বিসিএসের গেজেট থেকে ১৬৮ জনকে বাদ: পুনর্বিবেচনা ও তদন্তের দাবি গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ৫৫
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০: ১৭
Thumbnail image
সচিবালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেন ৪৩ তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

৪৩তম বিসিএসের পুনঃ প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন থেকে ১৬৮ জনকে বাদ দেওয়ার ঘটনার পুনর্বিবেচনা ও তদন্ত দাবি করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। তারা দাবি করেছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সবাইকে আওয়ামী লীগ সমর্থক ধরে নিয়ে গণহারে বাদ দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেলে এক বিবৃতিতে কমিটির পক্ষে এসব কথা বলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

বিবৃতিতে আনু মুহাম্মদ বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে ৪৩তম বিসিএসের গেজেট থেকে বিভিন্ন ক্যাডারের প্রার্থীদের মধ্যে ১৬৮ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অক্টোবরে গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর আবার ডিসেম্বরে সেটা পুনঃপ্রকাশ করা এবং একটা বড় অংশকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে শোনা যায়, পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল, এদের বাদ দিয়ে নতুন গেজেট করা হয়েছে। যদিও প্রশাসন বা পিএসসির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

তিনি বলেন, ‘বাদ পড়া প্রার্থীদের মধ্যে ৭১ জন, অর্থাৎ ৪২.২৬% হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের। এঁদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁরা শেখ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারি নিয়োগে ব্যাপক হারে দলীয়করণ, দুর্নীতি ও নিয়োগ-বাণিজ্য হয়েছে। তার প্রতিবিধান করতে গিয়ে অন্যায়ভাবে বা ব্যক্তি-গোষ্ঠী বিশেষের খেয়াল-খুশিমতো ধর্ম, এলাকা, লিঙ্গ, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতের কারণে কাউকে বাদ দেওয়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বৈষম্যহীন চেতনার পরিপন্থী।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সংখ্যালঘু প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, তা অবিলম্বে তদন্ত করা দরকার। এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্য অন্তত দুটি অভিযোগের কথা উল্লেখ করা যায়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা কৃষ্ণ বর্মণ এবং ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখার সাবেক নেতা শিপন দে, যাঁরা ছাত্রজীবনে আওয়ামী দুঃশাসনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা নতুন গেজেটে বাদ পড়েছেন।

তিনি বলেন, তাঁদের মতো আরও অনেকে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা মহলবিশেষের সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক পক্ষপাতের শিকার হয়েছেন কি না—তা সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে।

৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে একধরনের নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার হবেন না, মেধা ও যোগ্যতার স্বীকৃতি তাঁরা পাবেন—অন্তর্বর্তী সরকারের দিক থেকে এই আশ্বাস ও পদক্ষেপ জরুরি।

পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এ ধরনের অপেশাদারি আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত জানিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্র প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) নিয়োগে একজন শিক্ষার্থীর দীর্ঘ সময় ও পরিশ্রমের পথ পাড়ি দিতে হয়। সেই নিয়োগের সর্বশেষ ধাপে প্রকাশিত গেজেট থেকে এ রকম আচমকা এতজন প্রার্থীর নাম বাদ দেওয়ায় জনমনে বিভিন্ন আশঙ্কা ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর কোনো ব্যাখ্যাও কেউ দিচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ‘যাদের বাদ দেওয়া হলো, তাদের বাদ দেওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ জানানো হোক, দেশের জনগণকেও তা জানানো হোক। জবাবদিহিহীন সরকারকে আমরা অনেক প্রাণের বিনিময়ে হটিয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করি, এ সরকার প্রত্যেকটা বিষয়ে নিজের সঠিক অবস্থান জনগণের সামনে স্পষ্ট করবেন।’ তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংবেদনশীলতার সঙ্গে এই প্রজ্ঞাপন পুনর্বিবেচনা করে ফল প্রকাশের দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে আজকের পত্রিকার সাংবাদিক সৌগত বসুর বাড়িতে হামলা, বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম

আ.লীগ নেতাকে নিজেদের কর্মী দাবি জামায়াতের, থানা থেকে ছাড়াতে তদবির

সৈয়দ আশরাফের তিনবার জানাজা নিয়ে বিরক্ত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা: সোহেল তাজ

তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞদের মিশেলে আসছে নতুন দল

এবার ক্রিকেটার শামিকে বিয়ে করলেন সানিয়া মির্জা—ভাইরাল ছবিগুলো কি সত্যি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত