মিসর থেকে উড়োজাহাজ লিজ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্তদের তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩: ৫১

মিসর থেকে ২০১৪ সালে দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনে বাংলাদেশ। এ দুই উড়োজাহাজের একটির ইঞ্জিন এক বছরের মাথায় নষ্ট হয়ে যায়। উড়োজাহাজটির অন্য ইঞ্জিনটিও দেড় বছরের মাথায় বিকল হয়। এর পর আবার মিসর থেকে ইঞ্জিন ভাড়া করা হয়। কিন্তু এটিও নষ্ট হলে তা পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে। এ দুই উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করে পাঁচ বছরে বাংলাদেশ বিমান ১১০০ কোটি টাকার লোকসান গুনেছে উল্লেখ করে এগুলো ভাড়া করার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের তলব করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। 

আজ বুধবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মিসর থেকে দুটি উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কমিটির আগামী বৈঠকে উপস্থিত হতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। 

বৈঠক উপস্থিত এক সংসদ সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চুক্তিটি যারা করেছিলেন, তাঁরা একপেশে কাজ করেছেন, যাতে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য আমরা চুক্তির প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সবাইকে ডেকেছি।’ 

পাঁচ বছরের চুক্তিতে মিসর থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজ দুটি লিজ নেয় বিমান। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ২০১৪ সালের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে। এক বছরের কম সময় ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আবারও ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে নষ্ট হয়ে যায় ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও। পরে ইঞ্জিনটি মেরামতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। এ কারণে লিজ নেওয়া প্রতিষ্ঠান ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান—উভয়কেই অর্থ দিতে হয় বিমানকে। 

গত বছরের অক্টোবর মাসে এ সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের পেছনে ৫ বছরে বাংলাদেশ বিমানের মোট লোকসান হয়েছে ১১০০ কোটি টাকা। উড়োজাহাজ দুটি চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। আর এগুলোর পেছনে খরচ হয়েছিল ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ওই দুটি উড়োজাহাজের জন্য প্রতি মাসে বিমান ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। সেই দায় থেকে ওই বছরের মার্চ মাস থেকে মুক্তি পায় প্রতিষ্ঠানটি। 

দশম সংসদের বিমান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এই উড়োজাহাজ দুটি লিজ নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। 

বুধবারের বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিল ২০২১’ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সংশোধন সাপেক্ষে আগামী বৈঠকে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। 

কমিটির সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এবং সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক, আনোয়ার হোসেন খান, শেখ তন্ময়, সৈয়দা রুবিনা আক্তার ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত