুধু স্বামীকে শায়েস্তা করতে। বারবার অন্য নারীর প্রতি স্বামীর আসক্তি, বিশেষ করে ফ্রিদার ছোট বোন ক্রিস্তিনার দিকেও হাত বাড়িয়ে দেওয়া সহ্য করতে পারেননি ফ্রিদা। এ কারণেই এই প্রেম। কোনো কোনো গবেষক বলে থাকেন, ফ্রিদা আসলে কমিউনিজমের প্রেমে পড়েছিলেন, এ কারণেই কমিউনিজমের দিশারি ত্রোৎস্কির দিকে চোখ পড়েছিল তাঁর।
ত্রোৎস্কির জীবনীকার চেরনিয়াভ্স্কি লিখেছেন, ফ্রিদা কখনোই ত্রোৎস্কিকে ভালো বাসেননি। কিন্তু একজন খ্যাতনামা মানুষ হিসেবে পরিচিত ত্রোৎস্কি সম্পর্কে তাঁর ছিল আগ্রহ। দিয়েগোর অসংখ্য পরকীয়ার প্রতিশোধ ছিল ত্রোৎস্কির সঙ্গে ক্ষণিকের এই প্রেম।
দিয়েগো রিভেরা টেরই পাননি যে, তাঁর অগোচরে বেড়ে উঠছে একটা প্রেমকাহিনি। কিন্তু তা ত্রোৎস্কির স্ত্রী নাতালিয়া সেদোভার চোখ এড়ায়নি। যখন ত্রোৎস্কি–ফ্রিদার প্রেম সবার চোখের সামনে এল, তখন দিয়েগো রিভেরা আর ফ্রিদা কাহলোর বাড়ি ছাড়তে হলো ত্রোৎস্কিকে। এর পর নাতালিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়ায় বসতে হলো তাঁকে। নাতালিয়া চাইছিলেন বিবাহবিচ্ছেদ। কিন্তু ত্রোৎস্কি তাঁর স্ত্রীকে বারবার বিবাহবিচ্ছেদ না করার জন্য অনুরোধ করতে লাগলেন। ত্রোৎস্কির চিঠি এখনো সংরক্ষণ করা আছে, যেখানে তিনি তাঁর স্ত্রীকে লিখেছেন, ‘এমন কোনো নারীর সঙ্গে নিজের তুলনা কোরো না, আমাদের জীবনে যার মূল্য খুবই কম।’
নাতালিয়া তাঁর স্বামীকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। বিদায়বেলায় ফ্রিদা কাহলো ত্রোৎস্কিকে একটি সেলফ পোট্রেট উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা যে সেই বাড়িতেই ফেলে রেখে আসা হয়েছে, সে কথা না বলে দিলেও চলে।
১৯৩৯ সালে সোভিয়েত নেতা স্তালিন আদেশ দিলেন ত্রোৎস্কিকে শেষ করে দেওয়ার। ত্রোৎস্কির ওপর প্রথম হামলা হলে তিনি সে যাত্রা বেঁচে যান। ১৯৪০ সালের আগস্ট মাসে স্প্যানিশ কমিউনিস্টের গুলিতে গুরুতর আহত হন ত্রোৎস্কি। পরদিন তিনি মারা যান। ত্রোৎস্কির মৃত্যুর কিছুদিন পরই ফ্রিদা কাহলো আর রিভেরোর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। নাতালিয়া সেদোভা–ত্রোৎস্কায়া স্বামীর মৃত্যুর পর আরও বাইশ বছর বেঁচেছিলেন। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৬২ সালে, প্যারিসে। তাঁকে সমাহিত করা হয় মেক্সিকোর কোইওআকানে, স্বামীর পাশেই।
আর ফ্রিদা–রিভেরা? বিবাহবিচ্ছেদের কিছুদিন পর আবারও তাঁরা এক হন। তবে সারাটা জীবনই তারা কাটিয়েছেন দ্বন্দ্ব–সংঘাতময় পরিবেশে।
ত্রোৎস্কির কথা বলছিলাম আমরা। ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের নায়ক তিনি। এমনিতে আমাদের দেশে ট্রটস্কি নামে পরিচিত। লিয়েভ ত্রোৎস্কি বিয়ে করেছিলেন দুবার। তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্ত্রী নাতালিয়া সেদোভা তাঁর সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু জীবনের সন্ধ্যাবেলায় তিনি অন্য নারীর প্রতি আকর্ষিত হয়েছিলেন। এমন বাধভাঙা প্রেমে পড়েছিলেন যে, মনে হচ্ছিল তিনি প্রেমে দিওয়ানা হয়ে গেছেন।
এই প্রেম হয়েছিল ম্যাক্সিকান শিল্পী ফ্রিদা কাহলোর সঙ্গে, যা নিয়ে একটু আগেই আমরা কথা বলছিলাম। তবে ব্যাপারটাকে প্রেম, নাকি একপক্ষীয় ভালোবাসা বলা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কেন এ কথা বলছি, তা বুঝতে পারা যাবে আরেকটু পড়লে।
রুশ ইতিহাসের দিকে আমরা যদি একটু তাকাই, তাহলে দেখব ১৯২৯ সালের দিকে স্তালিন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বের লড়াইয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর এই দ্বন্দ্বে লিয়েভ ত্রোৎস্কিকে ছাড়তে হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন। ত্রোৎস্কি সোভিয়েত সরকারের সমালোচনা করছিলেন সামনাসামনি, একবারও ভাবেননি, বিপদ ঘনিয়ে আসছে। সোভিয়েত সরকার যে ধীরে ধীরে একনায়কতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে, বিরোধী মত যে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য হয়ে যাচ্ছে, সে কথা বুঝে ওঠার পর দেশ ছাড়া হওয়া ছাড়া আর কোনো পছন্দ তাঁর ছিল না। দ্বিতীয় পথ ছিল একটাই—সরকারি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া।
শুরুতে দেশ ছাড়ার পর তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন তুরস্কে, এর পর গেলেন ফ্রান্সে, তারপর নরওয়েতে; আর ১৯৩৬ সালে তিনি শিল্পী দিয়েগো রিভেরার কাছ থেকে মেক্সিকো যাওয়ার আমন্ত্রণ পেলেন। সস্ত্রীক। ভালো লাগল ত্রোৎস্কির। স্ত্রীকে নিয়ে চললেন মেক্সিকো।
দিয়েগো রিভেরা যে কমিউনিস্ট ছিলেন, আর ১৯১৭ সালের বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন, সেটা কারও অজানা নয়। ত্রোৎস্কির রাজনৈতিক মতবাদের সঙ্গেই ছিল তাঁর সখ্য। ত্রোৎস্কির সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ার পর ত্রোৎস্কি রিভেরার শিল্পকর্ম সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, ‘এটা সাদাসিধে ছবি নয়। এটি শুধু নিরেট নির্জীব নন্দনতাত্ত্বিক কাজ নয়, এটা জীবন্ত শ্রেণিসংগ্রাম!’
ফ্রিদা কাহলোকে লিয়েভ ত্রোৎস্কি প্রথম দেখেন ১৯৩৭ সালের জানুয়ারি মাসে। কিডনির অসুখে ফ্রিদার স্বামী দিয়েগো রিভেরা তখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেক্সিকোর বন্দরে তাঁকে গ্রহণ করেছিলেন ফ্রিদা। তাদের বাড়িতেই জায়গা হলো সস্ত্রীক ত্রোৎস্কির। আমরা সবাই জানি, ফ্রিদার শারীরিক গঠনে সমস্যা ছিল, কিন্তু ত্রোৎস্কির চোখে তা কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। নিজের আচরণ ও বিচরণে ফ্রিদা যেন গ্রাস করলেন বিপ্লবীকে।
যখনকার কথা বলছি, তখন ত্রোৎস্কির বয়স ৫৮। ফ্রিদার বয়স ২৯। বয়সের এই ব্যবধান যে কথোপকথনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না, সেটা বুঝতে পারছিলেন ত্রোৎস্কি। যেকোনো বিষয়েই ভাব বিনিময় করা যাচ্ছিল ফ্রিদার সঙ্গে। সব বিষয়েই কথা বলার মতো যোগ্যতা রাখেন ফ্রিদা। তাঁদের এই প্রেম শুরু হয়েছিল ছোটখাটো রসিকতার মধ্য দিয়ে। এর পর বইয়ের পাতায় আড়াল করে ছোট ছোট চিরকুট বিনিময় হতে লাগল। কিছুদিনের মধ্যেই ফ্রিদার প্রেমে দিওয়ানা হয়ে গেলেন ত্রোৎস্কি। এমনকি নিজের স্ত্রীর সামনেও এমন কিছু করতে লাগলেন, যা তাঁর স্ত্রী নাতালিয়ার চোখেও পড়ল। চিরকুটে তিনি ফ্রিদাকে উদ্দেশ করে লিখতেন, ‘ও আমার ভালোবাসা’। ত্রোৎস্কি নিজের গভীর অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতেন চিরকুটে।
আর ফ্রিদা? ফ্রিদার মন কিন্তু ত্রোৎস্কির জন্য উথাল–পাথাল হয়নি। এই প্রেমের আবেশ কাটাতে খুব বেশি সময় নেননি ফ্রিদা। একজন পুরুষকেই তিনি বিনা শর্তে হৃদয়ে ঠাঁই দিয়েছিলেন, তিনি হলেন স্বামী রিভেরা। বন্ধুদের কাছে ত্রোৎস্কি সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই বুড়োর ব্যবহারে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি!’
আসলে ফ্রিদা ত্রোৎস্কির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শুধু স্বামীকে শায়েস্তা করতে। বারবার অন্য নারীর প্রতি স্বামীর আসক্তি, বিশেষ করে ফ্রিদার ছোট বোন ক্রিস্তিনার দিকেও হাত বাড়িয়ে দেওয়া সহ্য করতে পারেননি ফ্রিদা। এ কারণেই এই প্রেম। কোনো কোনো গবেষক বলে থাকেন, ফ্রিদা আসলে কমিউনিজমের প্রেমে পড়েছিলেন, এ কারণেই কমিউনিজমের দিশারি ত্রোৎস্কির দিকে চোখ পড়েছিল তাঁর।
ত্রোৎস্কির জীবনীকার চেরনিয়াভ্স্কি লিখেছেন, ফ্রিদা কখনোই ত্রোৎস্কিকে ভালো বাসেননি। কিন্তু একজন খ্যাতনামা মানুষ হিসেবে পরিচিত ত্রোৎস্কি সম্পর্কে তাঁর ছিল আগ্রহ। দিয়েগোর অসংখ্য পরকীয়ার প্রতিশোধ ছিল ত্রোৎস্কির সঙ্গে ক্ষণিকের এই প্রেম।
দিয়েগো রিভেরা টেরই পাননি যে, তাঁর অগোচরে বেড়ে উঠছে একটা প্রেমকাহিনি। কিন্তু তা ত্রোৎস্কির স্ত্রী নাতালিয়া সেদোভার চোখ এড়ায়নি। যখন ত্রোৎস্কি–ফ্রিদার প্রেম সবার চোখের সামনে এল, তখন দিয়েগো রিভেরা আর ফ্রিদা কাহলোর বাড়ি ছাড়তে হলো ত্রোৎস্কিকে। এর পর নাতালিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়ায় বসতে হলো তাঁকে। নাতালিয়া চাইছিলেন বিবাহবিচ্ছেদ। কিন্তু ত্রোৎস্কি তাঁর স্ত্রীকে বারবার বিবাহবিচ্ছেদ না করার জন্য অনুরোধ করতে লাগলেন। ত্রোৎস্কির চিঠি এখনো সংরক্ষণ করা আছে, যেখানে তিনি তাঁর স্ত্রীকে লিখেছেন, ‘এমন কোনো নারীর সঙ্গে নিজের তুলনা কোরো না, আমাদের জীবনে যার মূল্য খুবই কম।’
নাতালিয়া তাঁর স্বামীকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। বিদায়বেলায় ফ্রিদা কাহলো ত্রোৎস্কিকে একটি সেলফ পোট্রেট উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা যে সেই বাড়িতেই ফেলে রেখে আসা হয়েছে, সে কথা না বলে দিলেও চলে।
১৯৩৯ সালে সোভিয়েত নেতা স্তালিন আদেশ দিলেন ত্রোৎস্কিকে শেষ করে দেওয়ার। ত্রোৎস্কির ওপর প্রথম হামলা হলে তিনি সে যাত্রা বেঁচে যান। ১৯৪০ সালের আগস্ট মাসে স্প্যানিশ কমিউনিস্টের গুলিতে গুরুতর আহত হন ত্রোৎস্কি। পরদিন তিনি মারা যান। ত্রোৎস্কির মৃত্যুর কিছুদিন পরই ফ্রিদা কাহলো আর রিভেরোর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। নাতালিয়া সেদোভা–ত্রোৎস্কায়া স্বামীর মৃত্যুর পর আরও বাইশ বছর বেঁচেছিলেন। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৬২ সালে, প্যারিসে। তাঁকে সমাহিত করা হয় মেক্সিকোর কোইওআকানে, স্বামীর পাশেই।
আর ফ্রিদা–রিভেরা? বিবাহবিচ্ছেদের কিছুদিন পর আবারও তাঁরা এক হন। তবে সারাটা জীবনই তারা কাটিয়েছেন দ্বন্দ্ব–সংঘাতময় পরিবেশে।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে