প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মত-পথ ও আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও দেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষায় এবং অপপ্রচার ও উসকানির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে এমন অঙ্গীকার করেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিকেল চারটায় এই সংলাপ শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা পৌনে সাতটায়। দেশের চলমান সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সংলাপে দেশের স্বার্থে সবাই একজোট হওয়ার অঙ্গীকার করেন বলে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতা জানান।
সংলাপের সূচনা বক্তব্যে চলমান পরিস্থিতির আলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মুক্ত স্বাধীন নতুন বাংলাদেশকে মুছে দিতে কল্পকাহিনি প্রচার করা হচ্ছে। অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি, তারা এটা মুছে দিতে চায়। তারা নতুন নতুন বেশে নতুনভাবে চেষ্টা করেই যাচ্ছে। এখন যে চেষ্টা চলছে, সেটার বিশেষ একটা রূপ আছে। সে জন্য বিশেষভাবে আপনাদের ডাকা।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘এখন আমাদের সারা দুনিয়াকে বলতে হবে, আমরা এক। আমরা যে পেয়েছি, তা একযোগে পেয়েছি। কোনো মতভেদের মধ্যে পাইনি। কাউকে ধাক্কাধাক্কি করে পাইনি। যারা আমাদের বুকের ওপর চেপে ছিল, তাদের আমরা বের করে দিয়েছি।’ তিনি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপি, জামায়াত ছাড়াও নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদ সংলাপে অংশ নেয়। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ এলেও অতিথিদের তালিকায় নাম না থাকায় ঢুকতে পারেননি বলে জানা গেছে।
সংলাপ শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, মত-পথ ও আদর্শের ভিন্নতা থাকার পরেও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা এবং মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। সংলাপের মূল সূর এটাই ছিল। তিনি বলেন, ‘সবাই একটা কথা বলেছেন যে আমাদের এখন আর শক্তিহীন, নতজানু, দুর্বল ভাবার কোনো রকম অবকাশ নেই। যেকোনো ধরনের অপপ্রচার ও উসকানির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং আমরা আমাদের ঐক্য অটুট রাখব। ভবিষ্যতে এ রকম অপপ্রচার হলে, উসকানি এলে ঐক্য দিয়ে আমরা তা মোকাবিলা করব।’
অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, গোটা জাতি অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকায় সবাই মিলে একটা সমাবেশ করা যায় কি না, সে বিষয়ে একটি প্রস্তাব এসেছে। সংলাপে দলগুলোর পক্ষ থেকে ভারতে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। একই সঙ্গে সরকারের কাছ থেকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা প্রত্যাশার পাশপাশি বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্রগুলো ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
সংলাপে আলোচনা প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা আরও বলেন, সংলাপে সরকারের যোগাযোগ ও আইনগত দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শও দেন রাজনৈতিক নেতারা। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যত চুক্তি হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে রামপালসহ বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলো বাতিলের দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশের ওপর ভারতের অর্থনৈতিক নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর বিষয়ে নিন্দা জানানো হয়। ভারতকে বাংলাদেশের প্রতি মর্যাদাশীল প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করার আহ্বানও জানানো হয়।
সংলাপে বিএনপির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সংলাপ শেষে খন্দকার মোশাররফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার জন্য। তিনি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যাঁরা আমরা উপস্থিত ছিলাম, সবাই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য একমত হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং পার্শ্ববর্তী দেশের মিথ্যাচারের বিষয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা সরকারের সঙ্গে একমত হয়েছি যে আমরা যেভাবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়েছি, একইভাবে সবাই মিলে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করব।’
নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বলেছি, অতিদ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ দিন। রোডম্যাপ পেয়ে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে যেসব ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তখন আর কেউ তা করতে সাহস পাবে না।’
সংলাপে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। দলে ছিলেন নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। সংলাপের পর জামায়াতের আমির সাংবাদিকদের বলেন, ‘দল-মত আমাদের ভিন্ন, কিন্তু পথ আমাদের এক। পথটা হচ্ছে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে এক রয়েছি। এখানে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।’ তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব আমরা করেছি। সবার সঙ্গে আলোচনার পর জাতীয় ঘোষণা আসবে সরকারের পক্ষ থেকে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা দেশ, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ আছি। কেউ যদি মনে করে, আমাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে, এটা কোনো বিভেদ নয়। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে; কিন্তু সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বলেছি, ঐক্যের প্রকাশ হিসেবে সারা দেশে একটি দিবসে জাতীয় পতাকা হাতে আমরা দাঁড়াব। এ বিষয়ে হয়তো দ্রুত সিদ্ধান্ত আসবে।’
গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর বলেন, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা পোড়ানো ভারত সরকারের অবস্থান কি না, তা জানতে সরকার ব্যাখ্যা চাইবে। তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তাব ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর অংশীজনদের নিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য জাতীয় সরকার গঠন এবং স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আগামী ছয় মাসের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা। একই সঙ্গে ঐক্যবদ্ধতার প্রতিফলন হিসেবে জাতীয় পতাকা অথবা শান্তির পতাকা নিয়ে কর্মসূচি পালন করা।
সংলাপে ভারতীয় মনোভাবের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের আত্মমর্যাদাপূর্ণ সাহসী পদক্ষেপের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল সংহতি প্রকাশ করেছে বলে জানান খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যেকোনো রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল একমত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
মত-পথ ও আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও দেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষায় এবং অপপ্রচার ও উসকানির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে এমন অঙ্গীকার করেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিকেল চারটায় এই সংলাপ শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা পৌনে সাতটায়। দেশের চলমান সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সংলাপে দেশের স্বার্থে সবাই একজোট হওয়ার অঙ্গীকার করেন বলে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতা জানান।
সংলাপের সূচনা বক্তব্যে চলমান পরিস্থিতির আলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মুক্ত স্বাধীন নতুন বাংলাদেশকে মুছে দিতে কল্পকাহিনি প্রচার করা হচ্ছে। অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি, তারা এটা মুছে দিতে চায়। তারা নতুন নতুন বেশে নতুনভাবে চেষ্টা করেই যাচ্ছে। এখন যে চেষ্টা চলছে, সেটার বিশেষ একটা রূপ আছে। সে জন্য বিশেষভাবে আপনাদের ডাকা।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘এখন আমাদের সারা দুনিয়াকে বলতে হবে, আমরা এক। আমরা যে পেয়েছি, তা একযোগে পেয়েছি। কোনো মতভেদের মধ্যে পাইনি। কাউকে ধাক্কাধাক্কি করে পাইনি। যারা আমাদের বুকের ওপর চেপে ছিল, তাদের আমরা বের করে দিয়েছি।’ তিনি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপি, জামায়াত ছাড়াও নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদ সংলাপে অংশ নেয়। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ এলেও অতিথিদের তালিকায় নাম না থাকায় ঢুকতে পারেননি বলে জানা গেছে।
সংলাপ শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, মত-পথ ও আদর্শের ভিন্নতা থাকার পরেও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা এবং মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। সংলাপের মূল সূর এটাই ছিল। তিনি বলেন, ‘সবাই একটা কথা বলেছেন যে আমাদের এখন আর শক্তিহীন, নতজানু, দুর্বল ভাবার কোনো রকম অবকাশ নেই। যেকোনো ধরনের অপপ্রচার ও উসকানির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং আমরা আমাদের ঐক্য অটুট রাখব। ভবিষ্যতে এ রকম অপপ্রচার হলে, উসকানি এলে ঐক্য দিয়ে আমরা তা মোকাবিলা করব।’
অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, গোটা জাতি অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকায় সবাই মিলে একটা সমাবেশ করা যায় কি না, সে বিষয়ে একটি প্রস্তাব এসেছে। সংলাপে দলগুলোর পক্ষ থেকে ভারতে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। একই সঙ্গে সরকারের কাছ থেকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা প্রত্যাশার পাশপাশি বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্রগুলো ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
সংলাপে আলোচনা প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা আরও বলেন, সংলাপে সরকারের যোগাযোগ ও আইনগত দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শও দেন রাজনৈতিক নেতারা। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যত চুক্তি হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে রামপালসহ বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলো বাতিলের দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশের ওপর ভারতের অর্থনৈতিক নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর বিষয়ে নিন্দা জানানো হয়। ভারতকে বাংলাদেশের প্রতি মর্যাদাশীল প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করার আহ্বানও জানানো হয়।
সংলাপে বিএনপির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সংলাপ শেষে খন্দকার মোশাররফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার জন্য। তিনি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যাঁরা আমরা উপস্থিত ছিলাম, সবাই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য একমত হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং পার্শ্ববর্তী দেশের মিথ্যাচারের বিষয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা সরকারের সঙ্গে একমত হয়েছি যে আমরা যেভাবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়েছি, একইভাবে সবাই মিলে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করব।’
নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বলেছি, অতিদ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ দিন। রোডম্যাপ পেয়ে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে যেসব ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তখন আর কেউ তা করতে সাহস পাবে না।’
সংলাপে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। দলে ছিলেন নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। সংলাপের পর জামায়াতের আমির সাংবাদিকদের বলেন, ‘দল-মত আমাদের ভিন্ন, কিন্তু পথ আমাদের এক। পথটা হচ্ছে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে এক রয়েছি। এখানে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।’ তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব আমরা করেছি। সবার সঙ্গে আলোচনার পর জাতীয় ঘোষণা আসবে সরকারের পক্ষ থেকে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা দেশ, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ আছি। কেউ যদি মনে করে, আমাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে, এটা কোনো বিভেদ নয়। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে; কিন্তু সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বলেছি, ঐক্যের প্রকাশ হিসেবে সারা দেশে একটি দিবসে জাতীয় পতাকা হাতে আমরা দাঁড়াব। এ বিষয়ে হয়তো দ্রুত সিদ্ধান্ত আসবে।’
গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর বলেন, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা পোড়ানো ভারত সরকারের অবস্থান কি না, তা জানতে সরকার ব্যাখ্যা চাইবে। তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তাব ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর অংশীজনদের নিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য জাতীয় সরকার গঠন এবং স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আগামী ছয় মাসের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা। একই সঙ্গে ঐক্যবদ্ধতার প্রতিফলন হিসেবে জাতীয় পতাকা অথবা শান্তির পতাকা নিয়ে কর্মসূচি পালন করা।
সংলাপে ভারতীয় মনোভাবের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের আত্মমর্যাদাপূর্ণ সাহসী পদক্ষেপের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল সংহতি প্রকাশ করেছে বলে জানান খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যেকোনো রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল একমত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সার্বিক পরিস্থিতি ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার ইস্যুতে...
৭ ঘণ্টা আগেভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকায় আগুন দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে উত্তাপ ছড়িয়েছে, তা এখনো কমছে না। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে লাগোয়া সীমান্তে এক বাংলাদেশিকে হত্যা ও এক তরুণকে নির্যাতন এবং আগরতলায় এক বাংলাদেশিকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
৭ ঘণ্টা আগেবিচার বিভাগের জন্য প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান বিচারপতি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এমন প্রশংসা করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট থেকে...
৮ ঘণ্টা আগেটু ফিঙ্গার টেস্ট (টিএফটি), যা একজন নারীর যৌন ইতিহাস বা ধর্ষণ-সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি একটি অমানবিক, অবৈজ্ঞানিক এবং অপমানজনক প্রক্রিয়া হিসেবে পরিচিত। এই পদ্ধতির মাধ্যমে নারীদের সম্মানহানি এবং তাদের প্রতি বিভিন্নভাবে অবিচার করা হয়। ২০১৮ সালে ধর্ষণ প্রমাণের ক্ষেত্রে টু ফিঙ্গার...
৯ ঘণ্টা আগে