উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিতের পথ তৈরি হলো: আইন উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫: ০৩
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫: ৩৪

আদালতের রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিতের পথ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

বিচারপতিদের অপসারণ–সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় রিভিউ চেয়ে করা আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। শুনানি শেষে আজ রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

পরে এ বিষয়ে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। 

আসিফ নজরুল বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরায় কার্যকর হয়েছে। এটা নিয়ে কনফিউশন ছিল, আদালতের রায়ের কারণে সেই কনফিউশন দূর হয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এখন ফুললি অপারেশনাল করা যাবে।’ 

‘এই সময়ে এটার একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। আমাদের হাইকোর্টে কিছু বিচারক আছেন ওনাদের ব্যাপারে সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রচুর কমপ্লেইন রয়েছে। ওনারা জুলাই গণবিপ্লবে যে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ছিল, সেই শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে, পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এ জন্য ছাত্র–জনতার অনেকের ক্ষোভ রয়েছে, এখন এ সমস্ত ক্ষোভ সাংবিধানিকভাবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার পথ খুলে গেছে।’ যোগ করেন আইন উপদেষ্টা। 

ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘তাদের দোসর বিচারকদের’ অপসারণের দাবি তুলে ১৬ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করে। শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির মধ্যেই হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতিকে আপাতত বেঞ্চ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন প্রধান বিচারপতি। 

এখন এই বিচারপতিদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে অভিযোগ দেওয়া হলে এই কাউন্সিল তাঁদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে। 
 
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা আছে। প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র বিচারপতিকে নিয়ে এই কাউন্সিল গঠিত হয়। আজকেই যদি কেউ কমপ্লেইন দেয়, তবে সেই প্রসেস শুরু করে দেবে। আলাদা করে নোটিফিকেশন দেওয়ার দরকার নেই, এটি সংবিধানে বলাই আছে।’ 

আসিফ নজরুল বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যখন বাদ ছিল, তখন উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার কোনো ফোরাম ছিল না। জবাবদিহি নিশ্চিত করার মতো ইচ্ছাও তৎকালীন উচ্চ আদালতের প্রশাসনের মধ্যে ছিল না। কারণ, ওনাদের ফরমায়েশি রায় হচ্ছিল। আপনারা জানেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কী রকম রায় হয়েছে! তারেক রহমানকে বাংলাদেশে কথাই বলতে দেবে না; এ রকম একটি বাক্‌স্বাধীনতা রুদ্ধকারী রায় হয়েছে। বহু মানুষ মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ পাননি বরং নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।’ 

‘বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার মতো সদিচ্ছা এখন যাঁরা প্রশাসনে আছেন, তাঁদের আছে বলেই আমি বিশ্বাস করি। আর এই সদিচ্ছা বাস্তবায়নের ফোরামটাও পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বা সক্রিয় হয়েছে।’ বলেন আইন উপদেষ্টা। 

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন, উচ্চ আদালত উচ্চ আদালতের মতো করে ব্যবস্থা নেবে। ছাত্র-জনতা এটিকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার জন্য একটি ফোরাম পেল, আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখতে চাই।’ 

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে সরকারের টানাপোড়েন তৈরি হয়। এরপর এক রিটের রায়ে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে আপিল বিভাগ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত