সাগর-রুনি হত্যার বিচারে ৫০ বছরও লাগতে পারে: আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪: ৩৩
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩: ৩২

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে ৫০ বছরও লাগতে পারে বলে মনে করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সেক্ষেত্রে তদন্ত সংস্থাকে সেই সময় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সাগর-রুনি হত্যা মামলার বিচারে বিলম্ব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আজ বৃহস্পতিবার এই প্রতিক্রিয়া জানান আইনমন্ত্রী। 

আজ দুপুরে সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন, সাগর-রুনিকে নিয়ে কথা বলবেন, আমি বুঝলাম। কিন্তু এই মামলায় যদি পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারে, তাহলে কী জোর করে সেই তদন্ত সমাপ্ত করে একটা চূড়ান্ত প্রতিবেদন কিংবা অভিযোগপত্র দেওয়ানো কি ঠিক?’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের তদন্তে যত দিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করতে, তাদের ততটুকু সময় দিতে হবে। তাতে যদি ৫০ বছর লাগে, তাহলে ৫০ বছর সময় দিতে হবে।’

তাহলে কি রায়ের জন্য ৫০ বছর অপেক্ষা করতে হবে—এই প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই মামলা ব্যতিক্রম। যেসব মামলায় অপরাধীকে ধরা গেছে, সেগুলোর বিচার ত্বরিত হচ্ছে। যেখানে অপরাধীকে ধরা যাচ্ছে না, তদন্ত শেষ করতে পারছে না, অবশ্যই তাদের সময় দিতে হবে।’

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ঘটনার এক যুগ পেরোতে চললেও এখনো তদন্ত শেষ হয়নি। এ পর্যন্ত র‍্যাবকে ১০৫ বার সময় দিয়েছে আদালত। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।

কিন্তু র‍্যাব সেদিন জমা দিতে না পারায় আাগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. শফিউদ্দিন।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও তাঁর স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। 

সেই রাতে সেই ফ্ল্যাটে তাঁদের দুজনের সঙ্গে ছিল একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ। তার বরাত দিয়ে পুলিশ তখন জানিয়েছিল, হত্যাকাণ্ডে দুজন ছিল।

আলোড়ন সৃষ্টিকারী ওই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু হত্যারহস্যের কিনারা হয়নি।

হত্যাকাণ্ডের পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের রোমান। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।

তাঁরা হলেন রুনির বন্ধু তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।

প্রথমে আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নামে শেরেবাংলা নগর থানা। চার দিন পর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে। তারা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বঁটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র‌্যাব। কিন্তু ১২ বছরেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত