এলিজা বিনতে এলাহী
সকাল আটটা। দুর্গাপুর টু কলমাকান্দা, জার্নি বাই মোটরবাইক। সীমান্তঘেঁষা সড়ক ধরে এগিয়ে চলেছি।
মোটরবাইক সীমান্ত সড়কে আসতেই দুচোখ ভরে গেল হলুদ রঙে। রাস্তার দুই পাশে হলুদ ফসলের মাঠ, চলছে ধানকাটার পর্ব। নারীরা পথের পাশে শুকাতে দিয়েছেন ধান, খড়ের গাদা মাথায় নিয়ে চলেছেন কৃষক। একেবারে বাংলার আদি দৃশ্য।
চলতে চলতে দেখলাম লেঙ্গুরা লেখা মাইলস্টোন। সামনে লেঙ্গুরা বাজার। শোনা গেল, ব্রিটিশরা প্রতিষ্ঠা করেছিল এ বাজার। এখানে আসতেই দৃশ্যপট বদলে গেল; হলুদ খেতের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে কালচে সবুজ পাহাড়ের সারি।
গ্রামের ছোট বাজারগুলো যেমন হয়, লেঙ্গুরা তেমনই। গণেশ্বরী নদীর রাবার ড্যামের পাশেই একটি রেস্তোরাঁয় রুটি, ভাজি আর চা পাওয়া গেল। এ সীমান্ত নদীতে রাবার ড্যাম প্রকল্পের জন্য সুফল পাচ্ছেন পাহাড়ি জনপদের কৃষকেরা, এমনটি শোনা যায়। কলমাকান্দার শেষ গ্রাম লেঙ্গুরা। পাহাড়ি গণেশ্বরী নদী এই গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে স্বচ্ছ পানির স্রোতোধারায়।
এ বিচিত্র জনপদে শুধু যে নৈসর্গিক সৌন্দর্য রয়েছে, তা নয়। মুক্তিযুদ্ধ, টংক ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নানা ইতিহাস ছড়িয়ে আছে এর আশপাশে। লেঙ্গুরা থেকে রওনা হলাম ফুলবাড়ি গ্রামের উদ্দেশে। নেত্রকোনার উত্তরে শেষ সীমান্তে যাব, যেখানে শায়িত আছেন সাত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
লেঙ্গুরা বাজার থেকে ফুলবাড়ি খুব বেশি দূরের পথ নয়। গ্রামের সরু পিচের পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা পেরিয়ে দেখা মিলল শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। কিছু দূর এগোলেই মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ। সমাধিভূমিতে পৌঁছাতেই কর্তব্যরত বিজিবির সদস্যরা প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে ভেতরে যেতে দিলেন।
মেহগনিগাছের ছায়ায় সমাধি প্রাঙ্গণ। সাইনবোর্ডে লেখা ‘বাংলাদেশের সীমানা শেষ’। এখানে সমাহিত ও দাহ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখসমরে শহীদ হওয়া সাত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। তাঁরা হলেন ডা. আব্দুল আজিজ, মো. ফজলুল হক, মো. ইয়ার মাহমুদ, ভবতোষ চন্দ্র দাস, মো. নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ও মো. জামাল উদ্দিন।
সমাধি প্রাঙ্গণের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গণেশ্বরী নদী। এখানে দেশের সীমানার ভেতরে রয়েছে উঁচু-নিচু টিলা। সেসব টিলার পাদদেশে বাস করে অনেক হাজং পরিবার। এই এলাকা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী-অধ্যুষিত। গ্রামগুলো খুব বেশি বড় নয়, ৩০ থেকে ৪০টি পরিবারের বসবাস একেকটি গ্রামে।
হাজংপাড়ায় গিয়ে চোখ তো ছানাবড়া। এ তো পাথুরে গ্রাম। প্রতিটি বাড়ির সামনে, উঠানে, আশপাশে ছোট-বড় কালো পাথর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। আমরা যে হাজং গ্রামে এসেছি, সেখানে ছোট-বড় টিলার ওপর মাটির বাড়ি। ফসলের মাঠে পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছেন নারীরা। কোনো কোনো মাঠে চোখে পড়ছে শুধু নারীদের।
হাজং গ্রাম থেকে গন্তব্য মোমিনের টিলা। এ টিলার ওপর থেকে গণেশ্বরী নদী খুব সুন্দর দেখায়। এটিও পাথুরে চিলা। সঙ্গে থাকা তরুণ সাংবাদিক জানালেন, ওপরে আরও পাথর রয়েছে। ধীরে ধীরে ওপরে উঠছি আর মুগ্ধ হচ্ছি। টিলার প্রতিটি বাঁকে পাথর। সর্বোচ্চ বিন্দুতে ওঠার আগে এক জায়গায় বেশ বড় একটি পাথর দেখা গেল। সেই পাথরের ওপরে দাঁড়িয়ে দেখতে পেলাম হাজং সম্প্রদায়ের শ্যামামন্দির।
টিলা থেকে গণেশ্বরী নদী দেখতে পেয়ে খুব আনন্দিত হলাম। দূরের পাহাড়গুলো এত মায়াময় লাগছিল, ফিরতে যেন মন চাইছিল না। কিন্তু যেতে হবে পাঁচগাঁও চন্দ্রডিঙ্গা। কলমাকান্দার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। ফুলবাড়ি থেকে রওনা হয়ে একটি বাঁশের সাঁকোর সামনে মোটরবাইক থামল। চারদিক বালুকাময়। সাঁকোর দুই পাশে পানির প্রবাহ আর উত্তরে পাহাড় উঁকি দিচ্ছে। সেটি পার
হয়ে মূল সড়কে এলাম। পরের পথটুকুর বর্ণনা শব্দে লেখা কষ্টকর, তা শুধুই অনুভবের।
সোনালি ফসলের মাঠ পেরিয়ে ঘন সবুজ বন আর পাহাড়। এই উত্তরের পাহাড়ের পাদদেশে ডিঙ্গাসদৃশ পাহাড়টি চন্দ্রডিঙ্গা নামে পরিচিত প্রাচীন যুগ থেকে। সেদিন আকাশে ঝলমলে রোদ ছিল। তাই পাহাড়ের স্তরগুলো স্পষ্ট চোখে পড়ল।
এখানেও পাহাড়ের পাদদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গ্রাম। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানালেন, এসব জঙ্গলে সন্ধ্যায় হাতির আনাগোনা রয়েছে। এদিকে বেলাও পড়ে আসছে। হাতির সঙ্গে দেখা করার স্মৃতি—সেটি সুখকর তো না-ও হতে পারে।
সকাল আটটা। দুর্গাপুর টু কলমাকান্দা, জার্নি বাই মোটরবাইক। সীমান্তঘেঁষা সড়ক ধরে এগিয়ে চলেছি।
মোটরবাইক সীমান্ত সড়কে আসতেই দুচোখ ভরে গেল হলুদ রঙে। রাস্তার দুই পাশে হলুদ ফসলের মাঠ, চলছে ধানকাটার পর্ব। নারীরা পথের পাশে শুকাতে দিয়েছেন ধান, খড়ের গাদা মাথায় নিয়ে চলেছেন কৃষক। একেবারে বাংলার আদি দৃশ্য।
চলতে চলতে দেখলাম লেঙ্গুরা লেখা মাইলস্টোন। সামনে লেঙ্গুরা বাজার। শোনা গেল, ব্রিটিশরা প্রতিষ্ঠা করেছিল এ বাজার। এখানে আসতেই দৃশ্যপট বদলে গেল; হলুদ খেতের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে কালচে সবুজ পাহাড়ের সারি।
গ্রামের ছোট বাজারগুলো যেমন হয়, লেঙ্গুরা তেমনই। গণেশ্বরী নদীর রাবার ড্যামের পাশেই একটি রেস্তোরাঁয় রুটি, ভাজি আর চা পাওয়া গেল। এ সীমান্ত নদীতে রাবার ড্যাম প্রকল্পের জন্য সুফল পাচ্ছেন পাহাড়ি জনপদের কৃষকেরা, এমনটি শোনা যায়। কলমাকান্দার শেষ গ্রাম লেঙ্গুরা। পাহাড়ি গণেশ্বরী নদী এই গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে স্বচ্ছ পানির স্রোতোধারায়।
এ বিচিত্র জনপদে শুধু যে নৈসর্গিক সৌন্দর্য রয়েছে, তা নয়। মুক্তিযুদ্ধ, টংক ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নানা ইতিহাস ছড়িয়ে আছে এর আশপাশে। লেঙ্গুরা থেকে রওনা হলাম ফুলবাড়ি গ্রামের উদ্দেশে। নেত্রকোনার উত্তরে শেষ সীমান্তে যাব, যেখানে শায়িত আছেন সাত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
লেঙ্গুরা বাজার থেকে ফুলবাড়ি খুব বেশি দূরের পথ নয়। গ্রামের সরু পিচের পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা পেরিয়ে দেখা মিলল শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। কিছু দূর এগোলেই মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ। সমাধিভূমিতে পৌঁছাতেই কর্তব্যরত বিজিবির সদস্যরা প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে ভেতরে যেতে দিলেন।
মেহগনিগাছের ছায়ায় সমাধি প্রাঙ্গণ। সাইনবোর্ডে লেখা ‘বাংলাদেশের সীমানা শেষ’। এখানে সমাহিত ও দাহ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখসমরে শহীদ হওয়া সাত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। তাঁরা হলেন ডা. আব্দুল আজিজ, মো. ফজলুল হক, মো. ইয়ার মাহমুদ, ভবতোষ চন্দ্র দাস, মো. নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ও মো. জামাল উদ্দিন।
সমাধি প্রাঙ্গণের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গণেশ্বরী নদী। এখানে দেশের সীমানার ভেতরে রয়েছে উঁচু-নিচু টিলা। সেসব টিলার পাদদেশে বাস করে অনেক হাজং পরিবার। এই এলাকা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী-অধ্যুষিত। গ্রামগুলো খুব বেশি বড় নয়, ৩০ থেকে ৪০টি পরিবারের বসবাস একেকটি গ্রামে।
হাজংপাড়ায় গিয়ে চোখ তো ছানাবড়া। এ তো পাথুরে গ্রাম। প্রতিটি বাড়ির সামনে, উঠানে, আশপাশে ছোট-বড় কালো পাথর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। আমরা যে হাজং গ্রামে এসেছি, সেখানে ছোট-বড় টিলার ওপর মাটির বাড়ি। ফসলের মাঠে পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছেন নারীরা। কোনো কোনো মাঠে চোখে পড়ছে শুধু নারীদের।
হাজং গ্রাম থেকে গন্তব্য মোমিনের টিলা। এ টিলার ওপর থেকে গণেশ্বরী নদী খুব সুন্দর দেখায়। এটিও পাথুরে চিলা। সঙ্গে থাকা তরুণ সাংবাদিক জানালেন, ওপরে আরও পাথর রয়েছে। ধীরে ধীরে ওপরে উঠছি আর মুগ্ধ হচ্ছি। টিলার প্রতিটি বাঁকে পাথর। সর্বোচ্চ বিন্দুতে ওঠার আগে এক জায়গায় বেশ বড় একটি পাথর দেখা গেল। সেই পাথরের ওপরে দাঁড়িয়ে দেখতে পেলাম হাজং সম্প্রদায়ের শ্যামামন্দির।
টিলা থেকে গণেশ্বরী নদী দেখতে পেয়ে খুব আনন্দিত হলাম। দূরের পাহাড়গুলো এত মায়াময় লাগছিল, ফিরতে যেন মন চাইছিল না। কিন্তু যেতে হবে পাঁচগাঁও চন্দ্রডিঙ্গা। কলমাকান্দার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। ফুলবাড়ি থেকে রওনা হয়ে একটি বাঁশের সাঁকোর সামনে মোটরবাইক থামল। চারদিক বালুকাময়। সাঁকোর দুই পাশে পানির প্রবাহ আর উত্তরে পাহাড় উঁকি দিচ্ছে। সেটি পার
হয়ে মূল সড়কে এলাম। পরের পথটুকুর বর্ণনা শব্দে লেখা কষ্টকর, তা শুধুই অনুভবের।
সোনালি ফসলের মাঠ পেরিয়ে ঘন সবুজ বন আর পাহাড়। এই উত্তরের পাহাড়ের পাদদেশে ডিঙ্গাসদৃশ পাহাড়টি চন্দ্রডিঙ্গা নামে পরিচিত প্রাচীন যুগ থেকে। সেদিন আকাশে ঝলমলে রোদ ছিল। তাই পাহাড়ের স্তরগুলো স্পষ্ট চোখে পড়ল।
এখানেও পাহাড়ের পাদদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গ্রাম। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানালেন, এসব জঙ্গলে সন্ধ্যায় হাতির আনাগোনা রয়েছে। এদিকে বেলাও পড়ে আসছে। হাতির সঙ্গে দেখা করার স্মৃতি—সেটি সুখকর তো না-ও হতে পারে।
বছর শেষে ছুটির মৌসুম এলেই, একা বা সিঙ্গেল ব্যক্তিদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। পরিবার ও বন্ধুদের প্রশ্ন, একা পার্টিতে যাওয়ার দ্বিধা এবং সামাজিক চাপ—এসব কারণে অনেকেই ছুটির দিনগুলোতে চাপ অনুভব করেন। বিশেষত, নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এই চাপটা বেশি মনে হয়। কারণ এই দুই মাসে শীতকালীন ছুটি...
১০ ঘণ্টা আগেনব্বই দশকে বেড়ে ওঠা চারজন টগবগে তরুণ তৈরি করেছিলেন ফ্যাশন হাউস রঙ। সৌমিক দাস জানান, প্রথম অবস্থায় রঙ গড়তে প্রধান কারিগর ৪ জন হলেও অনেকের অবদান এতে সংযুক্ত ছিল, যারা রঙ বাংলাদেশের প্রিয় বন্ধু-স্বজন।
১৭ ঘণ্টা আগেশীতের আমেজ এখন জমে উঠেছে। শীতের সকালে কাজ কিংবা উষ্ণ সন্ধ্যায় আড্ডায় এক কাফ গরম কফির চেয়ে ভালো অনুভূতি আর হয় না। তবে সমস্যা একটাই—শীতে দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায় কফি। তবে চিন্তা নেই! এই সমস্যারও সমাধান রয়েছে।
২ দিন আগেবছর জুড়ে ছিল আম্বানি পরিবারের নানান পারিবারিক ও সামাজিক আয়োজন। এসব অনুষ্ঠানে তিনি যে শাড়িগুলো পরেছিলেন সেগুলোর মধ্যে ৮টি সেরা শাড়ির উল্লেখ করা যেতে পারে বছর শেষে। জীবনধারা, পোশাক, ফ্যাশন, নিতা আম্বানি
৩ দিন আগে